ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিপক্ষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ৩০ জুন, ২০২০


Thumbnail

করোনা মোকাবেলার শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড করছে, তাঁদের অযোগ্যতার পরিচয় দিচ্ছে, তাঁদের সমন্বয়হীনতা প্রকট আকারে দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি এবং অযোগ্যতা যত দিন যাচ্ছে তত প্রকাশ্য হচ্ছে। আর এসমস্ত বাস্তবতার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকি করার দায়িত্ব নেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকে তাঁদের পরামর্শ দেন যেন তারা জনকল্যাণ করতে পারে, জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বক্তব্য খণ্ডন করাই যেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে। আমরা যদি দেখে নেই যে করোনা পরিস্থিতির পর থেকে কিভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বক্তব্যের প্রতিপক্ষ হিসেবে কাজ করছে তাহলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে।

পিপিই এবং এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি

প্রধানমন্ত্রী যখন সারাদেশের সবগুলো জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যু্ক্ত হয়েছিলেন তখন তিনি বলেছিলেন যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে মাস্কগুলো দেওয়া হয়েছে সেই মাস্কগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের এবং সুরক্ষা সামগ্রীগুলোও মানসম্মত নয়। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের বললেন যে এন-৯৫ মাস্ক বলে যেগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো আসলে এন-৯৫ মাস্ক নয়৷ মোড়কে এন-৯৫ লেখা থাকলেও বাস্তবে তা নয়। একইসঙ্গে যে জিনিসগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে সেগুলো সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে কিনা, মোড়কে যা লেখা আছে তা ভেতরে ঠিকঠাকভাবে আছে কিনা তা যাচাই করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু এর পরপরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খণ্ডনের জন্য উঠেপড়ে লাগে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে সিএমএইচডি`র সাবেক পরিচালক পিপিই এবং এন-৯৫ মাস্ক নিয়ে যে দুর্নীতি হয়নি তার ফিরিস্তি দেওয়া শুরু করেন এবং উপর্যুপরি ৩ দিন এই ফিরিস্তিগুলো দেন। যেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যই খণ্ডন করছেন। এরপর সিএমএইচডি’র পরিচালককে বিদায় দিয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু বিদায় নেওয়ার সময় তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া চিঠিতে প্যানডোরা বাক্স খুলে দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির হোতা কারা, কিভাবে দুর্নীতি হচ্ছে তাঁর বিস্তারিত তুলে ধরেন।

দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতির কথা। তিনি বলছেন দুর্নীতি যারাই করবে, বিশেষ করে করোনাকালে যারা দুর্নীতি করবে তাঁদের ছাড় দেওয়া হবেনা এবং এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফ থেকে তদন্তের নির্দেশনা দেন। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি এবং তদন্ত রিপোর্টে যাদের নাম এসেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানা যায়নি।

এক ব্যক্তিকে পাঁচ দায়িত্ব

এই সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে এবং এটা যে এক প্রকার স্যাবোটাজ সেটা আরো স্পষ্ট হয় যখন করোনা মোকাবেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক এক ছাত্রদল নেতাকে। শুধু দায়িত্ব নয়, ঐ নেতাকে পাঁচটি দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছিল এবং এই বিষয়টি যখন প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে তখন প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সেই ব্যক্তিকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়নে গড়িমসি করে। এরপর নতুন সচিব আব্দুল মান্নান দায়িত্ব গ্রহণের পর এই ব্যাপারটি নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত অনেক বিলম্ব হলেও ডা. ইকবাল কবীরকে সেই পাঁচটি দায়িত্ব থেকে ওএসডি করা হয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডা. ইকবাল কবীরের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করে, ভাবখানা এমন যে যেন প্রধানমন্ত্রী ভুল বলছেন এবং তারাই সঠিক। 

বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা

বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং করোনা চিকিৎসা শুরুতে বিনামূল্যে ছিল। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে বেসরকারি হাসপাতালগুলো বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা করাবে এবং সরকার টাকা দিবে৷ কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলো করোনা চিকিৎসার জন্য সরকারি টাকাও যেমন নিতে শুরু করে অন্যদিকে জনগণের টাকাও হাতিয়ে নেওয়া অব্যহত রাখে। এই অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তিনি কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের নাম উল্লেখ করে বলেন যে যারা সরকারি টাকা নেওয়ার পর জনগণের টাকাও নিচ্ছে তাদের সরকারি টাকা বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘুমিয়ে ছিল। তাহলে কি বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গোপন যোগসাজশ ছিল? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বেসরকারি হাসপাতালগুলো এখন যেমন খুশী তেমন বিল হাঁকছেন, এটা নিয়ন্ত্রণে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর।

২০ কোটি টাকা ১ মাসের বিল

ঢাকা মেডিকেল কলেজে করোনা ইউনিট করা হয়েছে অনেক গড়িমসির পর এবং প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে। এইখানে চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়ার ১ মাসের বিল এসেছে ২০ কোটি টাকা। এই বিল নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরবর্তীতে এরকম আর বিল দেওয়া হবেনা মর্মে এবারের বিল ছাড় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন বিষয়টি অস্বাভাবিক, তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী যেন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিপক্ষ হয়ে উঠলেন, তিনি বললেন যে, বিল সব ঠিকই আছে, কোন বাড়তি বিল হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রী কি বলতে পারবেন যে, এই ১ মাসে কতজন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী ডিউটি করেছেন, কতটি হোটেলে থাকা হয়েছে, হোটেল ভাড়া কত হয়েছিল এবং অন্যান্য খরচ কি? তিনি  না জেনে বুঝে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান করলেন। এটা শুধু শিষ্টাচার বিরোধী নয়, বরং জাতীয় সংসদীয় নিয়মনীতির-ও পরিপন্থি। এভাবেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে। আসলে করোনা মোকাবেলা নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেন সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার মিশনে নেমেছে এবং এই মিশনে সফল হওয়ার জন্য সবাই যার যার অবস্থান থেকে প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নতুন সচিব আব্দুল মান্নান একাই যেন স্রোতের বিপরীতে লড়ছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পালনের জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের সময় অল্প কয়েকদিন এবং পুরো বিষয়টিই যখন একটি সিণ্ডিকেটের কাছে জিম্মি তখন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব একা কি করবেন সেটাও দেখার বিষয়।

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় পৃথক অভিযানে ৩ মাদক কারবারী আটক

প্রকাশ: ০১:৩৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

নওগাঁ বদলগাছীতে পৃথক অভিযানে ৪০০ পিচ ট্যাপেন্টাডলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানান র‌্যাব।

 

আটককৃতরা হলেন, নওগাঁ সদর উপজেলার চকবাড়িয়া গ্রামের মোঃ গফুর এর মেয়ে মোছা. মাহফুজা বেগম (৪৬), একই এলাকার চকরামচন্দ গ্রামের মোঃ গফির এর মেয়ে মোছা. নাহার বেগম (৪০), এবং বদলগাছী উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে মোঃ রুবেল হোসেন (৩১) ।

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা সকলেই চিহ্নিত মাদক কারবারী। তারা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকায় খুচরা ও পাইকারী বিক্রি করতো। এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত আসামীদেরকে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের সময় পৃথক অভিযানে নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার চকবনমালী ও মথুরাপুর এলাকা থেকে আটক করে।

 

আটকের পর আসামীদেরকে তল্লাশি করলে তাদের নিকট থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য ৪০০ পিচ ট্যাপেন্টাডল উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নওগাঁ জেলার বদলগাছী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


মাদক কারবারী   ট্যাপেন্টাডল   আটক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১২:২৮ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১১ মে) দেশের প্রাচীন পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬১তম কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল থেকে উন্নয়নই আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য। তবে উন্নয়ন পরিকল্পনা হতে হবে পরিবেশবান্ধব ও ব্যয় সাশ্রয়ী। যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কারণেই সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সম্পদের সীমাব্ধতা মাথায় রেখে কীভাবে উন্নয়ন সচল রাখা যায় সেদিকে প্রকৌশলীদের লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া যেকোন প্রকল্প সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই হওয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং নিজস্ব বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাফল্য ও ব্যর্থতা বিশ্লেষণ করে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল নির্ধারণ করতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

এবারের কনভেনশনের মূল প্রতিপাদ্য ‘ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’। কনভেনশনের মূল আকর্ষণ ‘দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স ফর ট্রান্সফরমিং টেকনোলজি ড্রাইভেন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ   আইইবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কক্সবাজারে সুপেয় পানির তীব্র সংকট


Thumbnail

খরা মৌসুম শুরু হওয়ার পূর্বেই কক্সবাজারে পানীয় জলের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শুকিয়ে গেছে জেলার ১ লাখ ৩০ হাজার অগভীর নলকূপের পানি। আর তীব্র গরমে এ পানি সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

 

তবে সংকট উত্তরণে সামুদ্রিক লোনা জলকে পরিশোধন করে স্বচ্ছ পানি সরবরাহের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রকল্প গ্রহনের জন্য গবেষণা কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কক্সবাজারের সহকারী প্রকৌশলী মনজুর আলম। তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের পাশাপাশি অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভের পানি উত্তোলনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দিন দিন পানির স্তর ক্রমাগতভাবে  নিচে নামছে।

 

জেলার অনেক এলাকায় নলকূপ গুলোতে পানি ওঠা বন্ধ রয়েছে। পানি উঠছে না বৈদ্যুতিক মোটরেও। পানির জন্য গ্রামের পর গ্রামে লোকজনের মধ্যে হাহাকার চলছে। যে পাড়ার নলকূপে পানি উঠছে, সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে এসে লাইন ধরে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন ভুক্তভোগীরা।

 

কক্সবাজার শহরে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে লবণাক্ততা। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব পড়ছে চরমভাবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে পানিতে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া বেড়ে গিয়ে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন ডা, আবদুর রহমান।

 

সুপেয় পানি সংকট উদ্বেগজনক জানিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, কক্সবাজারে এই সংকট মোকাবিলায় তারা কাজ করছেন।

 

কক্সবাজারের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান জানান, বর্তমানে কক্সবাজারে তাপমাত্রা উঠানামা করছে ৩৯ দশমিক ৮  থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয় সূত্র মতে, ২০১৭ সালে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জরুরি ভিত্তিতে পানি সরবরাহ করতে তারা বিভিন্ন ক্যাম্পে তিন হাজার অগভীর, ৮০টি গভীর এবং এনজিও সংস্থা আরও ২০০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। প্রতিদিন রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য ৩০ লাখ লিটার পানি উত্তোলন করা হচ্ছে।   অতিমাত্রায় পানি উত্তোলন ও তীব্র গরমের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসানো ৯০ শতাংশ অগভীর নলকূপ থেকে এখন পানি উঠছে না।

 

টেকনাফের হ্নীলা, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া, সাবরাং, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লেদা, দমদমিয়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে লবণাক্ততা।

 

উখিয়ায় দিন দিন পানির স্তর নিচে নামছে। কক্সবাজারের ঈদগাঁও সদর, পোকখালী, গোমাতলী, ইসলামপুরের অনেক নলকূপে পানি উঠছে না। অকেজো হয়ে গেছে অনেক বৈদ্যুতিক মোটরও।

 

কক্সবাজার শহরের নুরপাড়া, মাঝিরঘট, টেকপাড়া, নতুন বাহারছড়া, বদরমোকামসহ বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানের পানি পান তো দূরের কথা, গৃহস্থালি কাজেও ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

 

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা, ধরা কক্সবাজারের আহবায়ক ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে ধ্বংস করা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার একর বনভূমি। একইসঙ্গে প্রতিদিন ভূগর্ভ থেকে যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে মাটির নিচে সুপেয় পানি পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি হওয়ায় বাড়ছে পানির লবণাক্ততা। এখান থেকে রক্ষা পেতে হলে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

 

উখিয়া উপজেলা সদর রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকা এবং পাহাড়বেষ্টিত গ্রামগুলোতে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। নলকূপ অকেজো হওয়ার পাশাপাশি অকেজো হয়ে গেছে অনেক বৈদ্যুতিক মোটরও।

 

একইভাবে পানি সংকট চলছে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সোনাদিয়া দ্বীপেও। পুরো শুকনা মৌসুমজুড়ে এটি চলমান থাকতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।

 

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, লবণাক্ততা বাড়লে পান অযোগ্য পানিতে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যেতে পারে। ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া বায়বীয় ও অবায়বীয় দুই অবস্থাতেই থাকতে পারে। এ ব্যাকটেরিয়ার কারণে মূত্রনালীতে সংক্রমণ, রক্তে বিষক্রিয়া, মেনিনজাইটিস টাইফয়েড, ডায়রিয়া, বমি ও রক্তযুক্ত মল, মূত্রত্যাগের সময় ব্যথা, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ এবং প্রচণ্ড জ্বর হতে পারে।

 

কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুপেয় পানি সংকট দূর করতে রেইন ওয়েটার হার্ভেস্টিং প্রকল্প চলমান। বিশেষ করে রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত উখিয়া-টেকনাফের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে উখিয়ার পালংখালীতে ৬০০ একর জমি লিজ নিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, টেকনাফ, উখিয়া এবং কক্সবাজার শহর ও উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে এমন শঙ্কায় ওয়াটার-এনার্জি-লাইভলিহুড (ওয়েল) নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। চলমান রয়েছে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং প্রকল্প। সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুপেয় পানি সংকট দূর হবে। একইসঙ্গে সাগরের লবণাক্ত পানি পরিশোধন করে কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকদফা উচ্চ পর্যায়ের গবেষণা টীম কক্সবাজারের পানীয় জলের সংকট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। 

কক্সবাজার যেহেতু পর্যটন জোন, এখানে সারা বছর গড়ে লক্ষাধিক বহিরাগত লোকজন অবস্থান করেন।জেলার লোক সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ ও রোহিঙ্গা ১৪ লাখ সব মিলিয়ে ৪২ লাখ লোকের চাহিদা মেটাতে  যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন তার ৩৫ শতাংশ পানি পাওয়া যাচ্ছে শুধু।  আগামী দিনের চাহিদা মাথায় রেখে কক্সবাজারে সূপেয় পানির জন্য বৃহত্তর প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর নুরুল আবছার। একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ অনুযায়ী কক্সবাজার জেলায় সরকারী বেসরকারি ও এনজিও সংস্থার দেয়া গভীর অগভীর নলকূপ রয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার গভীর অগভীর নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না।


সুপেয় পানি   বিশুদ্ধ পানি   সংকট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আইইবির ৬১তম কনভেনশন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১২:১৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশের প্রাচীন পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬১তম কনভেনশনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১১ মে) সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ প্রাঙ্গণে এই কভেনশনের উদ্বোধন করেন তিনি।

এবারের কনভেনশনের মূল প্রতিপাদ্য ‘ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’। কনভেনশনের মূল আকর্ষণ ‘দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স ফর ট্রান্সফরমিং টেকনোলজি ড্রাইভেন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার।

পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত ৬১ তম কনভেনশনে সমাপনী অনুষ্ঠান, জাতীয় সেমিনারের উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্ব, শহীদ প্রকৌশলী পরিবারের সংবর্ধনা, চারটি স্মৃতি বক্তৃতাসহ বিদেশি অতিথিদের সংবর্ধণা এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে।

সোমবার দুপুর আড়ায়টায় জাতীয় সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিকাল সাড়ে তিনটায় কনভেনশনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ কাদের।


আইইবি   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেড় ঘন্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা

প্রকাশ: ১১:৫৯ এএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

টানা তীব্র তাপদাহের পর বেশ কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও গুড়ি গুড়ি, আবার কোথাও শিলাবৃষ্টি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সাত সকালে বজ্রসহ বৃষ্টি দেখা দিয়েছে রাজধানী ঢাকাতে।

শনিবার (১১ মে) ভোর থেকেই অন্ধকার নেমে আসে ঢাকাজুড়ে। সকাল সাড়ে ৭টার পর থেকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি। যা চলে প্রায় সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। আর দেড় ঘণ্টার এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়াদাবাদ, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায়, মোহাম্মদপুর, ইসিবি, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সকালে যারা কাজে বের হয়েছিলেন বৃষ্টির কারণে তাদের পড়তে হয়েছিল ভোগান্তিতে।

সকালে বৃষ্টির পর হাতিরঝিলের অংশ দিয়ে কারওয়ানবাজারে অফিসে যাওয়া হাসিবুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েকজায়গায় জলাবদ্ধতা পেয়েছি, এছাড়া আমার সহকর্মীরাও জানিয়েছে তাদের বেশিরভাগই পথে আসার সময় বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখেছে এবং ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

এদিকে সকাল সকাল কাজে বের হওয়া অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ভিডিওসহ জলাবদ্ধতার কারণে নিজেদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে পোস্ট করেছেন। সেই পোস্টগুলোতেও বিভিন্নজন বিভিন্ন এলাকার কথা উল্লেখ করেছেন।


রাজধানী   ঢাকা   বৃষ্টি   বজ্রপাত   শিলাবৃষ্টি   জলাবদ্ধতা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন