নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৯
গত রোববার থেকে খোঁজখবর নেই তারেক জিয়ার। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বর্তমানে লন্ডনে পলাতক জীবন যাপন করছেন। লন্ডন থেকে টেলিফোনে এবং স্কাইপে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের বিভিন্ন পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করেন। খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারের পর থেকেই বিএনপি মূলত চলছে তারেক জিয়ার নির্দেশ এবং সিদ্ধান্তে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মনোনয়ন বাছাই ও প্রার্থী চূড়ান্তের সবই করেছেন তারেক জিয়া। এখনও বিএনপির রাজনীতিতে তারেক জিয়াই হলো শেষ কথা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সবসময় তার দিকেই তাকিয়ে থাকে। তিনি কী সিদ্ধান্ত দেন তার অপেক্ষায় থাকেন।
বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে নিয়মিতভাবেই তারেক জিয়া বিএনপির পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং তাদের নির্দেশনা দিতেন। নির্বাচনের পরও তিনি দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলেন। কিন্তু আকস্মিকভাবে গত রোববার থেকে তার সঙ্গে কারোর কোন যোগাযোগ নেই। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন। একটি নম্বর তিনি বেশি দিন ব্যবহার করেন না। সিম বদল করে নতুন কোন নম্বর নিয়ে আবারও নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। অনেকের সঙ্গে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবারে কথা বলেন। কারো কারোর সাথে তিনি স্কাইপেও যুক্ত হন। বিশেষ করে গত নির্বাচনের সাক্ষাৎকারের সময় তারেক জিয়া স্কাইপেতে যুক্ত হয়েছিলেন।
কিন্তু গত রোববার থেকে তারেক জিয়ার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বিএনপির নেতাদের। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তিনি যে সকল নম্বর থেকে যোগাযোগ করতেন, বিএনপির নেতারা সে সকল নম্বরে যোগাযোগ করেও সংযোগ স্থাপন করতে পারেনি। সব নম্বরেরই সংযোগ বিচ্ছিন্ন পেয়েছেন। তার ভাইবার কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি স্কাইপেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। হঠাৎ করে তারেক জিয়া নিখোঁজ হওয়ায় বিএনপি বিপাকেই পড়েছে। অনেকগুলো সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে দলটি। বিশেষ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুইজন এমপির শপথ নেয়ার সিদ্ধান্ত, ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের বিপরীতমুখী বক্তব্য, ইত্যাদি নিয়ে তারেক জিয়ার সিদ্ধান্তের প্রয়োজন ছিল। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে তারেক জিয়ার সর্বশেষ কথা হয়েছিল গত শনিবার। সেসময় তারেক জিয়া ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি থেকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাদের বদলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ড. আবদুল মঈন খানকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এ ব্যাপারে লিখিত কোন চিঠি বা বার্তা পাঠাননি। যার ফলে সে সিদ্ধান্তও এখনও কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। এরপর থেকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাচ্ছে না। এমনকি তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠারও তার কোন খবর দিতে পারছেন না।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, তারেক জিয়া লন্ডনে কিংসটনে তার বাড়িতেই রয়েছেন। কিন্তু কারোর সঙ্গে যোগাযোগ তিনি করছেন না। এদিকে, তার যু্ক্তরাজ্যে থাকার বৈধতার বিষয়ে তদন্ত করছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তে যদি এটা প্রমাণিত হয় যে, তারেক জিয়া ভুল তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বা তারেক জিয়া সুস্পষ্টভাবে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ বা অর্থ পাচার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। বাতিল হয়ে যেতে পারে। যেহেতু তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে, তাই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন বলে অনেকে মনে করছেন।
আবার অন্য একটি সূত্র বলছে যে, বিএনপিতে যেহেতু নানা রকম টানাপোড়েন চলছে। দলের শীর্ষ নেতারা একে অন্যের বিপক্ষে কথা বলছেন। এজন্য বিরক্ত হয়ে তারেক জিয়া বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছেন। যে কারণেই হোক না কেন তারেক জিয়ার এই বিচ্ছিন্নতার কারণে বিএনপির কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ৮ ফেব্রুয়ারি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবরণের প্রথম বর্ষপূর্তি বিএনপি বড়সড়ভাবে করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে না পারার কারণে ঐ কর্মসূচি চূড়ান্ত করা যায় নি।
অবশ্য বিএনপির কিছু নেতা বলেছে, এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। মাঝে মাঝেই তারেক জিয়া এরকম নিখোঁজ হয়ে যান। আবার তিনি ফিরে আসেন। এটাই তার স্টাইল।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।