বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তিনি অসুস্থ। তার আগে বিষয়টি হলো তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামীর কারাগারে থাকার কথা ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মানবতার মা, তিনি মানবিক কথা ভেবে তিনি তাকে তার বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং সেখানে সুচিকিৎসা নিচ্ছেন। সেই বাসায় থেকে তিনি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কাজেই এই বিষয়টিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবিক দিক বিবেচনা না করে যারা খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নন ইস্যুকে পলিটিকাল ইস্যু করতে চাচ্ছেন তাদের যে কোনো মতলব রয়েছে, তারা যে আসলে খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় না, তারা দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ইস্যুতে বিএনপির আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের হাফ-ভাড়ার দাবি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন বিষয় রাজপথ উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মানবিকতার সুযোগের কথা যদি বলেন তাহলে আমাদের পিছনের কথা বলতে হবে। এই বেগম খালেদা জিয়াই বাংলাদেশে ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের পার্লামেন্টে এনেছেন, আশ্রয় দিয়েছেন, প্রশ্রয় দিয়েছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে সে, তার ছেলে তারেক রহমান শেখ হাসিনাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কাজেই ওদের কোনো মানবতা নাই। কিন্তু পক্ষান্তরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে মানবিকতা দেখিয়েছেন এর বাহিরে কোন মানবিকতা দেখানোর সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয়না।
বেগম জিয়ার কিছু হলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে, বিএনপির এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার কিছু হলে সরকারের দায়-দায়িত্ব কেন আসবে? সরকার তাকে সুচিকিৎসা দিচ্ছেন। একটি দেশে আপনি, আমি এদেশের সর্বশ্রেণীর মানুষ, এদেশের এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। কাজেই সে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সুযোগ তিনি নিচ্ছেন, উচ্চতর চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন হায়াত-মওত, এই দুটি জিনিস মানুষের কাছে থাকে না। এই হায়াত এবং মওত দুটিই হলো আল্লাহ তা’য়ালার কাছে। কাজেই এই নিয়ে কোন রাজনীতি চলে না, এই নিয়ে কাউকে দায়ী করে চলে না। কাজেই এটি মূর্খতা।
তারেক জিয়া দেশে আসলেই বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দেয়া হবে, এমন কোন রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সেটি মনে করিনা। তবে আমি মনে করি ২১ আগস্ট গ্রেনেড মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী এবং বিদেশে অর্থ পাচারকারী তারেক রহমানকে আমরা দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে সব সময় দাবি জানিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি জন-দাবি। আমরা চাই যে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক এবং সাজার মুখোমুখি হোক।
সাম্প্রতিক সময়ে হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম দিচ্ছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির পর যাত্রী কল্যাণ সমিতি আন্দোলন করছে, সেই সাথে খালেদা জিয়ার ইস্যু। সবকিছু মিলিয়ে কি রাজপথ আবারও উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, সাধারণ পরিবহণের ভাড়া এত বৃদ্ধি করার কোন যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। তবে আমি ছাত্রদের হাফ-ভাড়ার সঙ্গে আমি একমত। ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। রাস্তায় এনিয়ে আন্দোলনের কোন সুযোগ নেই। যদিও অশুভ শক্তি চেষ্টা করছে এটিকে ব্যবহার করা। কাজেই, সে ব্যাপারে সরকারকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে, দলকেও অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আমি এর কোনো সম্ভাবনা দেখি না। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর যে সন্দেহের প্রাচীর তৈরি হয়েছে তাতে সে সম্ভাবনা নেই। তবে এক দফা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল শেষ চেষ্টা হিসেবে তফসিল পেছানোর জন্য তৎপরতা চালাতে পারে। কিন্তু তফসিল পেছানোর নামে যদি আবার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে কেউ প্রশ্ন বিদ্ধ করে ফেলে তাহলে আরেকটা অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। কাজেই নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ বিপন্ন হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। তবে তফসিল পেছানোর সম্ভাবনা দেখি না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন যদি জনমত উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনের দিকে যায় তাহলে চলমান যে সংঘাতময় পরিবেশ চলছে সেটাকে আরও উস্কে দেওয়া হবে। সেটা সাধারণ জনগণের জন্যও ভালো হবে না, সরকারের জন্যও ভালো হবে না। দেশের সাধারণ মানুষ এখন একটা সংকটের মধ্যে আছে। দ্রব্যমূল বৃদ্ধি সহ দুর্নীতি, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা আগামীতে অর্থনৈতিক সংকটকে আরও তীব্রতর করতে পারে এমন আভাস অর্থনীতিবিদরা দিচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে জনমত উপক্ষো করে এবং নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকাণ্ড যেমন গ্রহণযোগ্য হবে তেমনি আমাদের দেশের সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, যেভাবে আমেরিকা চাচ্ছিল যে বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে ভারতও যেন আমেরিকার সাথে একই সুরে কথা বলে কিন্তু সেটা যে হবে না তা পরিষ্কার হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত যে আমেরিকার কথা শুনবে না সেটি তারা স্পষ্ট করেছে। এখন আমেরিকা কি করবে সেটা তারা ভালো জানে। তবে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমেরিকা সারা বিশ্বের মধ্যে প্রচন্ড সমালোচনার মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েল ইস্যুতে তারা প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। আমেরিকা তার নিজ দেশেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, অনেক দিন ধরে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল। রাস্তা-ঘাট বন্ধ না করে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। সাধারণত নির্বাচনের আগ দিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো কি করবে না করবে, নির্বাচনী ইশতেহার কেমন হবে ইত্যাদি। কিন্তু রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দিয়ে হরতাল-অবরোধ করা কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর উচিত না।