নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৮ অক্টোবর, ২০১৯
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলটির প্রধান মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ এই সময় একাধিক সহিংসতা, সন্ত্রাসসহ নানা অভিযোগে জড়িয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বারবার ছাত্রলীগের পদস্থলনে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরপর আওয়ামী লীগে একাধিক কমিটি হয়েছে ছাত্রলীগের কার্যক্রম অনুসন্ধানের জন্য। প্রধানমন্ত্রী তার নিজস্ব টিম দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে।
একাধিক গোয়েন্দাসংস্থা ছাত্রলীগের কার্যক্রম নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। ছাত্রলীগের ব্যাপারে এই সমস্ত অনুসন্ধা এবং রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় ছাত্রলীগকে গিলে ফেলেছে ছাত্র শিবির। বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র শিবিরের কার্যক্রমগুলো আস্তে আস্তে স্তিমিত হয়ে যায়। এই সময় ছাত্র শিবির এবং ছাত্রদল পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করে। অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। বিশেষ করে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাননে ২০১২ এর পর থেকে ছাত্র শিবিরের কর্মীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাত্রলীগে যোগদান করে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, ছাত্রশিবিরের পরিচয় গোপন রেখে নতুন শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ হিসাবে যোগদান করানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই মারা গেছেন ৩৯ জন। ছাত্রলীগের হাতে প্রাণ গেছে ১৫ জনের। যে ৩৯ জন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারা গেছে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে এগুলোর পেছনে ছিল ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীরা। ছাত্রলীগের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন যে ১৫ জন, সেই হত্যকাণ্ডর সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তারা কেউই ছাত্রলীগের প্রকৃত নেতাকর্মী নন। তারা বিভিন্ন সময় ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদল থেকে ছাত্রলীগে প্রবেশ করে এ ধরণের অপকর্মগুলো ঘটিয়েছেন।
২০০৯ সালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের স্বীকার হন ঢাকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদ। তাকে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে এনিয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, ছাত্রশিবির থেকে আসা কিছু লোকজন এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
২০১০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নসরুল্লাহ নাসিমকে হত্যাকাণ্ডের পিছনেও ছাত্রশিবির থেকে আসা ছাত্রলীগ কর্মীদের ভূমিকা ছিল বলে একাধিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও ছাত্রলীগের বিগত কমিটি গঠিত হওয়ার পর ছাত্রলীগের এই অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এই সময় দলের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আনু্ষ্ঠানিকভাবে এটাও বলেছিলেন যে, ছাত্রলীগের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছাত্রশিবির প্রবেশ করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর ছাত্রশিবির সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের কর্মীদেরকে ছাত্রলীগে প্রেরণ করেন এবং নিজেদের সংগঠন গুটিয়ে ছাত্রলীগের মধ্যে থেকে বিভিন্ন অপকর্ম করার জন্য দলীয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তের আলোকে জামাত-শিবিরের যারা নেতাকর্মী, তারা তাদের সন্তানদের বা পরিচিত ছাত্রশিবিরদের ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ ঘটায়। এসমস্ত শিক্ষার্থীদের মূল কাজ হলো যে ছাত্রলীগ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থেকে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম পরিচালনা করা। আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল একজন নেতা বলেছেন যে কাউকে মেরে ফেলা, রগ কাটার মতো বিষয়গুলো সারাদেশে ছিল ছাত্রশিবিরের সংস্কৃতি। এগুলো ছাত্রলীগের সংস্কৃতি নয়। কাজেই এ ধরনের সংস্কৃতি ছাত্রলীগে আমদানি হওয়াটা একটি বিস্ময়কর ব্যাপার।
আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা জানিয়েছেন যে, ছাত্রলীগের বিগত কমিটিতে প্রথম ছাত্রশিবিরের অনুপ্রবেশের ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল। শোভন রাব্বানীর যখন কমিটি হয় তখন এদেরকে বাদ দেওয়ার কথা থাকলেও তারা এতো শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করেছিল যে তাদেরকে বাদ দেওয়া সম্ভবপর হয়নি। এখনো ছাত্রশিবিরের একটি বড় অংশ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দলের নেতৃত্বে আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু ছাত্রশিবির নয়, ছাত্রদলেরও একটা বড় অংশের প্রবেশ ঘটে ২০১৪-১৫ সালে। এরাও ছাত্রলীগের মধ্যে প্রবেশ করে বিভিন্ন রকম অপকর্ম ঘটাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, ছাত্রলীগের শিবিরকরণের যে পরিকল্পিত নীলনকশা, সেটা যদি ভেস্তে দেওয়া না হয় তাহলে ছাত্রলীগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি তারেক জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।