নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০১৮
কাল মঙ্গলবার সকালে সবার চোখ থাকবে খুলনা সিটি নির্বাচনের দিকে। কোটা আন্দোলন নতুন করে শুরু হওয়ায় জনভোগান্তির আশঙ্কায় - এই দিকেও থাকবে উদ্বিগ্ন দৃষ্টি। এই দুই তাজা খবরের ভিড়ে তিনমাসের বন্দী বেগম জিয়ার জামিন প্রসঙ্গটি হয়তো বেশ বাসি। কিন্তু কথায় বলে, হাতি মরলেও লাখ টাকা। দুই বারের (বিএনপির লোকজন অবশ্য দাবি করে তিন বারের প্রধানমন্ত্রী) প্রধানমন্ত্রী ৯৬ দিন জেলে। কাল (মঙ্গলবার) তাঁর জামিনের ব্যাপারে আদেশ দেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। অনেক বড় খবরের ভিড়ে এটাও একটা খবর। যদিও তাঁর দলের নেতারাই মনে করেন, আদালতে কাল জামিন পেলেও বেগম জিয়া মুক্তি পাবেন না। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। বিএনপির নেতারা আজকাল তাঁর মুক্তির আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে আগামীকালের আদেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাল যদি আপিল বিভাগ তাঁকে জামিন দেয়, তাহলে বেগম জিয়ার মুক্তির একটি নৈতিক ভিত্তি পাবেন। মুক্তি পান আর না পান, রাজনৈতিক অঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো বেগম জিয়া কি জামিন পাবেন?
গত ৮ এবং ৯ মে দুই দিন ধরে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বেগম জিয়ার জামিন প্রশ্নে শুনানি হয়েছে। জামিনের পক্ষে বেগম জিয়ার আইনজীবীদের যুক্তি ছিল মোটামুটি তিনটি:
১. হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দিয়েছে। এত স্বল্প সাজায় (পাঁচ বছর) হাইকোর্টের আদেশে সাধারণত আপিল বিভাগ হস্তক্ষেপ করে না।
২. বেগম জিয়া বয়স্ক এবং নারী, সর্বোপরি তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি পালিয়ে যাবেন না, তাই জামিন দিতে বাধা নেই।
৩. বেগম জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তাঁর সুচিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জামিন দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
অন্যদিকে, জামিন না দেওয়ার পক্ষেও সরকার এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান যুক্তি তিনটি:
১. বেগম জিয়া এই মামলা দীর্ঘ দশ বছর প্রলম্বিত করেছেন। তিনি আদালতের অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করেছেন। জামিন পেলে এই মামলা জীবনেও নিষ্পত্তি হবে না। রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য হলো, জামিন দেওয়ার পরিবর্তে হাইকোর্টে দ্রুত মামলার শুনানি হোক। কারণ জামিন পেলেই তিনি বিচারকে বাধাগ্রস্ত করবেন।
২. বেগম জিয়ার সাজা, বয়স বিবেচনা করেই কমিয়েছে অধঃস্তন আদালত। কাজেই এক সুবিধা তিনি দুবার নিতে পারেন না।
৩. বেগম জিয়ার অসুস্থতা নতুন নয়। তিনি গুরুতর অসুস্থ নন, তা কারাগারে মেডিকেল বোর্ড পরীক্ষা করে প্রমাণ পেয়েছে। তাই শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে তিনি জামিন পেতে পারেন না।
আদালত কোন যুক্তি গ্রহণ করবে তা বোঝা যাবে কাল। আর এই আদেশের উপর বেগম জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে। জামিন হলে, তিনি যেমন মুক্তি এবং নির্বাচন করার একটা নৈতিক ভিত্তি পাবেন। তেমনি জামিন না পেলে, বেগম জিয়ার রাজনীতির কফিনে হয়তো শেষ পেরেক ঠোকা হবে।
Read In English: https://bit.ly/2jWXE5u
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।