ইনসাইড পলিটিক্স

তৃণমূলে পচন, দায় কার?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

এগারো বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার যে কুফল, সেগুলো আওয়ামী লীগের মধ্যে স্পষ্টত দৃশ্যমান। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তৃণমূল। বিভিন্ন সংকটে এবং সন্ধিক্ষণে আওয়ামী লীগের তৃণমূলই দাড়িয়েছিল। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, যখন আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের আপসকামীতা ছিল দৃশ্যমান তখন আওয়ামী লীগের তৃণমূলই জাতির পিতার পক্ষে দাড়িয়েছিল। তাদের কারণেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ স্বাধিকারের আন্দোলনের দিকে ঝুঁকে যায়।

এসময় আওয়ামী লীগের অনেক নেতার আপসকামীতা ছিল, কিন্তু তৃণমূলের শক্তিতেই বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানীদের পরাহূত করতে সক্ষম হয়েছিল।

৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তৃণমূল। এমনকি ৭৫ এর ১৫ আগস্ট যখন জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে স্বাধীনতার প্রতিপক্ষরা হত্যা করে, তখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যখন সীমাহীন নেতৃত্বের প্রমাণ দিয়েছিল, ঠিক তেমনি বিপরীত চিত্র ছিল তৃণমূলের ক্ষেত্রে। কারণ তৃণমূল তখন রুখে দাড়িয়েছিল এবং তৃণমূলের তীব্র সংগ্রাম, ত্যাগ তিতিক্ষার ফরে আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন হয়। তৃণমূলের আকাঙ্ক্ষার কারণেই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

তৃণমূলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর তৃণমূলই শেখ হাসিনার পাশে দাড়িয়েছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর যখন আওয়ামী লীগের ওপর নির্মম অত্যাচার, হত্যা, লুণ্ঠন শুরু হয়- তখন তৃণমূলই রুখে দাড়িয়েছিল। ওয়ান ইলেভেনের সময় শীর্ষ নেতাদের পদস্থলনের বিপরীতে তৃণমূলের শক্তিতেই মুক্ত হন শেখ হাসিনা। 

এই তৃণমূলের শক্তিতেই বলীয়ান আওয়ামী লীগ। কিন্তু ১১ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের তৃণমূলে যেন পচন ধরেছে। ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট থেকে পাপিয়া পর্যন্ত যে কাহিনী, স্থানীয় পর্যায়ের নেতার বাড়িতে টাকার খনি সহ বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য ফাঁস হচ্ছে- সেই অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূলে এই যে পচন, তাতে দায়ী কে, এই প্রশ্ন এখন আওয়ামী লীগের মধ্যেই উঠেছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মনে করছে, তৃণমূলের এই অবক্ষয় এবং আদর্শহীনতার জন্য ৫টি কারণকে তারা চিহ্নিত করেছেন।

দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কুফল

দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের মধ্যে অনেক লোভ, কিছু একটা বানিয়ে নেওয়ার প্রবণতা, কিছু একটা পাওয়ার উদাগ্র আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়েছে। আর এ কারণেই তৃণমূলের মধ্যেই নানারকম টেন্ডারবাজি, কমিশন বাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্যসহ নানারকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দিকে ঝোঁক বেড়েছে।

আদর্শিক চর্চার অভাব

২০০৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মধ্যে আদর্শের চর্চা হতো। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্রন্থ দেওয়া হতো, পাঠচক্র এবং কর্মীসভা, অনুশীলনচর্চা ইত্যাদি হতো। কিন্তু ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা নিজেরাই এখন নানারকম ব্যবসা-বাণিজ্যে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে। ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে আদর্শিক চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এই আদর্শিক চর্চার অভাবে তৃণমূলের মধ্যে অবক্ষয় ঢুকে গেছে বলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মনে করেন।

দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী

আওয়ামী লীগের মধ্যে এ পর্যন্ত অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে। বিশেষ করে বিএনপি-জামাত থেকে সুবিধাবাদীরা আওয়ামী লীগে আস্তানা গেড়েছে। তারা আওয়ামী লীগের নাম পদবি ব্যবহার করে নানা অপকর্মের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করছে। এটা করা হয়েছে কিছু কিছু কেন্দ্রীয় নেতার যোগসাজশে। তাদের দল ভারি করার মানসিকতা থেকে। যাচাই বাছাই ছাড়া এ ধরণের অনুপ্রবেশ আওয়ামী লীগের তৃণমূলের মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, যার মাসুল দিতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে।

তৃণমূলের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তা

তৃণমূলের মধ্যে একটা ধারণা হয়ে গেছে তাদেরকে টাকা বানাতে হবে। টাকা বানাতে না পারলে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও হতে পারবে না। কারণ বিগত নির্বাচনে দেখা গেছে যে, দলীয় ত্যাগি পরীক্ষিত কর্মীদের বাদ দিয়ে টাকা পয়সাওয়ালা ব্যবসায়ী বা বিভিন্ন রকম বিত্তবানদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরফলে তৃণমূলের তরুণদের মধ্যে একটি অর্থলিপ্সা জাগ্রত হয়েছে।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর ব্যর্থতা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলীসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দায় এড়াতে পারেন না। তাদের প্রত্যেকটি বিভাগের জন্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ঢাকায় বসেই কার্যক্রম করেছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের যে সংগঠন তার দিকে নজরদারি করা, কর্মী সংগ্রহ করা, সম্মেলন করার  মতো কাজের ব্যাপারে তাদের তীব্র অনীহা আওয়ামী লীগে এই পচন সৃষ্টি করেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

আওয়ামী লীগ তৃণমূল শক্তিনির্ভর একটি দল। তৃণমূলে যদি পচন ধরে তাহলে আওয়ামী লীগ থাকবে না বলে মনে করছেন দলটির নেতৃবৃন্দ। এ কারণেই তৃণমূলের পচনরোধে এখনি আওয়ামী লীগের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের শক্তি হলো তৃণমূল। আওয়ামী লীগ সভাপতি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন; তৃণমূলের মধ্যে যে সমস্ত আগাছা প্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। খুব শীঘ্রই আওয়ামী লীগের ভেতরের শুদ্ধি অভিযান দৃশ্যমান হবে।’  



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ: জিএম কাদের

প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। 

রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।

তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।


দেশ   অর্থনৈতিক   জিএম কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল

প্রকাশ: ০৯:১৯ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারা দেশেই বাড়ছে দলটির গৃহদাহ। দল পুনর্গঠন চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে দলীটির বিবাদ প্রকাশ্যে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশ সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘন করছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। তাদের অনেকে এলাকায় গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করতে গোপনে উসকে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাদের। ঢাকায় ফিরে তারাই আবার দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে নিজেদের পথ প্রশস্ত করছেন। এতে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ঘনীভূত হচ্ছে।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানায়, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে কারাগারে যাওয়া নেতাদের অনেকের ভূমিকা রহস্যজনক বলে মনে করছেন দলীয় অনেকে। নিয়ে দলের ভিতরে রয়েছে বিতর্ক। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের (অডিও-ভিডিও) ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। অনেককে অঘোষিতভাবেওএসডিকরা হয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে। নিয়ে ক্ষোভে কেউ কেউ রাজনীতি থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। চলে যাচ্ছেন দেশ ছেড়ে।

এসব বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি মহাসাগরের মতো বিস্তৃত একটি বিশাল রাজনৈতিক দল। দলে নেতাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতেই পারে। তবে কোনো রকমের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দল নেই।

জানা গেছে, সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিরোধ-কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। এই নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে বয়কটের পক্ষে নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সাংগঠনিক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেই দায়িত্ব পালন করেননি। অনেকে এলাকাতেই যাননি। জেলা বিএনপির শীর্ষকর্তারাও তেমন কোনো ভূমিকা রাখেননি। বরং উল্লিখিত নেতাদের এলাকাতেই ভোট কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাহী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব নেতার দ্বৈত ভূমিকায় তৃণমূলের নেতারা ক্ষুব্ধ।


বিএনপি   অভ্যন্তরীণ   কোন্দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মির্জাপুরে বিএনপির ২০ নেতাকে সতর্ক বার্তা

প্রকাশ: ০৯:০৩ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ফিরোজ হায়দার খানের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ২০ নেতাকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রউফ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আরিফ এবং পৌর বিএনপির সভাপতি হয়রত আলী মিঞা সম্পাদক এসএম মহসীন স্বাক্ষরিত পৃথক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সতর্ক বার্তা পাওয়ার পর নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও জানানো হয়।

সতর্ক বার্তাপ্রাপ্ত নেতারা হলেন, উপজেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক তোজাম্মেল হোসেন প্রিন্স, সদস্য আলী হোসেন রনি, প্রচার সম্পাদক সাঈদ আনোয়ার, গোড়াই ইউনিয়নের সাবেক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, বহুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অকরাম মল্লিক ভাওড়া ইউনিয়নের সাবেক সম্পাদক তপন হাসান খানসহ ২০ নেতা।


টাঙ্গাইল   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আবার তাপস-খোকন বিরোধ, আওয়ামী লীগে অস্বস্তি

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

সারা দেশে আওয়ামী লীগে কোন্দল বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যেই ঢাকার আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট নেতা শেখ ফজলে নূর তাপস এবং সাঈদ খোকনের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্য আকার রূপ নিয়েছে। কয়েকদিন আগে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন দুটির মেয়রদের মেয়াদ চার বছর পূর্ণ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে ঢাকা সিটির দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন এখন তাপসের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। অন্যদিকে বর্তমান মেয়র তাপস দীর্ঘদিন ধরেই সাঈদ খোকনকে কোণঠাসা করার জন্য প্রকাশ্য তৎপরতা দেখিয়েছেন। এই দুই নেতার বিরোধ এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে এক অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যে সময় সারা দেশে আওয়ামী লীগ কোন্দল নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে।

আরও পড়ুন: জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে?

সাইদ খোকন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রাক্তন মেয়র ছিলেন। তার মেয়র থাকা অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নানা রকম অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে তার সীমাহীন ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ গত নির্বাচনে সাঈদ খোকনকে আর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দেয়নি। তার বদলে ধানমন্ডি এলাকার এমপি শেখ ফজলে নূর তাপস মনোনয়ন পান এবং নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি চার বছর অতিক্রম করেছেন। তাপস যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছেন এমনটি নয়৷ তবে দুর্নীতি বা অন্যান্য অভিযোগে তিনি সাঈদ খোকনের মত ব্যাপকভাবে সমালোচিত হননি।

অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনে দায়িত্ব গ্রহণ করে তাপস সিটি কর্পোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং সেটি করতে যেয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের অনুগত বেশ কয়েক জনকে চাকরিচ্যুত করেন। তিনি সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে বেশ প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেন এবং তার কিছু নীতি এবং কর্মসূচির বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। এরকম বিরোধের জেরে এক সময় সাঈদ খোকনের সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগে। এবং দুজনের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছিল। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে সেই বিরোধ সাময়িকভাবে থেমে যায়।

আরও পড়ুন: অর্থকষ্টে বিএনপি

সাইদ খোকন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন। গত নির্বাচনে তিনি ঢাকার একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে তিনি মেয়র হিসেবে তার কার্যক্রম এবং সাফল্যের কথা তুলে ধরেন৷ এই সাফল্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বর্তমান মেয়রের তীব্র সমালোচনা করেন এবং মেয়রের বিভিন্ন নীতি এবং অবস্থানের ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

ধারণা করা হচ্ছে যে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখেই সাঈদ খোকন সমালোচনার তীর ছুড়েছেন তাপসের দিকে। এখন তাপস যে তাকে পাল্টা আঘাত হানবেন এটা বলাই বহুল্য। স্থানীয় ঢাকাবাসীরা মনে করছেন, ফজলে নুর তাপস মেয়র হওয়ার পর সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতি কমিয়েছেন। তিনি কিছু সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ এবং কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। দুজনেরেই ভালো মন্দ আছে। তবে সাঈদ খোকন মেয়র থাকা অবস্থায় দুর্নীতির একটি বড় ধরনের পার্সেপশন সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল যেটি তাপসের সময় তৈরি হয়নি। এখন মেয়র হিসেবে আবার দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনে ফিরে আসতে চাইছেন সাঈদ খোকন। সে জন্যই তিনি বর্তমান মেয়রকে সমালোচনা করছেন বলেই অনেকে মনে করেন।

তবে তাপস এবং সাঈদ খোকনের এই বিরোধ আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে এই সময় আওয়ামী লীগের দই গুরুত্বপূর্ণ নেতার বিরোধ সরকার সম্পর্কে এবং দলের ভিতর ভুল বার্তা দিবে বলেই অনেকে মনে করছেন। 


আওয়ামী লীগ   সাঈদ খোকন   শেখ ফজলে নুর তাপস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর নির্বাচন বিরোধী অধিকাংশ বিরোধী শিবিরেই এখন হতাশা। বিশেষ করে আন্দোলনের ব্যর্থতা নেতা কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের অনীহা তৈরি করেছে। নতুন করে আন্দোলন শুরু করা বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কষ্টসাধ্য এবং কঠিন হয়ে উঠেছে বলেই মনে করেন বিএনপির নেতারা। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে জামায়াত যেন বিএনপির সহায়ক শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়েছে। বিএনপিকে চাঙ্গা করা এবং বাঁচিয়ে রাখার মহান দায়িত্ব গ্রহণ করেছে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত।

গত কিছুদিন ধরেই জামায়াতের মধ্যে অত্যন্ত চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জামায়াত শুধু তাদের নিজেদের সংগঠনকে গোছাচ্ছে না বরং বিএনপিকেও পরিচালনা করার ক্ষেত্রে প্ররোচিত করছে, প্রভাব বিস্তার করছে। জামায়াত এখন আবার শক্তিশালী অবস্থানে ফিরে এসেছে। বিশেষ করে বিরোধী রাজনীতির মেরুকরণে জামায়াত এখন কর্তৃত্বের আসন গ্রহণ করেছে বলেও মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: অর্থকষ্টে বিএনপি

প্রশ্ন উঠেছে জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে? ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ভূমিধস বিজয়ের পর যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করে এবং এই বিচারে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতাকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে এবং তারা সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছে। একে একে জামায়াতের সব শীর্ষনেতা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার পরও দলটি বিলুপ্ত হয়নি, ভেঙে পড়েনি। বরং বিভিন্ন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জামায়াত এখন আগের চেয়ে সংগঠিত হচ্ছে এবং তৃণমূল পর্যন্ত এর সংগঠন বিস্তার করছে। জামায়াত দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে সমাবেশ করতে পারেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়গুলোতে জামায়াতের শোডাউন লক্ষ্য করার মতো। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের জামায়াতের সমাবেশ তার আগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আমাদের কর্মী সমাবেশ। নির্বাচনের পরে জামায়াতের তৎপরতা। গত রমজানে পাঁচতারকা সোনারগাঁ হোটেলে জামায়াতের ইফতার পার্টি ইত্যাদি সবই জামায়াত কে নতুন শক্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

জামায়াত চাঙ্গা হচ্ছে কীভাবে সেটি এখন একটি বড় প্রশ্ন। কারণ যুদ্ধাপরাধের বিচারের পর অনেকেই মনে করেছিলেন যে বাংলাদেশে ধর্মান্ধ মৌলবাদ এবং স্বাধীনতার বিরুদ্ধে রাজনীতির চির অবসান ঘটবে। এই দলগুলো মুখ থুবড়ে পড়বে। কিন্তু এই সমস্ত বিচারের এক দশক পরও দেখা যাচ্ছে যে জামায়াত নতুন করে সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছে। এর একটি বড় কারণ হল স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে প্রগতিশীল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো মানুষকে আকর্ষণ করতে পারছে না। জামায়াত তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে সংঘটিত হচ্ছে। অনেক স্থানে জামায়াত তাদের পরিচয় গোপন করে ধর্মপ্রচারের নামে তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করছে। বিশেষ করে নারীদের মধ্যে দাওয়াত এবং নানা রকম ইসলামী কর্মসূচির মাধ্যমে জামায়াত একটি নতুন আবহাওয়া তৈরি করার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: তারেক কি যুক্তরাজ্যে অবাঞ্ছিত হচ্ছেন?

তাছাড়া জামায়াতপন্থি যেসমস্ত ব্যবসায়ীরা তারা সরকারের সাথে একধরনের গোপন আঁতাত এবং সম্পর্ক তৈরি করছেন এবং আঁতাত ও সম্পর্কের মাধ্যমে তারা সরকারের সাথে ব্যবসা-বানিজ্য করছেন। সেই ব্যবসার টাকা সংগঠন করার জন্য দিচ্ছেন। আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে তা হলো, জামায়াতের কর্মীরা দলকে নিয়মিত চাঁদা দিচ্ছেন এবং ছোট ছোট চাঁদার ফলে একটি বিপুল অর্থ জমা হচ্ছে। আর একারণেই জামায়াত এখন বিরোধী রাজনীতির কেন্দ্রে এসে দাড়িঁয়েছে। 


জামায়াত   বিএনপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন