নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৭ মে, ২০২১
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক থেকে। আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় ইস্যুতে আওয়ামী লীগের না জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তিনি আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীরা আশা আকাঙ্খার কেন্দ্রবিন্দু এবং তার নির্দেশে অনুপ্রেরণা দিয়েই দল পরিচালিত হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির যে অভিপ্রায়, আকাঙ্খা এবং নির্দেশনা সেটি মাঠে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দলের সাধারণ সম্পাদকের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূলের যোগসূত্র। দলের তৃণমূল রাজনৈতিক নির্দেশনা পায় এবং পুরো দলের যে চেইন অফ কমান্ড সেটি গড়ে ওঠে সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই নানা রকম ঝুট ঝামেলার মধ্যে জরিয়ে গিয়েছেন।
বিশেষ করে তার ছোটভাই কাদের মির্জা একের পর এক বাক্যবাণ এবং সে ব্যাপারে তার নীরবতা আওয়ামী লীগে তার অবস্থানকে কিছুটা হলেও নড়বড়ে করে দিয়েছে। তাছাড়া করোনার কারণে তিনি একরকম ঘরবন্দি আছেন। ঘরে থেকে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে তিনি তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ এমন একটা সংগঠন যেখানে ঘরে থেকে একটি করে বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে দল পরিচালনা করা যায় না। দলের নেতৃত্ব্ রাখা যায় না। কারণে সারা দেশের তৃণমূলের কর্মকাণ্ড, তৃণমূলের শৃঙ্খলা দেখা এবং তাদের অভাব অভিযোগ শোনা, তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের যোগসূত্র রক্ষা করা এবং অন্তঃকলহ, বিরোধ মীমাংসা ইত্যাদি কাজগুলো করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। সেটি করার ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক মূল ভূমিকা রাখেন।
তবে সাধারণ সম্পাদকের নাজুক পরিস্থিতি, তার অসুস্থতা এবং করোনা সময় আওয়ামী লীগের পঞ্চপান্ডবের উত্থান ঘটেছে। সাধারণ সম্পাদক নয় বরং আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যোগসূত্র, নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর, দলের অন্তঃকলহ মেটানো এবং হতাশ কর্মীদের চাঙ্গা করাসহ নানা রকম দলের খুঁটিনাটি কাজ সামলাচ্ছেন আওয়ামী লীগের ৫ জন নেতা। আওয়ামী লীগের মধ্যেই বলা হচ্ছে যে, পঞ্চপাণ্ডব। রাজনৈতিকভাবে তাদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তারা একে অন্যের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বও রয়েছে। আর দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতি, যুব রাজনীতি করে তারা তাদের নিজেদের মধ্যে খুব ভালো বোঝাপড়া করে নিয়েছেন। আর যে কারণে তারা পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতেই সারাদেশের আওয়ামী লীগের সংকট, সম্ভাবনা এবং কর্মসূচিগুলো করছেন। সব বিষয়ে তারাই আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে তৃণমূলে পরামর্শ দিচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন। যে ৫ জন আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সারাদেশের কর্মীদের সমন্বয় করছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন,
১. জাহাঙ্গীর কবির নানক: জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং তিনিই এই করোনাকালীন সময়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। কারণ সারাদেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তিনি অন্যতম মূল ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। এই করোনার সময় তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিশছেন।
২. আবদুর রহমান: আরেকজন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমানও জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে মিলে দেশের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডগুলো দেখভাল করছেন।
৩. বাহাউদ্দিন নাছিম: আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু এই করোনাকালীন সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অন্যতম আশা আকাঙ্খার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীদের সমস্যা, জিজ্ঞাসা ইত্যাদি এবং সংকট সমাধানে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন বাহাউদ্দিন নাছিম।
৪. মির্জা আজম: মির্জা আজম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মির্জা আজম সাংগঠনিক সম্পাদক হলেও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকার কারণে সারাদেশে তার নেটওয়ার্ক। কর্মীবান্ধব নেতা হওয়ার কারণে কর্মীদের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন, দিচ্ছেন এবং কেন্দ্রীয় যে সিদ্ধান্ত সেটি তৃনমূলে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
৫. এস এম কামাল: এস এম কামাল সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনিও এই পঞ্চপান্ডবের সদস্য। যিনি সারাদেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমন্বয় রক্ষা করার কাজটি করছেন।
এই পাঁচজনই এখন আওয়ামী লীগের সারা দেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন এবং তাদেরকে ঘিরেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো পরিচালিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতিও এদেরকে দিয়েই তার নির্দেশনাগুলো এবং অভিপ্রায়গুলো তৃণমূল পর্যায়ে জানাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া লবিস্ট ফার্ম বিএনপি
মন্তব্য করুন
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় টিম সরাসরি কাজ করেছে এবং তারা প্রথম দফায় অনুষ্ঠিত সবগুলো উপজেলার নির্বাচন মনিটরিং করেছে। যেখানে তারা খোঁজখবর নিয়েছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে কতটা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনকে তারা কতটা বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করেছে এবং তাদের কারণে নির্বাচনে কী কী ধরনের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আর এক্ষেত্রে যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক এবং স্বতস্ফূর্ত পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন যে, এই উপনির্বাচনগুলোতে যারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত অবস্থান নেওয়া হয়েছে। যারা নির্বাচনে তাদের নিজস্ব প্রার্থী বা আত্মীয়স্বজনকে জেতানোর জন্য প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করতে চাইবে বা নির্বাচনের পেশি শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে তারা দলের পদ হারাবেন। উপজেলা নির্বাচনের সবগুলো ধাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন- একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আর এক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে যারা বাধা দেবে; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বানেকে যারা কলুষিত করতে চাইবে, তাদেরকে আওয়ামী লীগের কোন পদে থাকা রাখা হবে না, তারা যে পর্যায়ে বা যে পদেই থাকুন না কেন।
বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের মাই ম্যান হিসাবে প্রার্থীদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তারা যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে তাহলে যারা প্রার্থী এবং যারা প্রার্থীদেরকে মদত দিচ্ছেন তারা উভয়ে দলের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হল যে, এই সব উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের নির্দেশ অমান্য করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করবেন, নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে জয়ী করার জন্য পেশিশক্তি প্রয়োগ করবেন ভবিষ্যতে মনোনয়নের খাতা থেকে খাতা থেকে তাদের নাম বাদ যাবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবেন।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছিল এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল তাদের অনেককেই গত নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে এলাকায় নিজস্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এ সমস্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন ঝুঁকিতে পড়বে বলেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি
মন্তব্য করুন
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি বিএনপির দীর্ঘদিনের। শুধু দাবি নয়, এ নিয়ে বিএনপির তদবিরও করছে। সরকারের সাথে পর্দার আড়ালে নানা রকম আলাপ আলোচনাও চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। আর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি যেন সরকার দেয় এ জন্য দুটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই লবিস্ট ফার্মের একটি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক, অন্যটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক। এই লবিস্ট ফার্মগুলো যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর যেন এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয় সে জন্য চেষ্টা করবে।
আজ প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন যেমন উপজেলা নির্বাচন তাদের নিজেদের মতো করে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা আচরণবিধি এবং নির্মাণের নির্বাচনের আইন কানুন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করছে, ঠিক তেমনই আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব উদ্যোগে দলের শৃঙ্খলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করছে।
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।