নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯
গতকাল সরকারের ১১ মাস পূর্ণ হয়েছে। এ বছর ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয়বারের মত আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করে ১১ মাস অতিক্রম করলো। আগামী বছর সরকারের বর্ষপূর্তি হবে। কিন্তু বর্ষপূর্তির আগেই সরকারের অনেক ক্ষেত্রেই গতি শ্লথ হয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করে, গত দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ যেরকম স্বাচ্ছন্দ্যে দেশ পরিচালনা করেছিল তৃতীয় মেয়াদে এসে সেই সাবলীলতায় কোথায় যেন ছন্দপতন হয়েছে। গত ১১ মাসে সরকার অনেকগুলো ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি। অনেকগুলো ক্ষেত্রেই সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলা চলে। গত ১১ মাসে জনগন সরকারের ১১টি ব্যর্থতা চিহ্নিত করেছে। বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে ১১ টি ব্যর্থতা হলো;
পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি
পেঁয়াজের মূল্য ধরে রাখতে না পারা ১১ মাস বয়সী সরকারের হয়তো সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। লাগামহীন ভাবে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি যে যৌক্তিক নয় তা সরকারের নীতি নির্ধারকরাও স্বীকার করেছেন। কিন্তু পেঁয়াজের সিন্ডিকেট বা পেঁয়াজের মুনাফা বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য সরকার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। পেঁয়াজের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি এবং গুজব ছড়িয়ে পণ্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের নজরদারি এবং সরকারে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
অর্থনীতিতে স্লথ গতি
গত দুই মেয়াদে সরকারের অর্থনীতি ছিল অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা। সেই অগ্রযাত্রার অর্থনীতিতে যেন হঠাৎ করেই ভাটার টান দেখা যাচ্ছে। সবকটি সূচকে নিম্নগামিতা একমাত্র প্রবাসী আয় ছাড়া কোনো ক্ষেত্রেই তেমন সাফল্য নেই। বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হলেও বিনিয়োগে আগ্রহ নেই বেসরকারি উদ্যোক্তাদের।
পরিবহন খাতে নৈরাজ্য
এ বছর সরকার নতুন পরিবহন আইন প্রনয়ন করেছিল। সেই পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে সরকার। সরকারের নতুন সড়ক আইনকে চ্যালেঞ্জ করে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা অঘোষিত ধর্মঘটে যায়। আলোচনার মাধ্যমে সরকারকে পিছু হটতে হয়। মনে করা হয় পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করতে সরকারের যে দ্বিধা দ্বন্দ্ব এটাকে সাধারণ মানুষ ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে।
বায়ু দূষণ পরিস্থিতি
বায়ু দূষণ পরিস্থিতি বাংলাদেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে আর এ বিষয়ে যেনো কোন অভিভাবক নেই। সরকার প্রথমে দৃষ্টি দেয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে তখন কোনো কোনো মহল নড়েচড়ে বসলেও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রনে আসার কোনো লক্ষণ দেখা যাননি।
মুখ থুবড়ে পড়া দূর্নীতি বিরোধী অভিযান
সরকার তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করার সময় যে অঙ্গিকারগুলো করেছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল দূর্নীতি বিরোধী অভিযান। আর এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিলেন। শুদ্ধি অভিযানে কয়েকজন যুবলীগ নেতা ও আওয়ামী লীগের মাঝ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তারের পর এই অভিযান গতিহীন হয়ে পড়েছে। এক অর্থে দূর্নীতি বিরোধী অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে। এটাকেও সরকারের একটা ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ।
ভারতের সঙ্গে হঠাৎ শীতল সম্পর্কের আভাস
ভারত তিস্তার পানি নিয়ে এখন কোন কথাই বলছেনা। আবার নাগরিকত্ব আইন করে বাংলাদেশের উপর নতুন চাপ সৃষ্টি করেছে। ভারতের সাথে এই টানাপড়েন সরকারের ভারতের সঙ্গে দাবি-দাওয়া নিয়ে আলাপ আলোচনা কমে গেছে এমন অভিযোগ উঠছে- এটাকেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণে একটা ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করছে।
ক্রিকেটে কালো মেঘ
ক্রিকেটারদের আন্দোলন তারপর সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা এবং ক্রিকেট বোর্ডের সাথে ক্রিকেটারদের শীতল সম্পর্ক- সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি কালো মেঘ তৈরি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সরকার গত দুই মেয়াদে যতটা ক্রীড়াবান্ধব ছিল যত সাফল্যের সঙ্গে ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যত সচেষ্ট ছিল সেটা যেন হঠাত করে ভাটা পড়েছে। বিশেষ করে ক্রিকেট বোর্ডের নেতৃত্বকে ব্যর্থ হিসেবেই অবিহিত করছে অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতা
তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে সরকার একের পর এক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা রকম অস্থিরতায় পড়ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখনো অস্থিরতা চলছে। আন্দোলনের মুখে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করতে হয়েছে। আরো অনেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে রয়েছে নানারকম অভিযোগ।
লাগামহীন ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হলেও এখনো বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের মারামারি-সংঘর্ষ, শিক্ষকের উপর হাততোলা সহ নানা অভিযোগ প্রতিনিয়তই উঠছে। ছাত্রলীগের লাগাম এখনো টেনে ধরতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরে আনার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা
জাতির পিতার হত্যকারী যারা বিদেশে আছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এ যেন শুধু কথার কথাই থেকে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত তাদরকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকার সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনি।
কথায় কথায় পেশাজীবিদের ধর্মঘট
পেট্রোল পাম্পে ধর্মঘট, পরিবহন শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘট, নৌ পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটসহ নানা অস্থিরতা তৈরী হয়েছে। সরকারকে যেন মাসিক ভিত্তিতে ধর্মঘট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। পেশাজীবি গ্রুপগুলো নানা রকম যৌক্তিক অযৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলছে। এই ধর্মঘটগুলোর ব্যাপারে আগাম আঁচ করতে না পারা যেমন পেশাজীবিদের আস্থায় নিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান না করতে পারাও সরকারের একটি ব্যর্থতা।
মনে করা হচ্ছে, প্রত্যেকটি ব্যাপারে সাময়িক এবং সরকারের উপযুক্ত পদক্ষেপ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই ব্যর্থতাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া লবিস্ট ফার্ম বিএনপি
মন্তব্য করুন
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় টিম সরাসরি কাজ করেছে এবং তারা প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত সবগুলো উপজেলার নির্বাচন মনিটরিং করেছে। যেখানে তারা খোঁজখবর নিয়েছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে তারা কতটা বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করেছে এবং তাদের কারণে নির্বাচনে কী কী ধরনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আর এক্ষেত্রে যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক এবং স্বতস্ফূর্ত পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, এই উপনির্বাচনগুলোতে যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। যারা নির্বাচনে তাদের নিজস্ব প্রার্থী বা আত্মীয়স্বজনকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইবে বা নির্বাচনের পেশি শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে তারা দলের পদ হারাবেন। উপজেলা নির্বাচনের সবগুলো ধাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন- একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর এক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বানেকে যারা কলুষিত করতে চাইবে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকা রাখা হবে না, তারা যে পর্যায়ে বা যে পদেই থাকুন না কেন।
বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাই ম্যান হিসাবে প্রার্থীদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তারা যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে তাহলে যারা প্রার্থী এবং যারা প্রার্থীদেরকে মদত দিচ্ছেন তারা উভয়ে দলের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, এই সব উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য পেশিশক্তি প্রয়োগ করবেন ভবিষ্যতে মনোনয়নের খাতা থেকে খাতা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদের অনেককেই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি বিএনপির দীর্ঘদিনের। শুধু দাবি নয়, এ নিয়ে বিএনপির তদবিরও করছে। সরকারের সাথে পর্দার আড়ালে নানা রকম আলাপ আলোচনাও চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। আর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যেন সরকার দেয় এ জন্য দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই লবিস্ট ফার্মের একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক। এই লবিস্ট ফার্মগুলো যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর যেন এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য চেষ্টা করবে।
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।