নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪১ পিএম, ২১ জানুয়ারী, ২০২০
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে যে ১৫ জন নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন । এই সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে পেশায় দুজন আইনজীবী, দুজন শিক্ষক। ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। দুজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। এসব প্রার্থীর হলফনামায় দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে আরো জানা যায়, কোটি টাকার ওপর সম্পদ রয়েছে দুজনের। একজনের নগদ বা ব্যাংকে কোনো টাকা নেই।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ডে লড়ছেন ছয়জন নারী প্রার্থী। এর মধ্যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছেন দুজন। এ ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আলেয়া সারওয়ার ডেইজী বর্তমানে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুসারে পেশা গৃহিণী। অতীত বা বর্তমানে কোনো মামলা নেই। বছরে আয় ২৪ লাখ টাকা। ব্যাংকে আমানত ৩৪ লাখ টাকা। স্বামীর বার্ষিক বেতন ৩৪ লাখ টাকা। নগদ টাকা এক লাখ, আর সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩৪ লাখ টাকার। এ ছাড়া ১০ ভরি স্বর্ণ, এক লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী এবং ৫০ হাজার টাকার তৈজসপত্র রয়েছে।
একই ওয়ার্ডের আরেক স্বশিক্ষিত নারী প্রার্থী হাসিনা মোরশেদ কাকুলীর রয়েছে সেলুন ব্যবসা। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অতীতেও ছিল না। বছরে তাঁর আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। নগদ টাকা রয়েছে পাঁচ হাজার। স্বর্ণ নেই। আসবাব আছে দেড় লাখ টাকার; আর ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি আছে।
উত্তরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন হুমায়রা বাচ্চু। এই প্রার্থী একজন নারী উদ্যোক্তা। তাঁর ব্যাংকে বা নগদ টাকা নেই। ১০ ভরি স্বর্ণ ও যৌথ মালিকানায় পৌনে ৩ কাঠা জমির ওপর সাড়ে চারতলা বাড়ি ও তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে।
৩২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী এস এম সীমার স্থায়ী ঠিকানা মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে। পেশায় তৈরি পোশাক (ডিজাইনড) বিক্রেতা। বছরে আয় বাড়ি ভাড়া থেকে এক লাখ ৪০ হাজার এবং ব্যবসা থেকে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে দেড় লাখ। ১২ আসনের একটি মাইক্রোবাসের মালিক তিনি। অকৃষি জমি আছে আড়াই কাঠা। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও ফৌজদারি মামলায় বর্তমানে জামিনে আছেন।
৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ফেরদৌসী আহমেদর বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা বিচারাধীন। নগদ টাকা আছে ৫০ হাজার, স্বর্ণ ২০ ভরি আর ব্যাংকে রয়েছে আড়াই লাখ টাকা। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাজেদা আলী হেলেনর ডিশ এন্টেনা ব্যবসা আছে। কোনো মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বছরে আয় তিন লাখ টাকা, স্বামীর আয় আড়াই লাখ টাকা। কৃষিজমি থেকে তাঁদের আয় বছরে ৪০ হাজার টাকা। নগদ আছে নিজের ও স্বামীর তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ব্যাংকে আছে দুজনের ৮৭ হাজার টাকা। আসবাব ও অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে দেড় লাখ টাকার। ১.৪০ একর কৃষি ও ০.২৫ একর অকৃষি জমি রয়েছে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সাধারণ আসনে পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছেন ৯ জন। এঁদের মধ্যে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ফারহানা আহম্মেদ বৈশাখী বরখাস্ত হওয়া কাউন্সিলর এ কে এম মোমিনুল হক সাঈদের স্ত্রী। তাঁর স্বামীও ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী। হলফনামায় ফারহানা আহম্মেদ বৈশাখীর বুটিক ব্যবসা থেকে বছরে আয় তিন লাখ ৫২ হাজার ২৫১ টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক থেকে সুদ পান ৪৭ হাজার ৭৪৯ টাকা। নগদ আছে চার লাখ ৮০ হাজার ৭০২ টাকা। ব্যাংকে রয়েছে ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭৫ টাকা। এ ছাড়া দুই লাখ টাকার প্রাইজ বন্ড, ৫০ ভরি অলংকার ও তিন লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাব রয়েছে।
২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শাহিদা মোরশেদর কোনো মামলা নেই। বাড়ি ভাড়া থেকে তাঁর বছরে আয় ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮২ টাকা। নগদ রয়েছে আট লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মেহেরুন্নেছার বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে তাঁর বছরে আয় পাঁচ লাখ টাকা। আর স্বামীর আয় ২৯ লাখ ২৯ হাজার ৮২০ টাকা। নগদ ও ব্যাংকে আছে দুই লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৭০ লাখ টাকার কাছাকাছি।
৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হেলেনা আক্তার। হলফনামায় নিজের পেশা উল্লেখ করেছেন গৃহকর্ম ও সমাজসেবক। বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে আয় এক লাখ ৬৭ হাজার টাকা। ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন সাহানা আক্তার। পেশায় আইনজীবী এ প্রার্থীর নামে কোনো মামলা নেই। বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে আয় পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ টাকা। নিজের নামে নগদ ও ব্যাংকে রয়েছে ১৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এ ছাড়া ১০ ভরি অলংকার রয়েছে। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন দুজন নারী। এই প্রার্থীর নামে কোনো মামলা নেই। পেশা শিক্ষকতা। বছরে আয় দেড় লাখ টাকা। ব্যাংকে বা নগদ কোনো টাকা নেই। ২০ ভরি অলংকার আছে। স্বামীর বাড়ি আছে। অন্যজন শামীমা শারমীন। বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে আয় তিন লাখ ৪২ হাজার টাকা। এ ছাড়া টিউশনি করে বছরে এক লাখ ৩৮ হাজার টাকা আয় করেন। নগদ ও ব্যাংকে আছে ৩১ হাজার ৭৪৬ টাকা। স্বামীর মোটরসাইকেল ও গাড়ি এবং ব্যাংকে আলাদা টাকা রয়েছে।
৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন মাহমুদা ফেরদৌস। পেশায় আইনজীবী এই প্রার্থীর বছরে আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। নগদ ও ব্যাংকে আছে আড়াই লাখ টাকা। ২০ ভরি স্বর্ণ ও স্বামীর ফ্ল্যাট আছে। ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সোনিয়া হোসেন। পেশায় ব্যবসায়ী এই প্রার্থীর বছরে আয় তিন লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা। নগদ রয়েছে পাঁচ লাখ টাকার কাছাকাছি। শেয়ার/সঞ্চয়পত্র রয়েছে তিন লাখ টাকার। স্বর্ণ রয়েছে ৫০ ভরি। ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও আসবাব রয়েছে ছয় লাখ টাকার কাছাকাছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন ওবায়দুল কাদের শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।