ইনসাইড পলিটিক্স

তারকা প্রার্থীর অবস্থান কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮


Thumbnail

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন কিনেছিলেন বেশ কয়েকজন তারকা। তবে এর মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের খবর জানানো হয়েছে:

আকবর হোসেন পাঠান ফারুক

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

আসন নং: ১৯০

আসন: ঢাকা-১৭ (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড- ১৫,১৮,১৯ ও ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা)

মোট ভোটার: ৩,১৩,৯৯৮

মোট প্রার্থী: ১০

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: আন্দালিভ রহমান(জাতীয় পার্টি-বিজেপি) প্রতীক: ধানের শীষ, এইচ এম এরশাদ (জাতীয় পার্টি) প্রতীক: লাঙল

কৈশোরে দেখেছেন, মিশেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। সেই কিশোরবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু তার নায়ক, আদর্শ, লিডার! তার উৎসাহেই রাজনীতিতে আসা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু খুন হবার পর থেকে আর কোনোদিন ১৫ আগস্ট নিজের জন্মদিন পালন করেন না। নায়ক ফারুক স্কুলজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

গাজীপুর-৫ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে মনোনয়ন কিনেছিলেন। তবে সেখানে নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি থাকায় তাকে ঢাকায় মনোনয়ন দেওয়া হয়। ঢাকা-১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদেরকেও মনোনয়ন দেয়া হবে বলে কথা উঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফারুকই ওই এলাকার নৌকার মাঝি হন।

ফারুক বলেন,‘ ত্রিশ বছর ধরেই স্বপ্ন দেখেছি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করব। কিন্তু নানা কারণে হয়ে উঠেনি। এবার মনোনয়ন পেয়েছি। আর এমন এক আসনে বঙ্গবন্ধু কন্যা নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন যা আমার ত্রিশ বছরের আক্ষেপ মুছে দিলো এক নিমিষেই। ঢাকা-১৭ আসনটি আমার জন্য স্বপ্নের, বিশেষ উপহারের। আমি আবেগী মানুষ। নেত্রীর এই অসামান্য উপহারে কৃতজ্ঞতায় আমার চোখে বারবার পানি এসেছে। তিনি আমাকে দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে প্রার্থী করেছেন। ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমি এই উপহার ও বিশেষ আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।’

মানুষের মাঝে গিয়ে কী দেখছেন?‘সবাই শুধু বলেছেন, আমরা এবার নৌকা চাই। উৎসব করে নৌকার ইলেকশন করতে চাই। মানুষ আমাকে ভালবাসে জানতাম, কিন্তু সর্বস্তরের মানুষ এত কাছের ভাবে তা বুঝিনি। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে আবেগী হয়ে যাই।’

চিত্রনায়ক, পরিচালক, প্রযোজক- একাধিক পরিচয়ে তিনি পরিচিত। সব ছাপিয়ে ভক্তদের কাছে তার বড় পরিচয় তিনি ‘মিয়া ভাই’।

তার হাত ধরে ১৮ বছর পর গুলশান-বনানীতে নৌকা মার্কা ফিরলো। এই আসন থেকে অতীতে নির্বাচন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ। ২০১৪ সালের বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ আসনটি থেকে নির্বাচিত হন, সেবার আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না এই আসনে।

আসাদুজ্জামান নূর

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

আসন নং: ১৩

মোট ভোটার: ৩,১১,৬৯৯

নীলফামারী-২: নীলফামারী সদর উপজেলা

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি : মনিরুজ্জামান মন্টু (বিএনপি প্রতীক) প্রতীক: ধানের শীষ

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সফল ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর রাজনীতির মঞ্চেও সফল। নীলফামারী-২ (সদর উপজেলা) আসন থেকে তিনি পরপর তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছেন আওয়ামী লীগের টিকিটে। ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ূব খানের বিরুদ্ধে সকল আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন আসাদুজ্জামন নূর। পরবর্তীতে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আসাদুজ্জামান নূর মুক্তিযুদ্ধে ৬ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সক্রিয় সংস্কৃতিকর্মী আসাদুজ্জামান নূর ১৯৯৭ সালের দিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সক্রিয় হন নীলফামারীর রাজনীতিতে। ২০০১ সালে প্রথম তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিরোধী দলের সংসদ সদস্য হয়েও ব্যাপক জনসম্পৃক্ততার কারণে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পান সংস্কৃতিমন্ত্রীর।

তাঁর প্রচেষ্টায় ২০০০ সালে নীলফামারীতে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তরা ইপিজেড। সেই ইপিজেডে বর্তমানে কর্মসংস্থান হয়েছে ৩২ হাজার মানুষের। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে গুরুত্বহীন হয়ে পড়া ইপিজেডটির উন্নয়ন ধরে রেখেছিলেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বর্তমান সরকারের ১০ বছরে এই শিল্প অঞ্চলটির ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তাঁর হাত ধরে। আগামী দুই বছরের মধ্যে সেখানে ৫০ হাজার মানুষ কাজ করতে পারবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আসনটি থেকে টানা তিন বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এসময় বলেন, ‘২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমি বলেছিলাম এলাকার উন্নয়নের জন্য নৌকা মার্কাায় ভোট দিন। নীলফামারীর উন্নয়ন হয়েছে, প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে আশাতীত। এবার উন্নত নীলফামারী গড়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’

দশ বছরে এলাকার অনেক উন্নয়নের কথায় তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত উত্তরা ইপিজেডে ৩২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, কারিগড়ি ও যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, নাসিং ইনিস্টিটিউট, উন্নয়ন হয়েছে ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন হাসপাতালের, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ খেলাধুলার উন্নয়ন হয়েছে, নির্মিত হয়েছে আধুনিক স্টেডিয়াম। সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। শিল্প এবং কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নে এলাকা থেকে দূর হয়েছে এক সময়ের মঙ্গা। এখন দরকার পরিকল্পিত এবং উন্নত নীলফামারী গড়া।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজমের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক শাহীন আখতার সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সহধর্মিণী। এলাকার মানুষের সেবায় তাঁর সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন ডা. শাহীন। এই শিশু নিউরোলজিস্ট ও শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ নীলফামারী সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে আসছেন। বিনা মূল্যে চিকিৎসা পরামর্শ এবং রোগীদের ওষুধ দেওয়া হয় ওই ক্যাম্পে। সহধর্মিণী অধ্যাপক শাহীন আখতারের এই কার্যক্রম আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে আসাদুজ্জামান নূরকে।

দলের নেতাকর্মীরা জানায়, আসাদুজ্জামান নূর থাকায় দলে চাঁদাবাজ নেই, সন্ত্রাস বলে নেই কিছু। তাঁর সরলতা এবং মানুষের সঙ্গে মেশার ক্ষমতা সম্মোহিত করছে সবাইকে।

প্রত্যক্ষ কোনো ব্যর্থতা নেই আসাদুজ্জামান নূরের রাজনীতিতে। সফলতার ভারে অনেক পরোক্ষ ব্যর্থতাও ম্লান হয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের মতে, এমন ব্যর্থতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গত জেলা পরিষদের নির্বাচন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের কোন্দলে হেরেছে দলীয় প্রার্থী। এর আগেও এমন কোন্দল দেখা গেছে পৌরসভার নির্বাচনে। সে নির্বাচনে দলের প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হলেও পক্ষে বিপক্ষে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিভক্তি ছিল। পরবর্তী সময়ে এই বিভেদের অবসানও ঘটেছে তাঁরই হস্তক্ষেপে। নেতাকর্মীরা মনে করে—এসব বিপর্যয় এড়ানো যেত আসাদুজ্জামান নূরের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে।

মাসুদ পারভেজ

দল: জাতীয় পার্টি প্রতীক: লাঙল

আসন: বরিশাল-২ (উজিরপুর এবং বানারীপাড়া উপজেলা)

আসন নং: ১২০

মোট ভোটার: ৩,০২,৫৭১

মোট প্রার্থী: ৭

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ, শাহে আলম (আওয়ামী লীগ) প্রতীক: নৌকা

চলচ্চিত্রের ড্যাশিং হিরো খ্যাত মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। ৭০ ও ৮০-এর দশকে ঢাকাই সিনেমার পর্দা কাঁপিয়েছেন দাপটের সঙ্গে। প্রযোজক হয়ে উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় ছবি। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ও মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্রের প্রযোজক। এবার রাজনীতির মাঠে জনপ্রিয় হিরো তার কারিশমা দেখাবেন। জাতীয় পার্টির টিকিটে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাকে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে নির্বাচন করার জন্য দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সোহেল রানা বলেন, নিজেকে দেশের সেবায় সর্বদা ব্রত রাখার চেষ্টা করেছি। ছাত্র অবস্থা থেকেই রাজনীতি করে আসছি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। এবার সংসদ সদস্য হিসেবে দেশ ও জনগণের সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছি। দেশের উন্নয়নে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করব, এটাই আমার অন্যতম অঙ্গীকার। আমি দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা চাই। যাতে প্রকৃত অর্থে দেশ ও জনগণের মঙ্গলে কাজ করতে পারি।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যের ৪১৪৭ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল। মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন সোহেল রানা। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) করা আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন এ নায়ক।

রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা

দল: বিএনপি প্রতীক: ধানের শীষ

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মোহাম্মদ নাসিম (আওয়ামী লীগ) প্রতীক: নৌকা

সিরাজগঞ্জ-১: কাজিপুর এবং সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নলিখিত ইউনিয়ন সমূহঃ মেছড়া, রতনকান্দি, বাগবাটি, ছোনগাছা ও বহুলি

আসন নং: ৬২

মোট ভোটার: ৩,৪৫,৬৭৬

কনকচাঁপা সিরাজগঞ্জের কাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) যোগ দিয়েছেন সংগীতশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন তিনি। স্বামী সুরকার মইনুল ইসলামকে নিয়ে তিন নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন।

ভোট প্রার্থনার সময় কনকচাঁপা অভিযোগ করেছেন, ‘প্রচারণায় সরাসরি বাধা না দেওয়া হলেও মুঠোফোনে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তারপরও আমার মতো করেই প্রচারণা চালাতে হবে। আমার ভরসা সাধারণ মানুষ। আমি মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, ভোটাররা যদি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান, তাহলে আমি ভালো ফলাফল করব। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

নির্বাচনে অংশ নিতে চান কেন? কনকচাঁপা বললেন, ‘ছোটবেলা থেকে মাকে সমাজসেবা করতে দেখেছি। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অসহায়ের পক্ষে কথা বলা-এগুলো ছিল মায়ের অভ্যাস। তাঁর আদর্শেই বড় হয়েছি। যখন পেশাদার শিল্পী হয়েছি, তখন থেকেই অসহায়ের পাশে আছি। সমাজের সব অসংগতির বিরুদ্ধে আমার কঠোর অবস্থান। একজন সফল শিল্পী হয়েও কখনো আমার বিত্তকে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তে পরিবর্তন করিনি। আমার মানসিক শক্তি, শারীরিক শক্তি সবই বর্তমান। আমি একজন সাহসী মানুষ বটে। আর মানুষের পাশে দাঁড়াতে বড় প্ল্যাটফর্ম দরকার। আমি মনে করি, নির্বাচন সেই প্ল্যাটফর্ম।’

নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পঞ্চাশের ঘরের একজন মানুষ। এই বয়সেই গানের জগতের সব পুরস্কার, মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ পেয়েছি। নাতি-নাতনি, মেয়েজামাই, ছেলেবউদের দিয়ে সাজানো বেহেশতের বাগানের মতো আমার সংসার। কিন্তু এই জীবন ছেড়ে নির্বাচনের যুদ্ধে নেমেছি মানুষকে ভালোবেসে। কারণ, তাঁদের অপার ভালোবাসার বিনিময়ে অনেক বেশি ভালোবাসা উপহার দিতে চাই।’

তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বর্তমান সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

মমতাজ বেগম

দল: আওয়ামী লীগ প্রতীক: নৌকা

মানিকগঞ্জ-২: সিঙ্গাইর, হরিরামপুর এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া, ভাড়ারিয়া ও পুটাইল ইউনিয়ন সমূহ

মোট ভোটার: ৪,০৬,১৯৫

মোট প্রার্থী: ৬

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মাঈনুল ইসলাম খান (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ

মানিকগঞ্জ-২ আসন (সিংগাইর-হরিরামপুর সদরের আংশিক) আসনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রচার প্রচারণায় সরব ও মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। তিনি সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের মধ্যে পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্বাচনী প্রতিটি এলাকার পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক, কেন্দ্র মিটিং, পথসভা, গণসংযোগ, সভাসমাবেশ করে তৃণমূল ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করছেন। এই আসনের বর্তমান সাংসদও মমতাজ বেগম। ২০০৮ সালে প্রথমে সংরক্ষিত আসনে, দ্বিতীয়বার ২০১৪ সালের নির্বাচনে এমপি হন তিনি।

হিরো আলম

বগুড়া-৪: কাহালু এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা

আসন নং: ৩৯

মোট ভোটার: ৩,১২,০৮১

মোট প্রার্থী: ৭

প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি: মোশারফ হোসেন (বিএনপি) প্রতীক: ধানের শীষ রেজাউল করিম তানসেন (জাসদ) প্রতীক: নৌকা

নির্বাচনের মৌসুমে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র তুলেও ব্যাপক সাড়া ফেলেন হিরো আলম। যদিও দলটি তাকে মনোনয়ন দেয়নি। পরবর্তী সময়ে তিনি বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুললে তা বাতিল করা হয়। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনেই হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। আপিল করলে নির্বাচন কমিশন শুনানির পর তা বাতিল করে। মনোনয়নপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আপিলেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখানেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে। হিরো আলম আদালতে গেলে হাইকোর্টের নির্দেশে তাকে মনোনয়নপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমে আসেন। হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর প্রতীক সিংহ তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন। এভাবে হিরো আলমের তৈরি মিউজিক ভিডিও এবং ইউটিউব সিনেমা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন। পরে ‘মার ছক্কা’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পান। হিরো আলম দুইবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে আসেন।


বাংলা ইনসাইডার/ এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফখরুল: খালেদার ‘হ্যাঁ’, তারেকের জন্য অপেক্ষা

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফিরোজায় তিনি যান রাত ৮: ২০ মিনিটে। সেখানে এক ঘণ্টা অবস্থান করেছেন। যথারীতি মির্জা ফখরুল ফিরোজা থেকে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। 

বেগম জিয়ার পারিবারিক সূত্র বলছে যে, তার স্বাস্থ্যের অবস্থা জানার জন্যই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বাসভবনে গিয়েছেন। কিন্তু দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে যে, বিএনপির নেতৃত্বের পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের বিষয়টি চূড়ান্ত করতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়ার কাছে গিয়েছিলেন। 

বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেন এবং খালেদা জিয়া তাকে বাসায় যেতে বলেছেন বলে জানান। এর পরপরই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, দুটি বিষয় নিয়ে তাদের আলাপ হতে পারে। প্রথমত, দীর্ঘদিন ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের মহাসচিব পদ ছাড়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে এসে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি দলের মহাসচিব পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। অন্য কাউকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তিনি বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহবান জানান। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মহাসচিব পদ ছাড়ার পিছনে দুটি কারণ উল্লেখ করা হচ্ছে। প্রথমত, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, হার্টের সমস্যা সহ বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি পূর্ণ সময় দলের নেতৃত্ব পালন করার মতো অবস্থায় নেই। দ্বিতীয়ত, তার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার স্ত্রীকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। এই কারণেও তিনি বিএনপির মহাসচিবের পদ ছেড়ে একজন সাধারণ কর্মীর মতো দায়িত্ব পালন করতে চান। তবে সেসময় বেগম খালেদা জিয়া তাকে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকেও একই রকম আগ্রহ বা একই রকম বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব। কিন্তু তারেক জিয়াও তাকে এ ব্যাপারে কোন ইতিবাচক সম্মতি দেননি বলেই জানা গেছে। এরপর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিএনপির ওপর এক ধরনের চাপ এসেছে যে, তারা যেন বিএনপির নেতৃত্ব পরিবর্তন করে। দেশের বাইরে থাকে বা দণ্ডিত কোন ব্যক্তি বিএনপির নেতৃত্বে থাকুক এটি পশ্চিমা দেশগুলো চায় না। বিশেষ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে এখন যারা নেতৃত্বে আছেন তারা কোন ইতিবাচক সাড়া দিতে পারেন না। আর একারণেই কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা দেশে রাজনীতি করছেন, তাদের মধ্যে থেকে আপাতত কাউকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়া যেন আপাতত উপদেষ্টা বা আলঙ্কারিক পদে থাকেন। এটি নিয়ে বিএনপিতে এখন ভালোই আলোচনা চলছে। 

গত বুধবার বিএনপির একজন নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ডিবিসির রাজকাহনে স্বীকার করেছেন যে, এ নিয়ে বিএনপিতে আলাপ আলোচনা চলছে, যেন বেগম জিয়া বা তারেক জিয়ার বাইরে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে সেটি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। 

বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে যে, এই বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্যই বেগম জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলামকে ডেকে নিয়েছিলেন। তিনি আপাতত বিএনপির নেতৃত্বে থাকতে চান না। ভারপ্রাপ্ত জেয়ারম্যান তারেক জিয়া যেহেতু লন্ডনে অবস্থান করছেন তিনিও বিএনপির নির্বাহী নেতৃত্বে থাকুক এটি বেগম জিয়া এখন চান না। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার বিষয়টি নিয়ে বেগম জিয়া ভাবছেন বলে গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জানানো হয়েছে। 

তবে এ ব্যাপারে তারেকের কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। তারেকের সিদ্ধান্তের আগ পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না যে, আসলে শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হবেন কিনা। তবে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে, যদি শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান না হতে পারেন তাহলে তিনি মহাসচিব পদেও থাকবেন না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি   তারেক জিয়া   শামীম ইস্কান্দার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে বিএনপি: কাদের

প্রকাশ: ০১:৫১ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে হীন মনোবৃত্তির পরিচয় দিচ্ছে তারা।  

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি ও উচ্চতা, এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত হন। পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝাই উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপির শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।

বিশ্বে চলমান যুদ্ধ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও এ যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নতুন আংশিক কমিটি গঠন

প্রকাশ: ০১:০৪ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় ৩ মাস পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ওলামা দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে আলহাজ্ব মাওলানা মো. সেলিম রেজা এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা কাজী আবুল হোসেন। কমিটির অন্যারা হলেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাওলানা ক্বারী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেইন।

প্রসঙ্গ, গত ২৫ জানুয়ারি বিএনপির অনুমতি না নিয়েই ওলামা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা মো. সেলিম রেজাকে কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব করাসহ ১৬ জনকে বিভিন্ন পদে রদবদল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে মাওলানা মো. নেছারুল হককের নেতৃত্বাধীন কমিটির বিরুদ্ধে। পরে গত পহেলা ফেব্রুয়ারি ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে বিএনপি।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হককে আহ্বায়ক এবং মাওলানা মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারকে সদস্য সচিব করে ওলামা দলের ১৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছিল বিএনপি।

এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাজী মো. সেলিম রেজা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি তা পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি অবিলম্বে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।


জাতীয়তাবাদী ওলামা দল   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির তৃণমূলে বাড়ছে ভোটমুখী প্রবণতা

প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের ভোটমুখী নেতাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। বহিষ্কারের মতো সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তির পরও দলটির তৃণমূলে বাড়ছে নেতাদের ভোটমুখী প্রবণতা। কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জনের ঘোষণা দিলেও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও দল এবং দল-সংশ্লিষ্ট অনেক নেতা ভোটে রয়েছেন।

অবশ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের পেছনে পারিবারিক ধারা, আঞ্চলিকতার হিসাবনিকাশ, দীর্ঘদিনের জনবিচ্ছিন্নতা কাটানোসহ নানা যুক্তির কথা বলা হচ্ছে। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মতে, ক্ষমতাসীনদের চাপ ও ফাঁদে পড়ে দলের কেউ কেউ প্রার্থী হয়েছেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, যে কোনো মূল্যে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা হবে।

দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাতীয়সহ স্থানীয় সরকারের ভোট করায় গত কয়েক বছরে দল ও অঙ্গসংগঠনের পদধারী চারশ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এর মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা শতাধিক নেতা রয়েছেন। বাকিরা সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন।

এ ছাড়া সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিভিন্ন সময় দলটির আরও কিছু নেতাকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। পরে তাদের মধ্যে দলে ফিরতে ভুল স্বীকার করে শতাধিক নেতা আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫-২০ জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। এ ছাড়া খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও ২৫ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির।

জানা গেছে, দলের বহিষ্কৃত অন্য নেতাদের জন্য সহসাই খুলছে না বিএনপির দরজা। বরং এ সংখ্যা আরও বাড়ছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় সম্প্রতি দলের আট নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। আর দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়া ৬৩ নেতাকে ইতোমধ্যে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে কিংবা কেউ জবাব না দিলে তাদের দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ১৫২টি উপজেলার মধ্যে ৩৪টিতে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির পদধারী নেতারা মাঠে আছেন।

জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে ভোট করতে বিএনপি ও দল-সংশ্লিষ্ট অন্তত ৩৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২১ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল। নির্বাচন থেকে সরে আসতে কেন্দ্রীয় এবং জেলা নেতাদের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে সাংগঠনিক সর্বোচ্চ শাস্তির বার্তাও। প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সাংগঠনিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ৩০ এপ্রিলের পর প্রথমে তাদের শোকজ নোটিশ দেওয়া হবে।

তৃতীয় ধাপের তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন। শেষ ধাপের এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ১৯ মে পর্যন্ত।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে থাকা বিএনপি নেতাদের বিষয়ে করণীয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘এই নির্বাচন নিয়ে দলে তো আগেই সিদ্ধান্ত ছিল এবং সেটিই বহাল আছে। সুতরাং সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ নির্বাচন করলে দল তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দল থেকে বিভিন্ন সময় বহিষ্কৃতদের ব্যাপারে আমরা এখনো চিন্তা করিনি’।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির স্থানীয় নেতারা অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে প্রথম দিকে অংশ নিলেও ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় সব স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করে আসছে বিএনপি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু, নারায়ণগঞ্জের তৈমূর আলম খন্দকারসহ অনেককে দলীয় পদ-পদবি থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

এদিকে দ্বাদশ সংসদের মতো উপজেলা নির্বাচনেও ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নরসিংদী সদর উপজেলা থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলার কর্মিসভা শেষে জনগণের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ।

এসময় তিনি বলেন, জনগণকে আমরা বিগত জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদের নির্বাচনও বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ লক্ষ্যে আমরা নরসিংদীতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেছি। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আমাদের প্রত্যাশা, ভোটাররা জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলার ভোটও বর্জন করবে।

বিএনপির কুমিল্লার (সাংগঠনিক) বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, কুমিল্লা উত্তর জেলার মেঘনা উপজেলায় আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) কর্মিসভা ও লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানানো হবে।

এর মধ্য দিয়ে কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগে জনগণকে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করার কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে বিভাগের সব উপজেলায় লিফলেট বিতরণ করা হবে।


বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভোটের মাঠ ছেড়ে দল গোছাতে তৎপর জামায়াত

প্রকাশ: ১১:৩২ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আপাতত ভোটের মাঠ ছেড়ে দল গোছাতে সারা দেশে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে দলটি। প্রায় এক যুগ ধরে কোণঠাসা হয়ে থাকলেও এবার রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়াতে চায় তারা। অবশ্য সরকারের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে এখনো তাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জামায়াত নেতারা।

জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের খড়্গ নেমে আসে। অধিকাংশ শীর্ষ নেতাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাবন্দি করা হয়। সারা দেশে কেন্দ্র, মহানগর ও জেলা পর্যায়ে ৮৭টি দলীয় কার্যালয় থাকলেও এর প্রায় সবই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখনো সেগুলো তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করতে ডিজিটাল মাধ্যমকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকাশ্য কর্মসূচির সংখ্যা বাড়ানোর দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন বর্জন করলেও বসে নেই জামায়াতে ইসলামী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই সারা দেশে সংগঠন চাঙ্গা করার দিকে নজর দিয়েছে দলটি। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে মহানগর, থানা ও উপজেলা পর্যায়ে রুকন (সদস্য) সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। গত তিন মাসে সম্মেলন হয়েছে ৩০টিরও বেশি সাংগঠনিক জেলায়।

এ ছাড়া নবাগত ও অগ্রসর কর্মীদের জন্য কয়েকটি শিক্ষা শিবির, সহযোগী সদস্যদের সভা ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা এবং নির্বাহী পরিষদের একাধিক সভা ও বিশেষ রুকন সম্মেলনও হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর চলছে ঈদ পুনর্মিলনী। সম্প্রতি জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ প্রায় সব কেন্দ্রীয় নেতা জামিনে কারামুক্ত হওয়ায় সাংগঠনিক তৎপরতা আরও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে জুম, ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ১৫ দিনব্যাপী ঈদ পুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান। এর আগে গত রমজানে দীর্ঘ ৮ বছর পর ঢাকায় বড় পরিসরে ইফতার মাহফিল হয়েছে। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে কর্মসূচি ঘোষণারও পরিকল্পনা করছে জামায়াত। দলটির নীতিনির্ধারকরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও সংকট নিরসনের দাবিতে কর্মসূচির কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে।

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সরকার। ট্রাইব্যুনালের বিচারে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে ২০১৩ সালে রায় দেন আদালত।

এরপর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে রাজনৈতিক দল বা সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচার শুরু করতে আইন সংশোধনের উদ্যোগও নেওয়া হয়।

মূলত এসব কারণে প্রায় এক যুগ ধরে রাজনীততে কোণঠাসা হয়ে আছে জামায়াত। শীর্ষ নেতাদের বেশ কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পাশাপাশি কেউ কেউ দেশত্যাগ করেন। একটি অংশ জামায়াত ছেড়ে নতুন দল গঠন করেন।

অনেকে আবার রাজনীতি ছেড়েছেন। এসব সত্ত্বেও নানা কৌশলে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছে জামায়াত। দীর্ঘ বিরতির পর ২০২৩ সালের ১০ জুন প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশ করে দলটি। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবারও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে মনোযোগী হয়েছেন দলের নেতারা।

সম্প্রতি জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘যতই বাধা আসুক, আমরা ইকামাতে দ্বীনের (দ্বীন প্রতিষ্ঠার) কাজ চালিয়ে যাব। অনলাইনের পরিবর্তে আমাদের প্রকাশ্যে প্রোগ্রাম করতে হবে। কারণ অনলাইনে আরামপ্রিয় জনশক্তি তৈরি হবে। বিজয়ের জন্য বিপ্লবী কর্মী তৈরি হবে না।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। জনকল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দাওয়াত কার্যকর হবে।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত তিন মাসে বিভিন্ন পর্যায়ে নানামুখী সাংগঠনিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে জামায়াত। বড় জেলাগুলোতে একক সম্মেলন করা হয়েছে। আবার উপজেলা, থানা ও ছোট জেলাগুলোর কয়েকটি একত্র করে একই জায়গায় সম্মেলন করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মী প্রশিক্ষণের জন্য করা হয়েছে শিক্ষা শিবির। অগ্রসরমান ও নবাগত কর্মীদের জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছে সহযোগী সম্মেলন। এসব অনুষ্ঠানের কয়েকটি হয়েছে সশরীরে, আবার কয়েকটি হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে।

জেলা-উপজেলা ও থানা পর্যায়ে কর্মীরা সশরীরে উপস্থিত হলেও কেন্দ্রীয় নেতারা ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন। দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সশরীরে কিংবা ভার্চুয়ালি অংশ নিচ্ছেন। দলটির শীর্ষ নেতারা নানাভাবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করছেন। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

তবে জামায়াত নেতাদের দাবি, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যেই জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা ও শক্তি বেড়েছে। জামায়াত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সব মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

জানা গেছে, সারা দেশের জামায়াতের ৮৭টি সাংগঠনিক জেলা শাখা ও কার্যালয় রয়েছে। এর প্রায় সবই বর্তমানে তালাবদ্ধ। অবশ্য উপজেলা পর্যায়ে কোনো কোনো এলাকায় দলীয় কার্যালয় চালু রয়েছে। ২০১১ সালে ঢাকার মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও পুরানা পল্টন কার্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ সারা দেশে শতাধিক নেতাকর্মী এখনো কারাগারে আছেন। দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস পর গত ১১ মার্চ কারামুক্ত হন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তার আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছাড়া পান সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রায় আড়াই বছর পর ছাড়া পেয়েছেন নায়েবে আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিনসহ আরও বেশকিছু নেতাকর্মী কারামুক্ত হয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা হামলা-মামলায় জর্জরিত। এখনো শতাধিক নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। কয়েকদিন আগেও রাজশাহীতে ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কর্মী শিবির, শিক্ষা শিবির, অগ্রসরমান কর্মীদের নিয়ে সেমিনারসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে।’


জামায়াত   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন