ইনসাইড পলিটিক্স

সিনিয়র নেতারা কিভাবে পরাজিত হলেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১২ এপ্রিল, ২০১৯


Thumbnail

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগের ওপর থাকলে সর্বময় ক্ষমতা একজনের হাতেই থাকে। তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মূলত দলে এবং সরকারে তার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়েছে এবার নির্বাচনের পর যে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওয়ান ইলেভেনের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ব আস্তে আস্তে নিরঙ্কুশ হতে থাকে। বর্তমানে দলের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব তার ওপর। তার কথাই আওয়ামী লীগের শেষ কথা। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগে যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাতে দলের সিনিয়র নেতারা অপাংক্তেয় হয়েছে। এক সময় যারা দলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিল। যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে নীতি নির্ধারকের ভূমিকা পালন করতেন, সেই সমস্ত নেতা যেমন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিমের মতো নেতৃবৃন্দ এখন দলে অপাংক্তেয়। অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বলেন, দলের কোন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে এখন তাদের নূন্যতম ভূমিকাও নেই। কেন এমন হলো? কি কারণে আওয়ামী লীগ থেকে দলের সিনিয়র নেতাদের গুরুত্ব হ্রাস পেল? কেনই বা সিনিয়র নেতারা দলের মধ্যে অপাংক্তেয় হলেন? কিভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেন? এর কারণ বিশ্লেষন হওয়া প্রয়োজন। কারণ আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যেখানে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চা থাকে এবং ২০০৭ সালের আগেও আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংগুলো ছিল ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ। সেখানে নানা মত, নানা চিন্তা ধারার বিতর্ক হতো এবং যেকোন সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ হতো এবং এনিয়ে বিতর্ক হতো। এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এর কারণ কী? অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব দলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মূলত দলের সিনিয়র নেতাদের কিছু পদক্ষেপের কারণে এবং দলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তার কারণে। আসুন দেখা যাক কিভাবে আওয়ামী লীগ এবং সরকারে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো এবং কেন সিনিয়র নেতারা দলের মধ্যে অপাংক্তেয় হলো?

১. ওয়ান ইলেভেন: ওয়ান ইলেভেনের আগের ও পরের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠক ছিল অত্যন্ত আকর্ষনীয়। এখানে বিতণ্ডা হতো, বিতর্ক হতো এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির অনেক সিদ্ধান্তই সেখানে নাকোচ হয়ে যেত। সিনিয়র নেতারা তাদের নিজস্ব মতামত দিতে কার্পন্য করতো না। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় দেখা গেলো যে দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার জন্য এক ধরনের ‘ষড়যন্ত্রে’ লিপ্ত ছিল। যে ষড়যেন্ত্রর কারণে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতিকে কারাবরণ করতে হয়েছিল। যে কারণে এই ওয়ান ইলেভেনের পর থেকেই সিনিয়র নেতাদের একটা দূরত্ব তৈরী হয়েছে। এই দূরত্বের কারণেই দলের নীতি নির্ধারনীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সরকার পুনর্বিন্যাস থেকে আস্তে আস্তে তাদের ঝেড়ে ফেলেছেন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারী মন্ত্রিসভা গঠনের মাধ্যমে দলের সিনিয়র নেতাদের পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে।

২. তৃনমূল এবং কর্মীদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা: প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের হাল ধরেন ১৯৮১ সালে। সে বছর ১৭ মে তিনি বাংলাদেশে ফেরেন। তিনি দেশে আসার পর দলের সিনিয়র নেতারা চেয়েছিলেন ইচ্ছেমতো দল পরিচালনা করতে। শেখ হাসিনা যেন তাদের মতে চলেন সেলক্ষ্যে তাদের চেষ্টার কমতি ছিল না। আস্তে আস্তে কর্মীদের ভালোবাসা এবং তৃনমূলের সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা শক্তিশালি হতে থাকেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তৃনমূল এবং কর্মীদের মাঝে শেখ হাসিনার বিপুল জনপ্রিয়তা প্রমানিত হয়। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তিনি নিরঙ্কুশ ছিলেন না। বরং ২০০১ সালে নির্বাচেনে বিপর্যয়ের পরে দলের সিনিয়র নেতারা তারা সমলোচনায় মুখর হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময়ও সিনিয়র নেতারা তার সমলোচনা করেছিলেন। মূলত সিনিয়র নেতাদের এই সমলোচনাগুলোই প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দলের মধ্যে আরো নিরঙ্কুশ করে তোলে। তিনি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে এই জনপ্রিয়তাই শেখ হাসিনাকে শক্তি জুগিয়েছে। যার ফলে তিনি দলে এবং সরকারে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন।

৩. কর্মীদের বিশ্বাসের অভাব: সিনিয়র নেতারা দলের মধ্যে এক সময় প্রভাবশালী ছিলেন এবং সিনিয়র নেতারা অনেক নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু ক্রমশ দলের কর্মীদের মধ্যে এই ধারণা জন্মে গেছে একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া তাদের কল্যানের জন্য বা তাদের অধিকারের বিষয়টি শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ বিবেচনা করেন না। বরং সিনিয়র নেতারা দলের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করেন বলেও দলের সিংহভাগ কর্মীরা মনে করেন। এ কারণে ক্রমশ সিনিয়র নেতাদের প্রতি অনাস্থা এসেছে এবং শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল হয়েছে। তারা শেখ হাসিনার প্রতিই শুধুমাত্র বিপুল সমর্থন জানিয়েছে। সিনিয়র নেতাদের প্রতি সাধারণ কর্মীদের অনাস্থাই শেখ হাসিনাকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

৪ সিদ্ধান্ত গ্রহনে বিচক্ষণতা: আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করতে হয়েছে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য থেকেই। ১৯৮১ সালে তিনি যখন রাজনীতিতে আসেন তখন এক বিরুপ রাজনীতির পরিবেশ তাকে মোকাবেলা করতে হয়। শুধু দলের বাইরে নয়, দলের ভিতরেও তাকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। শেখ হাসিনা তারা রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা এবং কৌশল দিয়েই অন্যদের পেছনে ফেলেছেন এবং সে কারণেই তিনি দলের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয় হয়েই সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী হয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

৫. সততা এবং নিষ্ঠা: আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততা এবং নিষ্ঠার কারণে তিনি দলের তরুণ এবং সাধারণের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। সাধারণ কর্মী এবং তৃনমূলের নেতারা মনে করেন শেখ হাসিনার সততা প্রশ্নাতিত এবং তিনি দলের জন্য এবং দেশের জন্য ভাবেন। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ ধরনের ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে শেখ হাসিনা শুধু দেশের কথা চিন্তা করেন এবং দলের মঙ্গল কামনা করেন। সে কারণেই দলে এবং দলের বাইরে তার বিপুল জনপ্রিয়তা। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণেই দল পরিচালনা এবং সরকার পরিচালনায় একক কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছেন। এখান থেকেই সিনিয়র নেতারা দলে অপাংক্তেয় হয়েছেন। রাষ্ট্রে পরিচালনায় তারা ভূমিকাহীন হয়েছেন এবং একটি নতুন পরিবেশের উন্মেষ ঘটেছে আওয়ামী লীগ এবং সরকারে। 

 

বাংলা ইনসাইডার



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা-তারেককে বাদ দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি

প্রকাশ: ১০:১৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি কিনা- সেই বিকল্প চিন্তা আমাদের মধ্যে আছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে একটি কমিটি বা বডি বাছাই করা হবে যারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিবে। বিষয়টিকে আরও পরিষ্কার করে তুলে ধারার জন্য আলাল বলেন, এরকম কমিটি বা বডির চিন্তা-ভাবনা আছে। হয়তো ওই দুইজনের (খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) পক্ষ থেকেই বলা হতে পারে- চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে অপশন এ-বি-সি থাকবে। এই নির্দিষ্ট পাঁচজন বা এই বডি মিলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিবে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের সাথে বিএনপির বৈঠকে দলটির ভবিষ্যত পরিকল্পনা কিংবা আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে কোন কিছু জানতে চাইলে বেশির ভাগ সময় কোন সদুত্তর দিতে পারেন না বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এক্ষেত্রে তারা বলেন যে, তারা (বিএনপি) লন্ডনের (তারেক জিয়া) সঙ্গে কথা বলে পরে তাদেরকে (কূটনীতিক) জানাবেন। এ রকম বাস্তবতায় কূটনীতিকরা দলের নেতৃত্ব থেকে বিএনপির এই শীর্ষ দুই নেতাকে বাদ দেয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে বিভিন্ন সময়। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত বিএনপিতে কি সিদ্ধান্ত আসে।

খালেদা জিয়া   তারেক জিয়া   বিএনপি   সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

পদ্মশ্রী পদক পাওয়ায় শুভেচ্ছা জানাতে বন্যার বাসায় সস্ত্রীক নানক

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদকে ভূষিত হওয়ায় দেশের খ্যাতনামা রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। সঙ্গে ছিলেন তার সহধর্মিনী অ্যাডভোকেট সৈয়দা আরজুমান বানু নারগিস।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বন্যার মোহাম্মদপুরের বাসায় গিয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নানক ও তার স্ত্রী। এ সময় ঢাকা ১৩ আসনের স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
  
শুভেচ্ছাকালে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সংগীত অঙ্গনে বন্যার এই অর্জন বাংলাদেশের অর্জন। তার এই অর্জন আমাদের। সংগীত অঙ্গনে বন্যার এই অর্জন আগামী প্রজন্মের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

উল্লেখ্য, গত সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদক গ্রহণ করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা   জাহাঙ্গীর কবির নানক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী: মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র গরমের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দায়ী করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, আজকে দেশে ঋতু নেই। এখনকার মানুষজনও বলতে পারে না বাংলাদেশে কয়টি ঋতু। দেশটি পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে মরুকরণের দিকে যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীতে সাধারণ মানুষের মাঝে বোতলজাত সুপেয় খাবার পানি, স্যালাইন ও হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন বিএনপির এ নেতা। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ১১শ’র বেশি নদী ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু তিনশ’র মতো নদী নিখোঁজ হয়ে গেছে আওয়ামী ভূমি দস্যুদের কারণে। এই হলো দেশের অবস্থা। অন্যদিকে ঢাকা শহরকে ইট-কাঠ-পাথরে ভরে দেওয়া হয়েছে। গাছ দেখা যায় না। ঢাকার চারপাশে জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে গেছে। সরকারের মদদপুষ্ট ভূমি দস্যুরা সেসব ভরাট ও দখল করেছে। ভূমি দস্যুদের সঙ্গে সরকারের তলে তলে যোগাযোগ আছে। রাজধানীকে কৃত্রিম মরুভূমি বানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে তাপমাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে কোথাও না কোথাও মানুষ মারা যাচ্ছে। ঢাকা শহরও এর ব্যতিক্রম নয়। এ অবস্থায়ও সাধারণ মানুষকে সহায়তার জন্য জেডআরএফ পানি ও স্যালাইন বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ, আমরা রাজনীতি করি সমাজের কল্যাণের জন্য।

তীব্র গরম   মির্জা আব্বাস   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ইউটার্ন

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনটি দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দিচ্ছেন না। কিন্তু আমাদের অবস্থান হলো খুব সুস্পষ্ট। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেও কোনো নির্বাচনে যাব না। তার মতে, এই কারণেই বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

তবে বিএনপির সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করে দুই শতাধিক বিএনপির প্রার্থী এখন নির্বাচনের মাঠে। প্রথম দফার নির্বাচনে বিএনপির ৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদেরকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত ৪ জন ছাড়া কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সংহত বলেও জানা গেছে। আর এ কারণেই বিএনপি ইউটার্ন নিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিলো যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের পরেও বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিএনপি এক্ষেত্রে অপেক্ষার নীতি গ্রহণ করেছে বলেই দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

তবে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলছেন যে, বিএনপি পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং উপযুক্ত সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও ওই নেতা অভিমত ত্যক্ত করেছেন। 

বিএনপির আশা ছিলো স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় হয়তো বিএনপির নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তার বিপরীত। প্রথম দফার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা বেশি এবং তৃতীয় দফাতেও আনুপাতিক হারে প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সমস্ত এলাকায় বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশি এবং যে সমস্ত এলাকায় নেতারা যত বেশি জনবান্ধব তারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। কারণ তারা মনে করছেন, সংগঠন রক্ষা করা এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। আর এ কারণেই তারা দলীয় সিদ্ধান্তকে এখন তোয়াক্কা করছে না। 

অন্যদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা অনুধাবন করছেন যে, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটা অত্যন্ত কঠোর হয়েছে, আত্মঘাতী হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা বিএনপির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জিং হবে। বিশেষ করে কোন কোন উপজেলায় যদি বহিষ্কার করা হয় তাহলে ওই এলাকাটি বিএনপি শূন্য হয়ে যাবে। এ কারণেই বিএনপি এখন তাদের সিদ্ধান্তকে পুনঃমূল্যায়ন করছে। কেউ কেউ বলছেন যে, বিএনপি ইউটার্ন করেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপির সব সিদ্ধান্ত আসে লন্ডন থেকে। বিএনপি নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কি নেবে তা জানার এখতিয়ার বিএনপির ঢাকার কোন নেতার নেই। লন্ডন থেকে কি বাণী আসে তার অপেক্ষায় আছে বিএনপি।

বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেঁচে যাচ্ছেন রাজ্জাক, ফেঁসে যাচ্ছেন শাজাহান খান

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাচনে কোন্দল বিভক্তি এবং আধিপত্য ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই নির্দেশনার মধ্যে সবচেয়ে বড় নির্দেশনা ছিল মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কয়েক দফা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নেতাকর্মীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা একমাত্র প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ছাড়া কেউই মানেননি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিষয়টি বরদাস্ত করা হবে না এবং আগামী ৩০ এপ্রিল দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তার কঠোর মনোভাবের কথা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের যারা সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আর এরকম ব্যবস্থা যদি শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছেন। গতকাল তাকে এ ব্যাপারে ইঙ্গিতও দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে শাজাহান খানকে ভর্ৎসনা করেছেন বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।

অন্যদিকে ড. রাজ্জাক তার খালাতো ভাইকে প্রার্থী করলেও এই যাত্রায় তিনি বেঁচে যাচ্ছেন। কারণ আওয়ামী লীগ আত্মীয়স্বজনদের ব্যাপারে যে নীতিমালা গ্রহণ করেছে তাতে বলা হচ্ছে যে, যদি কোন স্বজন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকেন তবে তার প্রার্থী হতে কোনও অসুবিধা নেই। আগে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন ড. রাজ্জাকের খালাতো ভাই। কাজেই এবার তিনি প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি নীতির আওতায় পড়বেন না। আর এ কারণেই তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলেও জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, যে সমস্ত প্রার্থীরা আগে থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তারা এবার প্রার্থী হবেন। এমনকি তারা কোন নেতার স্বজন হলেও প্রার্থী হতে অসুবিধা নেই। এই বিবেচনায় ড. রাজ্জাক এ যাত্রায় বেঁচে যাচ্ছেন।

তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়গুলোকে ইতিবাচক ভাবে নেননি। হয়তো তিনি সরাসরি শাস্তির হাত থেকে বাঁচবেন, তবে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যত এই সিদ্ধান্তে কতটা উজ্জ্বল হবে সেটি সময়ই বলে দেবে।

ড. আব্দুর রাজ্জাক   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন