ইনসাইড পলিটিক্স

বাংলাদেশের নিকৃষ্টতম স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২০


Thumbnail

করোনা সঙ্কটকালে সবচেয়ে আলোচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যতটা না আলোচিত তার থেকে বেশি সমালোচিত। অনেকেই মনে করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যর্থ। কেউ কেউ মনে করেন যে, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের ইতিহাসের সবথেকে খারাপ স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের একজন। অনেকেই মনে করেন যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, দায়িত্বহীনতার কারণেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ স্মৃতি থেকে খুব সহজেই অতীতের অপকর্ম, দুর্বৃত্তায়নের গল্প উবে যায়। আর এজন্যেই আমরা হয়তো বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় মুখর। স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে খুব দায়িত্ববান আচরণ করতে পারছেন না তা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে, জাহিদ মালেক বাংলাদেশের সবথেকে খারাপ স্বাস্থ্যমন্ত্রী নন। বাংলাদেশের নিকৃষ্টতম স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে তা নিয়ে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত ২৯ জন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তাদেরকে সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলা যায়।

বাংলাদেশের সবথেকে সফলতম স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনে করা হয় তাজউদ্দিন আহমেদকে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন, এই সময়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের যে চিকিৎসা কাঠামো সেই কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন। অনেকেই মনে করেন যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত, মুক্তিযুদ্ধের সময় এটা প্রথম বাস্তবায়ন করেছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ। তাঁর কারণেই মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চিকিৎসা ক্যাম্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনে করা হয় অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বা বি.চৌধুরীকে। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকাবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসা পরিকাঠামো নির্মাণ এবং চিকিৎসক-নার্সসহ একটি পূর্ণাজ্ঞ বিন্যাস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশে টিকা দান কর্মসূচী এবং পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী বিকশিত হয়েছিল।

বাংলাদেশের তৃতীয় সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনে করা হয় শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে, তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রবর্তিত হয়েছিল এবং তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবায় অনবদ্য ভূমিকা রেখেছিলেন এবং তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশে বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো বিকশিত হয়েছিল।

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আমলে অধ্যাপক ডা. এমএ মতিনকেও একজন সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনে করা হয় এবং তাঁর আমলে বাংলাদেশে যুগান্তকারী ওষুধ নীতি হয়েছিল, যা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী কর্তৃক প্রণীত হয়েছিল। এছাড়া এম এ মতিন চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসা কাঠামোকে যুগোপযুগীকরণ এবং সরকারী হাসপাতালে উন্নত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছিলেন।

সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তালিকায় সালাহউদ্দিন ইউসুফের নামও আসে। যিনি আওয়ামী লীগের হয়ে ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর প্রথম দুই বছরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তৃণমূলের স্বাস্থ্যসেবার বিকাশ এবং কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিলেন।

তবে এই সাফল্যের ভিড়ে আমাদের ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের তালিকাটাও খুব ছোট নয়। বাংলাদেশের নিকৃষ্টতম স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনে করা হয় সাকা চৌধুরীকে। যিনি ১৯৮৬ সালের মে মাস থেকে ৮৮ সালের জুলাই পর্যন্ত ছিলেন। এই সময়ে তিনি ডাক্তারদেরকে জেলে দেওয়া হবে, চিকিৎসা না দিলে তাঁদের পাকরাও করো ইত্যাদি ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং আপত্তিকর কথা বলে পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলেছিলেন। চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধের জন্যে প্রস্তাবও পেশ করেছিলেন। নানা কারণে ঘৃণিত, তিরস্কৃত সাকা চৌধুরীর সময়ে বিতর্কিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সবথেকে অস্থির অবস্থা পাড় করেছে বলেও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়।

দ্বিতীয় নিকৃষ্টতম স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মনে করা হয় চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফকে। তিনি স্বাস্থ্যখাতে বাণিজ্যকরণ, টেন্ডারবাজি এবং দুর্বৃত্তায়নের সূচণা করেন বলে অনেকে মনে করেন। ১৯৯১ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং এই সময়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে টেন্ডারবাজি, নানারকম অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারীতা এবং বিএনপি দলীয় লোকদেরকে কাজ দেওয়া, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে অনিয়ম শুরু হয়। স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির গুরু মনে করা হয় চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফকে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশের ইতিহাসে তৃতীয় নিকৃষ্টতম এবং সম্ভবত সবথেকে দুর্নীতিবাজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সময়ে ড্যাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একচ্ছত্র লুটপাট, দুর্নীতি শুরু করে। যেকোন নিয়োগ-পদায়নের ক্ষেত্রে টাকা দেওয়া, চিকিৎসকদের পদোন্নতির জন্যে টাকা নেওয়া, সরকারি হাসপাতালের ওষুধ লোপাট করা এবং যন্ত্রপাতি কেনার নামে হরিলুটের এক রাজত্ব কায়েম করেছিলেন এই সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, বিশ্ব ব্যাংক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আমলের পাঁচ বছরে যে টাকা দিয়েছিল তাঁর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকাই লোপাট করেছিলেন ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ড্যাবের নেতারা। কাজেই দুর্নীতির সূচণাকারী এবং বিকশিত করার ক্ষেত্রে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্বাস্থ্যখাতে ‘অমর’ হয়ে থাকবেন। আরেকটি কারণে ড. খন্দকার মোশাররেফ হোসেন বাংলাদেশের নিকৃষ্টতম স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের অনত্যম। সেটি হলো তিনি এসে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার জন্য যে কমিউনিটি ক্লিনিক করেছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার, সেই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ইতিহাসে এটি সবচেয়ে অপরিণামদর্শী এবং আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত।  

এভি এমজি তোয়াব ১৯৭৫-৭৬ এ স্বল্প মেয়াদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেই সময়ে তিনি তেমন কিছুই করতে পারেননি। বরং তখন তাঁর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল। অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁকে ছুঁড়ে দেওয়া হয়।

এইসব পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আমাদের বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক অনেক ব্যর্থ, কিন্তু নিকৃষ্টতম নন। অতীতে যারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধ্বংস করেছিলেন, সেরকম পরিস্থিতিতে তিনি নেননি। তাঁর দায়িত্ব পালনে অযোগ্যতা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত এই ভঙ্গুর অবস্থানে দাঁড়িয়ে সমালোচিত হলেও অনেক অর্জনের গর্বও আছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানি ও শরবত বিতরণ

প্রকাশ: ০৯:১৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপদাহ বিপর্যস্থ জনজীবনে পরিশ্রান্ত ও তৃষ্ণার্ত জনসাধারণের মাঝে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে সুপেয় পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

বুধবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্পট ঘুরে বেলা সাড়ে তিনটায় জিগাতলায় এসে শরবত ও সুপেয় পানি বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ- সভাপতি কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ইসহাক মিয়া, কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, প্রতিবন্ধী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ টিংকু, মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সহ সভাপতি শাহ আলম মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ হান্নান হাওলাদার শাওন প্রমুখ।


স্বেচ্ছাসেবক লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়া কি তারেকের ভুল কৌশলের শিকার?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ আবার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে দলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। 

কয়েক দিন পর পর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই নড়বড়ে বলেই মনে করছেন বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা। বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুখ, সেই অসুস্থতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সা দরকার এবং সেই চিকিৎসা দেশের সম্ভব নয়। এজন্য তারা মনে করেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নেওয়া দরকার। তবে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। বরং তারেক জিয়ার অনাগ্রহের কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রলম্বিত হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি উপায় রয়েছে। প্রথম উপায় হল, তিনি যদি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে রাষ্ট্রপতি তার অপরাধের দণ্ড মওকুফ করতে পারে বা দণ্ড হ্রাস করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি একজন মুক্ত মানুষ হতে পারেন। তখন তার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা থাকবে না।

বিএনপির অধিকাংশ নেতাই এই মতের বিরোধী। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ তার ভাই এবং বোন তার জীবনের প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করতে চান। তারা মনে করেন যে, বেগম জিয়ার এখন যে অবস্থা তাতে রাজনীতির চেয়ে তার চিকিত্সাই সবচেয়ে জরুরি। আর এই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন তাহলে এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তার তারেক জিয়া মনে করছে যদি বেগম জিয়া তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান তাহলে সেটি হবে রাজনৈতিক আত্মহত্যার সামিল। এর ফলে বিএনপির রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারেক জিয়ার ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার। নিজের স্বার্থে তিনি তার মায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করছেন জিয়া পরিবারের দুই সদস্য। 

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দ্বিতীয় উপায় হল আদালতের আশ্রয় নেওয়া। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেরকম তা নিয়ে যদি আদালতে আবেদন করা হয়, আদালত সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করে যদি রায় দেয় যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে সরকার কোন বাধা হবে না। কারণ আদালতের রায় চূড়ান্ত। এভাবে বহুবার উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতের রায়ে বিদেশ যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের। এটি কোন নতুন প্রক্রিয়া নয়। কিন্তু তারেক জিয়া বিএনপির আইনজীবীদেরকে এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য বাধা দিচ্ছেন।

বিএনপি নেতারাও এই ধরনের বাধা বিস্মিত। তারা জানেন না তারেক জিয়া কেন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা দিচ্ছেন এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন না। এ নিয়ে বিএনপির কারোরই কোন ব্যাখ্যা নেই। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, বেগম জিয়ার আইনি প্রক্রিয়া তারেক জিয়ার নির্দেশে থমকে গেছে এবং সেই থমকে যাওয়ার কারণ অজানা। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় দেশের তিলে তিলে মৃত্যুবরণ করুক- এটিই হয়তো তারেক জিয়া চান। কারণ তারেক জিয়া যদি তার মার প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা দেখাতেন সে ক্ষেত্রে তিনি সরকারের সাথে সমঝোতা না করুন কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু সেটি তিনি গ্রহণ না করাতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে,বেগম জিয়াকে এই অবস্থায় রেখে তারেক জিয়া পূর্ণ ক্ষমতা গ্রহণ করতে চান। 

অনেকে মনে করেন যে, বেগম জিয়া যদি না থাকেন, সে ক্ষেত্রে তারেক জিয়ার একক কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বেগম জিয়া সুস্থ হলে তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ কারণেই কি তিনি বেগম জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশে নিতে অনাগ্রহী? এই প্রশ্নটি এখন উঠেছে। 

বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার তৃতীয় পথ হলো সরকারের সাথে সমঝোতা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সেটির কোন সুযোগ নেই। কারণ ইতোমধ্যে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার মাধ্যমে জামিন নিয়েছেন। একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে সরকারের দুটি সুবিধা দেওয়ার কোন বিধান নেই। আর বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যদি বেগম জিয়াকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করানো যায় এবং তিনি যদি বিএনপি সঙ্গে সকল সম্পর্ক ত্যাগ করেন তাহলে হয়তো সরকারের সাথে একটা সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু সেটাতেও তারেক জিয়ার সায় নেই। তারেক জিয়ার কারণেই যেমন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন তারেক জিয়ার কারণেই হয়তো বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসাও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।




খালেদা জিয়া   বিএনপি   এভারকেয়ার হাসপাতাল   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।

আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।

বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।

জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।

এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।

শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।

আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।

কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।

কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।

বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।


শেখ   হাসিনা   আওয়ামী লীগ   তৃণমূল   উপজেলা নির্বাচন   রাজনীতি   ড. আব্দুর রাজ্জাক   শাজাহান খান   জাহিদ মালেক   মোস্তফা কামাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০৭:৩৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হয়ে ৭টা ৫ মিনিটে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতই। তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন সেটা করাতে নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে উনাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই দফায় তিনদিন হাসপাতাল থাকার পর গুলাশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।

৭৯ বয়সী এই রাজনীতিবিদ লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুস জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছেন। গত কয়েক বছর ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে।

এভারকেয়ার হাসপাতাল   খালেদা জিয়া   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আরও ৬৬ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিএনপির

প্রকাশ: ০৭:২১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এবার একযোগে ৬৬ জন নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দু–এক দিনের মধ্যেই তাদের দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে দল থেকে নির্দেশনার পরও এ সব নেতারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। একই কারণে সম্প্রতি তৃণমূলের ৭৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দুই ধাপে বিএনপির নেতাদের বহিষ্কারের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৪১।

জানা গেছে, দ্বিতীয় দফায় বহিষ্কারের তালিকায় থাকা ৬৬ জনের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৯ জন। ২০ জন নেতা হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী; আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ১৭ জন। এর বাইরে দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থী হওয়া নেতাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদের ২ জন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, এবার কমবেশি ৪৮০ উপজেলা পরিষদে চার ধাপে ভোট হবে। প্রথম ধাপে ভোট হবে ৮ মে। এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে সব ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন