নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ১০ জানুয়ারী, ২০১৯
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শতাধিক সদস্য অপসারণ চান দলের মহাসচিবের। এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর গ্রহণ চলছে। আগামী সপ্তাহে ৬ দফা দাবি সম্বলিত এই স্বাক্ষরযুক্ত বিবৃতি পাঠানো হবে লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে। তারেক জিয়া যদি এই দাবি দাওয়াগুলোর ব্যাপারে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তাহলে তলবী সভা ডাকা হবে, সেখানে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বিএনপির বিভিন্ন সূত্র থেকে খবরে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম বৈঠক করেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির ২৭ জন সদস্য। গুলশানের একটি বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে অবিলম্বে দলের পূর্ণাঙ্গ নীতি নির্ধারণী সংস্থা জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকার আহ্বান জানানো হয়। এই বৈঠকের সূত্র ধরেই, ৫ জন নেতা দেখা করেন বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে। তারা নির্বাচনের পর পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকার অনুরোধ করেন মহাসচিবকে। কিন্তু দলের মহাসচিব নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকার এটি উপযুক্ত সময় নয় বলে তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় নির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্য হয় গ্রেপ্তার না হয় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে বৈঠক সম্ভব নয়।’ এরপর প্রথম বৈঠকে যোগদানকারীরা জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিভিন্ন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। তারা একটি দাবীনামা সম্বলিত বিবৃতি তৈরী করেন। এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসলে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।’ বিবৃতিতে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়, ‘অভিযুক্ত করা হয়েছে বর্তমান স্থায়ী কমিটিকেও। বর্তমান স্থায়ী কমিটিকে ‘অকার্যকর ও অক্ষম’ হিসেবে বর্ণনা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে ‘বিএনপিকে বাঁচাতে হলে এই নেতৃত্ব অনতিবিলম্বে পরিবর্তন করে, নতুন নেতৃত্ব তৈরী করা প্রয়োজন। যে নেতৃত্ব কঠিন লড়াইয়ের জন্য বিএনপিকে প্রস্তুত করতে হবে। নেতৃত্ব দলকে উজ্জীবিত করে দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামাতে পারবে।’ বিবৃতিতে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। এই ছয়দফা হলো-
১. অনতিবিলম্বে অযোগ্য, ব্যর্থ এবং আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অপসারণ করতে হবে। দলের প্রতি বিশ্বস্ত এবং সবার আস্থাভাজন পরীক্ষিত কাউকে মহাসচিব পদে আনতে হবে।
২. দলের বর্তমান স্থায়ী কমিটি পূনর্গঠন করতে হবে। নিস্ক্রিয়দের বাদ দিয়ে তরুণ সাহসীদের স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
৩. কোনো পরিস্থিতিতেই জাতীয় সংসদে ‘তথাকথিত’ নির্বাচিতরা শপথ গ্রহণ করবেন না।
৪. নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন বাতিল করা ছাড়া কোন নির্বাচন নয়- অবিলম্বে এই ঘোষণা দিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করতে হবে।
৫. জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান করে, বিএনপির কর্মপন্থা নির্ধারন করতে হবে।
৬. বেগম জিয়াসহ অন্যান্য কারাবন্দীদের মুক্তির জন্য আইনী লড়াই ত্বরান্বিত করতে হবে। একটি আলাদা আইনী সেল গঠন করতে হবে।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির ৫৭ জন সদস্য এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর দিয়েছেন। ১০০ জনের স্বাক্ষর সম্পন্ন হলেই বিবৃতিটি লন্ডনে তারেক জিয়াকে পাঠানো হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।