নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০২০
আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী। টানা তৃতীয়বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। আর এই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি যেন দলমতের উর্ধে উঠে গেছেন। তার কট্টর সমালোচকরাও এখন স্বীকার করেন দেশ পরিচালনার জন্য, দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনিই সবচেয়ে যোগ্যতম ব্যক্তি। এই যোগ্যতার মাপকাঠি বিবেচনা করতে গিয়ে তারা দেখছেন তিনি দেশের স্বার্থকে সবার আগে প্রাধান্য দেন। রাজনৈতিক দূরদর্শিতা আছে এবং একজন শাসক হিসেবে তিনি অত্যন্ত উঁচু মানের। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সবসময় বিরোধী দল সরকারের সমালোচনা করে। সমালোচনার প্রধান টার্গেট হয় প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাজের সমালোচনা হয়। বাংলাদেশের একটা বাস্তবতা হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে কোন সমালোচনা নেই। বরং বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ সমালোচনা করছেন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী ও আমলার। প্রধানমন্ত্রী সকল বিতর্কের উর্ধে। জনগণের মধ্যে একটা ধারণা স্পষ্ট আছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের স্বার্থরক্ষা করতে চান এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চান। তবে বিরোধী দলরা নানা কারণেই শেখ হাসিনার কিছু কিছু কাজে মুগ্ধ। এমনকি বিএনপি’র লোকরাও ঘরোয়া আলাপচারিতায় বলেন যে, শেখ হাসিনা যে কাজগুলো করছেন আমরা যদি তা করতাম তাহলে আমাদের এই অবস্থা হতো না। শেখ হাসিনার যা ৫টি কাজে বিএনপি মুগ্ধ তারমধ্যে রয়েছে
১। পক্ষপাতহীন উন্নয়ন
শেখ হাসিনা গত সাড়ে ১১ বছরে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন পক্ষপাত করেননি। তার নির্বাচনী এলাকা বা আওয়ামীলীগ অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই শুধু উন্নয়ন হবে, বিএনপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা এলাকাগুলোতে উন্নয়ন হবে না- এই রকম ধারণা থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন। এর আগে দেখা গেছে যেভাবে বগুড়ার উন্নয়ন হয়েছে, ঠিক একইভাবে অবহেলিত হয়েছে গোপালগঞ্জ। শেখ হাসিনা ১১ বছরে উন্নয়নে সমতার তত্ত্ব প্রবর্তিত করেছেন। গোপালগঞ্জে যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে ঠিক একই রকম উন্নয়ন হয়েছে বগুড়াতেও। ফেনী-লক্ষ্মীপুরের মতো বিএনপি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেও উন্নয়নের জন্য কোন বাধা নিষেধ আরোপ করা হয়নি। শেখ হাসিনার এই কাজটি সকল রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপিকে মুগ্ধ করেছে।
২। সব এমপিকে সমান গুরুত্ব
আগে যেমন ছিল শাসক দলের এমপি মানে বেশি ক্ষমতাবান। বিরোধী দলের এমপি মানে কম ক্ষমতাবান। সরকারী দলের এমপিদের জন্য সুযোগ সুবিধা এক রকম। বিরোধী দলের এমপিদের জন্য সুযোগ সুবিধা আরেক রকম। শেখ হাসিনা এই ব্যবস্থাটিও বাতিল করেছেন। বরং তিনি সব এমপিদের সমান গুরুত্ব দিয়েছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের ক্ষেত্রেও বিরোধী দলীয় এমপিরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন। বিরোধী দলের এমপিরা বিশেষ করে বিএনপির এমপিরা সংসদে তাদের এই মুগ্ধতার কথা জানাতে কার্পণ্যও করেন নাই। বিএনপি’র এমপি হারুন অর রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বিরোধী দলীয় এলাকাগুলোর খোঁজ খবর নেন তা বিরল। এটিও একটি কারণ, যে কারণে বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মুগ্ধ।
৩। ত্রাণ কাজে সমতা নীতি
সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সংকট এবং বন্যার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, শেখ হাসিনা সমতার নীতিতে ত্রাণ বিতরণ করছেন। যে এলাকায় যত বেশি দুর্গত, যে এলাকায় যত বেশি আক্রান্ত সেই এলাকার জন্যই সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। কোন এলাকায় আওয়ামীলীগ আছে, কোন এলাকায় বিএনপি আছে। কোন এলাকার স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বিএনপি করেন এগুলো দেখছেন না। বরং তিনি জনগণের দিকে দেখছেন। করোনা সংকটের শুরু থেকে তিনি বারবার বলছেন আমি এলাকা দেখব না, আমি এমপি দেখব না, আমি জনগণ দেখব। এই কাজটিও বিএনপিতে প্রশংসিত হয়েছে।
৪। অন্যায় করলে দলের লোকদেরও ছাড় নয়
শেখ হাসিনা তিন মেয়াদের শাসনামলে একটা বিষয় স্পষ্ট করেছেন দলের ভেতরে যত ক্ষমতাবান, জনপ্রিয়, এমনকি প্রভাবশালী হোক না কেন- সে যদি অন্যায় করে তাকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপি’র একজন নেতা বলেছেন, আমরা যখন ২০০১-০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলাম তখন যদি গিয়াস উদ্দিন মামুনদের মতো দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আমরা ন্যূনতম ব্যবস্থা নিতাম তাহলে আমাদের এই পরিণতি হতো না। ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, খালেদ হোসেন ভুইয়া কিংবা ছাত্রলীগের সভাপতি সেক্রেটারিকে যেভাবে শেখ হাসিনা শাস্তি দিয়েছেন, সেটা একটা অনন্য নজির বটে। এটিও বিএনপিকে মুগ্ধ করেছে।
৫। কঠিন পরিশ্রম
শেখ হাসিনার বিষয়ে পুরো দেশের মানুষ একটা বিষয়ে একমত, তিনি পরিশ্রমী। এখনো তিনি দিনে ১৭ থেকে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম করেন। এবং পুরো সময়টা তিনি দেশ জনগণের পেছনে ব্যয় করেন। কোথায় কি হচ্ছে? কোথায় কোন সমস্যা? এগুলো নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত থেকে তিনি সকলের সার্বজনীন নেতায় পরিণত হয়েছেন। শেখ হাসিনার এই পরিশ্রম মুগ্ধ করেছে বিরোধী দলকে এবং তারা মনে করে শেখ হাসিনার মতো পরিশ্রমী নেতা যদি তাদের দলে থাকত, তাহলে হয়তো তারাও অন্য কিছু করতে পারত।
তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এই প্রথম বিরোধী দলরাও মনে করছেন যে, শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনা-ই।
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।