নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বিএনপিতে বিলীন করার একটি প্রস্তাব করা হয়েছে। বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতাকে লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান প্রস্তাব দিয়েছে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে যেন বিএনপি থেকে বিলীন করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, বগুড়া উপনির্বাচনের আগেও জাতীয় ঐক্যফন্টের নেতা মাহামুদুর রহমান মান্নাকে তারেক জিয়া সরাসরি টেলিফোন করে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। যদিও তারেক জিয়ার সেই অনুরোধ প্রত্যাখান করেছিলেন মাহামুদুর রহমান মান্না।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে রিটা রহমানকে রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তার পিতা মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়া ছিলেন বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী। রিটা মূলত বিএনপির জোটসঙ্গী ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি অব বাংলাদেশের প্রধান ছিলেন। তবে তিনি নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন তারেক রহমানের অনুরোধেই। তারেক রহমান এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বিএনপির সঙ্গে একীভূত করার ফর্মূলা দিয়েছেন বলে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক শীর্ষনেতা নিশ্চিত করেছেন। এ লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথাও বলছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নাটকীয়ভাবেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে শেষমুহূর্তে বিকল্পধারাকে বাদ দেওয়া হয়। অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীও ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে এসে ব্যর্থ হন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভরাডুবির পরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এসময় বিএনপির শীর্ষনেতা ঐক্যফ্রন্ট বিলুপ্ত করে ২০ দলকে শক্তিশালী করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক দলের সঙ্গে বিএনপির আদর্শের দিক থেকে সাংঘর্ষিক অবস্থান রয়েছে। ড. কামাল আহমেদ সবসময় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বলেন। এসব বিভিন্ন অভিযোগে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে গাটছড়া বাধার ব্যাপারটি বিএনপিতে সমালোচিত হয়। কিন্তু তারপরেও তারেকের আগ্রহেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট টিকে আছে বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে।
৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্তত দুইটি বৈঠকে বিএনপির কেউ উপস্থিত থাকেননি। এরপর ড. কামাল হোসেন চিকিৎসার কথা বলে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থান করেছিলেন। একটা সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীও সরে যান, অন্যান্যরাও নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থাকবে কি থাকবে না এরকম সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সবাইক অবাক করে দিয়ে তারেক জিয়া ঐক্যফ্রন্টকে রেখে বরং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকেই একরকম বিলুপ্ত করে দিয়েছেন। ২০ দলূীয় জোটের তেমন কোনো কর্মকাণ্ডই এখন আর চোখে পড়ে না আমাদের।
২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক দল আন্দালিব রহমান পার্থসহ একাধিক নেতা ২০ দল থেকে সরে গিয়েছেন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েই। এই প্রেক্ষাপটে ২০ দল এখন আছে কি নেই- সে প্রশ্নের উত্তর বিএনপির নেতারাও জানেন না। সম্প্রতি হঠাৎ করেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে চাঙা করার উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যাচ্ছে যে, ড. কামাল হোসেনকে তারেক রহমান ফোন করেছেন। এছাড়াও তিনি ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাহামুদুর রহমান মান্না এবং আ স ম আবদুর রহমানকে টেলিফোন করেছেন এবং জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বিএনপিতে একীভূত করার প্রস্তাব করেছেন। এই প্রস্তাবে তারা তেমন কোনো ইতিবাচক প্রস্তাব দেননি বলেই জানা গেছে। বিএনপির একাধিক নেতা তারপরেও মনে করছেন আস্তে আস্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বিএনপিতে একীভূত করলে জাতীয় রাজনীতির জন্য তা হবে ইতিবাচক। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম একজন নেতা তারেক রহমানের এই প্রস্তাবকে হাস্যকর, উদ্ভট বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, লন্ডনে থেকে কর্মহীন এই লোকটি সারাক্ষণ উদ্ভট উদ্ভট চিন্তাভাবনা দলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আজকে বিএনপিকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকেও সেই সঙ্গে একটি সংকটাপন্ন অবস্থায় ফেলেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যেসব নেতাদেরকে এই প্রস্তাব দেওয়া হযেছে, তাদের অন্তত দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রস্তাবের কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তারা এ ধরনের প্রস্তাবে রাজি হওয়াকে অর্থহীন এবং অবাস্তব বলছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।