নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮
দেশের মধ্যাঞ্চলীয় জেলা নেত্রকোনায় নির্বাচনী আসন রয়েছে ৫টি। এই জেলায় মোট ভোটার ১৬ লাখ ৬ হাজার ৪৮২। এর মধ্যে নারী ভোটার ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮১ এবং পুরুষ ভোটার ৮ লাখ ৯ হাজার ৬০১ জন। এই জেলার অতীত নির্বাচনের তথ্য উপাত্ত এবং সার্বিক পরিস্থিতি হিসাব নিকাশ করে আমরা প্রেডিক্ট করছি এই জেলায় নৌকা ৪টি এবং ধানের শীষ ১টি আসনে জিতবে।
নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলা)
নেত্রকোনা-১ আসনে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন নতুন প্রার্থী মানু মজুমদার। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদকারীদের মধ্যে অন্যতম তিনি। মানু মজুমদারের আরেকটি পরিচয় হলো তিনি এই আসনের বর্তমান সাংসদ ছবি বিশ্বাসের ভগ্নিপতি। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে লড়ছেন বিএনপির আইনজীবী কায়সার কামাল। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক। কায়সার কামাল ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোশতাক আহমেদের সঙ্গে লড়ে হেরে গিয়েছিলেন। এবার মোশতাক এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এ কারণে এখানে আওয়ামী লীগের ভোট ভাগ হয়ে যাবে। এটা নিঃসন্দেহেই বিএনপির জয়ের পাল্লা ভারি করবে। এ কারণে এখানে ধানের শীষের জয় দেখছি আমরা।
নেত্রকোনা-২ (নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা উপজেলা)
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আশরাফ খান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার প্রার্থী হয়েই জয় পেয়েছিলেন তিনি। বিএনপি এই আসন থেকে মনোনয়ন দিয়েছে অর্থোপেডিক চিকিৎসক মো. আনোয়ারুল হককে। তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। এছাড়া তিনি রাজনৈতিক মামলায় দলীয় নেতা-কর্মীদের আইনী খরচের যোগানদাতা বলেও জানা যায়। তবে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই আসনে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা কম। কারণ তিনি নতুন প্রার্থী। তাছাড়া আলী আশরাফ খান এই আসনের জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী নেতা। এজন্য এখানে নৌকা জয় পাবে বলে প্রেডিক্ট করছি আমরা।
নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া ও আটপাড়া উপজেলা)
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন অসীম কুমার উকিল। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক। এবারই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিনি। এখানে বিএনপির প্রার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. রফিকুল ইসলাম হিলালী। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী মঞ্জুরুল কাদের কোরায়েশীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এবারও এখানে তিনি হেরে যাবেন বলে মনে করছি আমরা। কারণ অসীম কুমার উকিল এই এলাকায় প্রভাবশালী নেতা। এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তাও রয়েছে। প্রচার প্রচারণাতেও তিনি এগিয়ে। অন্যদিকে বিএনপির নেতা কর্মীরা নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। মাঠে দেখা পাওয়া যাচ্ছে না তাদের।
নেত্রকোনা-৪ (মোহনগঞ্জ,মদন ও খালিয়াজুড়ি উপজেলা)
এই আসনে লড়ছেন তিনজন নারী প্রার্থী। নেত্রকোনা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী তাহমিনা জামান শ্রাবণী। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ রেবেকা মমিন। টানা দুই মেয়াদের সাংসদ তিনি। অন্যদিকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই আসনে রেবেকা মমিনের জয়ের সম্ভাবনাই বেশী। তিনি আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আবদুল মমিনের স্ত্রী। এই পরিবারটির প্রতি এলাকার মানুষের ভালোবাসা ও সহমর্মিতা রয়েছে। তাছাড়া গত দুই মেয়াদে এই এলাকায় রেবেকা মমিন ব্যাপক কাজ করেছেন। এ কারণে এখানে নৌকার জয় দেখছি আমরা।
নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা উপজেলা)
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. আবু তাহের তালুকদার। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল (বীর প্রতীক)। এখানেও নৌকা জয় পাবে বলে মনে করছি আমরা। কারণ ওয়ারেসাত হোসেন এই আসনের গত দুই মেয়াদের সাংসদ। এলাকায় তাঁর প্রভাব ও জনপ্রিয়তা আছে। প্রচার প্রচারণাতেও তিনি এগিয়ে। অন্যদিকে এখানে নির্বাচনী মাঠে বিএনপির নেতা কর্মীরা ততটা সক্রিয় নয়।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।