নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
১ অক্টোবরে রাতেই নির্ধারিত হয়ে যায় যে বিএনপি জামায়াত দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে বিজয়ী হয়েছে এবং তারাই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ১০ অক্টোবর সরাকার গঠনের দিন ধার্য করা হয় আর মন্ত্রীসভা গঠনের দিন ধার্য করা হয় ৬ অক্টোবর। মন্ত্রীসভা চূড়ান্ত করতে হাওয়া ভবনে নিলাম ডাকে তারেক জিয়া। এই নিলামের বিরোধীতা করেছিলেন বিএনপির কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং তারা মন্ত্রীত্বের এ ধরনের বেচাকেনার তীব্র আপত্তি করেন। সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা খালেদা জিয়ার বাসভবনে দেখা করেন ৫ অক্টোবর। সেখানে গিয়ে তারা বলেন যে, এভাবে নিলাম করাটা অশোভন এবং রাজনীতির অবমাননাকর। যারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন সাইফুর রহমান, মান্নান ভূঁইয়া, সাদেক হোসেন খোকা, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও তরিকুল ইসলাম। এরা সকলেই বিএনপিতে তারেক বিরোধী বলে পরিচিত ছিলো।
ওই বৈঠকে খালেদা জিয়া এদেরকে আশ্বস্ত করেন যে আপনারা সকলেই মন্ত্রী থাকবেন, তারা যাই করুক তার ব্যাপারে আপনারা হস্তক্ষেপ করবেন না। যথারীতি ৬ অক্টোবর রাতে হাওয়া ভবনে নিলাম অনুষ্ঠিত হয় এবং তরুণদের প্রাধান্য ছিলো। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ওই নিলামে যোগদান করেছিলেন এবং সব কাজের জন্য ২৫ শতাংশ চাঁদা দেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি সবাইকে চমকে দেন। আর এই চমকে দেয়ার মাধ্যমেই তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন। তার সঙ্গে শর্ত ছিলো তিনি মাসে হাওয়া ভবনের জন্য অন্তত ৫০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করবেন। আর এই শর্তেই যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিলামে পান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তবে তার ওপরে পুরোপুরি আশ্বস্ত ছিলো না তারেক এবং মামুন। আর এ কারণে নাজমুল হুদার পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেয়া হয় হাওয়া ভবনের একনিষ্ঠ সালাউদ্দিন আহমেদকে।
নিলামে মন্ত্রিসভা গঠনের সবচেয়ে বড় চমক ছিলো লুৎফুজ্জামান বাবর। নেত্রকোনার একটি আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। বাবরের অতীত ইতিহাস ছিলো খুবই করুন এবং বিতর্কিত। তিনি বিমানবন্দরের লাগেজ চোরাচালান দলের নেতৃত্ব দিতেন এবং এই জন্য তার নাম হয়েছিলো লাগেজ বাবর। ১৯৮৬ এবং ৮৮ সালে এই চোরাচালানের দায়ে দুবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি তার এই চোরাচালানের পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করেছিলেন। এরপর নেত্রকোনায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে এলাকায় মনোনয়ন বাগিয়ে নেন এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত হন। বাবর নগদ ১০০ কোটি টাকা দিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন যদিও তাকে প্রথমে আশ্বস্ত করা হয়েছিলো যে এই মন্ত্রণালয়ে কোনো পূর্ণ মন্ত্রী থাকবেন না। কিন্তু পরবর্তীতে এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীত্ব দেয়া হয় খালেদা জিয়ার পছন্দে। অবশ্য আলতাফ হোসেন বেশি দিন থাকতে পারেননি।
হাওয়া ভবনের যে নিলাম সে নিলাম থেকে পরবর্তীতে বাবরকে পূর্ণ মন্ত্রীত্ব দেয়া হয়। নিলামে অংশ নিয়েছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক। তিনি সব কাজে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ হাওয়া ভবনকে দেয়ার অঙ্গীকার করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আর মোর্শেদ খান হাওয়া ভবনের নিলামে না এলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। তবে এই নিলামে আরেকটি চমক ছিলো তা হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়। যারা এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলো তাদের কাউকেই পছন্দ হয়নি তারেক-মামুনের। আর এ কারণে হাওয়া ভবনের আগ্রহেই মাহমুদুর রহমানকেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা করা হয় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা হওয়ার পরই মাহমুদুর রহমান খাম্বা প্রকল্প চালু করেন। আর এই খাম্বার মাধ্যমেই হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেন তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুন।
পর্ব-৩ : টাকা দিয়ে সচিব হওয়ার মিছিল
মন্তব্য করুন
সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন শুরুর আগে কর্মসূচি প্রণয়ন ও আন্দোলন পরিচালনায় শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি চায় বিএনপির মিত্ররা। তারা মনে করে, লিয়াজোঁ কমিটি না থাকায় বিগত আন্দোলন পরিচালনায় এক ধরনের সমন্বয়হীনতা ছিল।
কারণ, যুগপতের সব দল ও জোটের সঙ্গে বিএনপির পৃথক বৈঠক শেষে তাদের স্থায়ী কমিটিতে কর্মসূচি চূড়ান্ত হওয়াকে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আন্দোলনের সঠিক প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করে না শরিকরা, বিশেষ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। তাই এবার এ প্রশ্নে একটা সিরিয়াস মীমাংসা চান মঞ্চের নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে বুধবার (১৫ মে) রাতে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, প্রতিটি জোট ও দল থেকে একজন করে নিয়ে ১০-১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই লিয়াজোঁ কমিটিতে আলোচনার ভিত্তিতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণীত হবে। তার আগে নিজ নিজ দল ও জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট নেতারা বৈঠকে উপস্থিত হবেন।
নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনসহ অতীতের আন্দোলনগুলোতে লিয়াজোঁ কমিটি এভাবে কাজ করেছে। কিন্তু বিগত আন্দোলনে এ প্রক্রিয়ায় কর্মসূচি প্রণীত হয়নি। পাঁচ-দশ মিনিট আগে মিত্রদের কর্মসূচির বিষয়ে জানানো হতো এবং কর্মসূচির সঙ্গে সহমত না হলেও সেটাই তারা ঘোষণা করতেন। বৈঠক সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
যুগপৎ আন্দোলন পুনরুজ্জীবিত করে সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঈদুল আজহার পর মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের কর্মকৌশল নির্ধারণে পরামর্শ নিতে গত রোববার থেকে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে দলটি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এনডিএম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এবং মিয়া মসিউজ্জামান ও ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়াও এর আগে গত সোমবার বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা দূরীকরণে যুগপতের সব দল ও জোট থেকে দু-একজন করে নিয়ে শক্তিশালী লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ওপর জোর দেন সমমনা জোটের নেতারা।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাব
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী মার্কিন বিরোধী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ঢাকা-৮
মন্তব্য করুন
১৯৮১ সালের ১৭ মে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এক বৃষ্টিমুখর দিনে। সেই দিনে লাখো মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউতে জড়ো হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে দেখার জন্য। তাদের শোক এবং আবেগ ছিল হৃদয়স্পর্শী। সারা বাংলাদেশ উত্তাল হয়েছিল। জাগরণের এক গান গেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। এই সরকার পুরোপুরিভাবে নতজানু সরকারে পরিণত হয়েছে। শুধু ফারাক্কা নয়, গঙ্গার পানি নয়, বাংলাদেশের ১৫৪টি নদীতে পানি দিতে তারা গড়িমসি করে যাচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, এ করছি, এ হচ্ছে এমন করে সময় শেষ করছে সরকার। এ যে ব্যর্থতা এর মূল কারণ হচ্ছে, সরকারে যারা আছে তারা পুরোপুরিভাবে একটা নতজানু সরকার।