নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার ব্যাক্তিগত পরিচয়ের বয়স ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে। ১৯৮১ সালে তিনি যখন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন তখন থেকে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন তৎকালীন বদরুননেছা কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সহ সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। এছাড়া আব্দুর রাজ্জাক সেসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এবং আরও অনেক নেতারাই ছিলেন। আমরা সকলেই তখন বিভিন্ন অবস্থা পর্যালোচনা করে মত দিয়ে ছিলাম যে; শেখ হাসিনার সে সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করা ঠিক হবে না। কারণ আমরা চিন্তা করছিলাম নির্বাচনে তিনি তো হারবেনই; ভোটে হারবেন এইটা ছিলো দেখার বিষয়। কারণ ছাত্র ইউনিয়ন তখন খুবই শক্তিশালী সংগঠন ছিলো বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে। আর সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ ছিলো খুবই দুর্বল।
কিন্তু নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শেখ হাসিনা খুবই দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন। তিনি বললেন ‘আমার নিজস্ব কর্মী বাহিনী আছে; আমি নির্বাচনে দাঁড়াবো এবং নির্বাচনে জিতব’ শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করার ব্যাপারে অনড় থাকলেন।
ইতিমধ্যে তৎকালীন গর্ভনর মোনায়েম খান প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলেন ‘শেখ মুজিবের মেয়ে যদি এই নির্বাচনে জিতে তাহলে ৬ দফার প্রতি ম্যানডেট যাবে’ সুতরাং এই জয় ঠেকাতেই হবে।
মোনায়েম খানের ঘোষণার পর আমরা আরও বেশি ঘাবড়িয়ে গেলাম। ভাবলাম জেতার আর কোন সম্ভাবনা নাই। ঢাকা মেডিকেলের হোস্টেল যেহেতু কাছেই তাই ওই নির্বাচনে আমি কিছু পোস্টার লেখা, চা-সিঙ্গারা এনে দেওয়ার কাজ করেছিলাম। তিনি অবশ্য বত্তৃতাতে অনেক জায়গায় খুব বলেন; আমি তার নির্বাচনে অনেক কাজ করেছি। আসলে খুবই সামান্য কাজ করেছি তখন। তখনকার দিনে কর্মীর সংখ্যাও কম ছিল।
ভোট গ্রহণের পর আমি,অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল নুরুল হোসেন এবং আইসিডিডিআর,বিতে কর্মরত ড: ইউনুস ভাই; আমরা তিনজন মিলে নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা করছিলাম। এরপর যখন নির্বাচনের রেজাল্ট বের হলো তখন দেখা গেল উনি প্রায় ৭৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন। তার বিপক্ষে যিনি ছাত্র ইউনিয়ন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন তিনি খুব শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন এবং তার ভাইও ছাত্র ইউনিয়নের নামকরা নেতা ছিলেন।
প্রথম দিকে উনি যখন দেশে ফিরেন তখন বত্রিশ নম্বরে সাধারণত সন্ধ্যা ৬ টার দিকে উনি ওপরের তলায় চলে যেতেন এবং সারা রাত নামাজ,কোরআন পড়তেন এটাই ছিলো তার ১৫ই আগস্টের রুটিন।
বর্তমান সময়ের কথা বলি, এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে, বিশ্বে সরকার প্রধান হিসেবে উনি সব্বোর্চ সময় আসীন আছেন। উনার সমকক্ষ কোন দেশের কোন রাষ্ট্র প্রধান দেখা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার মতো প্রজ্ঞাবান, অভিজ্ঞ আর কোন প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রেই একের পর এক সফলতা অর্জন করছেন। কোন ক্ষেত্রেই তাঁর ব্যর্থতা নাই।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরেন তখনও এদেশে কার্ফু বলবৎ ছিলো। রাতে কার্ফু থাকতো। তিনি আন্দোলন সংগ্রাম করে এই কার্ফু প্রত্যাহার করেন। ১৯৭৫ থেকে ২১ বছর সংগ্রাম করে অগণতান্ত্রিক পথে যারা ক্ষমতায় ছিলো তাদেরকে বিতাড়িত করে আওয়ামীলীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনেন। তারপরে গণতান্ত্রিক পথে রাষ্ট্রকে পরিচালিত করছেন।
শেখ হাসিনা একটা জিনিস মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন সেটি হচ্ছে ‘মানুষ একবারই জন্মগ্রহণ করে এবং তার মৃত্যু একবারই হবে। যার জন্য ১৫ আগষ্ট এবং ২১ আগষ্ট তিনি বেঁচে গেছেন।
শেখ হাসিনার বিজ্ঞতা,প্রজ্ঞা এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার সাথে যুক্ত হয়েছে তার সাহস। আমার মতে, এই সাহসের মূল কারণ হচ্ছে; তিনি যেকোন সময় জনগণের খেদমত করতে যেয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্য একদম প্রস্তুত। আমরা মুখে বলি কিন্তু উনি কাজে বিশ্বাসী।
আমরা যত যাই বলি, যদি সত্যিকারের মৃত্যুর মুখোমুখি হই তাহলে চেষ্টা করবো কোন রকম আবার বেঁচে থাকা যায় কি না।
কিন্তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। তিনি তার জীবন বাঁচানোর জন্য সামান্যতম গুরুত্ব দেন না। তিনি জনগণের সেবা করা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশেকে সোনার বাংলায় রুপান্তরিত করার ওপর গুরুত্ব দেন।
তিনি এই পথে সফল হচ্ছেন । তার জন্মদিনে সৃষ্টিকর্তার কাছে একটি প্রার্থনাই থাকবে; আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবী করেন। সুস্থ রাখেন। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারেন সেজন্য আল্লাহ যেন তাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রাখেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন না। তিনি মনে করেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তার জন্য দায়িত্ব।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
আজিজ আহমেদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
কিছুদিন আগেও বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র বলতে অন্ধ থাকত। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ফোন আসলে বিএনপির নেতারা নাওয়া খাওয়া ভুলে ছুটে যেতেন। এমনকি কোনদিন সকালে মার্কিন দূতাবাসে প্রাতরাশ, রাতে নৈশভোজেও দেখা গেছে বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা অবতার হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এনে দেবে, যুক্তরাষ্ট্রই এই সরকারের পতন ঘটাবে এমন একটা স্থির বিশ্বাস ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সেই মোহভঙ্গ ঘটেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনাগ্রহী বিএনপি। এটা যেন অনেকটা আঙুল ফল টকের মতো ঘটনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।