নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৪ এএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে ক্ষুব্দ কেন্দ্রীয় নেতারা। দলের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর রাস্তায় নেমে আসে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা। দলীয় ফোরামে বিষয়টিকে সমাধান না করে রাস্তায় প্রতিবাদের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে ইস্যু তুলে দেয়ায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লার ওপর বিরক্ত কেন্দ্রীয় নেতারা। ফলে নরসিংদী এবং সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি ঘটতে পারে গাজীপুর মহানগরেরও। জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বড় একটি ইউনিটের শীর্ষ দুই নেতার এমন দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব হঠাৎ করে প্রকাশ্যে চলে আসায় শঙ্কিত অনেকে। এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুই নেতার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব।
ইতোমধ্যে এ নিয়ে একাধিক দিন আওয়ামী লীগের অনানুষ্ঠানিক ফোরামে আলোচনা হয়েছে। নেতারা বলছেন, এটি মূলত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বের নোংরা বহিঃপ্রকাশ। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব নিরসনে নেত্রী ‘ভারপ্রাপ্ত নীতি’ নিয়ে এগোচ্ছেন।
আলোচনার শুরু মূলত গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ঘরোয়া পরিবেশের একটি বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশের পর। গোপনে ধারণ করা ১১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে মেয়র জাহাঙ্গীরকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করতে শোনা যায়।ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানোর পর দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গাজীপুর মহানগর। মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।
গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে কিছুদিন গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোথাও ঝাড়ুমিছিল, কোথাও বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন তারা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী স্টেশন রোড, মিলগেট, চেরাগআলী, কলেজগেট ও হোসেন মার্কেট এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এসব কর্মসূচি পালন করেন।
ওই বক্তব্য ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ প্রসঙ্গে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান বলেন, বক্তব্য যেটা আসছে, এটা তো একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য। বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের একটা গাণিতিক হিসাব দিয়ে ৩০ লাখকে দুই লাখ প্রমাণ করার চেষ্টা; এ বক্তব্য অবশ্যই প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর মনে ক্ষত সৃষ্টি করেছে। সেজন্য তারা এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে তিনি বলেছেন, এ বক্তব্য তার নয়। তিনি যদি প্রমাণ করতে পারেন সেটা তার বক্তব্য নয়, তাহলে দেখতে হবে, এটা কে করেছে। তবে আমি তার কণ্ঠ শুনি, জানি। আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে, এটা তার বক্তব্য।
আজমত উল্লাহ খান বলেন, আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত ক্লিয়ার, নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। দলের হাইকমান্ড তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্নভাবে আমাদের বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন, আমরাও আমাদের বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছি। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র আছে, সে মোতাবেক নিশ্চয়ই দলের হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নেবে।
সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম শুরু থেকেই দাবি করছেন, অডিও-ভিডিও সুপার এডিটিংয়ের মাধ্যমে তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এমনকি এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই সময়ে জেলা পর্যায়ের একজন নেতার বক্তব্য কাটছাঁট করে এডিট করে দেওয়া হয়েছে কি না দল তা যাচাই-বাছাই করছে।
ভিডিও প্রকাশ-পরবর্তী ঘটনা বিশ্লেষণ করতে নেমে আওয়ামী লীগ ও সরকারের সংস্থাগুলোর চক্ষু চড়কগাছ। তারা জানতে পেরেছেন, বিরোধী শক্তি নয়, বরং মহানগর আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণেই জাহাঙ্গীরের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন একই দলের নেতাকর্মীরা। সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উসকে দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন সভাপতি আজমত উল্লাহ খান।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, জাহাঙ্গীর আলমকে দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। ১৫ দিনের সময়ও দেওয়া হয়েছে। এখন বল তার কোর্টে দেওয়া হয়েছে। তিনি কি ভুল স্বীকার করেন, নাকি অস্বীকার করেন—সেটাই দেখার বিষয়। তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দল আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে পাওয়া না গেলেও তার একাধিক অনুসারী বলেন, সামনে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও সিটি নির্বাচন। যে কারণে একটি পক্ষ মেয়রকে ঘায়েল করতে এ পথ বেছে নিয়েছে।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস-সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন ইশরাক। আজ আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন বর্ধিত করার আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নাশকতা মামলা বিএনপি ইশরাক হোসেন
মন্তব্য করুন
‘ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে কেন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কী মাফিয়া, মাস্তান, ঋণ খেলাপিরা ঢুকবে?
রোববার (১৯ মে) রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন। এসময় গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের কালী মন্দিরে আগুনের ঘটনায় হামলায় নিহত ২ নির্মাণশ্রমিকের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়।
রিজভী আরও বলেন, যারা ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে সম্পদের মালিক হয়েছেন, দেশের বাইরে বাড়ি করেছেন তাদের কথা সাংবাদিকরা যেন না জানতে পারেন তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
‘ব্যাংক মাফিয়া মাস্তান ঋণখেলাপি
মন্তব্য করুন
সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। সামনের সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা সরকারের একটা গণবিরোধী সিদ্ধান্ত এবং যা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে জিএম কাদের ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে যান। সেখান থেকে সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে জেলা প্রশাসক মোবাস্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলম চৌধুরী, মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়াসহ প্রশাসনের ও পার্টির নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জিএম কাদের বলেন, সামনে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা এ যাবৎ কালের সর্বনিম্ন।
তিনি আরও বলেন, সরকার যতই রির্জাভের কথা বলুক আসলে ১০ বিলিয়ন ডলারই আছে বলে আমার মনে হয় না। এসব আমাদের জন্য অশুভ সংকেত। দেশে টাকা নেই প্রতিদিন রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আসছে না। যে অর্থ আসে তা বিদেশে চলে যাচ্ছে। ফলে ডলারের এবং দেশীয় টাকার চরম অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দিন দিন টাকার ভ্যালু কমে যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় বড় কথা বলে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আমি রেসপেক্ট করি। কিন্তু তিনি যেসব কথা বলছেন এটা জনগণ আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ আগে জনগণকে ধারণ করলেও এখন তারা জনগণের ঘাড়ে চেপে বসেছে। আগে আওয়ামী লীগ একটা গাছের মতো ছিল। জনগণ যেখানে বিশ্রাম নিতো। এখন সেটা পরগাছা হয়ে গেছে। তারা দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।