নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৭ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৮
দেশের বহুল প্রচারিত ও প্রভাবশালী দৈনিক ‘প্রথম আলো ‘র আজ বুধবারের পত্রিকায় একটি কলামকে প্রথম পাতার লিড নিউজ করা হয়েছে। প্রথম পাতার প্রথম কলামে ছাপানো লেখাটি লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
‘নির্বাচন কমিশনের আচরণে পক্ষপাত’ শিরোনামের লেখাটি পড়ে সচেতন যে কোনো মানুষের মধ্যে কয়েকটি প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক:
১. বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য, প্রভাবশালী একটি দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতার লিড নিউজ হিসেবে একটি কলাম কি যেতে পারে?
২.আলী রীয়াজের ১ হাজার ৯৮ শব্দের লেখাটির মধ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যই নেই। তিনি অভিযোগের পর অভিযোগ করে গেছেন, কিন্তু কোনোটিই সুনির্দিষ্ট নয়। অমুক তারিখে অমুক ঘটেছে- এমন কোনো তথ্যও তাঁর কলামে অনুপস্থিত।
৩. গতকাল মোয়াজ্জেম হোসেনের আলালের নেতৃত্বে বিএনপির একটি টিম নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গিয়েছিল। তাঁরা পাঁচটি দরখাস্ত দিয়েছে। পাঁচটি দরখাস্তেই আলী রীয়াজের কথাগুলোই লেখাগুলোই আছে। তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে আলী রীয়াজ কি এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির মুখপাত্র হয়েছেন। আর মুখপাত্র হিসেবেই কি তিনি কলাম লিখেছেন।
আলী রীয়াজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। দেশের রাজনীতিতেও জড়িত ছিলেন একসময়। বর্তমানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না একসময় ডাকসুর ভিপি ছিলেন। তখন আলী রীয়াজ সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে শিক্ষকতা শুরু করেন। এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বর্তমানে তিনি একজন বুদ্ধিজীবীর কাতারে চলে গেছেন। লেখক ও বুদ্ধিজীবী হিসেবে তিনি সমাদৃত। কিন্তু গত ৬ মাস ধরে তাঁর কলাম লেখায় একটি বিশেষ ধরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই আলী রীয়াজ যেন সরকারের বিরোধী পক্ষের মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন।
আলী রীয়াজ সাম্প্রতিক যেসব লেখা আসছে, তা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মত বিশ্লেষকদের। এমন লেখার পরও দেশের অন্যতম শীর্ষ গণমাধ্যমে তা ছাপাও হচ্ছে। এমন লেখা ছাপানোয় পত্রিকার কী কোনো দায় নেই। গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের মতে, আলী রীয়াজ যেহেতু বুদ্ধিজীবীর কাতারে পড়ে গেছেন, তাই তাঁর লেখা ছাপানোয় পত্রিকার দায় কমই পড়বে। দায় পুরোপুরিই আলী রীয়াজের ওপর পড়বে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একাধিক কলামে আলী রীয়াজের লিখেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র বন্দী, গণতন্ত্রহীন দেশ ইত্যাদি অনেককিছুই। আর আজকের আলী রীয়াজের কলামটি পড়লে মানুষ ভাবতেই পারেন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত খারাপ কাজ করছে। লেখাটি পুরো না পড়লে একজন বুঝতে পারবেন শিরোনামটিকেই ফেনিয়ে ফেনিয়ে পুরো লেখায় বলা হয়েছে, এর বাইরে কিছু নেই।
আলী রীয়াজের কলামটি পড়লে মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে তাহলে কি বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের কোনো কথাই মানছে না ইসি, মানছে শুধুই আওয়ামী লীগের কথা? অথচ গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ বলছে ভিন্নকথা। নির্বাচন কমিশনের অনেক সিদ্ধান্তে বিএনপি যেমন ক্ষুব্ধ, একই ভাবে অনেক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ।
বিএনপির মনোনয়নে তারেক জিয়ার স্কাইপে উপস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছিল। এ নিয়ে বারবার অভিযোগের পর নির্বাচন কমিশনের ভাষ্য হলো, এক্ষেত্রে তাদের কিছু করার নেই।
নির্বাচনী প্রচারণায় খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তুলেছিল আওয়ামী লীগ। একজন দণ্ডিত আসামির ছবি প্রচারণার ব্যবহার বন্ধে ইসির পদক্ষেপ কামনা করা হয়। এখানেও ইসির ভাষ্য, ছবি ব্যবহারে বাধা নেই।
বিএনপির ৭ ধারা সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়েছে। এরই মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা নির্বাচন কমিশনেও গিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। এতেও ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচারণার মূল অস্ত্রই হলো উন্নয়ন। অথচ তফসিল ঘোষণার পর কদিন না যেতেই নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়ে সরকারের নেওয়া সব ধরনের উন্নয়ন বরাদ্ধ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আবার চিঠি দিয়ে কোনো ধরনের নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।
আলী রীয়াজ তাঁর কলামে অভিযোগ করেছেন প্রশাসন রদবদল হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন তালিকা পর্যবেক্ষণ করছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো রদবদলের নির্দেশ আসতে পারে। কিন্তু এজন্য তো সময় লাগবে। অথচ আলী রীয়াজের মতো একজন বুদ্ধিজীবী এর আগেই একেবারে বিএনপির লিফলেটের ভাষায় কীভাবে সমালোচনা করেন। আর এমন সমলোচনার কলাম পড়ে যিনি লিখেছেন তাঁকে নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠতে পারে, একই ভাবে প্রশ্ন উঠতে পারে যে সংবাদপত্র এটি ছাপিয়েছে তাদের নিয়ে। এমন সময়ে এমন লেখার পর এর লেখক প্রকাশক উভয়ের উদ্দেশ্য, অভিপ্রায় নিয়ে মানুষের জানতে চাওয়া কি স্বাভাবিক নয়?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।