নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৯ এএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আজ ২৮শে সেপ্টেম্বর - জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। প্রতিটি মানুষের জীবনে জন্মদিন একটি বিশেষ দিন। এই দিনে প্রিয়জনদের কাছ থেকে আসে অনেক অনেক শুভ কামনা, শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ। ভালবাসার মানুষটির জন্য সবাই কামনা করে সুখ, শান্তি ও সফলতা। কিন্তু আজ আমি জাতির পিতার কন্যার ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতার কথা জানাতে চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রপরিচালনায় জনকল্যানে স্বাভাবিক নিয়মের বাইরে এসেও কিছু কাজ করেন যা এদেশের মানুষের কাছে হয়ত কোন দিনই প্রকাশ পাবে না। তাই আজ আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনকেই বেছে নিলাম আমার জানা কিছু অসাধারণ ঘটনা জনগণের কাছে প্রকাশ করার জন্যে।
অক্টোবর, ২০০৯ সাল। কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন কেন্দ্রে সরকারের ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর আওতায় বিরাট চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। আমি তখন ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর লাইন ডাইরেক্টর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আই ক্যাম্পে আগত চোখের রোগীদের সাথে কথা বলতে যুক্ত হলেন। অনুষ্ঠানে তখনকার মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, শেখ কবির হোসেন ও শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সহ গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়ার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার সাথে দীর্ঘক্ষন বাংলাদেশের অন্ধত্ব নিবারণ নিয়ে কথা বলেন এবং পরবর্তীতে রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। তিনি আমাকে ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর মাধ্যমে সারাদেশের দরিদ্র মানুষের বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ প্রদান করেন এবং তার জন্য যা যা দরকার তা করে দেয়ার নিশ্চয়তাও দেন। তাঁরই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশ ব্যাপী সরকারীভাবে চক্ষু চিকিৎসা সেবার বিস্তার ঘটেছে। বর্তমানে ন্যাশনাল আই কেয়ার কর্মসূচীর মাধ্যমে সরকারী ও বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই লক্ষেরও অধিক ছানি জনিত অন্ধ রোগীর চোখে অপারেশনের মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
২০১১ সাল। ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে স্যার ফজলে হাসান আবেদের সাথে কোন এক সভা চলাকালীন সময়ে তিনি আমাকে বাংলাদেশের অন্ধত্ব নিবারণে ন্যাশনাল আই কেয়ারের সাথে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বৃহওর সিলেটে ভিশন বাংলাদেশ নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে অন্ধত্ব দূরীকরনে কাজ শুরু করতে চান। আমি বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে অবহিত করি। আমার কথা শুনে তিনি সাথে সাথে আমাকে ব্র্যাকের লিখিত প্রস্তাবনা তাঁর দপ্তরে পাঠাতে নির্দেশ দেন এবং তিনি এও বলেন যে, উক্ত প্রস্তাবে বিদেশ থেকে কত টাকা আনা হবে এবং রোগীদের চিকিৎসার জন্য কত টাকা খরচ করা হবে তা যেন পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকে। আমি বিষয়টি স্যার ফজলে হাসান আবেদকে জানানোর পর তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তার প্রস্তাব পেশ করেন। আমি ব্র্যাকের প্রস্তাবটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করার এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পিএস ২ ব্র্যাকের সাথে কাজ করার প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির কথা আমাকে জানিয়ে দেন। বিদেশ থেকে আনা অনুদানের টাকার সিংহভাগ গরীব মানুষের চক্ষু চিকিৎসা বাবদ ব্যয় করা হবে নিশ্চিত হয়েই সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্র্যাকের সাথে কাজের অনুমতি দিয়েছিলেন। ব্র্যাক পরে ন্যাশনাল আই কেয়ারের পার্টনার হিসাবে ভিশন বাংলাদেশ প্রকল্প নিয়ে অত্যন্ত সফলতার সাথে সিলেট বিভাগে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কাজ করে। ব্র্যাকের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে তিন বছরে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এক লক্ষ দশ হাজার ছানি জনিত অন্ধ রোগী আবার তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়।
২০১৮ সালের আরেকটি ঘটনা। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষন প্রতিষ্ঠান, গোপালগঞ্জকে কেন্দ্র করে চারিদিকের ৮টি জেলার ২০টি উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ন্যাশনাল আই কেয়ার সারাদেশ ব্যাপী কমিউনিটি ভিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠার কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রাম গঞ্জের মানুষ সারা বছর ব্যাপী বিনামূল্যে ছানি অপারেশন, চশমা ও ঔষধপত্র সহ আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবার সুযোগ পাবে। প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের দরিদ্র মানুষের চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিরবিছিন্ন রাখার জন্য ২০ কোটি টাকার সরকারী অনুদান প্রদান করেন যা ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে রাখা হবে এবং এর লভ্যাংশ বিশেষ প্রয়োজনে হতদরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যয় করা হবে এই নির্দেশনাও তিনি দিয়ে দেন।
উল্লেখযোগ্য আরেকটি ঘটনা। গাজীপুরের কাশিমপুরের তেঁতুইবাড়ীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট কর্তৃক একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। হাসপাতালটির নাম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল। প্রতিদিন এই হাসপাতালে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচুর দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। তাদের মধ্যে অনেকেই অর্থের অভাবে চিকিৎসা খরচ চালাতে পারে না। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে মালয়েশিয়ার কেপিজে গ্রুপ। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গণ এই হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করে থাকে। হাসপাতাল পরিচালনায় কেপিজে গ্রুপকে বিরাট অংকের ব্যয়ভার বহন করতে হয় কাজেই চাইলেই সংখ্যাতিরিক্ত গরীব রোগীকে স্বল্প মূল্যে বা নাম মাত্র মূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। আমি প্রথম থেকেই প্রতি শনিবার উক্ত হাসপাতালে একজন চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে কাজ করি এবং কিছুটা দেখাশোনা করি বিধায় এ ব্যাপারে অবগত হই। আমি বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করি এবং তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলি যে একজন গরীব মানুষের শুধু টাকা নেই বলে এই হাসপাতালে কোন চিকিৎসা পাবে না তাহলে যার নামে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার প্রতি অবিচার করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাথে সাথে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। তিনি গরীব দুঃখী মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালটির নামে ২০ কোটি টাকার অনুদান দিয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিট খুলে দেন এবং বলে দেন যে ফিক্সড ডিপোজিটের লভ্যাংশ থেকে অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার খরচের ভর্তুকি মিটানো হবে। বর্তমানে ফিক্সড ডিপোজিটের লভ্যাংশ থেকে অসহায় মানুষ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছে।
এছাড়াও আমার জানা মতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসার জন্য আগত দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ের ভর্তুকির জন্য ২৫ কোটি টাকার অনুদান দিয়ে একটি ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়া হয়েছে। বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য মহোদয় বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছেন।
উল্লেখিত ঘটনাগুলো অসাধারণ মানবিক কাজ বলে চিরদিন বিবেচিত হবে। ঘটনাগুলোর আমি স্বাক্ষী বলে জানাতে পারলাম। জনকল্যানে এমন আরও বহু কাজ দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছেন যা হয়ত এদেশের মানুষ কোনদিন জানবেও না। এই কাজগুলো একজন প্রধানমন্ত্রীর দৈনন্দিন রুটিন কাজের মধ্যে পরে না। অনেক দেশের সরকার প্রধানের কাছে এসকল কাজ বাড়তি বলে মনে হতে পারে কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি হলো গণমানুষের কল্যানের রাজনীতি। তিনি তো হলেন জাতির পিতার কন্যা। রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ করাই তাঁর রাজনীতির দর্শন। তিনি তো তাঁর জীবন বহু আগেই বাংলাদেশের গরীব দুঃখী মানুষের কল্যানে উৎসর্গ করেছেন। বার বার বুলেট ও গ্রেনেড আক্রমন থেকে অলৌকিক ভাবে বেঁচে আসা এক অকুতোভয় নেতাকে হয়তো মানুষের কল্যানের জন্যই মহান আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন। আজ তাই তাঁর এই শুভ জন্মদিনে বলতে চাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য শেখ হাসিনা অপরিহার্য। এদেশের মানুষের জন্য তাঁর ভালবাসার প্রতিদান দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। শুধু এই টুকুই বলবো - অনন্য শেখ হাসিনা, তিনি অসাধারণ ও অতুলনীয়।
জন্মদিনে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে জানাই হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা। তার জীবন হোক নতুন সকালের ন্যয় পবিত্র, সজিব ও উজ্জ্বল। তাঁর খ্যাতি হোক জগৎ জুড়ে, ব্যাপ্তি হোক আকাশ সমান। মহান আল্লাহ তাঁকে সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু দান করুন।
অধ্যাপক ডাঃ দীন মোহাম্মদ নূরুল হক,
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সাবেক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য।
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চীন সফর ভারত যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।
বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায় না তখন বিএনপি নেতারা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও করেছিলেন।
আবার ডোনাল্ড লু নির্বাচনের আগে যখন বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তখন বিএনপি নেতাদের প্রকাশ্যে মার্কিন বন্দনা করতে দেখা গেছে। ২৮ অক্টোবরের আগ পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই মার্কিন দূতাবাসে বা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বাসভবনে বিএনপির নেতাদের আনাগোনা ছিল। তারা সেখানে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন, নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন এবং বিভিন্ন রকমের শলাপরামর্শ করেছেন।
পিটার ডি হাস গত বছরের ১০ অক্টোবর বিএনপি যখন সমাবেশ করতে পারেনি তখনও একতরফা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি বিতর্কিত সংগঠন মায়ের ডাকের এক নেতার বাসায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বিএনপির প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি জানিয়েছিলেন। এভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির উপর এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সমর্থন এবং সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহানুভূতি এবং পরোক্ষ সমর্থনের কারণেই বিএনপির আন্দোলনের পালে হাওয়া লেগেছিল। নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি চাঙ্গা ভাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। যদিও ২৮ অক্টোবরের পর এই ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং এই আহ্বানের চিঠি নিয়ে পিটার ডি হাস তিনটি দলের নেতাদের কাছে গিয়েছিলেন এবং একটি সংলাপ আয়োজনের শেষ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সংলাপ আয়োজনে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই সাড়া দেয়নি।
এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে এবং ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া এবং নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু’র আগে আফরিন আক্তার নির্বাচনের পরে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন এবং সেই সময় তিনি হোটেল ওয়েস্টিনে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ আফরিন আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যদিও সেই সাক্ষাতের পর তারা কোনও কিছুই সাংবাদিকদেরকে জানাননি। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। আর এটি বিএনপির মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপি মনে করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদেরকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছেন না, পাত্তা দিচ্ছে না। বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বিএনপি নেতারা দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়ালসহ যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং মার্কিন দূতাবাসে যাদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তাদেরকে দুষছেন। তারা মনে করছেন যে, বিএনপির মধ্যেই সমস্যা রয়েছে। বিএনপির নেতারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারেননি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিএনপির বক্তব্যগুলো তারা সঠিকভাবে ও যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। আর একারণেই ডোনাল্ড লু’র সফরের পর বিএনপির মধ্যে চলছে এক ধরনের হতাশা।
ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি
মন্তব্য করুন
আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী, দলের ভেতর সুবিধাবাদী, লুটেরা এবং দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। কিন্তু ২৩ জুনের পর আওয়ামী লীগের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্র্যাকডাউন হবে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং দলের সুনাম নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করবে। আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আওয়ামী লীগ এবং তার আদর্শিক জোট ১৪ দলের নেতাদের চীন সফরে হিড়িক পড়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর এই চীন সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানামুখী আলাপ আলোচনা। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের চীন সফরের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছেন। তবে তারা এই বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। বিষয়টি তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই মনে করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বিএনপির আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করবে; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণ সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবে না- এমন বক্তব্যগুলো বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে বহুল প্রচারিত ছিল। বিএনপির সব নেতারা প্রকাশ্যেই এ কথা বলত।