ইনসাইড পলিটিক্স

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদে পরিবর্তন হলো না কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৯


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভায় ব্যাপক পরিবর্তন এবং চমক আনলেও তার উপদেষ্টা পরিষদ আগেরটাই বহাল রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদে পরিবর্তন হলো না কেন? এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক প্রশ্ন। উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের পর প্রধানমন্ত্রীর বড় চমক ছিল শক্তিশালি একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা। সে সময় বেতনভুক পূর্ণকালীন উপদেষ্টা করা হয়েছিল সাত জনকে। উপদেষ্টাদের ক্ষমতা অনেকক্ষেত্রে মন্ত্রীদের চেয়েও বেশি ছিল।  এ নিয়ে তখন সরকারের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছিল। অনেক সিনিয়র নেতা সংসদের উপদেষ্টাদের সাংগঠনিক কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। ঐ উপদেষ্টা পরিষদকে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠক এবং একনেকের বৈঠকেও অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছিলেন। সে সময় প্রশ্ন উঠেছিল, যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা শপথ নেননি। কাজেই মন্ত্রিসভার গোপনীয় বিষয় তাদের সামনে আলোচনা হতে পারে কিনা। পর্যায়ক্রমে অবশ্য উপদেষ্টাদের মন্ত্রিসভায় উপস্থিতি অনিয়মিত হয়ে গেলেও একনেকের বৈঠকে বেশকজন উপদেষ্টা নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন।

২০১৪ এর নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী তার উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করান। নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠনের পর দুজন উপদেষ্টা বাদ পড়েন। এরা হলেন ড. আলাউদ্দীন এবং অধ্যাপক সৈয়দ ডা. মোদাচ্ছের আলী।  ড. আলাউদ্দীন ছিলেন রাজনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা এবং ড. মোদাচ্ছের আলী ছিলেন স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা। বাকি পাঁচ উপদেষ্টাদের দায়িত্ব অব্যাহত থাকে। তবে এইচটি ইমামের উপদেষ্টার দায়িত্বের পরিবর্তন হয়। এইচটি ইমাম প্রথমে ছিলেন জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা। পরে তাকে রাজনৈতিক উপদেষ্টা করা হয়। তৃতীয় মেয়াদে এবার গত মেয়াদের যে পাঁচজন উপদেষ্টা ছিলেন, তাদেরকেই বহাল রাখা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে মন্ত্রিসভায় হেভিওয়েট রাজনীতিবিদরা থাকায় উপদেষ্টাদের ক্ষমতা খর্ব হয়ে যায়। এবং উপদেষ্টাদের কাজগুলো রুটিন কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। এ সময় অধিকাংশ উপদেষ্টাই প্রায় বেকার এবং কর্মহীন জীবন যাপন করেছেন। কিন্তু এখন আবার নতুন মন্ত্রিসভায় উপদেষ্টাদের ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব আবার বাড়বে বলে জানা গেছে।

বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে নির্বাচনের সময় থেকে বেশ সরব দেখা যাচ্ছে। যেহেতু নতুন অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাই অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানের কর্তৃত্ব অর্থমন্ত্রনালয়ে বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার ড. গওহর রিজভী দ্বিতীয় মেয়াদেও অনেক ক্ষমতাবান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করতেন বলে জানা গেছে। প্রশ্ন হল যে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর পুরাতন উপদেষ্টা পরিষদকে কেন বহাল রাখছেন? প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রথমত যেহেতু উপদেষ্টারা প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত পরামর্শদাতা এবং প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন কাজে সহায়তা করেন, সেজন্যে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ব্যাক্তিগত টিমটিকে পরিবর্তন করতে চাননি। দ্বিতীয়ত হচ্ছে এই উপদেষ্টাদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি টিম ওয়ার্ক হয়েছে এবং এই টিম ওয়ার্কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এই উপদেষ্টা পরিষদে পরিবর্তন করতে চাননি। তৃতীয়ত যেহেতু এবারের মন্ত্রীসভায় অনেকেই নতুন মন্ত্রী হয়েছে, কাজেই উপদেষ্টাদের অনেক পরামর্শ এবং নির্দেশনা নতুন মন্ত্রীসভার জন্য গুরুত্বপূর্ন হতে পারে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী অভিজ্ঞ উপদেষ্টারা যারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজে দক্ষ এবং পরিক্ষিত তাদেরকে পরিবর্তন করতে চাননি। চতুর্থত, যে পাঁচজন উপদেষ্টা আছেন তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর অত্যান্ত আস্থাভাজন এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকর্মীদের মধ্যে অন্যাতম। তাই প্রধানমন্ত্রী এই বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন ব্যাক্তিদেরকে সরিয়ে উপদেষ্টা হিসেবে নতুন কাউকে নিতে চাননি।

আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলছেন, উপদেষ্টা মণ্ডলীরা প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মন্ত্রণালয়ের নয়, কাজেই প্রধানমন্ত্রী যাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাদেরকেই উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজের মধ্যে দিয়ে যেহেতু তাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য কর্ম সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তাই প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা পদে পরিবর্তন আনতে আগ্রহী হন নাই।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ফালুকে নিয়ে বিএনপিতে নতুন করে আলোচনা

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।

এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।

ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।

কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।

তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।

এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।


তারেক জিয়া   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   মোসাদ্দেক আলী ফালু   বিএনপি   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রী-এমপিদের সাথে তৃণমূলের শেষ লড়াই?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামীকাল দেশের ১৪০টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে তারা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকেও নির্বাচন যেন সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক হয় সে জন্য যথা সম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগ এবার নির্বাচনে তাদের দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছে। নির্বাচনে যেন ভোটার উপস্থিতি বাড়ে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় সে কারণেই আওয়ামী লীগ এই কৌশল গ্রহণ করেছে। এই কৌশলের কারণে প্রায় প্রতিটি উপজেলায় একাধিক আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতারা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচন অধিকাংশ স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

জাতীয় নির্বাচনের মতোই বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা উপজেলা নির্বাচনে যেন ভোটাররা ভোট দিতে না যায় সে জন্য প্রচারণা করছে। তবে তাদের প্রচারণা খুব একটা সাড়া ফেলেনি। কারণ ১৪০ টি উপজেলার মধ্যে ৭৩ টিতে বিএনপির প্রার্থী রয়েছে। বিএনপি ঘোষণা করেছিল যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে এবং এই কারণে দলের ৭৩ জন স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকে ইতোমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু দলের বহিষ্কারাদেশকে তোয়াক্কা না করে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন এই সমস্ত বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তবে নির্বাচনের মাঠে থাকলেও তারা তেমন সুবিধা করতে পারছেন না। কারণ একদিকে যেমন কর্মী সমর্থকরা বহিষ্কারাদেশের ভয়ে প্রচারে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না, অন্যদিকে দলীয় সমর্থন না পাওয়ার কারণে বিএনপির প্রার্থীদের অবস্থা খুব একটা সুবিধাজনক নয়। আর সেই কারণেই এবার উপজেলা নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের নির্বাচন হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। 

তবে উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াইয়ের চেয়েও মন্ত্রী-এমপিদের মাইম্যানদের সাথে তৃনমূলের লড়াই হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ১৪০ টি উপজেলার মধ্যে ৩১ টি উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তবে সবগুলো উপজেলাতেই মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব পছন্দের প্রার্থী বা মাইম্যান রয়েছে। যে সমস্ত প্রার্থীদেরকে মন্ত্রী এমপিরাই নির্বাচনে দাঁড় করানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্ররোচনা দিয়েছেন এবং তারা স্থানীয় পর্যায়ে মন্ত্রী-এমপির লোক হিসেবে পরিচিত। আর এই কারণেই এই সমস্ত ব্যক্তিরা এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। মন্ত্রী-এমপিদের কর্মীবাহিনী এবং সমর্থকরা ওই সব প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তারা সবসময় সচেষ্ট থাকছেন যেন মন্ত্রী-মন্ত্রীদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেন। আর এ কারণেই মন্ত্রীদের একাধিপত্য, তাদের পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে তৃণমূল অধিকাংশ স্থানে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। কর্মী সমর্থকদের একটি বিপুল অংশ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছে এবং তাদের পক্ষে একট্টা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন, উপজেলা নির্বাচন আসলে মন্ত্রী-এমপিদের মাইম্যানদের সাথে তৃণমূলের লড়াই এবং এই লড়াইয়ে যদি তৃণমূল হেরে যায় তাহলে মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে হতাশা আসবে। যারা ত্যাগী পরীক্ষিত তারা অসহায় বোধ করবে এবং আওয়ামী লীগের সবচেয়ে শক্তিশালী যে দিকটি অর্থাৎ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হতশ এবং আশাহত হবেন। এ কারণেই আওয়ামী লীগে স্বজন প্রীতি বন্ধ করার জন্য আহবান জানানো হয়েছিল। যারা মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজন তারা যেন নির্বাচন অংশগ্রহণ না করে সে জন্য বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে বার্তা কর্ণপাত করেননি অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপিরা। এখন দেখার বিষয় মন্ত্রী-এমপিদের সাথে তৃণমূল যে যুদ্ধ করছে সেই যুদ্ধে কতটুকু সফল হয়। কার কাও মতে এটাই তৃণমূলের শেষ যুদ্ধ। যদি এলাকায় মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থী  জয়ী তাহলে তৃণমূলের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। প্রতিটি এলাকায় মন্ত্রী-এমপিদের একচ্ছত্র প্রতিষ্ঠা হবে। আর যদি মন্ত্রী-এমপিরা পরাজিত হয় তাহলে তৃণমূল শক্তিশালী হবে। 

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তাপদাহে স্থগিত বিএনপির সমাবেশ শুক্রবার

প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপদাহের কারণে স্থগিত সমাবেশ আগামী শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

সোমবার (৬ মে) বিএনপির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ নিঃশর্ত মুক্তি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে আগামী ১০ মে নয়াপল্টনে অবস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম এবং সঞ্চালনায় থাকবেন সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।

বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে দাওয়াত করা হবে: কাদের

প্রকাশ: ০৮:৫৫ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ বছরও বিএনপিকে দাওয়াত করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (৬ মে) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২৩ জুন আলোচনা সভায় নেতাদের পাশাপাশি বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমরা আমাদের সব অনুষ্ঠানে বিএনপিকে দাওয়াত দিয়েছি। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও দাওয়াত করা হবে। তবে বাস্তবতার কথা বিবেচনা করেই আমরা চিন্তাভাবনা করছি বিদেশি অতিথিদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না।’

তিনি বলেন, ‘বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় আমরা পার্টির হীরকজয়ন্তী উদযাপন করব। ব্যাপকভাবে এটা সংগঠিত করার চিন্তাভাবনা করছি। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কর্মসূচি হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে থাকবে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি। বিদ্যুতের সংকটের কথা বিবেচনা করে আলোকসজ্জা বাদ দিয়েছি। আনন্দ র‍্যালি করবে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৩ জুন বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা হবে। আলোচনা সভার আগে আধাঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। দুপুরে সব ধর্মালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। বিশেষ স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে সবুজ ধরিত্রী কর্মসূচি নিয়েছি। সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করবে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত।’

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৭ মে সকালে নেতাদের সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করা হবে। দুপুরে সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা হবে। বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস কার্যালয়ে আলোচনা সভা করা হবে। আগের দিন ১৬ মে দুপুরে অসচ্ছল গরিব মানুষদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তবে আলোকসজ্জার পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়েছে।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী   বিএনপি   ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলাতেও আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাচনে প্রথম দফায় যে দেড়শটি উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে সেখানে লড়াই হচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই। এ সব উপজেলা নির্বাচনে ১৫০ টি উপজেলার মধ্যে ৫৮ টিতে বিএনপির প্রার্থীরা রয়েছেন। তবে একাধিক স্থানে বিএনপিরও একাধিক প্রার্থী রয়েছে। গড়ে প্রতিটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনজন করে। যেখানে যেখানে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন হচ্ছে অর্থাৎ সমঝোতার মাধ্যমে মন্ত্রী এবং এমপিরা তাদের নিজস্ব ব্যক্তিদেরকে প্রার্থী করেছেন এবং অন্য প্রার্থীদেরকে বসিয়ে দিয়েছেন এরকম প্রায় ৬৭ টি উপজেলায় এবার নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে বাকি আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই হবে তীব্র। কোথাও কোথাও এই লড়াই সহিংস রূপ নিয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন উপজেলায় সহিংসতা দেখা যাচ্ছে। মূলত উপজেলা নির্বাচনে লড়াই হচ্ছে মন্ত্রী-এমপিদের মাইম্যান বনাম আওয়ামী লীগের তৃণমূলের। 

প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাইম্যানদেরকে নির্বাচিত করার জন্য মাঠে নেমেছেন। যদিও নির্বাচন কমিশন বারবার ঘোষণা করছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন না বা প্রচারণা চালালে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু নির্বাচনের কলকাঠি মন্ত্রী-এমপিরাই নাড়ছেন। তারা এলাকায় যাচ্ছেন না, সরাসরি নির্বাচনে প্রচারণা করছেন না- এটা যেমন সত্য। কিন্তু পাশাপাশি এটাও সত্য যে, তাদের সমর্থক, কর্মী এবং নিজস্ব লোকজনদেরকে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য মাঠে নামিয়েছে। ঢাকায় বসেই মন্ত্রীরা নির্বাচনের তদারকি করছেন, নিশ্চিত করতে চাইছেন যে, নিজের পছন্দের ব্যক্তি যেন জয়ী হয় অন্যদিকে তৃণমূলের জন্য এই নির্বাচন একটি অগ্নিপরীক্ষা। অস্তিত্বের পরীক্ষাও বটে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন যে, দলের ভিতর যে জমিদারতন্ত্র এবং আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মন্ত্রীদের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার একটাই রাস্তা, সেটি হল নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া এবং জয়ী করে দেওয়া। 

এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যে আবহ দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন উপজেলায় তাতে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোটামুটি নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব না করে এজন্য ওপর থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। কোন মন্ত্রী-এমপির বা কোন প্রার্থীর পক্ষে যদি কেউ কাজ করে তাহলে না বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সাফ ঘোষণা করা হয়েছে। আর একারণ বাস্তবতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউই ঝুঁকি নিতে রাজি হচ্ছেন না। প্রশাসনও নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। কারণ নির্বাচন কমিশনের নজরদাবি রয়েছে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনে মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছে মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব লোক নাতি তৃণমূল আওয়ামী লীগ। আর প্রথম ধাপের ফলাফল কী হয় সেটি বুঝা যাবে ৮ মের পর। 

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন