নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ অগাস্ট, ২০১৮
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস অত্যন্ত নির্মম। এদেশের মূলধারার রাজনৈতিক দল থেকে বেরিয়ে কেউ কোনোদিন টিকে থাকতে পারেনি। অনেকেই মূল রাজনৈতিক দলে ভালো অবস্থানে থেকেও সরে গিয়ে নতুন কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট করার উদ্যোগ নিয়েছেন। অনেক দল ও জোট গঠনও করেছেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, এদের কেউই নতুন করে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পাননি। বরং রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও দল দুয়ই হারিয়ে গেছেন কালের অতল গহ্বরে।
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। কিন্তু ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। একই বছর গঠন করেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। তবে মূলধারা আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে গিয়ে ভাসানী রাজনীতিতে বড় কোনো প্রভাব রাখতে পারেননি। আজও ন্যাপ টিকে আছে, তবে এটি শুধুই এক নাম সর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর প্রতিষ্ঠা হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। মুক্তিযুদ্ধের ৯নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) এম এ জলিল-কে সভাপতি এবং ডাকসুর ভিপি ও ছাত্রনেতা আ স ম আবদুর রবকে সাধারণ সম্পাদক করে দলটির প্রথম কমিটি গঠিত হয়। নূরুল আলম জিকু, সাজাহান সিরাজসহ তৎকালীন তুখোড় আওয়ামী লীগ নেতারা যোগ দিয়েছিলেন জাসদে। জাসদ নিয়ে কত স্বপ্নই দেখেছিলেন আওয়ামী লীগের দলছুটরা। এখন কোথায় সেই জাসদ। আদর্শতো তো বহুদূর। ভেঙ্গে কয়েক টুকরা হয়ে পড়েছে জাসদ। জাসদ এখন যত টুকরা ততটি আসনও নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ছাত্রনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ১৯৯৮৩ তে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যান। নতুন দল করেও টিকতে না পেরে আবার ফিরে আসেন আওয়ামী লীগে।
এভাবে বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যাওয়া রাজনৈতিক নেতারা বিচ্যুত এবং সময়ের পরীক্ষায় ব্যর্থ হিসেবেই পরিচিত হয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল দাবি করা বিএনপিরও দলচ্যুত রাজনীতিবিদদেরও একই হাল দেখা গেছে। বিএনপির দাপুটে মহাসচিব (১৯৮৬ থেকে১৯৮৮ পর্যন্ত) ছিলেন কে এম ওবায়দুর রহমান। কিন্তু বিএনপি থেকে বেরিয়ে গিয়ে আলাদা দল গঠন করলেও টিকতে পারেননি। হারিয়ে গেছেন অজ্ঞাতনামা হিসেবেই। দলটিরও আর অস্তিত্ব নেই।
বিএনপির সফলতম মহাসচিব বলা হয় মান্নান ভুঁইয়াকে। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি বেরিয়ে যান বিএনপি থেকে। বর্তমানে মান্নান ভুঁইয়ার মৃত্যুবার্ষিকী যায় আসে, কিন্তু কেউ কোনো খবরই রাখে না।
আবার হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে জাতীয় পার্টি থেকে সরে যান নাজিউর রহমান মঞ্জু। একইভাবে এরশাদকে ছেড়ে গেছেন আনোয়ান হোসেন মঞ্জু। দুই মঞ্জুই আলাদা আলাদা জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিত্ব করছেন। তবে দুটি দলের কোনোটিই এরশাদের জাপার সমকক্ষ হতে পারেনি। দুটির অবস্থাই নিভু নিভু।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক সমস্যা, সংকট ও জটিলতা আছে। এদেশের রাজনীতি নিয়ে হা-হুতাশও করেন অনেকে। কিন্তু একটি বিষয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্পষ্ট। পদস্খলিত রাজনীতিবিদ, অর্থাৎ যারা দলছুট হন তারা আর কখনোই রাজনীতিতে পুন:প্রতিষ্ঠা পান না।
বাংলাদেশের মূলধারার দলগুলোর জন্য এক কঠিন সময় ছিল ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেন। ওই সময় বড় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির দলছুট নেতাদের নিয়ে তৃতীয় শক্তি গঠনের উদ্যোগ দেখা যায়। কিংস পার্টি বলে একটি দলও আবির্ভাব হয় যাঁর নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের এক সময়ের সভাপতি ও তৎকালীন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী। ওয়ান ইলেভেনে দলছুট ফেরদৌস কোরেশীকে এখন কেউ চেনে না। কিংস পার্টির অস্তিত্বও এক অর্থে বিলীন।
নির্বাচন সন্নিকটে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এমন সময়ে আজ আওয়ামী লীগের দলছুট ও বর্তমান গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেনের বাসায় রাজনৈতিক বৈঠক বসেছে। মূলধারার দলগুলো থেকে বিচ্যুত লোকজনেরই ভিড় সেখানে। মনোনয়ের আশায়ও ঐক্য প্রক্রিয়া আসছেন অনেকে। দলছুট ড. কামাল ও বি. চৌধুরীর তৃতীয় শক্তি নিয়ে অনেক আশাই করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস যে ভিন্ন কথা বলে। তাঁরা কি পারবেন ইতিহাসকে বদলে দিতে? নাকি পূর্ব ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া লবিস্ট ফার্ম বিএনপি
মন্তব্য করুন
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় টিম সরাসরি কাজ করেছে এবং তারা প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত সবগুলো উপজেলার নির্বাচন মনিটরিং করেছে। যেখানে তারা খোঁজখবর নিয়েছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে তারা কতটা বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করেছে এবং তাদের কারণে নির্বাচনে কী কী ধরনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আর এক্ষেত্রে যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক এবং স্বতস্ফূর্ত পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, এই উপনির্বাচনগুলোতে যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। যারা নির্বাচনে তাদের নিজস্ব প্রার্থী বা আত্মীয়স্বজনকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইবে বা নির্বাচনের পেশি শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে তারা দলের পদ হারাবেন। উপজেলা নির্বাচনের সবগুলো ধাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন- একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর এক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বানেকে যারা কলুষিত করতে চাইবে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকা রাখা হবে না, তারা যে পর্যায়ে বা যে পদেই থাকুন না কেন।
বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাই ম্যান হিসাবে প্রার্থীদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তারা যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে তাহলে যারা প্রার্থী এবং যারা প্রার্থীদেরকে মদত দিচ্ছেন তারা উভয়ে দলের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, এই সব উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য পেশিশক্তি প্রয়োগ করবেন ভবিষ্যতে মনোনয়নের খাতা থেকে খাতা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদের অনেককেই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি বিএনপির দীর্ঘদিনের। শুধু দাবি নয়, এ নিয়ে বিএনপির তদবিরও করছে। সরকারের সাথে পর্দার আড়ালে নানা রকম আলাপ আলোচনাও চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। আর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যেন সরকার দেয় এ জন্য দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই লবিস্ট ফার্মের একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক। এই লবিস্ট ফার্মগুলো যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর যেন এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য চেষ্টা করবে।
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।