নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৪ পিএম, ১১ জুলাই, ২০১৯
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে চার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয় বলে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই মামলার ফলে কার্যত বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বাংলাদেশে আসার পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশের প্রথম বিচারপতি যিনি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হলেন এবং যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাবেক এই প্রধান বিচারপতি অভিযোগ করেছেন এই মামলা করা হয়েছে উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য। তিনি যেন দেশে ফিরতে না পারেন সেজন্যই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগ করে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিবেচনাধীন তার রাজনৈতিক আশ্রয়ে আবেদনের সঙ্গে নতুন সংযুক্তি জারি করেছেন বলে নিউইয়র্কের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি তার এই মামলার ব্যাপারে ভারতে লবিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন। জানা গেছে যে, নরেন্দ্র মোদির কাছে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ এবং দুর্নীতির মামলার বিষয় তিনি কিভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জড়ান, সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উল্লেখ্য যে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সমস্ত রাজনৈতিক প্রটোকল এবং শিষ্টাচার ভেঙ্গে প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় তিনি ভারত সফর করেন এবং সেখানে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছিলেন। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর তিনি বিভিন্ন রকম বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর পরিবারের সঙ্গে তার লন্ডনে বৈঠকের কথা জানাজানি হলে প্রথম বিতর্কের সৃষ্ট হয়। এজন্য তিনি জনকন্ঠ পত্রিকাকে আদালতে তলব করেছিলেন। জনকন্ঠ থেকে সেই টেপ হস্তান্তর করা হলেও পত্রিকাটিকে শাস্তি দেওয়া হয়। এরপর আসে একাদশ সংশোধনীর মামলা। সেই মামলায় বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ৭২’র সংবিধানে যা ছিল সংবিধানের আলোকে প্রস্থাপিত একাদশ সংশোধনীকে বাতিল ঘোষণা করেন। এরপর তিনি একটি জুডিশিয়াল ক্যু এর প্রস্ততি নেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছিল। এরকম একটি প্রেক্ষাপটেই আপিল বিভাগের বিচারপতিরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টে বসতে অস্বীকৃতি জানান। এর পরপরই বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রথমে ছুটি নেন। এরপরে তিনি চিকিৎসার জন্য প্রথমে অস্ট্রেলিয়া, পরে সিঙ্গাপুর এবং শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। অবশেষে তিনি তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন এবং তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। দীর্ঘদিন পরে হলেও বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার সোনালি ব্যাংকের একাউন্টে চার কোটি টাকা যে পাওয়া গেছে সেই টাকার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এই অর্থের ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান করে তিনি বাংলাদেশ এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে খবর পাওয়া যায়। সেখানে তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, যার অনেক তথ্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মনে করছেন যে, যদি ভারত সহায়তা করে তাহলে তিনি এ যাত্রায় বেঁচে যেতে পারেন। তার মামলা এবং বিচার প্রক্রিয়া থমকে যেতে পারে। কিন্তু সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে যে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা যদি অপরাধী হন তাহলে তার বিচার হবে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশ সেখানে অন্যকোথাও তদ্বির করে বা লবিং করে মামলার হাত থেকে বাঁচার কোনো পথ নেই। অবশ্য বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ব্যাপারে একটি মহল এখনও সক্রিয় এবং তাঁরা এখনও বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে মামলার হাত থেকে বাচানোর কোনো পথ আছে কিনা তা খুজে দেখার চেষ্টা করছে এবং সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতার চেষ্টা করছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সিনহার সঙ্গে এখন আর সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে কাজেই এখানে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।