নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৯ অক্টোবর, ২০১৯
আওয়ামী লীগ তাঁর দলের মধ্যে যারা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত, যারা সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত তাদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানে শুরু করেছে। কিন্তু এই শুদ্ধি অভিযান শুরুর তিন সপ্তাহের মাথায় কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে। জানা গেছে যে, শুদ্ধি অভিযানে যে ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে তাতে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এবং এতে সাধারণ মানুষের মনে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। এজন্য শুদ্ধি অভিযানের কৌশলগত পরিবর্তনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। ঢাকঢোল পিটিয়ে শুদ্ধি অভিযান না করে তিনটি ক্যাটাগরি তৈরি করা হচ্ছে।
এই তিন ক্যাটাগরিতে তিনবরকমভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রথমত, যারা একেবারে গর্হিত কাজ করছে। যেমন খালেদ হোসেন ভুঁইয়া, জিকে শামীমের মতো যারা দলীয় পদ ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে বর্তমান কায়দায় যে সাড়াশি অভিযান তা অব্যাহত থাকবে। তাদেরকে প্রকাশ্যে গ্রেপ্তার করে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা মনে করছে, লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এদের মধ্যে অধিকাংশই হলো হাইব্রিড। যারা অন্য দল থেকে আওয়ামী লীগে এসেছে সুবিধা আদায়ের জন্য।
দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে আছে, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে কিন্তু অভিযোগের মাত্রটা অত বড় না বা তারা যে অপরাধ করেছে সেই অপরাধের জন্য তাদেরকে দল থেকে সরিয়ে দিলেই সেই অপরাধ থেকে তারা নিজেদেরকে নিবৃত করতে পারবে এরকম অভিযুক্তদের ঢাকঢোল পিটিয়ে আইনের আওতায় না এনে তাদের বিরুদ্ধে কিছু আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, নিয়মিত মামলা গ্রহণ করার ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনকে কার্যকর করা। যেমন ধরা যাক, যদি আওয়ামী লীগের কোন নেতা যার আয়ের সঙ্গে ব্যায়ের সামঞ্জস্য নেই এবং এরকম যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, তিনি যে উপার্জন করেছেন সে উপার্জনটি বৈধ পথে নয় তখন দুদক তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার তা দুর্নীতি দমন কমিশন গ্রহণ করবে। একইভাবে যদি তাদের বিরুদ্ধে কোন সন্ত্রাস বা অন্যকোন অপরাধের কোন মামলা থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে সে মামলাটি করবে।
তৃতীয় ক্যাটাগরিতে যাদের মদদে বা পৃষ্ঠপোষকতায় এই অপরাধীরা ডালপালা বিস্তার করেছিল এবং অপরাধীরা আইনের ঊর্ধে নিজেদেরকে নিয়ে গিয়েছিল তাদের ব্যাপারে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তাঁদেরকে সতর্ক করা হবে যেন তারা ভবিষ্যতে এধরণের অপরাধী বা অপরাধের সঙ্গে না জড়ায় এবং অভিযুক্তদের কোনরকম আশ্রয় প্রশ্রয় না দেয়। এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তারা যেন ভবিষ্যতে কাউকে পৃষ্ঠপোষকতা না দিতে পারে সেজন্য তাদের ক্ষমতা খর্ব করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, ঢালাওভাবে শুদ্ধি অভিযানের ফলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধেও নানারকম কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে এবং অনেকের বিরুদ্ধে কল্পিত কল্পকাহিনী প্রকাশ করা হচ্ছে। যেগুলোর ফলে শুধু যে ওই ব্যক্তির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে তা নয়, আওয়ামী লীগেরও ইমেজ নষ্ট হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কাছে একটা ভুল বার্তা যাচ্ছে। এ কারণেই শুদ্ধি অভিযানে আরও সতর্কতা অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আগামীকাল শুদ্ধি অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উচ্চ পর্যায়ের একটা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা এবং সেই বৈঠকে শুদ্ধি অভিযানের বর্তমান যে রুপপরিকল্পনা সেটা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে এবং তিনি যদি সেটি অনুমোদন করেন তাহলে শুদ্ধি অভিযান দেখা যাবে নতুন অবয়বে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।