ওসমানিয়া খেলাফতের করুণ সমাপ্তি ঘটে বিংশ শতাব্দীতে এসে। কিন্তু এমন একটি সমাপ্তি কি তাদের প্রাপ্য ছিল? এই ওসমানিয়া সাম্রাজ্যই তো ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে শুরু করে তাদের সাম্রাজ্যের বিস্তার ও উত্থান সংঘটিত করেছিল। সেটির চূড়ান্ত পর্যায় ঘটে পঞ্চবিংশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে এসে। সমসাময়িক অন্যান্য তাবৎ ক্ষমতাধর সাম্রাজ্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা তাদের উন্মেষ ঘটায়। এমনই খেলাফতের করুণ পরিণতি আমরা দেখতে পেয়েছি বিংশ শতাব্দীতে এসে।
ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া সেই সাম্রাজ্যর ভার এখন বহন করছে বর্তমান তুরস্ক। লুজান ট্রিট্রির মাধ্যমে তুরস্কের সকল উত্থান বন্ধ করে দেওয়া ইউরোপের শক্তিগুলোর দিনও আস্তে আস্তে ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে বোধ হয়।
১৯২৩ সালে সম্পন্ন হওয়া লুজান ট্রিটির মাধ্যমে ইউরোপের শক্তিগুলো নিশ্চিত করতে চেয়েছিল যাতে ওসমানিয়া খেলাফতের ভবিষ্যৎ তুরস্ক যাতে কোন মতেই তার পূরবসরির পদচিনহ অনুসরণ করতে না পারে।
বর্তমান আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতারতুক খিলাফতের বিভাজনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার পরেই দেশটিতে সেকুল্যার ধ্যান ধারণার প্রচলন শুরু করেন। দেশটিতে নারী পুরুষের অবাধ চলাফেরা এবং সম্পূর্ণ ইউরোপের রীতিনীতি প্রচলনে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চালু করেন। তিনি ব্যাপক আকারে ইসলামের বিরোধী ছিলেন। যার কারণে তিনি দেশটি থেকে ইসলামের সকল প্রকার ইতিহাস মুছে ফেলার যথেষ্ট চেষ্টা করেন।
তার মৃত্যুর পর দেশটিতে বেশির ভাগ সময় সামরিক শাসনের আওতায় থাকে। এর ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে তেমন একটা অগ্রগতি না হলেও সামরিক দিক থেকে দেশটি পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ব্যাপক আকারে সহযোগিতা পেতে আরম্ভ করে। নিজেদের সামরিক শিল্পের এই উন্নয়ন ব্যাপক আকারে দেশটিতে অন্যর উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে শুরু করে। গড়ে উঠতে থাকে পশ্চিমা আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম তৈরির নানা কারখানা। ইউরোপের সহযোগিতার পিছনে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে দেশটির সেকুল্যার দৃষ্টিকোণ এবং পশ্চিমাদের চাটুকারিতা করার মানসিকতাকে।
তবে সবকিছু ভোজবাজির মত পাল্টে যেতে শুরু করে যখন দেশটিতে ক্ষমতায় আরোহণ করেন রিসেপ তায়েফ এরদোগান। দেশটিতে প্রথমবারে মত কোন ইসলামিক দল (একে পার্টি) ক্ষমতায় এলে মানুষের মত যে আস্তে আস্তে পাল্টে যাচ্ছে তা বুঝতে শুরু করেন দেশটির রাজনৈতিক মহল। ক্ষমতায় এসে এরদোগানকে সবার প্রথম লড়াই করতে হয় দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সাথে। তিনি সেনাবাহিনীর অনেক রীতিনীতি পরিবর্তন করে ইসলামিক চিন্তাধারাতে পরিবর্তন করেন। যার কারণে ২০১৬ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশ। তবে সেদিন জনগণের একক প্রচেষ্টায় বেঁচে যান তিনি। এরপর সংবিধান পরিবর্তন করে দেশটির একক ক্ষমতার দখল নেন এরদোগান।
এরদোগান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তুরস্ককে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনে সম্পৃক্ত করতে শুরু করেন। এর ফলে দেশটির সাথে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরে মধ্যপ্রাচ্যর শক্তিশালী ক্ষমতাধর দেশ সৌদি আরব এবং আরব আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যতে বহু দিন ধরে চলে আসা সৌদি আরবের একক ক্ষমতায় ভাগ বসাতে শুরু করে তুরস্ক।
সৌদি-আমিরাতের সাথে তুরস্কের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে যখন সৌদির নেত্তিত্বে আরব বিশ্বের ১০টি দেশ কাতারের সাথে সকল রকমের কূটনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করে দেয়। সেই সময় একাকী কাতারের পাশে এসে দাঁড়ায় এরদোগানের তুরস্ক। দেশটিতে সকল ধরণের খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে দেশটিকে বহিশক্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য কাতারে নিজ দেশের সেনাবাহিনী মোতায়েন করে তুরস্ক সরকার।
এছাড়া সৌদি আরবের ডেরা থেকে অন্যান্য মুসলিম দেশ কে বের করে নিয়ে আসতে সৌদির সবচেয়ে বড় শত্রু ইরানের সাথে জোট বাধতে শুরু করে তুরস্ক। এর জোটে সামিল করতে শুরু করে পাকিস্তান, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশের মত উদীয়মান মুসলিম শক্তিগুলোকে। যদিও এইসকল দেশগুলোকে সৌদি আরব প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রাখে তুরস্ক কিংবা ইরানের সাথে জোট বাঁধতে তবুও এই জোট গত এক শতাব্দী ধরে চলে আসা একক এই সৌদি প্রভাব থেকে মুক্ত করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে চলেছে।
এছাড়া তুরস্ক নিজের দেশের সীমান্তে সিরিয় বাহিনী ও কুর্দিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসছে। দেশটি তাদের সার্বভৌমত্বের জন্য কুর্দিদের সবচেয়ে বড় হুমকি মনে করে। তার সিরিয়া সীমান্তে যেখানে কুর্দি বিদ্রোহীরা অবস্থা সেখানে নিয়মিত ভাবে সিরীয়ান কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই হামলা পরিচালনা করে আসছে। এর ফলে সীমান্ত অঞ্চলে তুরস্কের অধিপত্যর এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।
তুরস্ক আস্তে আস্তে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়াতেও নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে শুরু করেছে। দেশটির আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারকে সম্পূর্ণভাবে সামরিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে শুরু থেকেই। যার ফলে ভঙ্গুর লিবিয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকার আস্তে আস্তে বেশ শক্তিশালী ভূমিকায় চলে আসে। বিদ্রোহী দল খলিফা হাফতারের বাহিনীকে বেশ কিছু অঞ্চলে তুরস্কের সরাসরি সহযোগিতায় পরাজিত করতে সক্ষম হয় লিবিয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকার। এর ফলে দেশটিতে এবং পশ্চিমা বিশ্বে তুরস্ককে নিয়ে নতুন করে সমীকরণ শুরু হয়।
লিবিয়াতে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার সময় দেশটি আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া মাঝে যুদ্ধেও নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। তুরস্কের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় দীর্ঘদিন আর্মেনিয়ার হাতে দখল থাকা নাগর্নো-কারাবখ অঞ্চল দখল করতে সক্ষম হয় আজারবাইজান। এই যুদ্ধে আর্মেনিয়াকে সরাসরি সহযোগিতা করে ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া সহ অনেক পশ্চিমা দেশ। এর পরেই তুরস্কের সহযোগিতার সামনে হাত মানতে বাধ্য হয় অন্য সকল দেশ।
তবে তুরস্ক নিয়ে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা তৈরি হয় মেডিটেরিয়ান সী তে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কে কেন্দ্র করে। তুরস্কের সাথে এবার সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরে গ্রীস। এর সাথে যোগ হয় মিশরের নাম। তবে গ্রীসের সাথে দ্বন্দ্বে সরাসরি তুরস্ককে যুদ্ধের হুমকি দেয় ফ্রাস সরকার। ফ্রাস গ্রীস কে সরাসরি সহযোগিতা করার জন্য ব্যাপক আকারে যুদ্ধ বিমান থেকে শুরু করে নিজেদের সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ প্রেরণ করে মেডিটেরিয়ান সাগরে। সেই সময়কার অবস্থা এমন এক করুণ পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো যে, যেকোনো সময় তুরস্ক ও গ্রীসের মাঝে যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে আর একে কেন্দ্র করে আরো যুদ্ধ জড়িয়ে পড়তে পারে পশ্চিমা আরো অনেক দেশ।
তবে তুরস্কর সাথে সর্বশেষ ঝামেলা বাধে তুরস্কের বহু দিনের পুরোন বন্ধু আমেরিকার সাথে রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনা কে কেন্দ্র করে। এর ফলে আমেরিকা তুরস্কের কাছে পঞ্চম প্রজন্মের আধুনিক বিমান এফ-৩৫ বিক্রি বন্ধ করে দেয় এবং তুরস্কের উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে। কিন্তু তুরস্ক এতে একটুকু না টলে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। যার ফলে পশ্চিমা বিশ্ব বুঝতে শুরু করে তুরস্ককে এত সহজে দমানো সম্ভব হবে না।
তবে এই সকল পরিক্রমা থেকে সুস্পষ্ট বোঝা যায় যে তুরস্কে আটকে রাখা লুজাজ ট্রিটি যখন শেষ হওয়ার দ্বার প্রান্তে ঠিক তখনি তুরস্ক আবারো তার আগে দাপটে ফিরতে শুরু করছে। যার ফলে পশ্চিমা বিশ্ব তুরস্কের এহেন আক্রমণাত্মক আগ্রাসনকে নিজেদের হুমকি ভাবতে শুরু করেছে যেটি হয়তা তুরস্কের জন্য ভবিষ্যতে বেশ ঝামেলার উদ্রেক তৈরি করতে পারে। তবে এখন দেখার বিষয় তুরস্ক এই সকল ঝামেলা থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে কিভাবে আরো গতিশীল অবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হয়।
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালানোর পর অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন। রোববার (১৯ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নুসেইরাতের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।
আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।
এদিকে শনিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকা জুড়ে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে এবং শনিবার কমপক্ষে ৬৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে আমাদের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন।
এর মধ্যে উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে একটি আবাসিক ভবনে হামলায় ২৮ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রের গেটে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং আরও ২৫ জন আহত হয়েছেন।
জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে ফালুজাহতে পানির জন্য লাইনে দাঁড়ানো একদল লোকের ওপর ইসরায়েল আর্টিলারি হামলা চালালে আটজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের একটি বাড়িতে হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। খান ইউনিসের পূর্বে অবস্থিত আবাসান আল-কাবিরা শহরের আল-ফারহিন এলাকায় হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফা শহরের একটি বাড়িতে হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। উত্তর-পশ্চিম রাফাতে একটি গাড়িতে পৃথক হামলায় শনিবার আরও একজন নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই আক্রমণের ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৩৮৬ জন নিহত এবং আরও প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
গাজা শরণার্থী শিবির হামলা নিহত
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ২৭ জুন প্রথম দফায় বিতর্কে অংশ নিতে রাজি হয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নির্বাচনে তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এ বিতর্কের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মাদক নিচ্ছেন কি না, তা পরীক্ষার দাবি করেছেন ট্রাম্প। গত শুক্রবার মিনেসোটায় দলীয় এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে এ দাবি করেন।
গত মার্চে বাইডেনের স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের ভাষণ উল্লেখ করে সাবেক
এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট মাদক পরীক্ষার দাবি তোলেন। তিনি বলেন, স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের
ভাষণের সময় বাইডেন যেন ঘুড়ির মতো উড়ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই ব্যক্তির সঙ্গে বিতর্কে
অংশ নিতে চাই। কিন্তু তার আগে আমি তাঁর মাদক পরীক্ষা করার দাবি করব।’ ট্রাম্প অবশ্য
নিজে এ পরীক্ষা করাবেন কি না, তা বলেননি।
স্টেট অব দ্য ইউনিয়নের দীর্ঘ ভাষণের সময় ৮১ বছর বয়সী বাইডেন জোরে
ও দ্রুত কথা বলছিলেন। ওই বক্তব্যের পর রিপাবলিকানদের ডক্টরস ককাসের কো-চেয়ার গ্রেগ
মারফি বাইডেনের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অবশ্য
বাইডেনের মাদক পরীক্ষা চাওয়ার বিষয়টি নতুন নয়।
এর আগে, ২০২০ সালে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে বলা হয়, ডেমোক্র্যাটদের
দলীয় নির্বাচনের সময় বাইডেনের আচরণ স্বাভাবিক ছিল না। তিনি বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কের
আগে তাই তাঁর মাদক পরীক্ষা করার দাবি করেছিলেন। অবশ্য ওই সময় ট্রাম্প বা বাইডেন কেউই
মাদক পরীক্ষা করাননি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে ২৭ জুন এবং ১০ সেপ্টেম্বরের
দুই বিতর্ক অত্যন্ত উত্তেজনাকর মুহূর্ত হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম
সিএনএন বলেছে, তাদের আটলান্টা স্টুডিওতে প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কোনো দর্শকের
উপস্থিতি থাকবে না। বিতর্কটি উপস্থাপনা করবেন জেক ট্যাপার ও ডানা ব্যাশ। ট্রাম্প অবশ্য
জেক ট্যাপারের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন।
মার্কিন নির্বাচন সামনে রেখে দ্বিতীয় বিতর্কটির আয়োজন করছে সংবাদমাধ্যম এবিসি। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। বিতর্কে অংশ নেওয়ার জন্য ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দুই প্রার্থীই সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডোনাল্ড ট্রাম্প জো বাইডেন
মন্তব্য করুন
ভারতে চলছে লোকসভার নির্বাচন।
গত ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ নির্বাচন চলবে আগামী ১ জুন পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে
দেশটির বৃদ্ধ নাগরিকরা বাড়ি থেকে ভোট দিচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে বাড়িতে বসে ভোট দিয়েছেন
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রীর
ভোট দেওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে ভোট দিয়ে নিজের হাতের আঙ্গুলের
কালি দেখাচ্ছেন তিনি। তবে ছবিটিতে মনমোহনকে দেখে শুরুতে চেনাই যাচ্ছিল না।
বৃদ্ধ বয়সের পুরো ছাপ পড়েছে
তার শরীরে। ৯২ বছর বয়সী মনমোহন বয়সের ভারে যেন নুয়ে পড়ছেন। তবে তা সত্ত্বেও নিজের ভোটাধিকারটি
প্রয়োগ করেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক
ব্যক্তি লিখেছেন, ৯২ বছর বয়সেও নিজের ভোট দিচ্ছেন মনমোহন। তাকে দেখে তরুণদের অনুপ্রাণিত
হওয়া উচিত।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) থেকে
দিল্লির প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা বাড়ি থেকে ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এই
প্রক্রিয়ায় ভোট দিচ্ছেন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা। এটি আগামী ২৪ মে পর্যন্ত
চলবে।
মন্তব্য করুন
কর্মীদের বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে বিশ্বের
সেরা বিমান কোম্পানি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, যে মানদণ্ড তারা
স্থাপন করেছে, তার উচ্চতা অনেক বেশি।
বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের এক কর্মী। নাম প্রকাশ
না করার শর্তে ওই কর্মী সিএনএনকে এ তথ্য দিয়েছেন যে, ভালো মুনাফা করার কারণে সিঙ্গাপুর
এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ তার কর্মীদের আট মাসের বেতনের সমান বোনাস দেবে। কারণ হিসেবে তিনি
বলেছেন, এ তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ার নয়।
এ বিষয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের সঙ্গে সিএনএন যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে
তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত বুধবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুর
এয়ারলাইনস। সেখানে তারা বলেছে, সেই অর্থবছরে বিমান সংস্থাটি ১৯৮ কোটি ডলার নিট মুনাফা
করেছে।
আয়ের বিবরণীতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস বলেছে, উত্তর এশিয়ার দেশগুলো,
যেমন চীন, হংকং, জাপান ও তাইওয়ানের মতো দেশ মহামারির পর তাদের সীমান্ত পুরোপুরি খুলে
দিয়েছে। সে কারণে এসব দেশে ভ্রমণ বেড়েছে। মানুষের ভ্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসও
বড় অঙ্কের মুনাফা করেছে।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস গত অর্থবছরের জন্য স্ক্রাইট্র্যাক্স ওয়ার্ল্ড
এয়ারলাইনস অ্যাওয়ার্ডস প্রণীত ক্রমতালিকায় বিশ্বের সেরা বিমান সংস্থার পুরস্কার পেয়েছে।
সংস্থাটির প্রণীত ক্রমতালিকায় গত ২৩ বছরের মধ্যে এ নিয়ে পঞ্চমবার তারা শীর্ষস্থান পেয়েছে।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোহ চুন ফং বলেছেন,
প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মী নিরন্তর কাজ করায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তাঁদের এই শ্রম–ঘামের
কারণে মহামারির পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস বাজারে খুব ভালোভাবে ফিরে আসতে পেরেছে।
তবে শুধু সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস নয়, আরও বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস কর্মীদের
উদার হস্তে বোনাস দিচ্ছে। জানা গেছে, দুবাইয়ের এমিরেটস এয়ারলাইনস তার কর্মীদের ২০ সপ্তাহের
বেতনের সমপরিমাণ বোনাস দিচ্ছে। সিএনএন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা মন্তব্য করতে
রাজি হয়নি।
আয় বিবরণীতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস অবশ্য বলেছে, আগামী অর্থবছরে ব্যবসার
জগতে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে। তারা বলেছে, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা,
সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মূল্যস্ফীতির চাপ ও সরবরাহব্যবস্থায় নানা ধরনের বাধা
বৈশ্বিক বিমান পরিবহন শিল্পের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
মহামারির সময় মানুষের যাতায়াতে বিধিনিষেধের কারণে বিমান সংস্থাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছিল। সেই বাস্তবতা এখন আর নেই। বিধিনিষেধ প্রায় সবই উঠে গেছে। ফলে বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোও বড় অঙ্কের মুনাফার মুখ দেখছে।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস সিএনএন সংবাদ
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের জাবালিয়া শরণার্থী
ক্যাম্পের পশ্চিমাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে নারী
ও শিশুও রয়েছেন। নিহতরা জাবালিয়ার আল-ফালুজা নামক একটি এলাকায় পানি আনতে গিয়েছিলেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী হামলার ব্যাপারে
বলেন, “আমরা ফালুজা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলাম, যেটিকে নিরাপদ স্থান হিসেবে ভাবা হয়েছিল।
কিন্তু হঠাৎ করে ইসরায়েলিরা সেখানে গোলা ছুড়েছে। আমরা জানি না কোথায় যাব।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ হামলার
একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম
আলজাজিরা।
গত কয়েকদিন ধরে জাবালিয়ায় ব্যাপক
হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। স্থল হামলা ছাড়াও বিমান থেকে প্রতিনিয়ত সেখানে
বোমা ফেলছে তারা।
গাজার মধ্যে যেসব শরণার্থী শিবির রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো জাবালিয়া। যুদ্ধের আগে এখানে হাজার হাজার মানুষ থাকতেন। এখনো শরণার্থী শিবিরটিতে অসংখ্য মানুষ রয়েছেন।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ২৭ জুন প্রথম দফায় বিতর্কে অংশ নিতে রাজি হয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নির্বাচনে তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এ বিতর্কের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মাদক নিচ্ছেন কি না, তা পরীক্ষার দাবি করেছেন ট্রাম্প। গত শুক্রবার মিনেসোটায় দলীয় এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে এ দাবি করেন।