নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
অক্টোবরে এসে তত্বাবধায়ক সরকার বিপর্যস্ত হয়ে পরে। ২১ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সেনা সদস্যদের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মেরুকরণ সৃষ্টি করে। এই আন্দোলনের রেশ ধরে নীল ও সাদা গ্রুপের শিক্ষকদের গ্রেপ্তারের ঘটনা সারাদেশে ক্ষোভ অসন্তোষ সৃষ্টি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন, রাজশাহী সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছড়িয়ে পরে। ছাত্র এবং শিক্ষক আন্দোলনের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষকে তত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এসময় রাজনীতিতে তৃতীয় ধারা বা বিকল্প সৃষ্টির যে চেষ্টা তাও ফিকে হয়ে যেতে শুরু করে। এরকম পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা তত্বাবধায়ক সরকার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, তারা বিকল্প কিছু ভাবতে শুরু করেন। এসময়ই গণতান্ত্রিক উত্তরণের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়। এই প্রেক্ষিতেই কারা অন্তরীণ দুই নেত্রীর সঙ্গে সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয় সেনাবাহিনীর কয়েকজন। জেনারেল মঈন এই উদ্যোগে সমর্থন জানান। জাতীয় সংসদে, সাবজেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে যান, বিগ্রেডিয়ার বারী এবং বিগ্রেডিয়ার আমিন। এইচ টি ইমাম এবং গওহর রিজভীর উদ্যোগেই এই সংলাপ প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই মুগ্ধ হন, বারী এবং আমিন। মাতৃত্বসুলভ স্নেহ দিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) ঐ দুই সেনা কর্মকর্তাকে স্বাগত জানান। তাদের চা-মুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন করেন। বারী ও আমিন যে তার গ্রেপ্তারের প্রধান কারণ, এটি শেখ হাসিনার অজানা থাকার কথা নয়। তিনি তার গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কোন ক্ষোভ এবং উষ্মা প্রকাশ করেন নি। বিগ্রেডিয়ার আমিন ও বারীর প্রথম বৈঠক ছিলো, দুই ঘণ্টার বেশী। এসময় দ্রব্যমূল্য কিভাবে হ্রাস করা যায়, সে ব্যাপারে শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তিনি ভোটার পরিচয় পত্রের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বিগ্রেডিয়ার বারী তাকে দুর্নীতির ব্যাপারে প্রশ্ন করলে, শেখ হাসিনা মৃদু হেসে বলেন ‘দেখো আমি জাতির পিতার মেয়ে। জাতির পিতা চাইলে নিতে পারতে না বাংলাদেশে এমন কিছু নেই। রাজনীতি আমাদের কাছে পবিত্র দায়িত্ব।’ তিনি বলেন, ‘তোমরা যদি আমার দুর্নীতির কোন প্রমাণ পাও আমাকে জানিয়ো।’ শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে তাদের বলেন, ‘তোমাদের সামনে এখনো সুযোগ আছে। যতো দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে তোমরা চলে গেলে, এদেশের মানুষ খুশি হবে।’ এরপর আরো কয়েকবার শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক হয়, সেনা কর্মকর্তাদের।
আগামীকাল পর্ব-৩২: খালেদা সেনা কর্মকর্তাদের বললেন একটাকেও ছাড়বো না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।