নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৮ এএম, ২১ জুন, ২০১৭
নির্বাচন প্রশ্নে বিভক্তি দেখা দিয়েছে বিএনপিতে। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটি রূপরেখা প্রস্তুত করলেও, আরও বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্তি দেখা দিয়েছে দলে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে মূলত ত্রিমাত্রিক দ্বন্ধ রয়েছে দলে। এগুলো হলো প্রথমত, যদি শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, ওই নির্বাচনে বিএনপি যাবে কি যাবে না?
দ্বিতীয়ত, আদালতে দণ্ডিত হয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, তাহলে দল নির্বাচনে যাবে কিনা? তৃতীয়ত, সহায়ক সরকার, রূপরেখা বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিএনপির এমন কোনো দাবিই যদি সরকার মেনে না নেয়, সেক্ষেত্রে তারা নির্বাচনে যাবে কি না?
জানা গেছে, এক কথায় যে কোনো পরিস্থিতিতেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পক্ষে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি বড় অংশ। সাবেক একাধিক সেনা কর্মকর্তাসহ এসব নেতাদের মতে, গত সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে দল যে ভুল করেছে, তার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না। এমনকি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যদি কোনো মামলায় দণ্ডিত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন, তবুও দলের উচিত হবে নির্বাচনে যাওয়া। শুধু তাই নয়, সহায়ক সরকার বা বিএনপির যে কোনো দাবিই যদি সরকার মেনে না নেয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া নেতৃত্বে দল নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবুও তারা নির্বাচনে যাবেন। সর্বোপরি শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকেও যদি নির্বাচন দেয় এবং তাতে দল যাই সিদ্ধান্ত নিক, তাদের নেতৃত্বে দলের বৃহৎ একটি অংশ নির্বাচনে যাবেই।
তবে সহায়ক সরকার ইস্যুতেই দলে বর্তমানে কথাবার্তা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি এক ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার এ সংক্রান্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সামনে এসেছে। যদিও এরই মধ্যে এই সরকারের রূপরেখা প্রস্তুত হয়ে গেছে, তবুও আদৌ এই সহায়ক সরকারের প্রস্তাবে স্থির থাকা উচিত হবে কিনা এই নিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মতবিরোধ প্রকট হচ্ছে।
সমালোচনা করে নেতারা বলছেন, নির্বাচনকালে প্রধানমন্ত্রীকে ছুটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে রূপরেখায়। অথচ সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে হবে নির্বাচন। ওই সময় সংসদ কার্যকর থাকবে। তাহলে সংসদ নেতা হবেন কে? তাছাড়া রাষ্ট্রপতি, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে সংবিধানে বলা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে সংবিধানে কোনো কিছু বলা হয়নি।
সহায়ক সরকারের প্রস্তাবের বিরোধীতাকারীদের উত্থাপিত এমন বিষয়ের জবাব অবশ্য দিচ্ছেন স্বপক্ষে থাকা অন্য নেতারা। তারা বলছেন, সংবিধানে এ সংক্রান্ত বিধান নাই, তবে নজির আছে।
উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, ১৯৯১-৯৬ মেয়াদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বিদেশ সফরে গেলে তৎকালীন আইনমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকের আয়োজনও করেছিলেন।
তবে এই যুক্তিকে যুঁতসই মনে করেন না রূপরেখার রিরুদ্ধে থাকা নেতারা। তাঁরা বলেন, নজির অনুসারে প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলে ছুটিতে যেতে পারেন। কিন্তু যেহেতু ওই সময় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় থাকতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। তাই প্রধানমন্ত্রী ছুটিতে যেতে সম্মত হলেও প্রচার-প্রচারণার কারণে বিদেশে যাওয়া অসম্ভব।
তারা আরও বলছেন, রূপরেখা কী হবে, এটি দ্বিতীয় প্রশ্ন। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, এই পথে হাঁটাই উচিত হবে কিনা? অর্থ্যাৎ, সহায়ক সরকারের প্রস্তাবে থাকা ঠিক হবে কিনা? সহায়ক সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাম যাই দেওয়া হোক, তা অর্জন করতে গেলে আন্দোলন করতে হবে। তাই আগে নিশ্চিত হতে হবে, এই আন্দোলনে জেতার সক্ষমতা দলের আছে কিনা?
জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়েও নিজেদের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনতে পারেনি বিএনপি, রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদকে দিয়ে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নির্বাচন করাতে পারেনি দলটি, বরং এর আগে ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন তিনি, এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনও ঠেকাবে ঘোষণা দিয়ে ব্যর্থ হয়েছে তারা, বর্তমান সরকারের এক বছর পূর্তির পরের দিন ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি শুরু করে টানা তিন মাসের আন্দোলন করেছিল বিএনপি। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি। বরং দেশব্যাপী নেতা-কর্মীদের মানুষ হত্যা ও পেট্রোল বোমা হামলাসহ নানা কারণে মামলায় জড়াতে হয়েছে। সব মিলে এসব আন্দোলনে বরাবরই ব্যর্থ হয় বিএনপি। আর আমাদের দেশের মানুষের সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে যারা আন্দোলনে হেরে যায়, তাদেরকে ভোটেও হারায় ভোটাররা।
এসব যুক্তিতে তারা বলছেন, যে দাবিতেই হোক, আন্দোলনে যাবার আগে, নিশ্চিত হতে হবে আসলে এতে জেতার সামর্থ আমাদের আছে কিনা? অন্তত গত প্রায় এক যুগের ইতিহাস বলছে, এই সামর্থ আমাদের নেই এবং আমরা ক্ষমতার বাহিরে। এমনকি আমরা বিরোধী দলেও নেই।
বরং স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই দল ক্ষমতায় চলে যাবে বলে তাঁদের বিশ্বাস।
এদিকে সহায়ক সরকারের বিরোধীতাকারীদের বিরুদ্ধে যাঁরা অবস্থান নিচ্ছেন, তাঁদের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অন্যরা। সহায়ক সরকারের পক্ষে থাকা এই নেতারা মনে করছেন, এটি সরকারের অপতৎপরতার একটি অংশ। সরকারই বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি অংশকে দিয়ে এই বিভাজনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমএএম
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ। সম্প্রতি এক শুভেচ্ছা বার্তায় এ অভিনন্দন জানান তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ।
বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কাজ করতে চান উল্লেখ করেন এন্থনি এলবানিজ।
প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, ভারত মহাসাগরের দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উভয় দেশের একই ধরনের স্বার্থ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অস্ট্রেলিয়া এন্থনি এলবানিজ বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কীভাবে সম্ভব হল, কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউটার্ন নিল? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার পার্সোনাল ডিপ্লোমেসির কারণে। এটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর আরেকটি অংশ। ২০১৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করতে শুরু করে। বিশেষ করে জো বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতি বদলাতে থাকে। এসময় একের পর এক চাপ প্রয়োগ করা হতে থাকে বাংলাদেশের উপর।
বিশেষ করে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ পিটার ডি হাস বাংলাদেশে আসার পর সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় মুখোমুখি একটি অবস্থানে চলে যায়। দুই দেশের মধ্যে নানা রকম ভুল বোঝাবোঝি সৃষ্টি হয়েছিল। এর একটি বড় কারণ ছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছিল। আর এই সমস্ত ভুল তথ্যের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র একটি ভিন্নরকম অবস্থান গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশের ব্যাপারে।
কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন ঘটে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একাধিক ভূমিকা কাজ করেছে বলেই অনেকে মনে করে যেটি ডোনাল্ড লু’র সফরে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়েছে।
প্রথমত ভারতের প্রভাব। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে। ভারতের এই অবস্থানের প্রধান কারণ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত বিশ্বাস করে তার উপর আস্থা রাখে এবং শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প বাংলাদেশে নেই, এই উপলব্ধি থেকেই নরেন্দ্র মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন বলে কূটনৈতিক মহল মনে করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইনি।
দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর তিনি সেখানে নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও ভারত সফরের সময় তিনি অ্যান্থনি ব্লিনকেন এবং জো বাইডেনের সঙ্গেও কথা বলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার উদ্যোগ সফল হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সালমান এফ রহমানকেও দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং সালমান এফ রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন।
তৃতীয়ত, বিরোধী দলের ভুল রাজনীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করেছিল যে, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং এই কারণেই নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের উপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন বিএনপি নির্বাচনে যায়নি, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেনি। আর সবকিছু মিলিয়ে এখন নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আছে, মার্কিন স্বার্থ আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চায়, চীনের আগ্রাসন কমাতে চায়। সবকিছু মিলিয়ে তাদের সামনে বর্তমান সরকারই একমাত্র বিকল্প। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে, রীতিমতো ইউটার্ন নিয়েছে।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জো বাইডেন ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
১৭ মে, ১৯৮১ সাল। হঠাৎ করেই যেন দুলে উঠল বাংলাদেশ। জেগে উঠল ঘুমন্ত বাংলা। সামরিক শাসনের শিকলে বন্দী অযুত-নিযুত বাঙালী আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন। কারণ সেদিন দেশে এসেছিলেন বঙ্গববন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। দিনটি ছিলো ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ কান্না আবেগের একদিন। আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। তার বিমানটি যখন বাংলার মাটি স্পর্শ করে তখন ঢাকায় তুমুল বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি মুখর এক বিকেলে শেখ হাসিনা এক বুক কান্না নিয়ে বাংলার মাটিতে পা স্পর্শ করেন। বাংলার মাটি স্পর্শ করে প্রথমেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
১৭ মে ১৯৮১, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। পিতার রক্তে ভেজা মাটিতে কপাল স্পর্শ করে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর কান্নার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল প্রকৃতিও। আর সে কারণেই ঢাকার আকাশ জুড়ে নেমেছিল মুষলধারে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষ শেখ হাসিনাকে বরণ করে নিয়েছিল।
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।