নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪১ পিএম, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭
গেল সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বস্ত্র খাতের স্টাইল ক্রাফট ও মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার দর দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে যায়। এছাড়া দর বাড়ার কোনো কারণ ছাড়াই ৯ কার্যদিবসে প্রায় ১৯ শতাংশ বেড়ে যায় ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারের দাম।
গত সপ্তাহেই দ্বিগুণ হয়ে গেছে বস্ত্র খাতের কম মূলধনের কোম্পানি স্টাইল ক্রাফটের শেয়ারের দাম। ১১ অক্টোবর কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এ কোম্পানির শেয়ারের দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়ে যায়। একদিনেই শেয়ারটির দাম এক হাজার ২৯ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৭৫০ টাকায় দাঁড়ায়। যা গত ২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ডিএসইর ওয়েব সাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২ অক্টোবর থেকেই বাড়ছিল স্টাইল ক্রাফটের শেয়ার দর। এর মধ্যে ১১ অক্টোবর লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে নিয়ম অনুযায়ী শেয়ারের দামের ওপর কোন সীমা আরোপ করা ছিল না। ফলে এক লাফেই আকাশ ছোঁয়া দাম বেড়ে যায়।আর এতেই সপ্তাহ শেষে ৬৪ দশমিক ২ শতাংশ দাম বেড়ে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে কোম্পানিটি। মাত্র সাড়ে ৫ কোটি টাকা মূলধনের এ কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা সাড়ে ৫ লাখ। এর মধ্যে আবার উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতেই রয়েছে ৩ লাখ শেয়ার।বাকি শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
এদিকে এক বছর পর লভ্যাংশ ঘোষণা করেই গত সপ্তাহে ৪৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ দর বেড়েছে জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি মেট্রো স্পিনিংয়ের।২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেওয়ায় দুর্বল মৌল ভিত্তির হিসেবে জেড ক্যাটাগরিতে নেমে যায় কোম্পানিটি। এবারো ১০ অক্টোবর মাত্র ২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেই একদিনে শেয়ারের দাম ২৯ শতাংশ বেড়ে যায়।ওই দিন প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গেল সপ্তাহেই ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারের দামও বেড়ে যায় অস্বাভাবিক হারে।আর এজন্য ১১ অক্টোবর দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠায় ডিএসই।তবে বরাবরের মতোই দাম বাড়ার পেছনে কোন মূল্য সংবেদনশীল কারণ নেই বলে দায়সারা জবাব দিয়েছে কোম্পানিটি। ওয়েব সাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকেই টানা দর বাড়ছে এ কোম্পানির।দুই সপ্তাহ আগেও এ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল ৩৬ টাকা ৭০ পয়সা। তবে ১৯ শতাংশ দাম বেড়ে গত সপ্তাহের শেষ দিন শেয়ারের দর দাঁড়ায় ৪৪ টাকা ৩০ পয়সায়।
এদিকে, শেয়ারবাজারে আইনি সীমার বেশি বিনিয়োগের জন্য সাত ব্যাংককে বড় অঙ্কের জরিমানার ঘটনায় গত সপ্তাহে পাঁচ কার্য দিবসের মধ্যে তিন দিনই দরপতন হয়েছে।এতে করে সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে সূচক কমেছে ১৩৭.৯০ পয়েন্ট।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগের কারণে জরিমানার করায় ব্যাংক খাতে কিছুটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এতে অন্যান্য ব্যাংকও সতর্ক হয়ে যায়। ফলে বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।তবে সূচক কমলেও গত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ২৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।এসময় ডিএসইতে ৪ হাজার ৬২২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯৫২ কোটি ৪৫ টাকা বেশি।আগের সপ্তাহে ৩ হাজার ৬৭০ কোটি ৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। এ সপ্তাহেও লেনদেনে এগিয়ে ছিল ব্যাংকিং খাত।লেনদেনে শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় ৭টিই ছিল ব্যাংক খাতের দখলে। গেল সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেচঞ্জেও সার্বিক সূচক কমেছে ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।আর লেনদেন হয়েছে ২৩২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশিদের প্রায় ৫ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের অফশোর সম্পদ আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। যা বাংলাদেশের মোট জিডিপির প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এই সম্পদের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে, বাকিটা ইউরোপ ও আমেরিকায়।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ট্যাক্স
অবজারভেটরির প্রকাশিত অ্যাটলাস অফ অফশোর ওয়ার্ল্ড শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব জানা গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অফশোর
বিনিয়োগের ২০২২ সালের তথ্য দিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ট্যাক্স হেভেনে বিদেশি
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান স্বল্প কর দিয়ে বা বিনা করে বিনিয়োগ করতে পারেন। আর বিনিয়োগকৃত
এই সম্পদকে অফশোর সম্পদ বলা হয়।
২০২১ সালে ট্যাক্স হেভেনে বাংলাদেশিদের
মালিকানাধীন অফশোর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ১৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা
এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল সিঙ্গাপুর, আরব
আমিরাত, হংকংসহ
এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনগুলোতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, না
জানিয়ে এই অফশোর বিনিয়োগে শূন্য দশমিক ৫ বিলিয়ন কর পাওয়া যায়নি বলে অনুমান করা যায়।
এতে আরও দেখা গেছে, ট্যাক্স
হেভেনে রিয়েল এস্টেট খাতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ করা মোট অফশোর সম্পদের পরিমাণ শূন্য
দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশের জিডিপির শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগের বেশিরভাগই
সিঙ্গাপুর ও দুবাইতে। এছাড়া লন্ডন ও প্যারিসে কিছু বিনিয়োগ হয়েছে এ খাতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, 'অফশোর রিয়েল এস্টেট
শেষ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীর মালিকানাধীন হয় কিংবা জটিল অফশোর কাঠামোর মাধ্যমে
ভিন্ন দেশের কোনো বাসিন্দার মালিকানাধীন হয়ে থাকে যেখানে প্রকৃত মালিকের পরিচয় অস্পষ্ট
থাকে।'
অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং
প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) সাম্প্রতিক একটি অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অন্তত
৩৯৪ জন বাংলাদেশি দুবাইয়ের ৬৪১টি আবাসিক সম্পত্তির মালিক, যার আনুমানিক মূল্য প্রায়
২২৫ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার। সংস্থাটি ২০২২ সাল থেকে এ অনুসন্ধান পরিচালনা করেছে।
ওসিসিআরপি বলছে, দুবাই
অফশোর বিনিয়োগের জন্য জনপ্রিয় কারণ 'পলাতক অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও ফিরিয়ে দেওয়ার
ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আমিরাত যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখায় না।'
এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, 'তদন্তাধীন বা অন্য কোথাও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ
হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিরা কীভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই এই সম্পদ কিনতে পারে এবং মালিক হয়ে
যেতে পারে তা বোঝা কঠিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিজেদেরই এসব ঘটনা চিহ্নিত করতে পারা
উচিত এবং সম্পদগুলো টার্গেট করে সন্দেহজনক কিছু মনে হলে বিদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোয়েন্দা
তথ্য শেয়ার করা উচিত।'
মন্তব্য করুন
প্রায় এক মাস হতে চলল বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে গতকাল এ ব্যাপারে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে সাংবাদিকরা কেন প্রবেশ করবে না বাংলাদেশ ব্যাংকে, তার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। যখন আর্থিক খাতে নানা রকম বিশৃঙ্খলা, ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে তালগোল পাকাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, ডলার নিয়ে চলছে তেলেসমাতি কারবার; তখন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা নানা রকম গুজবকে উস্কে দিচ্ছে। এর ফলে সংবাদমাধ্যমগুলোতে আর্থিক খাত নিয়ে নানা রকম নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হচ্ছে এবং এই সমস্ত খবরগুলো সরকারের ইমেজ নষ্ট করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
একলাফে ডলারের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া, সুদের হারের নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে দেওয়া কিংবা ব্যাংক একীভূতকরণ; সবগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এক লেজেগোবরে অবস্থায় চলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের কাছে প্রকৃত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করা এবং প্রত্যেকটি কাজের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করাটা জরুরি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক অদৃশ্য কারণে সে পথে হাঁটছে না। এই না হাঁটার ফলে নানা রকম গুজব এবং নেতিবাচক সংবাদ উস্কে দেওয়া হচ্ছে।
কদিন আগেই রিজার্ভ চুরি নিয়ে এক গুজব ছড়ানো হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই তথ্য নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হল, বাংলাদেশ ব্যাংকে যখন গণমাধ্যমের অবাধ প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তখন মানুষ গুজবকে বিশ্বাস করা শুরু করেছে। যেকোন একটি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার তথ্য অধিকার আইন করেছে। এদেশের প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমবান্ধব। তিনি যে কোন বিদেশ সফর করে এসে সংবাদ সংবাদ সম্মেলন করেন এবং এই সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সঙ্গে সব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যদি গণমাধ্যমের জন্য অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করেন, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক কেন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে?
বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে টকশোগুলোতে সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ব্যক্তিরা এসে নানা রকম সমালোচনা করছে এবং এই সমস্ত সমালোচনা কোনরকম সেন্সরশিপ ছাড়াই করা হচ্ছে। সরকারের যখন এই অবস্থান তখন বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত। তাহলে কি বাংলাদেশ ব্যাংকে কোন ভূত আছে? যারা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট, সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করার জন্য কাজ করছে।
কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় এক মাস ধরে এই পদক্ষেপের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকার। দেশে অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে, এ কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এ রকম একটা বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংক গণমাধ্যমকে কোন তথ্য দেবেন না, গণমাধ্যম বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারবে না- এটি এটির পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
অনেকেই মনে করছেন, কেউ কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভিতরে থাকা কোন ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে এই সব ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে যেন সরকারের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়, গুজব ছড়ানো সহজ হয় এবং অসত্য মিথ্যা তথ্য যারা পরিবেশন করছে তাদেরকে উস্কে দেওয়া হয়। অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে কোন তথ্যই গোপন রাখা যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে কোন তথ্য গোপন করতে পারেনি। তারা ডলারের দাম বৃদ্ধির আগেই সব খবর প্রকাশ করেছে। স্ক্রলনীতির সংবাদ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণার আগেই প্রকাশিত হয়েছে। কাজেই বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এভাবে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাহলে সরকারই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সরকারকে ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্যই কী বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন কোন মহল সক্রিয়?
বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিক গণমাধ্যম অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে এক হাজার ২৫৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এসব প্রকল্পের মধ্যে বড় ১০টি মেগাপ্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে,
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের
সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এনইসি সভায় আগামী
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য
উপস্থাপন করা হবে। এর আগে গত ৭ মে পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় আগামী অর্থবছরের এডিপির
খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বর্ধিত সভা সূত্রে জানা গেছে, চলতি
অর্থবছরে এডিপির আকার ছিল দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে এবার এডিপির আকার
বাড়ছে দুই হাজার কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরে আকার কমে দাঁড়ায় দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি
টাকা। সেই হিসাবে নতুন অর্থবছরের এডিপির আকার বাড়ছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত এডিপিতে এক হাজার ৩৩৭টি
প্রকল্প রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প রয়েছে ৭৯টি।
জানা গেছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে
সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫১ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উনয়ন কর্মসূচি প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে,
মেট্রো রেল লাইন-১ প্রকল্প, পাওয়ার গ্রিডের নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ প্রকল্প এবং পদ্মা
রেল ও বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল প্রকল্প। এসব প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ
পাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্প।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এই প্রকল্পের
জন্য আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে চতুর্থবারের
মতো এই গুচ্ছ কর্মসূচি শুরু হয়। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্প শেষ করতে আগামী এডিপিতে
এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পের আওতায় খরচ হবে ৩৮ হাজার ২৯১ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে রূপপুর
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০
হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১
লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭১ হাজার ৮৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে মাতারবাড়ী
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ছয় হাজার পাঁচ কোটি
টাকা। এরপরে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে তিন
হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। ‘ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট: মেট্রো রেল
লাইন-১’ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ তিন হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।
এ ছাড়া পাওয়ার গ্রিডের নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণ
প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে তিন হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে
বরাদ্দ তিন হাজার ৫৪৪ কোটি, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম
পর্যায়) প্রকল্পের জন্য রাখা হয়েছে তিন হাজার ৫৩৫ কোটি, এক্সপাংশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং
অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া শীর্ষক প্রকল্পের জন্য তিন হাজার
৩৮৪ কোটি এবং পাঁচটি হাসপাতাল ৫০০ শয্যা উন্নীতকরণ প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তিন
হাজার কোটি টাকা।
এদিকে প্রস্তাবিত এডিপি অনুযায়ী ৫৮টি
মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের
জন্য। স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা
হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।
এ ছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ৯ হাজার
৩৭১ কোটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য ৯ হাজার ২২৭ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা
মন্ত্রণালয়ের জন্য চার হাজার ৯০৩ কোটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জন্য চার হাজার ৫৮৮ কোটি,
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য চার হাজার ৪২৫ কোটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের
জন্য দুই হাজার ৯২৭ কোটি এবং সেতু বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই হাজার ৫০০ কোটি
টাকা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন
পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর
নির্দেশনা অনুযায়ী এবার যেসব প্রকল্প শেষ হওয়া সম্ভব, সেগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত
বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরও সেভাবে কাজ করায় ভালো সুফল পাওয়া গেছে। প্রকল্প শেষ
করতে এবার প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পরিকল্পনা কমিশন এবং আইএমইডি সবাই তৎপর ছিল,
যার ফলে ৩৩৪টি প্রকল্প এবার শেষ হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আগে প্রকল্প বাস্তবায়নে
অনেক ক্ষেত্রে গাফিলতি ছিল। সেই সঙ্গে দক্ষতার অভাব, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়া অনুমাননির্ভর
প্রকল্প নেওয়া এবং বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ ঠিকমতো না করায় সময়মতো প্রকল্পের বাস্তবায়ন
হতো না। পরে আমরা চেষ্টা করেছি ওয়ার্ক প্ল্যান নেওয়ার।’
মেগাপ্রকল্প পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অর্থবছর এডিপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রিজার্ভ চুরি বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্ক
মন্তব্য করুন
প্রায় এক মাস হতে চলল বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে গতকাল এ ব্যাপারে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে সাংবাদিকরা কেন প্রবেশ করবে না বাংলাদেশ ব্যাংকে, তার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। যখন আর্থিক খাতে নানা রকম বিশৃঙ্খলা, ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে তালগোল পাকাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, ডলার নিয়ে চলছে তেলেসমাতি কারবার; তখন বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা নানা রকম গুজবকে উস্কে দিচ্ছে। এর ফলে সংবাদমাধ্যমগুলোতে আর্থিক খাত নিয়ে নানা রকম নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হচ্ছে এবং এই সমস্ত খবরগুলো সরকারের ইমেজ নষ্ট করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এতে এক হাজার ২৫৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এসব প্রকল্পের মধ্যে বড় ১০টি মেগাপ্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে।