নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫৮ এএম, ০২ অগাস্ট, ২০২০
৬ মাসের বিশেষ বিবেচনায় জামিনে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুকম্পায় বিশেষ বিবেচনায় তাঁকে ৬ মাসের জামিন দেওয়া হয় এবং দুই শর্তে বেগম খালেদা জিয়া এই জামিন পেয়েছিলেন এবং এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া তাঁর চিকিৎসার জন্যে কোন হাসপাতালে ভর্তি হননি, বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর বিদেশ যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত তিনি বিদেশে যাননি এবং আপাতত তাঁর বিদেশ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বেগম খালেদা জিয়ার আত্মীয় এবং বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়া যে ৬ মাসের জামিন পেয়েছিলেন তা শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া এখনো অসুস্থ এবং মানবিক কারণে তাঁর জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আর তা করতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল ঈদের দিন সকালে বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজার বাসভবনে তাঁর বোন সেলিনা ইসলাম ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এবং শামীম ইস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান এবং সেখানে তাঁরা দুপুরের খাবার গ্রহণ করেন একসঙ্গে। জানা গেছে যে, এই সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্যে সরকারের কাছে আবেদন করার ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখেন এবং গতবার তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে মানবিক কারণে বেগম খালেদা জিয়ার জন্যে জামিন চেয়েছিলেন। এরপরেই আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং দুই শর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হয়।
জানা গেছে ইতিমধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তাঁর জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং এই ব্যাপারে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট নয় বলে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন। এজন্যে আগামীকাল প্রথম কার্যদিবসে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর এপয়েন্টমেন্ট চেয়ে আবেদন করবেন বলে জানা গেছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁরা বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি এবং আরো কিছুদিন তাঁর মুক্ত থাকার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কৃপা প্রার্থনা করবেন। তবে সরকার তাঁর ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নিবেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।
সরকারের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বলেছেন যে, এটা নির্বাহী আদেশের জামিন কাজেই নির্বাহী প্রধান এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে সেই মন্ত্রী আরো বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত যেভাবে সময় কাটিয়েছে তাঁতে বাহ্যত প্রতীয়মান হয় যে, তিনি শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত কারণেই জামিন নিয়েছেন, কোন রাজনৈতিক তৎপরতার অংশগ্রহণ করছেন না- যা কিনা ইতিবাচক। তবে তাঁর আসলেই কি চিকিৎসা হয়েছে এবং যে কারণে তিনি জামিন নিয়েছেন সেই কার্যকারণ বাস্তবায়িত হয়েছে কিনা সেটাও দেখার বিষয় রয়েছে।
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।