নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৮ পিএম, ২৬ মে, ২০২০
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে করোনায় সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছে বিএনপি। যে বিএনপি প্রায় মৃতপ্রায় ছিল, করোনা সঙ্কটের পরে সেই বিএনপি এখন চাঙ্গা হয়ে গেছে, বিএনপির নেতারা এখন কথায় কথায় তীব্র সমালোচনা করছেন, প্রতিদিনই তাঁদের সরব দেখা যাচ্ছে। যদিও ত্রাণ বিতরণে বিএনপি তৎপর নয়, কিন্তু তাঁরা নামমাত্র ত্রাণ বিতরণ করে সরকারের প্রচণ্ড সমালোচনা করছেন। আর তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, বাংলাদেশে করোনা বিএনপির জন্য আশীর্বাদ। করোনা বিএনপিকে কি কি ভাবে লাভবান করেছে তা একটু দেখে নেয়া যাক-
১. খালেদা জিয়ার মুক্তি
গত ২৫ শে মার্চ বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পান। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্তের পরেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, করোনা সংক্রমণ হওয়ার কারণেই সরকার ঝুঁকি নেয়নি। শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছেন। করোনা সঙ্কট যদি দীর্ঘমেয়াদী হয় তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটা হচ্ছে বিএনপির জন্য সবথেকে বড় আশীর্বাদ। কারণ বেগম খালেদা জিয়া ২৫ মাস কারান্তরীণ ছিলেন এবং এই সময়ে আইনি প্রক্রিয়া, আন্দোলন করার পরেও যখন খালেদা জিয়ার মুক্তির সব সম্ভাবনা উবে গিয়েছিল তখন করোনা তাঁদের জন্য এক আশীর্বাদ হয়ে আসে।
২. বিএনপির নেতাকর্মীরা তৎপর
করোনা সঙ্কট শুরুর পর বিএনপির মূল মনোযোগ চলে যায় করোনা মোকাবেলার দিকে। ফলে বিএনপির নেতাকর্মীরা আবার তৎপর হয়ে উঠছে। তাঁদেরকে আবার বিভিন্ন কর্মসূচীতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তির পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আরো বেশি তৎপর। করোনা আবার বিএনপিকে ছন্দে ফিরতে সাহায্য করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
৩. চাপে সরকার
করোনা শুধু বাংলাদেশকে নয়, সব দেশের ক্ষমতাসীন দলকে চাপে ফেলেছে এবং বাংলাদেশের সরকারও প্রথমবারের মতো বড় চাপে পড়েছে। আর সরকারের উপর চাপ সবসময় বিরোধী দলের জন্য আশীর্বাদ। তাই করোনা পরিস্থিতি সরকারকে কোণঠাসা করার মাধ্যমে বিএনপির জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
৪. জনগণের জন্য অস্বস্তি
করোনার কারণে জনগণের মধ্যে সঙ্কট দেখা দিয়েছে, আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে এবং অস্বস্তি তৈরি করেছে। এগুলো সবই বিরোধী দলের জন্য শুভ লক্ষণ। কারণ জনগণ যখন স্বস্তিতে থাকবে, জনগণ যখন সঙ্কটহীণ, উৎকণ্ঠাহীণ থাকবে তখন তাঁরা বিরোধী দলের কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীর প্রতি কোন সাড়া দিবেনা; বরং নেতিবাচক হিসেবে দেখবে। জনগণ যখন অস্বস্তিতে থাকবে, বেকারত্ব বাড়বে, অভাব-অনটন বাড়বে তখন জনগণকে উস্কে দেওয়া সবসময় সহজ। আর করোনা সঙ্কটের কারণে সরকারের উপর সৃষ্ট চাপ বিএনপির জন্য ইতিবাচক হিসেবে এসেছে।
৫. জনগণের নেতিবাচক মনোভাব
করোনা সঙ্কটের পর থেকে জনগণের মাঝে সরকারের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং গৃহীত কর্মসূচী নিয়ে অনেকের মাঝেই নানারকম প্রশ্ন উঠেছে, মানুষের মাঝে হতাশা তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে কিছু কিছু জনপ্রতিনিধিদের দূর্নীতি, অনিয়মের ঘটনা মানুষকে কোন কোন ক্ষেত্রে অসুন্তুষ্ট করছে এবং এই মনোভাব বিএনপি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে, যেটাও বিএনপির জন্য এক আশীর্বাদ।
৬. আওয়ামী লীগের মধ্যে হতাশা
করোনা সঙ্কটের সময় করোনা মোকাবেলার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর রাজনৈতিক দলকে নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী বেঁছে নিয়েছে আমলাদেরকে। আর একারণেই আওয়ামী লীগের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। কান পাতলেই দলের মধ্যে হতাশা শোনা যায়। এমনকি করোনার মধ্যে মন্ত্রীদের ক্ষমতা লোপ পেয়েছে। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের শক্তি খর্ব হয়েছে এবং এটাও বিএনপির জন্য আশীর্বাদ।
তবে করোনার কারণেই বিএনপি জনপ্রিয় দল হবে, এই আশীর্বাদগুলোকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে উৎখাত করবে এমন ধারণা অযৌক্তিক হবে। বরং এর মাধ্যমে যেটা হবে যে, বিএনপির মধ্যে হতাশা, যে অনৈক্য, যে বিভক্তিগুলো ছিল তা কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠবে।
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।