ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর কিচেন কেবিনেটে কারা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০৬ এএম, ০৬ জুলাই, ২০১৭


Thumbnail

সরকারের সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয় মন্ত্রিসভায়। সেখানে মন্ত্রীরা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। মন্ত্রিদের বক্তব্য থেকে সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে এর বাহিরে অন্য কারও পরামর্শও নিতে পারেন সরকার প্রধান। বিশ্বব্যাপী যা কিচেন কেবিনেট নামে পরিচিত। বাংলাদেশের ইতিহাসে সংসদীয় বা রাষ্ট্রপতি শাসিত গণতন্ত্রের আমলেও বিদ্যমান ছিল অলিখিত এই কেবিনেট। এই কিচেন কেবিনেটে স্থান হয় সাধারণত মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বা এর বাহিরে সরকারের শুভাকাঙ্খি বুদ্ধিজীবীদের কেউ কেউ।

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে এই কিচেন কেবিনেটে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, রেহমান সোবহান, তোফায়েল আহমেদ ও আসম আবদুর রবসহ কয়েকজন।

পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের কিচেন কেবিনেটে ছিলেন বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ (পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি) কয়েকজন। আরেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদেরও ছিল এমন কেবিনেট।

পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কিচেন কেবিনেটে স্থান হয় দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার।

পরবর্তীতে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেটি প্রথম সরকার। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কিচেন কেবিনেটে স্থান হয়েছিল জিল্লুর রহমান, আবদুল হামিদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, তোফায়েল আহমেদ ও শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ জ্যেষ্ঠ কয়েকজন নেতার।

এরপর ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে শেখ হাসিনার সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে। এর আগে প্রায় দুই বছর ক্ষমতায় থাকে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই আমলের ‘সংস্কারপন্থী’ বিবেচনায় পরবর্তীতে কিচেন কেবিনেটেও ভিন্নতা দেখা যায়। এই কেবিনেটে স্থান হয় এইচটি ইমাম, মতিয়া চৌধুরী, গওহর রিজভী ও তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীসহ নতুন ও পুরাতন কয়েকজনকে।

তবে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তেমন কোন কেবিনেট আছে বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের অনেকেই মনে করছেন, বিশ্বব্যপী স্বীকৃত এই ‘কিচেন কেবিনেট’ প্রথা এবার ভেঙ্গেছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে কারও কারও মতে, প্রধানমন্ত্রীকে হয়ত কেউ পরামর্শ দিচ্ছেন, তবে তা পর্দার আড়াল থেকে।

২০০৮ সাল থেকে টানা দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। এর মধ্যে সরকারের অন্যতম প্রশংসিত কাজ মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধীদের বিচার নিশ্চিত করা ও রায় কার্যকর করা।

এছাড়াও রায়েছে পদ্মা সেতু, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন, সমুদ্রসীমা মামলা, গণজাগরণ ও হেফাজত ইস্যু, সরকারবিরোধী আন্দোলন মোকাবেলা, রহিঙ্গা ইস্যুসহ নানা বিষয়। এসব বিষয়ের সঙ্গে প্রশ্ন আসে প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পরামর্শক কে? জানা গেছে, বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ শুনলেও সিদ্ধান্ত নেন নিজেই। দলীয় বিষয়ে তৃণমূলের কথা শোনেন বেশি। তবে সার্বিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কারও ওপর নির্ভর করেন না তিনি।

জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে বাজেট আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পরামর্শক বিষয়ক আলোচনা আরও সামনে এসেছে। বাজেট আলোচনায় কেবল সংসদ সদস্যরা নন, সরকারের কোনও কোনও মন্ত্রীও প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করেন। যদিও প্রস্তাবিত এই বাজেট মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরই সংসদে উপস্থাপন করা হয়। সদা সাম্প্রতিক প্রশ্ন ‘মন্ত্রিসভা কি কোন কিছু না দেখেই সব অনুমোদন দিয়ে দেয়?’ আরও দৃঢ় হয়ে সামনে আসে। কারণ কোন মন্ত্রীর আপত্তি থাকলে যে কোনও প্রশ্নে তিনি মন্ত্রিসভাতেই প্রশ্ন তুলতে পারেন। সর্বশেষ সংসদ নেতা শেখ হাসিনার পরামর্শে আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট বিষয়ে সংশোধনী আনার পর তা সংসদে পাস হয়।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বা দল পরিচালনায় সবার কথাই শোনেন। তবে সিদ্ধান্ত নিজেই নেন। আর মন্ত্রিসভায় তেমন পরামর্শ মন্ত্রীদের কেউ দিলে তিনি তখনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারতেন।

বলা হয়ে থাকে, দেশের একমাত্র ব্যক্তি শেখ হাসিনা, যিনি চেয়েছিলেন বলেই মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার সঙ্গে এসব অপরাধীদের দফারফা করা সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধীদের বিচারের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও এগুতে হয়েছে খুব ভেবে-বুঝে। এক্ষেত্রে কখনো ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করতে হয়েছে নানামুখী সমালোচনার ঝড় মাথায় নিয়েও। কারণ আগে জনমত একীভূত করতে হয়েছে বা ‘তাড়াহুড়া করেছে’ বলে যেন কেউ অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে।

তাছাড়া বাংলাদেশের সম্মানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা পদ্মাসেতু নিজস্ব অর্থায়নে করার সিদ্ধান্তও তিনি নিজেই নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মাসেতু থেকে বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে ৬৮ বছরের পুরোনো ছিটমহল বিনিময় চুক্তিও বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। তবে কোন দেশের সঙ্গে বিনা যুদ্ধে বা বিনা রক্তপাতে এমন একটি সমস্যা সমাধানের পথে এগুনোই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। যা সংশ্লিষ্টদের কথা শুনে নিজেই নিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইভাবে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধের পথে না গিয়ে মামলায় এগুনোর সিদ্ধান্তও একটি প্রশংসিত বিষয়। এক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের আইন চেয়ে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ এবং এর কাউন্টার হিসেবে গড়ে ওঠা হেফাজতে ইসলামের মতিঝিল তান্ডবের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রেও সরকারের ও দলসংশ্লিষ্টদের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে এ ক্ষেত্রেও কারও একক পরামর্শে নির্ভর করেননি শেখ হাসিনা।

সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করে খোলামেলা এক ঘরোয়া আলোচনায় বলেছিলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এর আগে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে শেখ হাসিনার ফোন করার সিদ্ধান্তও ছিল প্রধানমন্ত্রীর একক। ওই সময় দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ফোন না করার জন্য। কারণ এর আগে খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশ্যে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। আল্টিমেটামের সময়সীমার মধ্যেই ফোন করলে ওই যাত্রায় রাজনৈতিক কৌশলে খালেদা জিয়া জিতে যাবেন বলে যুক্তি ছিল নেতাদের।

কারণ আমাদের দেশের ভোটারদের প্রবণতা হচ্ছে, রাজনীতিতে বা আন্দোলনে জিতে যাওয়াদের ভোটেও জিতিয়ে দেয়া। ওই মন্ত্রী বলেন, কিন্তু নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিশ্চিত ছিলেন, এই জয় খালেদা জিয়া ক্যাশ (কাজে লাগানো) করতে পারবেন না। ফলে তা আওয়ামী লীগের পক্ষেই যাবে।

২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির পর বিএনপির টানা প্রায় তিন মাসের আন্দোলনের সময় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান। ওই সময় সন্তানহারা মা খালেদা জিয়াকে সান্তনা দিতে যান আরেক মা শেখ হাসিনা। এই সিদ্ধান্তও প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে মিয়ানমারের সঙ্গে রহিঙ্গা ইস্যুতে নেয়া সিদ্ধান্তও প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করাসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকেন তিনি। ওই সময় রহিঙ্গা শরণার্থীদের খাবার, ওষুধ ও নৌকার ইঞ্জিনের জন্য তেল সরবরাহ করলেও বানের ¯্রােতের মতো তাদের দেশে ঢুকতে দেয়নি প্রশাসন। বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গণকে বুঝিয়েছেন এ বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য। পরবর্তীতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গণ রহিঙ্গা ইস্যুতে তদন্তও করেছিল এবং স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরামর্শ নেন তাঁর একমাত্র পুত্র সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের। আর স্বাস্থ্য বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কখনো কখনো নিজের একমাত্র কন্যা সায়মা হোসেন ওয়াজেদ পুতুলের পরামর্শ নেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার তালিকায় প্রথমেই আছে এইচ টি ইমামের নাম। দ্বিতীয় নামটি হচ্ছে মসিউর রহমান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা গওহর রিজভী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা। চতুর্থ অবস্থানে আছেন তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। যিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা। পঞ্চম অবস্থানে আছেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক। তিনি নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তবে তাঁদের প্রায় সবাই কেবল কাগজে-কলমে উপদেষ্টা। মূলত সিদ্ধান্ত নিতে হয় প্রধানমন্ত্রীকেই। তবে কখনো কোনও বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ শুনলেও সার্বিক বিষয়ে কারও ওপর ভরসা করেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


বাংলা ইনসাইডার/এমএএম




মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এই সব সুশীলদের এখন কী হবে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি আছেন যাদেরকে মনে করা হয় তারা মার্কিনপন্থী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তারা গর্ব অনুভব করেন। কথায় কথায় মার্কিন দূতাবাসে যান। সেখানে প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজে মিলিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলে তারা তার চেয়ে তিন ধাপ গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কোন ভালবাসা নেই, প্রেম নেই, আগ্রহ নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই সমস্ত সুশীলদেরকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোফোন। 

গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই ধরনের সুশীলের প্রভাব প্রতিপত্তি বাংলাদেশে ব্যাপক লক্ষ্য করা গিয়েছিল। মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফোরামে তারা যেন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কণ্ঠস্বর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি, তখন এই সমস্ত সুশীলরা বাহবা দিয়েছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই বিভিন্ন টকশোতে, বিভিন্ন লেখালেখিতে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সময়ও সুশীলদের দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলতে। এতে যে দেশের ক্ষতি সেটি অনুভব করার সামর্থ্য তাদের নেই। আবার ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করল তখন এই সমস্ত সুশীলরা ভিসা নীতি নিয়ে যেন মার্কিন কূটনীতিকের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যখনই কোনো প্রতিনিধিরা আসতেন তখন এই সমস্ত সুশীলদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করতেন এবং এতেই বাজারে তাদের কদর বাড়ত। বিভিন্নভাবে তারা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতেন। আর এই সমস্ত সুশীলদের খুঁটির জোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন কথাটা সর্বত্র চাউর ছিল। কিন্তু সেই সুশীলরাই এখন অপাংক্তেয় হয়ে গেলেন। তারা এখন হতাশার সাগরে নিমজ্জিত। 

ডোনাল্ড লুর সফরে এবার চায়ের দাওয়াত পাননি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ডোনাল্ড লুর সঙ্গে তাদের দেখা সাক্ষাৎও হয়নি। এ নিয়ে তাদের ভীষণ মন খারাপ। বিশেষ করে হেফাজতের তাণ্ডবের সময়ে যিনি হেফাজতের কর্মীদের মৃত্যু আবিষ্কার করেছিলেন, মানবাধিকারের নামে যিনি সরকারবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত সেই আদিলুর রহমান খান প্রতিবারই মার্কিন দূতাবাসে দাওয়াত পেতেন। কিন্তু এবার তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এই বিতর্কিত তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত। 

জিল্লুর রহমান তৃতীয় মাত্রা উপস্থাপক। পিটার হাস রাষ্ট্রদূত হওয়ার পরপরই লাইমলাইটে আসেন জিল্লুর রহমান। তার সঙ্গে পিটার হাসের সখ্যতার কথা তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গায় বলে বেরিয়েছেন। ডোনাল্ড লু যখন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন ডোনাল্ড লুর সঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারেও আয়োজন করেছিলেন। একদা খুনি রশিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া এই বিতর্কিত উপস্থাপক মার্কিন অর্থায়নে এবং মার্কিন আর্থিক সহায়তায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কিন্তু এবার তিনিও অপাংক্তেয় ছিলেন। 

স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের প্রধান কাজ হল সরকারকে নানাভাবে সমালোচনা করা। সরকারের লক্ষ্য ত্রুটি বিচ্যুতি বের করাই যেন তাঁর একমাত্র মিশন। সেই রিজওয়ানা হাসানকেও এবার দাওয়াত দেয়নি মার্কিন দূতাবাস। আর এই সমস্ত ব্যক্তিদেরকে দাওয়াত না দেওয়া ফলে প্রশ্ন উঠেছে। 

তবে বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক দম নিজস্ব ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত বদিউল আলম মজুমদারের অনুপস্থিতি। বদিউল আলম মজুমদার প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাকে মনে করা হত তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে মূত্রপাত্র। এমন কী মার্সিয়া বার্নিকাটকে বিদায়ের আগে তাঁর বাসায় নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই বদিউল আলম মজুমদারের মার্কিন দূতাবাসে চায়ের দাওয়াত না পাওয়াটা বিস্ময়কর। প্রশ্ন হচ্ছে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি নিয়ে যে সব সুশীলরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদলেহন করেছেন তাদের এখন কী হবে?

সুশীল   ডোনাল্ড লু   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান   বদিউল আলম মজুমদার   আদিলুর রহমান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘ফিলিস্তিনের গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত’

প্রকাশ: ০৭:১৩ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, “গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (ডোনাল্ড লু) বলেছেন, ইউএস অত্যন্ত টায়ারডলেসলি (অক্লান্তভাবে) কাজ করছে যাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘তারা আশাবাদী’।”

‘আমরা বলেছি, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নিরীহ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি, তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে, সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য টায়ারলেসলি কাজ করছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। একইসাথে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তিনি সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।’

‘আমাদের আলোচনা সেই লক্ষ্যেই হয়েছে। একক দেশ হিসেবে আমাদের রফতানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। আমি ডোনাল্ড লু’কে অনুরোধ জানিয়েছি, বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ বাড়ায়। যদিও কিছু বিনিয়োগ তারা এরইমধ্যে করেছে।’


হাসান মাহমুদ   ডোনাল্ড লু   ফিলিস্তিন   গাজা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না দেওয়ার নির্দেশ

প্রকাশ: ০৬:১১ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানী ঢাকায় যেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঢাকার মধ্যে অটোরিকশা বন্ধে সম্মতি জানান।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার যখন রিকশাচালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন তারাও এই রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ইজি বা অটোরিকশা চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সভায় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


রাজধানী   ওবায়দুল কাদের   অটোরিকশা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পেছনে নয়, সামনে তাকাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: ডোনাল্ড লু

প্রকাশ: ০৫:৫৭ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং সহিংসতা মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিল। এখন আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই, পেছনের দিকে নয়।

বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ডোনাল্ড লু বলেন, আমাদের লোকজনের মধ্যে বিশ্বাস পুনর্নির্মাণের জন্য আমি গত দুইদিন ধরে বাংলাদেশ সফর করছি।

তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্ককে মজবুত করার জন্য উপায় বের করতে আজ আমি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আছে। যেমন র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম আইনের সংস্কার, মানবাধিকার এবং ব্যবসায়ীক পরিবেশ সংস্কার। এ সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আমাদের ইতিবাচক দিক নিয়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি বলেন, আমরা নতুন বিনিয়োগের কথা বলেছি। অধিক সংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করবে, এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। ক্লিন অ্যানার্জি নিয়ে কথা বলেছি।

তিনি বলেন, সর্বশেষ যে বিষয়টি নিয়ে আমি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, সেটা হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। আমরা যেটা করতে পারি সরকারের স্বচ্ছতা, সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার মাধ্যমে। আমরা করসীমা বাড়ানোর কথা বলেছি, যাতে বাংলাদেশ সেখান থেকে উপকৃত হতে পারে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করেন তিনি। বিমান বন্দরে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তরে আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক মাসুদুল আলম এবং বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে এটি তার প্রথম সফর। এ নিয়ে পঞ্চমবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু।

ডোনাল্ড লু   ড. হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ডোনাল্ড লু সফরে মার্কিনপন্থী সুশীলরাও কেন উপেক্ষিত?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করছেন। দু’দিনের সফরে প্রথম দিনে তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পিটার ডি হাসের বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল একটি বড় ধরনের চমক। অতীতে দেখা গেছে, যে কোন মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করলেই একগুচ্ছ সুশীলের সঙ্গে বৈঠক করতেন। সেই সুশীলরা সকলেই পরিচিত ছিল। এর আগেও ডোনাল্ড লু, আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে যে সমস্ত সুশীলদের সাথে দেখা করেছিলেন এবার তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন।

গত দুই বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে সমস্ত কর্মকর্তারা এসেছিলেন তারা বাংলাদেশের সুশীল সমাজের যে সমস্ত প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, বদিউল আলম মজুমদার, ড. স্বাধীন মালিক, ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান, তৃতীয় মাত্রার বিতর্কিত উপস্থাপক জিল্লুর রহমান, মতিউর রহমান, নুরুল কবিরের মত ব্যক্তিদেরকে। যারা সকলেই আওয়ামী বিরোধী এবং বিএনপি পন্থী হিসেবে পরিচিত। এদের কেউ কেউ স্বাধীনতাবিরোধীও বটে। এই সমস্ত বিরোধী পক্ষের সুশীলদেরকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক করত এবং এই ধরনের বৈঠকগুলোর পরে সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম বিষোদগার করা হত।

তবে এবার ডোনাল্ড লুর বৈঠকে এই সুশীলদের কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতিতে বড় পরিবর্তন বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। গতকালের বৈঠকে যে সমস্ত সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওম্যান সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার কর্মী মহম্মদ নুর খান, চাকমা সার্কেলের রানী ও মানবাধিকার কর্মী ইয়ানিয়ান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংগঠক সোয়ানুর রহমান, তরুণ সংগঠক মাহমুদা আক্তার মনীষা।

এটি সম্পূর্ণ নতুন একটি সুশীল প্রতিনিধি দল যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সুশীল পরিবর্তন কেন এ নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বদিউল আলম মজুমদার, আদিলুর রহমান খান ও জিল্লুর রহমানের মতো ব্যক্তিদের সঙ্গে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার না হওয়াটাকে অনেকে বিস্ময়কর মনে করছে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতিতে তার অবস্থান পাল্টেছে। বাংলাদেশ কৌশল পরিবর্তন করার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে মার্কিন নীতিও পরিবর্তন হয়েছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বাংলাদেশের বাজারে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান থাকে সে জন্য দেশটির তৎপরতা লক্ষণীয়। ডোনাল্ড লু সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকেও মার্কিন কম্পানিগুলোর অর্থছাড় বিষয়েও আলোচনা করেছেন।

সবকিছু মিলিয়ে নতুন সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কাজ করতে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এ কারনেই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগে যারা তাদের মিত্র ছিল সেই মিত্রদেরকে পরিবর্তন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নতুন সুশীলদের সঙ্গে সম্পর্ক করছেন। যারা এতদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গলাবাজি করত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণই যাদের দায়িত্ব ছিল তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অপাঙ্ক্তেয় হয়ে গেছে। আর এটি বোধহয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু হয় তাদের শত্রুর দরকার হয়না।


ডোনাল্ড লু   সুশীল সমাজ   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন