ইনসাইড এডুকেশন

স্কুলে হাজিরা, কোচিংয়ে লেখাপড়া!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:২৩ এএম, ১৭ অক্টোবর, ২০১৭


Thumbnail

শিক্ষার্থীরা এখন আর শেখার জন্য বা লেখাপড়ার জন্য স্কুলে যায় না। স্কুলে যায় হাজিরার জন্য, শিক্ষার্থী হিসাবে স্কুলের তালিকায় নাম থাকার জন্য। পড়ার জন্য, শেখার জন্য বা পরীক্ষার ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য ছোটে কোচিং সেন্টারে। ব্যতিক্রম ছাড়া এ চিত্র পুরো দেশের।

শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের এ ধারণার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। হাজিরা নিতেই সময় পার হয়ে যায় বা পার করেন। তারাও জানেন শ্রেণিকক্ষে না শেখালেও শিক্ষার্থীরা কোনো না কোনো কোচিং সেন্টারে গিয়ে পড়া শিখবে, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাবে। তাই শ্রেণীকক্ষে শেখানোর এত তাড়া নেই। চিত্রটি এমন, কোচিংগুলোই এখন আমাদের মূল ব্যবস্থা; স্কুলগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

কোচিং সেন্টার বা শিক্ষকদের সৃষ্ট প্রাইভেট হোমে প্রতিদিন সকাল-বিকেল-রাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্রোত নামে। স্কুল-কলেজের সমান্তরালে শ্রেণিকক্ষের মতো আয়োজন করে এসব জায়গায় পড়ানো হচ্ছে, স্কুলের আদলে পরীক্ষা হয়, ক্লাস হয়, দেওয়া হয় হোম ওয়ার্ক। স্কুলের চেয়ে কোচিং সেন্টারের পড়াতেই বাধ্য হন অভিভাকদের। এ কারণে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার পর বিরক্ত ও ক্ষুদ্ধ অভিভাবরা সন্তানকে নিয়ে ছোটেন স্কুলে এবং কোচিং সেন্টারে।

গত কয়েকদিন রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্যের প্রমাণ মেলে। শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের স্কুলের সময়টা অপচয়ই হয়। এর চেয়ে কোচিংয়ে গেলে কিছু শেখা যায়। কোচিংয়ে বিষয়গুলো প্রাকটিস করে যেতে হয়। নিয়মিত কোচিংয়ে পরীক্ষা হয়। তাই কোচিংয়ের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। এ কারণে স্কুলে কোনো হোমওয়ার্ক দেওয়া হলেও তা করা হয় না। শিক্ষকদের ম্যানেজ করে নিতে হয়। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি এবং শিক্ষকদের প্রাইভেট-কোচিংমুখীকেই দায়ী করছেন অভিভাবকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেজাল্ট ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। শেখার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি হওয়া দরকার। শিক্ষার্থীরা কি শিখল এটা এখন গুরুত্ব পায় না, গুরুত্ব পায় সে কতটা ভালো ফল করেছে। আর ভালো ফলের জন্য ছুটছে এক কোচিং থেকে অন্য কোচিংয়ে।

আরিফা আক্তার। রাজধানীর মিরপুরের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থী। স্কুল সময়  সকাল ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত। এরপরই তার বাসায় ফেরার কথা। কিন্তু সে বাসায় ফেরে বিকাল ৫ টায়। স্কুল শেষেই আরিফা স্কুলের পাশেই একটি কোচিং সেন্টারে যায়। সেখানেই সময় কাটায় প্রায় ৪ ঘন্টা। কোচিংয়ের দেওয়া হোম ওয়ার্ক, পরীক্ষা নিয়েই পুরো ব্যস্ত সময় কাটে তারা। এই শিক্ষার্থীর বক্তব্য, স্কুলে লেখাপড়া হয় না। স্যারেরা তেমন গুরুত্ব দিয়ে পড়ান না। তাই কোচিংয়ের বিকল্প নেই। স্কুলে গুরুত্ব দিয়ে শেখালে এবং প্রাকটিস করালে কোচিংয়ে যেতে হতো না।

আরিফার সঙ্গে পুরোটা সময় ব্যয় করেন তার মা। স্কুল এবং কোচিং এই দুই জায়গায় গিয়ে পড়াশোনার কারণে বিরক্তও সে। কিন্তু নিরুপায়। তাঁর বক্তব্য, সবাই করছে। তাই আমারও এভাবে কষ্ট করতে হচ্ছে। স্কুল এবং কোচিংয়ের পেছনেই খরচ করতে হচ্ছে ৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

তারিকুল ইসলামের স্কুলের ক্লাস শুরু সাড়ে ১২ টায়। কিন্তু সকাল ৮ টা থেকেই সে বাসা থেকে বের হয়। সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত একজন শিক্ষকের কাছে গণিত, নয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আরেকজন শিক্ষকের কাছে পদার্থ । দুপুর ১১টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত এক কোচিংয়ে গিয়ে পড়ছে রসায়ন। এর পর বাসা থেকে টিফিন বক্সে আনা খাবার খেয়ে হাজির হয় স্কুলে। ক্লান্ত শরীরে কোনোরকম ক্লাসগুলো পার করে।  ভয় একটাই, স্কুলে হাজির না হলে আবার স্কুলে খাতা থেকে নাম কাটা যাবে।

আমিরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানিয়েছেন, শিক্ষাব্যবস্থা দিন দিন কোচিং সেন্টার নির্ভর হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানের স্কুল থেকে শুরু করে নগরের নামিদামি স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারে নিয়ে ভর্তি করাচ্ছেন অভিভাবকরা। আর এসব কোচিং সেন্টারে ভর্তি করিয়ে সন্তানদের ব্যয় মেটাতে রীতিমতো হিমশিম। অভিভাবকরা বলছেন, স্কুলগুলোতে মানসম্পন্ন পড়াশোনা না হওয়ায় অপরাগ হয়েই তাঁদের কোচিং সেন্টারমুখী হতে হচ্ছে।

কোচিং প্রাইভেট বাণিজ্য বন্ধে সরকার ২০১২ সালে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা জারি করে। ওই নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকদের নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগ নেই। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড়জোর ১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এ নীতিমালা কাগজেই বন্দী। আলোর মুখ দেখে না।

শিক্ষামন্ত্রীও শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকদের প্রতি। তিনি বলেন, শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনির মাধ্যমে শিক্ষক সমাজকে কলুষিত করছে। প্রাইভেট টিউশনি কোচিং বন্ধে আইন প্রনয়ণ করার কথাও বলেন তিনি।

মফস্বলের স্কুলগুলোতে পঞ্চম, অষ্টম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমে যায়। অনুপস্থিত শিক্ষার্থীরা স্কুল বাদ দিয়ে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও টিউটোরিয়াল হোমে ভিড় করে।

তবে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, একটি শ্রেণীকক্ষে ৮০ থেকে একশ’র বেশি শিক্ষার্থীকে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটে কি শেখানো যাবে। হাজিরা নিতেই তো সময় চলে যায়। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যা জানতে চায় তা সময়ের অভাবে জানতে পারছে না। শেখানো যাচ্ছে না। তাই তারা বাধ্য হয়েই কোচিং সেন্টারমুখী হচ্ছে। তিনি এ কারণে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটিকে দায়ী করেন।

তবে শুধু শিক্ষকরাই নয় ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে কোচিং বাণিজ্যের ব্যবসাও এখন জমজমাট। স্কুলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের সুযোগ নিতে চাইছে এই চক্র। স্কুলের আশপাশ ঘিরে এসব কোচিং সেন্টার যেন এক একটি স্কুল।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, স্কুলে শিক্ষা ব্যবস্থা ততটা ভালো নয়। প্রতি শ্রেণীকক্ষে ৬০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। যত ভাল পড়ানো হোক না কেন তেমন ফিডব্যাক পাওয়া যায়। এই সুযোগে  কোচিং সেন্টারে বিশেষ পদ্ধেিত পাঠদান করায়। প্যাকেজ প্রোগ্রাম করে। শিক্ষার্থী কম। প্রায় প্রতিদিনই পরীক্ষা নেয়। এ কারণে ভালো হোক মন্দ হোক শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারের দিকে ঝুকছে।

ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ নুর আলম বলেন,  শিক্ষার্থী ও শিক্ষক অনুপাত বেশি হওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। স্কুলে লেখাপড়া একেবারে হয় না, এমন তথ্য ঠিক নয়। তবে সময় কম থাকায় শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের শেখার চাহিদা মেটানো যায় না।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (পরিচালক) অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, অভিভাবকরা শেখার চেয়ে নম্বর বেশি পাওয়ার দিকে নজর দিচ্ছে। এ কারণেই ছুটছে কোচিং সেন্টারের দিকে। তিনি বলেন, এখনো শিক্ষক রয়েছে যাদের ক্লাস করার জন্য শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকে। তবে এ সংখ্যা বেশি নয়। শিক্ষার মান উন্নয়নে শ্রেণীকক্ষের মান উন্নয়নে শিক্ষকদের নজর দিতে হবে।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড এডুকেশন

নটর ডেম কলেজে একাদশে ভর্তির আবেদন শুরু ২৫ মে

প্রকাশ: ০৩:১৬ পিএম, ১৮ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ২৫ মে থেকে নটর ডেম কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হবে। চলবে ৩০ মে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বছর আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। সম্প্রতি কলেজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে মিশনারি প্রতিষ্ঠানটি। বছর বিজ্ঞান, মানবিক ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় মোট হাজার ২৯০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে বাংলা মাধ্যমে হাজার ৮১০টি এবং ইংরেজি মাধ্যমে ৩১০টি আসন রয়েছে। এছাড়া মানবিক বিভাগে ৪১০টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।

আগ্রহী শিক্ষার্থীরা কলেজের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। আবেদনের পর প্রবেশপত্রের প্রিন্ট আউট কপি সংগ্রহ করতে হবে। সময় অফেরতযোগ্য ৪০০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।

আবেদনের যোগ্যতা

বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের জিপিএ- থাকতে হবে। অবশ্যই এসএসসিতে উচ্চতর গণিত বিষয় থাকতে হবে। বাংলা ইংরেজি উভয় মাধ্যমের ক্ষেত্রে নিয়ম প্রযোজ্য। এছাড়া মানবিক বিভাগের জন্য জিপিএ-.০০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য জিপিএ-.০০ থাকতে হবে।

এছাড়াও বিভাগ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে চাইলে তার এসএসসিতে কমপক্ষে জিপিএ-.৫০ পেতে হবে। আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে মানবিক বিভাগে যেতে হলে জিপিএ-.৫০ থাকতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষা চূড়ান্ত মনোনয়ন

আবেদনকারী সব প্রার্থীকে ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার তারিখ সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে। এসএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ কলেজে লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে চূড়ান্তভাবে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হবে।

চূড়ান্তভাবে ভর্তির জন্য মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা ভর্তির তারিখ এবং সময় কলেজের ওয়েবসাইট, নোটিশ বোর্ড এবং ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হবে। ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে ভর্তি হলে ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে এবং টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। এদিকে, ভর্তির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মিশনারি পরিচালিত প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় আনা হবে।

ভর্তি পরীক্ষার বিষয়সমূহ

এসএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যারা বিজ্ঞান শাখা থেকে মানবিক ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তির আবেদন করবে, তাদের বিজ্ঞান শাখার প্রশ্নে এবং যারা ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে মানবিক শাখায় ভর্তির আবেদন করেবে, তাদের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে।

বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার বিষয় বাংলা, ইংরেজি, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন জীববিজ্ঞান। মানবিক বিভাগে পরীক্ষার বিষয় বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি সাধারণ জ্ঞান। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার বিষয় বাংলা, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান, আইসিটি সাধারণ জ্ঞান। পরীক্ষাসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে।


নটর ডেম কলেজ   একাদশ   ভর্তি   আবেদন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড এডুকেশন

একাদশের ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে

প্রকাশ: ০১:২৭ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী, অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হবে ২৬ মে। তিন ধাপে আবেদন চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত। আর ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে।

বুধবার (১৬ মে) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।

শিডিউল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৩ জুন। শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চয়ন করতে হবে ২৯ জুনের মধ্যে। দ্বিতীয় ধাপে ভর্তি আবেদন শুরু হবে ৩০ জুন থেকে। যা চলবে জুলাই পর্যন্ত।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ হবে জুলাই। একই দিন পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের ফলও প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চয়ন শুরু হবে জুলাই থেকে। যা চলবে জুলাই পর্যন্ত।

একাদশ শ্রেণির ভর্তি সংক্রান্ত শিডিউলে বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে তৃতীয় ধাপে ভর্তি আবেদন শুরু হবে জুলাই থেকে। চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপের মাইগ্রেশন এবং তৃতীয় ধাপের ফল ১২ জুলাই প্রকাশিত হবে। তৃতীয় ধাপের ভর্তি নিশ্চয়ন করতে হবে ১৩ থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে।

সকল ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি শুরু হবে ১৫ জুলাই থেকে। ভর্তি কার্যক্রম চলবে ১০ দিন। অর্থাৎ ২৫ জুলাই একাদশ শ্রেণির ভর্তি শেষ হবে। আর একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে।


একাদশ   ক্লাস   জুলাই  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড এডুকেশন

১৭ বছর বয়সে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন

প্রকাশ: ০৯:৪৬ এএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

ডরোথি জিন টিলম্যান যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুধু যে নিজে পড়াশোনা করেছেন তাই নয়, সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইনস্টিটিউটও। অল্প বয়সে এত বড় একাডেমিক সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন মায়ের উৎসাহ সহযোগিতাই তাঁকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে।

সবচেয়ে চমকপ্রদ যে তথ্যটি ডরোথি জিন দিয়েছেন তা হলো, মা তাঁকে ১০ বছর পর্যন্ত বাসায় রেখে পড়াশোনা করিয়েছেন, যা তাঁকে তাঁর নিজের গতিতে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে সাধারণ স্কুলের থেকেও দ্রুত বিভিন্ন শিক্ষা স্তর পার হতে পেরেছেন। এরপর মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি কলেজে ভর্তি হয়ে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেন। ১২ বছর বয়সে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং ১৪ বছর বয়সে এমএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

ডরোথি তাঁর পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন এবং উচ্চ স্তরের পাঠ্যক্রম গবেষণার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। তাঁর নিজের চেষ্টা পরিশ্রমের পাশাপাশি তাঁর মা পরিবারের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ডরোথির মা জিমালিটা টিলম্যান বলেন, ‘যখন অনেক ছোট, তখনই তিনি খেয়াল করেন ডরোথি গণিতে অনেক ভালো। আমাদের চাইল্ড কেয়ার প্রোভাইডার মিস মেরি প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন যে ডরোথির যখন তিন-চার বছর বয়স, তখন থেকেই সে দুই অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা নিয়ে কাজ করতে পারে। আমরা তার লেখাপড়ার প্রতি ভালোবাসা দেখে সত্যিই আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাই।

জানা যায়, ২০১৬ সালে ডরোথি ১০ বছর বয়সে কলেজ অব লেককাউন্টি থেকে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি নিয়ে ফেলে। ১২ বছর বয়সে আলবেনিস এক্সেলসিয়র কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্ট গণিতসম্পর্কিত স্টেম (STEAM) বিষয়গুলোতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন ডরোথি। ফলে তিনি ১৪ বছর বয়সে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। সিদ্ধান্ত নেন অন্য বাচ্চাদের তাঁর মতোই একই ক্যারিয়ার বেছে নিতে সহায়তা করার। ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা করেন ডরোথি জিনিয়াস স্টেম লিডারশিপ ইনস্টিটিউট।

পড়াশোনা, গবেষণা নিজের ইনস্টিটিউটের কাজ সামলে ১৭ বছর বয়সে এখন তিনি . ডরোথি জিন টিলম্যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়ে তাঁর অনুভূতি জানাতে গিয়ে লেখেন, ‘আমি খুশি যে আচরণগত স্বাস্থ্যশিক্ষার ওপর ডক্টরেট সম্পন্ন করতে পেরেছি। অনেক মানুষকে আমার ধন্যবাদ জানানোর আছে আমাকে সমর্থন সহযোগিতার জন্য। কিন্তু মুহূর্তে শুধু আমার নম্বর চ্যাম্পিয়ন আমার মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।


শিকাগো  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড এডুকেশন

জিপিএ-৫ পেয়েও ‘নামি’ কলেজে ভর্তি কঠিন!

প্রকাশ: ১০:১৫ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে কয়েক বছর ধরেই শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের এমন উৎকণ্ঠায় প্রশ্ন উঠেছে—এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার চেয়েও কি কঠিন ‘নামি’ কলেজে ভর্তি হওয়া?

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড, প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকরা বলছেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর চেয়ে কলেজে আসন সংখ্যা বেশি। তবে সব প্রতিষ্ঠান মানসম্পন্ন নয়। হাতে গোনা কিছু কলেজ সবার পছন্দের শীর্ষে। সবাই পছন্দের কলেজে ভর্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। এতে শেষ পর্যন্ত কলেজ পেতেও বেগ পেতে হয় তাদের। জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকে কাঙ্ক্ষিত কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পরে অনেকে অন্য কলেজ কিংবা পলিটেকনিকেও ভর্তি হতে বাধ্য হন।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর দ্বিগুণ আসন
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি বোর্ডে মোট পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী। অথচ দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজ, মাদরাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট আসন প্রায় ৩৪ লাখ। সেই হিসাবে সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও ফাঁকা থাকবে অর্ধেকের বেশি আসন।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঁঞা জানান, সারাদেশে ৯ হাজার ২০০টির মতো কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। মোট আসন সংখ্যা ২২ লাখেরও কিছু বেশি।

তিনি বলেন, ‘এটা তো গেলো কলেজ-মাদরাসার হিসাব। সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। সেখানেও তো প্রায় আড়াই লাখ আসন রয়েছে। ভোকেশনাল যেটাকে আমরা বলি, সেখানেও এইচএসসিতে (ভোকেশনাল) পড়ার সুযোগ রয়েছে ৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর। সবমিলিয়ে প্রায় ৩৪ লাখ আসন রয়েছে।’

যে কারণে প্রত্যাশিত কলেজ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা
গত তিন বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঘোষিত তিন ধাপে ভর্তি শেষ করতে চাইলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাও তিন ধাপে ভর্তির আবেদন শেষে কোনো কলেজ বরাদ্দ পান না।

কারণ হিসেবে ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, আবেদনের সময় শিক্ষার্থীরা ১০টি কলেজ পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ পায়। তারা বারবার পছন্দের কলেজগুলো পছন্দের তালিকায় রাখে। ওই কলেজগুলোতে তাদের নম্বর অনুযায়ী আসন মেলে না। এতে একেবারে শেষ ধাপ পর্যন্ত কিছু শিক্ষার্থী ভালো ফল করেও কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।

আমরা সব শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে চাই। শিক্ষার্থীরা পছন্দের কলেজ না পেয়ে বারবার একই কলেজ পছন্দের তালিকায় রাখে। এতে তারা নির্ধারিত তিন ধাপে কলেজ বঞ্চিত হয়। তবে অনেক সময় বিশেষ ধাপে আমরা তাদের ভর্তি করিয়ে নিই।- ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা সব শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে চাই। শিক্ষার্থীরা পছন্দের কলেজ না পেয়ে বারবার একই কলেজ পছন্দের তালিকায় রাখে। এতে তারা নির্ধারিত তিন ধাপে কলেজ বঞ্চিত হয়। তবে অনেক সময় বিশেষ ধাপে আমরা তাদের ভর্তি করিয়ে নিই। কাউকে বঞ্চিত করি না।’


‘নামি’ কলেজে ভর্তির লড়াই
এসএসসি পরীক্ষায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। অধিকাংশের লক্ষ্য দেশসেরা কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া। গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসিতে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকে বাড়তি প্রত্যাশা নিয়ে ঢাকায় ছুটে আসে। এতে রাজধানীর ‘নামি’ কলেজ হিসেবে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে তীব্র লড়াই চলে। শেষ পর্যন্ত জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীও পছন্দের কলেজ না পেয়ে হতাশ হন।

গত বছর তিন ধাপে ভর্তির আবেদন করেও কলেজ পাননি সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছিলেন ৬৬২ জন। তাদেরই একজন পটুয়াখালীর সায়েম আহমেদ। এবার এসএসসির ফল প্রকাশের পর সায়েম একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সবাই সাবধান! জিপিএ-৫ পাওয়ার চেয়েও কিন্তু কলেজে চান্স পাওয়া কষ্ট। একটু ভুল করলেই বড় খেসারত দিতে হবে। গত বছর আমাকে ভুলের খেরাসত দিতে হয়েছিল। সবাই চেষ্টা করবা, প্রথম দুই ধাপেই যেন কলেজ পেয়ে যাও।’

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইকবাল। ফেসবুকে তিনি স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, তার ছেলে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ঢাকার কোন কলেজে ভর্তি করলে ভালো হবে, তা শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন। তার পোস্টে বিভিন্নজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন।

মোহাম্মদ ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ছেলেটা খোকসায় একটা বেসরকারি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। সায়েন্সের ছাত্র। একটা বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে এ+ পেয়েছে। একটুর জন্য গোল্ডেন এ+ হয়নি। আমি চাই, ও ঢাকার ভালো কলেজে পড়ুক। যত কষ্টই হোক ছেলেকে ভালো কলেজে ভর্তি করাবো।’

কুষ্টিয়ায়ও তো ভালো কলেজ রয়েছে, তাহলে ঢাকায় কেন—এমন প্রশ্নে ইকবালের সাফ জবাব, ‘ঢাকা হলো রাজধানী। ওখানকার কলেজ কুষ্টিয়ার চেয়ে ভালো হবে। বাড়িতে থাকলে ছেলে গ্রামের বাজে পরিবেশে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ঢাকায় রেখে পড়াবো সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমম্বয় কমিটির সদস্যদের তথ্যমতে, সারাদেশে ১১ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ থাকলেও সবার আগ্রহের কেন্দ্রে হাতে গোনা কিছু কলেজ। এর মধ্যে ঢাকার কলেজগুলোতে আগ্রহ বেশি। ঢাকার ভালো কলেজ বলে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বসাকুল্যে ৩২ থেকে ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। আর ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ‘নামি কলেজে’ সবমিলিয়ে আসন ১ লাখ ২০ হাজারের মতো। ফলে ভালো কলেজ বলে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোতেই ভর্তির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা হবে।

ছাত্রীদের পছন্দের কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ কলেজে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তির সুযোগ পান। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আসন সীমিত। যারা আমাদের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে, তাদের আমরা ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেই। এরপর বাইরের শিক্ষার্থী নেই। দেখা যায়, আবেদনকারী সবাই জিপিএ-৫ পাওয়া। তখন নম্বরের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থী নেওয়া হয়। এটা কেন্দ্রীয়ভাবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কমিটি করে।’

শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা আরেকটি কলেজ হলো—রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ। এখানে একাদশ শ্রেণিতে আসন প্রায় ১ হাজার ১০০টি। কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম বাহাউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা আবেদন করেন, সবাই মেধাবী। আমাদের আসন সীমিত। সেজন্য সবাইকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। আমি মনে করি, সব কলেজে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রতিযোগিতা কমে যাবে।’

কেন ভালো কলেজের সংকট?
অনুমোদিত কলেজের সংখ্যা ৯ হাজারের বেশি। অথচ ভালো বিবেচিত হওয়া কলেজের সংখ্যা সারাদেশে মাত্র ৮০০-৯০০টি। বাকি আট হাজারের বেশি কলেজ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে পছন্দের বা ‘ভালো কলেজ’ বলে বিবেচিত হচ্ছে না।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক কলেজ তদবির করে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছে। অথচ সেখানে শিক্ষক নেই, পড়ালেখার ভালো পরিবেশ নেই। এ কারণে সেসব কলেজে শিক্ষার্থীরা পড়ার আগ্রহ দেখান না।

কলেজগুলোর সংকট নিরসনে শিক্ষা প্রশাসনের নজর কতটুকু? জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত কলেজগুলোর খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। পড়াশোনার মান ভালো না থাকায় অনেক স্কুল-কলেজের এমপিও বাতিলের নজিরও আছে। যেসব কলেজ এখন পিছিয়ে, সেগুলোতে শিক্ষার মান ভালো করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমম্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘বোর্ডের পক্ষ থেকে নিয়মিত ইনস্পেকশন (পরিদর্শন) হয়। আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার মান নিম্নমুখী হলে এবং শিক্ষক সংকট থাকলে তা প্রতিবেদন আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাই। বোর্ডের এখতিয়ারের মধ্যে যেটুকু আছে, সেটাও আমরা করি।’

তিন ধাপে ভর্তি আবেদন, সর্বোচ্চ ফি ৮৫০০ টাকা
প্রতি বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবারও নীতিমালার খসড়া করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বৈঠক করে তা চূড়ান্ত করা হবে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী—এবারও একাদশ শ্রেণিতে তিন ধাপে ভর্তি আবেদন নেওয়া হবে। আগামী ২৯ মে থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলবে ১১ জুন পর্যন্ত। পাশাপাশি গত বছরের মতো এবারও সর্বোচ্চ ভর্তি ফি সাড়ে ৮ হাজার টাকাই থাকছে।

অন্যদিকে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং দুই শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে কোটার আসন ফাঁকা থাকলে তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।

মিশনারি চার কলেজে ভর্তি পরীক্ষা
একাদশ শ্রেণিতে ২০১৫ সাল থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি করানো হচ্ছে। তবে খ্রিস্টান মিশনারি পরিচালিত কলেজগুলো বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় তারা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করে আসছে। কলেজগুলো হলো—নটর ডেম, হলিক্রস কলেজ, সেন্ট জোসেফ ও সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ হেমন্ত পিউস রোজারিও বলেন, আমরা ভর্তি পরীক্ষা নেই। লিখিত ও একই দিনে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে মেধা যাচাই করা হয়। ফলাফলে যারা ভালো করে তাদের আমরা ভর্তি করি। আদালতের অনুমতি নিয়েই আমরা এ প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। এবারও একই পদ্ধতিতে ভর্তি করানো হবে।’


জিপিএ-৫   এসএসসি   শিক্ষা বোর্ড   ভর্তি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড এডুকেশন

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু ২৬ মে

প্রকাশ: ১০:৪৬ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল রোববার (১২ মে) প্রকাশিত হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ শিক্ষার্থী। তাদের সামনে এখন ভালো কলেজের ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন। এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে। সেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু হতে পারে ২৬ মে।

ভর্তি তারিখ, ফিসহ আনুষ্ঠানিক নানা বিষয় চূড়ান্ত করতে আজ সোমবার (১৩ মে) বৈঠকে বসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। এবারও ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না। কেবল অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে এবং নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবার বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে ফল প্রকাশের প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

এবার হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে মিশনারি পরিচালিত নটরডেম, হলিক্রস ও সেন্ট জোসেফ কলেজ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করবে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। অনলাইন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।

তবে যেসব শিক্ষার্থী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান ও বিকেএসপি থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থীকে ভর্তির ব্যবস্থা নেবে।

অনলাইনে আবেদন

অনলাইনে আবেদনের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। আবেদন ফি দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দ দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে এর মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।

নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে ৩৩৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগে প্রাথমিক নিশ্চায়ন ফি ছিল মোট ৩২৮ টাকা। রেজিস্ট্রেশন ফি ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪২ টাকা করায় মোট ফি বেড়েছে।

যারা ম্যানুয়ালি আবেদন করবে

পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান অথবা বিকেএসপি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অথবা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভাগীয় অথবা জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড উপযুক্ত প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করে দেবে।

গ্রুপ নির্বাচন যেভাবে

বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণরা এ দুই গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। দাখিল উত্তীর্ণ বিজ্ঞান গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি ও সাধারণ গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।

ভর্তিতে ৭ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট শূন্য আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে তা মেধা কোটায় বিবেচিত হবে। কোটার ক্ষেত্রে আবেদনকারী সংখ্যা বেশি হলে মেধার ভিত্তিতে তালিকা করতে হবে।


একাদশ   শ্রেণি   ভর্তি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন