নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
আপিল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ডিসেম্বর। ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। ১১ তারিখ রিপোর্ট পেলে ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ তাঁর জামিনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হবে কি হবেনা- এই নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন-প্রশ্ন।
তবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের খবর অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে বিএনপি বড় ধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ওইদিন বিএনপি বড় ধরণের শো ডাউনের পরিকল্পনা নিচ্ছে। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার গেপ্তারের পর ওইদিন প্রথমবারের মতো সহিংসতার পথেও যেতে পারে দলটি বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র আভাস দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপিকে সহিংস করতে জামায়াত উসকে দিচ্ছে। কিছুদিন আগেই জামায়াতের কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছে। এখন জামায়াত বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজপথে সহিংসতা করা এবং জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার কৌশল গ্রহণ করেছে। আর এই জন্যই তারা বিএনপির সাথে নিয়মিত বৈঠক করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। বিএনপির মধ্যে যারা উগ্রবাদী অংশ, যারা রাজনীতিতে মুক্তির দাবিতে রাজপথের আন্দোলনের পক্ষপাতী ছিল- তারা ইদানীং চাঙ্গা এবং ইদানীং পাড়া-মহল্লায় গোপন বৈঠক করছে বলেও জানা গেছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১২ ডিসেম্বরকে ঘিরে বিএনপি বিভিন্ন ধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যে পাড়া-মহল্লায় তারা জমায়েত হবে, সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের আশেপাশে জড় হওয়া এবং ঝটিকা মিছিল-ঝটিকা বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
বিএনপির এক নেতা নাম না প্রকাশ করার সূত্রে বলেছে, ‘আগে আমরা দেখব আপিল বিভাগ কি রায় দেয়, যদি কোন কারণে আপিল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট না যায় অথবা কোন কারণে আপিল বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন না দেয় তাহলে বিএনপি ২০১৪ সালের পরে আবার সহিংস রূপে ফিরে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।’ তবে বিএনপির অন্য একটি পক্ষ বলেছে, বিএনপি এখনই সহিংস রূপে যেতে চায় না, খালেদা জিয়ার ইস্যুতে তাঁরা ধাপে ধাপে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ দিতে চায়। অবশ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন বিএনপি আবার সহিংস রাজনীতির পথে যেতে শুরু করেছে।
তিনি বলেছেন যে, সাধারণ মানুষ সহিংস রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে, আবার যদি বিএনপি সহিংস আন্দোলনে যায় তাহলে সাধারণ মানুষ আবার প্রতিহত করবে। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, বিএনপির এই আন্দোলন আদালতের বিপক্ষে। তিনি মন্তব্য করেন যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীন এবং খালেদা জিয়ার জামিন হবে কি হবে না- এখানে সরকার বা আওয়ামীলীগের কিছু করনীয় নেই। এটা সম্পুর্ণ আদালতের এখতিয়ার। আদালত যদি খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়, সরকারের বা আওয়ামীলীগের কিছু করনীয় নেই। তবে বিএনপি ইদানীং যা করছে, বিশেষ করে গত শুনানির দিনে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের এজলাসে যা করেছে তা নজিরবিহীন, দূর্ভাগ্যজনক এবং শিষ্টাচারবহির্ভুত। এটা কোন গণতান্ত্রিক সমাজের রীতি হতে পারেনা।
একারণেই আগামী ১২ ডিসেম্বর যেন বিএনপি কোনরকম অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে এবং জনমনে অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সরকারের তরফ থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো বলছে, বিএনপি যদি ওইদিন কোন উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোরভাবে তা দমন করবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।