নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পর সচেতন নাগরিকদের দৃষ্টি এখন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দিকে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল ছিলো মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। আগামী পয়লা মার্চ মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই হবে। ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
একাধিক প্রার্থী থাকলেও এই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এই প্রার্থীতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দুই দল বিপরীতমুখী অবস্থান গ্রহণ করেছিল। আওয়ামী লীগ বর্তমান মেয়র আজম নাছির এবং দলের অনেক সম্ভব্য প্রার্থী যারা প্রায় নিশ্চিত ছিলেন যে, নির্বাচনে তারা মনোনয়ন পাবেন। তাদেরকে বাদ দিয়ে রেজাউল করিমকে মনোনয়ন দিয়ে মোটামুটি একটা চমক দেখিয়েছেন। যে রেজাউল করিম কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম ৮ আসনে মনোনয়ন চেয়েও মনোনয়ন পাননি। আওয়ামী লীগের এই চমক দলের মধ্যে কি প্রভাব ফেলবে এবং বিভক্ত কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে কি কি সমস্যার সৃষ্টি করবে তা নিয়ে নানা বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে ধুকতে থাকা বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি, দলের আন্দোলন সংগ্রামের ব্যর্থতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত দলটি মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে কোন রকম পরীক্ষা নীরিক্ষা করেননি। বরং চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ড. শাহাদাতকেই তারা মনোনয়ন দিয়েছেন। এই মনোনয়ন দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপির যারা মাঠের কর্মী, মাঠের রাজনীতি করে এবং দলের জন্য দীর্ঘদিন ত্যাগ এবং সংগ্রাম করেছে তাদেরকে মূল্যায়ন করেছে।
ঢাকায় মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি যেমন দুজন নবিশ এবং আনকোড়া ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছিল, যাদের দলের সঙ্গে তেমন কোন সম্পর্ক ছিল না, যারা কেবল পৈত্রিক পরিচয়ে পরিচিত তেমন মনোনয়ন দেওয়ার মত ভুল বিএনপি করেনি। বরং ড. শাহাদাতের চট্টগ্রামে বিএনপি ছাড়াও আলাদা নিজের একটি ইমেজ রয়েছে দীর্ঘদিন রাজনীতি করছেন বলে। রাজনীতিতে তিনি দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বচ্ছ ইমেজ তৈরী করে রেখেছিলেন। ড. শাহাদাতই মূলত গত ৫/৭ বছর ধরে চট্টগ্রামে বিএনপির মূল কর্ণধর। যারা বিএনপির চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় নেতা যেমন আমির খসরু মাহমদু চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল নোমান তারা জাতীয় রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় ড. শাহাদাতই চট্টগ্রামে বিএনপির হাল ধরে আছেন।
একারণেই এবারের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত কি বাজিমাত করতে পারবেন ড. শাহাদাত?
ড. শাহাদাত আর রেজাউলের মধ্যে পার্থক্য করতে গেলে দেখা যায় যে, দুজনই মাঠ থেকে উঠে আসা রাজনীতিবিদ এবং দুজনই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করেই শেষ পর্যন্ত তাঁরা মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে দুজনের মধ্যে মূল পার্থক্যটি হচ্ছে, ড. শাহাদাত ঐক্যবদ্ধ একটি রাজনৈতিক শক্তি পাবেন নির্বাচনের প্রচারণায় এবং এই নির্বাচনে তাঁর হারাবার কিছু নেই, সাথে এই নির্বাচনে তিনি সরাসরিভাবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে পারবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউলের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিগত মেয়রের বিভিন্ন রকমের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, চট্টগ্রামের জলযট থেকে শুরু করে নানা রকমের সমস্যা এবং সর্বোপরি বিভক্ত আওয়ামী লীগ। আর এই বিভক্তি যদি রেজাউল শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে না পারেন তাহলে তাঁর জন্য এই নির্বাচন কঠিন হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে, চট্টগ্রামের ওয়ার্ড কাউন্সিলরে মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন এবং এবার আওয়ামী লীগে তাই বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি। এই বিদ্রোহীরা শেষ পর্যন্ত মেয়র নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও ভোটারদের উপস্থিতি চট্টগ্রামের নির্বাচনে একটি বড় ফ্যাক্টর হবে। শেষ পর্যন্ত যদি ভোটারদের যে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে, সেই অনীহা যদি বজায় থাকে তাহলে এই নির্বাচনের ফলাফলও ঢাকার মতো হবে। কারণ নূন্যতম ভোটার টার্ন আউটের নির্বাচনের ফলাফল ক্ষমতাসীন দলের পক্ষেই যাবে। তাই ড. শাহাদাত নির্বাচনের ফলাফলে কোন চমক সৃষ্টি করতে চাইলে তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসা। এবং চট্টগ্রামে বিএনপি সেই হিসেব কষেই এগোতে চাইছে।
তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে যতই বিরোধ থাকুক না কেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর পেছনেই কাজ করবে। চট্টগ্রামের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনরকম নেতিবাচক ফলাফল চট্টগ্রামের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। একারণে নির্বাচনের শুরুতে যতই মনে করা হোক না কেন আওয়ামী লীগ পিছিয়ে, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের দৌড়ে রেজাউলই এগিয়ে থাকবেন। তবে ঢাকার থেকে যে চট্টগ্রামের নির্বাচন জমজমাট হবে সেই বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কোন সন্দেহ নেই।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া লবিস্ট ফার্ম বিএনপি
মন্তব্য করুন
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় টিম সরাসরি কাজ করেছে এবং তারা প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত সবগুলো উপজেলার নির্বাচন মনিটরিং করেছে। যেখানে তারা খোঁজখবর নিয়েছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে তারা কতটা বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করেছে এবং তাদের কারণে নির্বাচনে কী কী ধরনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আর এক্ষেত্রে যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক এবং স্বতস্ফূর্ত পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, এই উপনির্বাচনগুলোতে যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। যারা নির্বাচনে তাদের নিজস্ব প্রার্থী বা আত্মীয়স্বজনকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইবে বা নির্বাচনের পেশি শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে তারা দলের পদ হারাবেন। উপজেলা নির্বাচনের সবগুলো ধাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন- একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর এক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বানেকে যারা কলুষিত করতে চাইবে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকা রাখা হবে না, তারা যে পর্যায়ে বা যে পদেই থাকুন না কেন।
বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাই ম্যান হিসাবে প্রার্থীদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তারা যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে তাহলে যারা প্রার্থী এবং যারা প্রার্থীদেরকে মদত দিচ্ছেন তারা উভয়ে দলের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, এই সব উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য পেশিশক্তি প্রয়োগ করবেন ভবিষ্যতে মনোনয়নের খাতা থেকে খাতা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদের অনেককেই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি বিএনপির দীর্ঘদিনের। শুধু দাবি নয়, এ নিয়ে বিএনপির তদবিরও করছে। সরকারের সাথে পর্দার আড়ালে নানা রকম আলাপ আলোচনাও চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। আর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যেন সরকার দেয় এ জন্য দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই লবিস্ট ফার্মের একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক। এই লবিস্ট ফার্মগুলো যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর যেন এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য চেষ্টা করবে।
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।