নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০২০
সরকারের জন্যে এখন সবথেকে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারের ভেতরে থাকা জামাত-শিবিরের অপতৎপরতা। সিভিল প্রশাসনে যেমন, তেমনি পুলিশ প্রশাসনে জামাতের ঘাপটি মারা লোকজন সরব হচ্ছে এবং তাঁরা বিভিন্ন অপকর্মে নিয়োজিত হয়ে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার চেষ্টা করছে। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল যে এটা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এখন দেখা যাচ্ছে যে এগুলো বিএনপি-জামাত-শিবিরের চক্রান্ত।
২০০৮ সাল থেকেই জামাত, শিবির এবং বিএনপি সিভিল প্রশাসন এবং পুলিশে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করতে থাকে। সরকারের উদারতার সুযোগে বিএনপি এবং জামাতপন্থি এই সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখনো আছে এবং কোন কোন সরকারি কর্মকর্তা মনে করছে যে, তাঁরা এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের চেয়েও শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী। এই জামাত-বিএনপিরাই সরকার যখন কোন সঙ্কটে পরে তখন তারা তাদের অপতৎপরতা শুরু করে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য সক্রিয় থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে ফাহাদ হত্যা বা করোনাকালের বিভিন্ন সঙ্কটে এটা সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, যারা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় জামাত-শিবির এবং বিএনপিপন্থীরা রয়েছে তারাই সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য নানারকম অপকর্ম করছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে যে, প্রশাসনে এত জামাত-শিবির এলো কিভাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মোটা দাগে পাঁচটি কারণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে-
১. আওয়ামী লীগের নেতাদের সুপারিশ
জামাত-শিবিরের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা বা পুলিশে থাকা কর্মকর্তাদের জন্যে পদোন্নতি বা ভালো পোস্টিংয়ের জন্যে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা সুপারিশ করেছেন। তাঁরা জেনে বা অনৈতিক প্রলোভনের শিকার হয়ে এই সুপারিশ করেছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, একজন জামাতপন্থি সরকারি কর্মকর্তাকে তাঁর জেলায় জেলা প্রশাসক করার জন্যে একজন এমপি সুপারিশ করেছিলেন। পরবর্তীতে ঐ এমপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এমপি বলেন যে, তাঁর একজন কর্মীর মাধ্যমে তিনি এসেছিলেন এবং নির্দোষভাবে ঐ সুপারিশ তিনি করেছিলেন। একইভাবে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন যে, বিএনপি-জামাতের লোকজন তাঁদের কথায় ওঠবস করবেন এবং তাঁদের বাধ্য থাকবে এই কারণেই তাঁরা অনেক সময় আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের থেকে জামাতপন্থী কর্মকর্তাদের পছন্দ করে।
২. আওয়ামীপন্থী সহকর্মীদের ভুল তথ্য
সাম্প্রতিক সময়ের একটি উদাহরণ দেওয়া যায়, একজন ভালো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, আওয়ামী পন্থী হিসেবে পরিচিত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সচিব, তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের রুমমেট, যিনি বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে হাওয়া ভবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং একজন মন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন, তাঁকে সচিব বানান এবং আওয়ামীপন্থী প্রভাবশালী ঐ সচিবের আগ্রহে এবং চেষ্টাতে বিএনপিপন্থী ঐ সরকারি কর্মকর্তা সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন। এরকম ঘটনা ভুঁড়ি ভুঁড়ি রয়েছে। সরকারের প্রশাসনে আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত তাঁরা তাঁদের বন্ধুবান্ধব বা অনুজদের সুপারিশ করেন এবং সেক্ষেত্রে তাঁরা ভুলে যান যে তাঁর আদর্শিক অবস্থান কি। এভাবেই প্রচুর জামাত-শিবির প্রশাসনের ভালো জায়গায় ঢুকে পড়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
৩. আওয়ামীপন্থী আত্মীয়দের তদবির
আওয়ামীপন্থী অনেক নেতা বা এমপি তাঁর জামাতপন্থী আত্মীয়দের জন্যে সুপারিশ করেন এবং তদবির করেন। এই সমস্ত তদবির হরহামেশাই ঘটছে এবং এই ধরণের সুপারিশ মাঝেমাঝে উপেক্ষা করা যায়না, ফলে তাঁদেরকে পদোন্নতি দিতে, গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিং দিতে হয়।
৪. কৌশলে ভোল পাল্টে ফেলা
জামাত-শিবির যেহেতু কৌশলে কাজটি করছে তাই তাঁরা কৌশলে ভোল পাল্টে ফেলতে পারে। অনেক সময় তাঁরা নিজেদেরকে নির্যাতিত হিসেবে জাহির করে, পদোন্নতি বঞ্চিত হিসেবে উপস্থাপিত করে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগার হয়ে যান। এভাবেও প্রশাসনে জামাত-শিবির এবং বিএনপির অনেক লোক জাঁকিয়ে বসেছেন।
৫. প্রভাবশালীদের আস্থা অর্জন
অনেক সময় জামাত-শিবির বা বিএনপিপন্থীরা নিজেদের দক্ষতা দিয়ে প্রভাবশালীদের আস্থা অর্জন করেন এবং প্রভাবশালী মহল সে কোন দল বিবেচনা না করে বরং তাঁদের দক্ষতাকে বিবেচনা করে। এরকমভাবেও অনেক জামাত-শিবির এবং বিএনপি প্রশাসনে ঢুকে পড়েছে।
তবে এখন এটা ভাবার সময় এসেছে যে, এই সমস্ত আদর্শবঞ্চিত বা ভিন্ন আদর্শপন্থী সরকারি কর্তাদের পদোন্নোতি দেওয়া বা গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া উচিত কিনা। কারণ তাঁরা সঙ্কটের সময় অন্যরূপে আবির্ভূত হয় এবং তারাই সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করে।
মন্তব্য করুন
চার ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত (তৃতীয় ধাপ) ২০৪ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এরমধ্যে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তৃণমূলের ৫৫ নেতাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। আর প্রথম ধাপে ভোটের জন্য ৮০ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৬৯ জনকে বহিষ্কার করে দলটি।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ কোনো নির্বাচনে অংশ না নিচ্ছে না বিএনপি। গত ১৬ এপ্রিল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই। তাই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না দল।
দেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হয়। এই ধাপের নির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত ৭ জন চেয়ারম্যান পদে, ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করে বলেও জানা যায়।
দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন।
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।