নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের নতুন একটি প্রস্তাবনা এসেছে আলোচনার টেবিলে। এই প্রস্তাবনা তৈরি করেছে ভারত। যুক্তরাজ্য এবং কানাডা এই প্রস্তাবনা সমর্থন করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা নিয়ে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। বিএনপির নেতারা এই প্রস্তাবনা একেবারে নাকচ করে দেয়নি। এই প্রস্তাবনার মূলকথা হলো, শেখ হাসিনার অধীনের নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। তবে নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে তিনি যেন নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেজন্য একটি আসনে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো দল প্রার্থী দেবে না। ফলে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সর্বসম্মত ভাবে নির্বাচিত হবেন। তিনি সকল নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে থাকবেন। কূটনীতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারত কয়েকবারই স্পিকার নির্বাচনে নিরপেক্ষতার স্বার্থে এরকম পদ্ধতি অনুসরণ করেছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিদ্যমান প্রধানমন্ত্রীকে সব বিতর্কের উর্ধ্বে রাখলেই আর নির্দলীয় সরকারের প্রয়োজন হয় না। একাধিক সূত্র বলছে, ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবনা নিয়ে কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তাঁরাও প্রস্তাবনাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। কানাডা অবশ্য নির্বাচনে সাম্যতা রাখার জন্য প্রধান তিন দলের শীর্ষ তিন নেতা, যারা নির্বাচনের যোগ্য তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এতে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিতর্ক বন্ধ হবে এবং রাজনৈতিক বিতর্কও কমবে বলে তাঁরা মনে করছেন। যুক্তরাজ্যও এটিকে নির্বাচনী অসহিষ্ণুতা বন্ধে একটি ভালো মডেল বলে মনে করেন।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভারত দুই প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির নেতা ড. আব্দুল মঈন খান এবং আবদুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গে কথা বলেছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বদলে তিনি নির্বাচনে না দাঁড়ানো যৌক্তিক। তবে ভারতীয় কূটনীতিকরা নির্বাচনে না দাঁড়ানোর শর্তকে অগণতান্ত্রিক এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন। বরং সকল পক্ষকে সম্মানিত করার মাধ্যমেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খোঁজা উচিত বলে মত দিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে, বেগম জিয়ার নির্বাচন করার গ্যারান্টি চাওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে তাঁকেরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি অবশ্য বলেছে, এনিয়ে তারা দলীয় ফোরামে কথা বলবে।
ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব নিয়ে সুশীল সমাজের একাধিক প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তাঁরা প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন। তবে প্রস্তাবটিকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক না করে নীতিগত করার প্রস্তাব করেছেন। সুশীল সমাজের একাধিক প্রতিনিধি বলেছেন, এরকম একটা নীতিগত ঐক্যমত হতে পারে যে, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন এবং তিনি সর্ব সম্মতিক্রমে পরবর্তী সংসদে সদস্য নির্বাচিত হবেন। ওই রীতি চালু হলে, নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান নির্বাচনের প্রত্যক্ষ প্রচারণা থেকে দূরে থাকবেন। কয়েকজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মনে করেন, রাষ্ট্রপতি যেমন দলীয় বিবেচনায় নির্বাচিত হন, কিন্তু নির্বাচিত হবার পর তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীকেও এরকম একটি অবস্থায় নিয়ে আশা যায়। আওয়ামী লীগ অবশ্য প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।