নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর তার চোখ এবং কানের সমস্যার বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং সেই প্রেক্ষাপটেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী প্রথম কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের সভাপতি নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করাতেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা করাতেন এবং বাংলাদেশে তার চিকিৎসা করতেন ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। এ ছাড়াও কারাগারে অভ্যন্তরে থাকাকালীন তার নানা রকম স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দেয়।
মোদাচ্ছের আলীর সাক্ষাতের পর একাধিক চিকিৎসকদের দিয়ে একটি টিম গঠিত হয়। এই টিমে সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ছাড়াও ছিলেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: এবি এম আব্দুল্লাহ, গাইনী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ শাহলা খাতুন, নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহ আলমসহ আরও কয়েকজন চিকিৎসক। মোদাচ্ছের আলী তার সাক্ষাতের পর সরকারের কাছে বলেন শেখ হাসিনার অন্যান্য চিকিৎসার জন্য আরও চিকিৎসক প্রয়োজন এবং সেই অনুযায়ী কারাগারে অন্যান্য চিকিৎসকরাও শেখ হাসিনাকে পরীক্ষা করার জন্য যান। রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যে একদিকে যেমন জিল্লুর রহমান ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগকে রক্ষা করেন অন্যদিকে তৃণমূল শেখ হাসিনার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ ছিলো। তেমনি চিকিৎসকদের মধ্যে একটি টিম শেখ হাসিনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা করার দিকে গুরুত্বারোপ করেন। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা দাবি করেন যে শেখ হাসিনার স্বাস্থ্যগত জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে এবং তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে হবে। বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে সরকারের আপত্তি থাকলেও স্বাস্থ্যগত কারণে শেখ হাসিনার মুক্তির বিষয়ে সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী একটি চিঠি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় (বর্তমানে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়) এ যান। সেখানে তিনি একাই দাঁড়িয়ে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং এটি সারাদেশের মানুষের মধ্যে আবেগের সৃষ্টি করে।
এরপর সরকারের টনক নড়ে। শেখ হাসিনার চিকিৎসকরা যৌথভাবে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আবদেন করেন এবং শেখ হাসিনাকে স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। একটি নিরপেক্ষ চিকিৎসক প্যানেল শেখ হাসিনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন তার বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, এরকম একটি সমঝোতায় পৌঁছায় সরকার। মূলত জানুয়ারি মাসের পর থেকেই সরকার সমঝোতার পথ খুঁজছিলো এবং সেখানে চিকিৎসকরা শেখ হাসিনার মুক্তির ব্যাপারে একটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। স্কয়ার হাসপাতালে অবস্থানের পর শেখ হাসিনাকে যারা চিকিৎসা করছিলেন তারা সরকারকে বলেন যে তার কানের চিকিৎসা ও অন্যান্য চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া প্রয়োজন। এই সময়ে উচ্চ আদালতেও শেখ হাসিনার পক্ষে একটি অবস্থান তৈরি হয় এবং প্রত্যেকটি মামলা থেকে তিনি জামিন পেতে শুরু করেন। অন্যদিকে মেডিকেল বোর্ডের মতামতের পর শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসরা একরকম স্বোচ্চার হন এবং চিকিৎসকদের এই আন্দোলন রানৈতিক আবরণ পায়। এই সূত্র ধরে আওয়ামী লীগও শেখ হাসিনার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার দাবি উত্থাপন করে। এই রকম একটি প্রেক্ষাপটে ১১ জুন সরকার শেখ হাসিনাকে ৮ সপ্তাহের বিশেষ প্যারোলে মুক্তির সুযোগ দেন তবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই শেখ হাসিনা সবগুলো মামলা থেকেও জামিন পান ফলে তার প্যারোল আপনাআপনি অকার্যকর হয়ে যায় এবং শেখ হাসিনার মুক্তির পথ সুগম হয়ে যায়। দীর্ঘ ১০ মাস ২৫ দিন কারাভোগের পর ১১ জুন ২০০৮ এর বিকেলে তিনি মুক্তি পান এবং পরদিনই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য চলে যান।
আগামীকাল পর্ব-৩৯: শেখ হাসিনার মুক্তির পর টালমাটাল বিএনপি
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।