নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৯
বিভক্ত এবং বিভেদপূর্ণ বিএনপি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত নেতৃত্বের পরিবর্তন আসছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব আপাতত ছেড়ে দিচ্ছেন তারেক জিয়া। সরে যেতে হচ্ছে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। দল পূন:গঠনে সবুজ সংকেত দিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছে বিএনপি নেতৃবৃন্দ। বেগম জিয়ার অনুমতি পেলেই দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর বিএনপিতে টালমাতাল অবস্থা। সিনিয়র নেতারা দলের মহাসচিবের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন। দলের ভেতর থেকে পূর্ণকালীন একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগের দাবি উঠেছে। তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে আপত্তি তুলেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তারেক জিয়াও তাঁর দেশে ফেরা প্রশ্নে আইনী জটিলতায় পড়েছেন যুক্তরাজ্যে। এজন্য তিনি নিজেকে কিছুদিন আড়াল করতে চাইছেন। আবার তারেক চাইছে দলের কর্তৃত্ব যেন জিয়া পরিবারের হাতে থাকে। তাঁর অবর্তমানে বিএনপি মহাসচিবের একক কর্তৃত্বে দল চলছে। এটা নিয়ে আপত্তি করেছেন দলের সিনিয়র নেতারা। এজন্য তারেক এমন একজনকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করতে চাইছেন যিনি দেশে থেকে সরাসরি দলকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন। আবার তাঁর নির্দেশ মেনে চলবেন। নেতা-কর্মীদের নিরঙ্কুশ সমর্থন পাওয়ার জন্য তাকে জিয়া পরিবারের সদস্য হতে হবে। জিয়া পরিবারের মধ্যে বেগম জিয়ার ভাই এবং বোনরা ঢাকাতেই থাকেন, কিন্তু মাতৃকুলের উপর তারেক জিয়ার আস্থা নেই। তারেক জিয়ার প্রথম পছন্দ ছিল তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান। কিন্তু জোবায়দা সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হতে চান না। তাছাড়া যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করায় তাঁর দেশে এসে সরাসরি নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব নয়। একারণেই তারেক জিয়া সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করতে চাইছেন। তারেক মনে করছেন, সিঁথি দেশে এলে হতোদ্দ্যম নেতা-কর্মীরা চাঙ্গা হবে। দলের ভিতর বিভক্তিও বন্ধ হবে। সিঁথি নিজেও রাজনীতিতে জড়াতে আগ্রহী। বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার পর সিঁথি একাধিকবার লন্ডন থেকে ঢাকায় আসেন। বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা সাক্ষাতও করেন। তারেক জিয়া আপাতত: নেতৃত্ব থেকে সরে সিঁথিকে সামনে আনতে চান। কিন্তু বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কেবল একজনই, বেগম খালেদা জিয়া। জেলে যাবার পর বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাতে বেগম জিয়া জানিয়েছিলেন, প্রয়াত কোকোর স্ত্রীকে তিনি নতুন ঝামেলায় ফেলতে চান না। তাছাড়া সিঁথির রাজনৈতিক বিচক্ষণতা নিয়েও তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। এ কারণেই বিএনপির নেতারা এ ব্যাপারে আনুষ্ঠিানিক ঘোষণার আগে বেগম জিয়ার মতামত নিতে চাচ্ছেন। অন্য দিকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন দলের অদিকাংশ সিনিয়র নেতা। নতুন মহাসচিব হিসেবে তারেক পছন্দ করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে। কিন্তু নতুন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্ধারনের আগে মহাসচিব পদে পরিবর্তন বিতর্ক সূষ্টি করতে পারে এ কারণে এখনই মহাসচিব পরিবর্তনের ঘোষণা আসছে না। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা নেতৃত্বে পরিবর্তন প্রক্রিয়ার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়া এই পরিবর্তন সম্ভব নয় বলেই তারা মন্তব্য করেছেন। বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, নেতৃত্ব পরিবর্তনে বাধা দিতে চায় জন্যেই গত একমাসে তার সঙ্গে কাউকে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।