নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০১৯
আওয়ামী লীগে বিভক্তি এবং অন্ত:কলহ কাটাতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যেন নিশ্চিত হয়। সেজন্য যদি কোন বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ উম্মুক্ত করে দিয়েছিল। সেখানে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছিল না। আওয়ামী মনে করেছিল, এরফলে যেটা হবে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে এবং একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। কিন্তু এরফল হিতে বিপরীত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা মাঠ পর্যায় থেকে যে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে সারাদেশে বিভক্তি ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দল বেড়ে গেছে এবং উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে পারস্পরিক বিরোধ এবং কোথাও কোথাও দাঙ্গা হাঙ্গামা এবং মারামারির মতো ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্যেগ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। একইভাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটি সারাদেশে দেখেছে যে, অধিকাংশ স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় এমপিদের মত বিরোধ দেখা দিয়েছে। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কোথাও কোথাও প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। এরফলে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের যে শৃঙ্খলা তা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন। এরফলে খুব শীঘ্রই দলের কার্যনির্বাহী বৈঠক করেছে। আওয়ামী লীগের একটি অংশ দাবি করছে যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হিসেবে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।কিন্তু এই মতের বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা। তারা মনে করছেন, যেহেতু নির্বাচনের আগে তাদেরকে সতর্ক করা হয়নি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে। তাই এখন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তটা হবে অযৌক্তিক। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছে যে, আওয়ামী লীগেই যে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে, এটা ভয়াবহ। এটার অন্যরকম একটা সমাধান বের করতে হবে। যে সমাধানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালি করতে হবে। তবে এর সমাধান কি তা জানা নেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এ ব্যাপারে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা আশা করছেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে আওয়ামী লীগের ছড়িয়ে পড়া কোন্দল এবং বিরোধ মীমাংসায় একটা ফলপ্রসূ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধান দিবেন।
উল্লেখ্য, ২০০৮ জাতীয় নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দল ছড়িয়ে পড়েছিল। সেসময় অবশ্য দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের ব্যবস্থা ছিল না। সেসময় প্রতিটি প্রার্থীই স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতো। কিন্তু যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে, সেজন্য এবার প্রকটটা অনেক বেশি।
তবে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগ মাঠ পর্যায়ে অনেক বেশি বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং অধিকাংশ স্থানেই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামী লীগই। যেহেতু প্রধান বিরোধী দল বিএনপির এখন কোনো অস্তিত্ব নেই বলা চলে। সে সমস্ত জায়গায় বিএনপি শক্তিশালী ছিল সেখানে বিএনপির প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন করেছিল, তাদের আবার অনেকেই উপজেলা প্রার্থী হওয়ার কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কাজেই দেশে বিএনপির শক্তিশালী ঘাটি হিসেবে পরিচিত অধিকাংশ স্থানেই বিএনপি এখন নির্মূল হয়ে গেছে। ফলে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামী লীগই হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে ভাবছেন আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অনেক স্থানেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। এবং স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে এরকম একটা ঘটনা আমরা লক্ষ্য করেছি। তবে আমরা নিশ্চয়ই এর সমাধান করবো। নির্বাচন হয়ে গেলে আমরা স্থানীয় পর্যায়ে তৃণমূলদের নিয়ে বসবো। বসে তারা যেন একসঙ্গে দলের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নেবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘দলের সভাপতি চিন্তা করছেন যে খুব শীঘ্রই দলের তৃণমূলের সঙ্গে একটা বৈঠকের ব্যবস্থা করছেন। এই বৈঠকের মাধ্যমে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকার একটা বার্তা দিতে চান।’
দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আওয়ামী লীগ স্থানীয় পর্যায়ে কাউন্সিলের ব্যবস্থা করবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের এই বিরোধ কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’ তবে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া নেতারা বলছেন, যে বিভেদের বলিরেখা আওয়ামী লীগকে স্পর্শ করেছে, তা থেকে একমাত্র পরিত্রাণ দিতে পারেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এখন তিনি কীভাবে এই সমাধান দেবেন, সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া লবিস্ট ফার্ম বিএনপি
মন্তব্য করুন
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় টিম সরাসরি কাজ করেছে এবং তারা প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত সবগুলো উপজেলার নির্বাচন মনিটরিং করেছে। যেখানে তারা খোঁজখবর নিয়েছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে তারা কতটা বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করেছে এবং তাদের কারণে নির্বাচনে কী কী ধরনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আর এক্ষেত্রে যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক এবং স্বতস্ফূর্ত পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, এই উপনির্বাচনগুলোতে যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। যারা নির্বাচনে তাদের নিজস্ব প্রার্থী বা আত্মীয়স্বজনকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইবে বা নির্বাচনের পেশি শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে তারা দলের পদ হারাবেন। উপজেলা নির্বাচনের সবগুলো ধাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন- একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর এক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বানেকে যারা কলুষিত করতে চাইবে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকা রাখা হবে না, তারা যে পর্যায়ে বা যে পদেই থাকুন না কেন।
বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাই ম্যান হিসাবে প্রার্থীদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তারা যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে তাহলে যারা প্রার্থী এবং যারা প্রার্থীদেরকে মদত দিচ্ছেন তারা উভয়ে দলের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, এই সব উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য পেশিশক্তি প্রয়োগ করবেন ভবিষ্যতে মনোনয়নের খাতা থেকে খাতা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদের অনেককেই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি বিএনপির দীর্ঘদিনের। শুধু দাবি নয়, এ নিয়ে বিএনপির তদবিরও করছে। সরকারের সাথে পর্দার আড়ালে নানা রকম আলাপ আলোচনাও চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। আর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যেন সরকার দেয় এ জন্য দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই লবিস্ট ফার্মের একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক। এই লবিস্ট ফার্মগুলো যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর যেন এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য চেষ্টা করবে।
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।