নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৫ মে, ২০১৯
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার সহায়-সম্পত্তি কে কতটুকু পাবেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরশাদের বৈধ স্ত্রী কতজন, আর বান্ধবী বা প্রেমিকাই কতজন তা নিয়েও আছে নানা আলোচনা। সাবেক এই স্বৈরাশাসকের জীবনে যে একাধিক নারী এসেছেন এ খবর মোটামুটি ওপেন সিক্রেট। চলুন দেখে নিই এরশাদের স্ত্রী-প্রেমিকাদের হাল হকিকত-
মেরি
এরশাদ আশির দশকে মেরি নামের এক নারীকে গোপনে বিয়ে করেছিলেন বলে শোনা যায়। যদিও মেরিকে জনসমক্ষে খুব কমই দেখা গেছে। এরশাদ নিজে কখনো এই বিয়ের কথা স্বীকারও করেননি। কথিত আছে, এরশাদ তার শাসনামলে যে বিপুল অংকের সম্পদ গড়ে তুলেছিলেন তার কিছুটা তিনি মেরিকে দিয়েছিলেন। এরশাদের ক্ষমতাগ্রহণের বছর দুয়েক পর মেরির সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যায় তার। বিচ্ছেদের পর মেরিকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে শোনা যায়। এক সন্তানের জননী মেরি ২০১৫ সালে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন।
জিনাত মোশাররফ
এরশাদের ডজনখানেক বান্ধবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে জিনাত মোশাররফের নাম। ক্ষমতায় থাকাকালে জিনাতের সঙ্গে এরশাদের পরকীয়া ছিল ওপেন সিক্রেট। এরশাদের সঙ্গে নামের মিল রেখেই জিনাত মোশাররফ জিনাত হুসেইন নাম গ্রহণ করেছিলেন বলে জানা যায়। তার সঙ্গে পরকীয়া নিয়ে একটি সংবাদপত্রে খোলামেলা সাক্ষাৎকারও দিয়েছিলেন এরশাদ। এরপরই সাবেক মন্ত্রী মোশাররফের সঙ্গে জিনাতের ঘর ভাঙে। অনেকেই দাবি করেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এরশাদের ইচ্ছাতেই সংরক্ষিত আসনে জিনাতকে সংসদ সদস্য করা হয়। এরশাদের একসময়ের প্রেমিকা জিনাত বর্তমানে স্থায়ীভাবে লন্ডনে বসবাস করছেন বলে জানা যায়। এরশাদের সঙ্গে তার সম্পর্কও বহু আগেই চুকেবুকে গেছে।
বিদিশা সিদ্দিক
বিদিশা সিদ্দিকের সঙ্গে এরশাদের বিয়ের বিষয়টি সবারই জানা। প্রায় ছয় বছরের পুরো জেল জীবনে বিদিশার সাথে চুটিয়ে প্রেম করেন এরশাদ। ২০০০ সালে বিদিশাকে বিয়ে করার বিষয়টি ফাঁস করেন তিনি। সেদিন ছিল তাদের ছেলে এরিকের প্রথম জন্মদিন। বিদিশার সঙ্গে এরশাদের সংসারও বেশিদিন টেকেনি। চার দলীয় জোট সরকারের সময় বিদিশাকে তালাক দিয়ে চুরির মামলায় জেলে পাঠান এরশাদ। বিদিশা বর্তমানে বাংলাদেশেই থাকেন। এদেশে বেশ কিছু ব্যাবসা বানিজ্যের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডেও জড়িত তিনি। রাজনীতি না করলেও এরশাদের জাপার বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে। এমনকি তিনি এরশাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বলেও দাবি করেন অনেকে।
সাথী
বছর দুয়েক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে এরশাদের প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। সাথী নামের এক আইনজীবীর সাথে ৮৮ বছর বয়সী এরশাদের ঘনিষ্ট ছবি ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। তবে এ সম্পর্ক নিয়ে বেশি কিছু জানা সম্ভব হয়নি।
রওশন এরশাদ
এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ। বহু বছর ধরে তারা আলাদা বাড়িতে বসবাস করলেও আইনগতভাবে এখনও তাদের বিচ্ছেদ হয়নি। এই দম্পতির সাদ নামের এক সন্তান রয়েছে। তিনি ভারতীয় এক নারীকে বিয়ে করে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন বলে জানা যায়।
এই সম্পর্কগুলো ছাড়াও একাধিক গায়িকা, নায়িকা, এক সুপারস্টারের মাসহ অনেকের সঙ্গেই স্বৈরশাসক এরশাদের নাম জড়িয়েছিল। সারাজীবন একের পর এক নারী এরশাদের জীবনে এলেও শেষ বেলায় এসে তিনি একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় আছেন বলেই জানা যায়।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।