নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১
অবশেষে জাফরুল্লাহকে বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বিএনপির কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হবে না। বিএনপি ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠানে যদি তিনি যান সেটি তার বিষয় এবং সেটিতে বিএনপি কোন প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। জাফরুল্লাহ সঙ্গে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে না। আজ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের তিন দিনব্যাপী বৈঠকের প্রথম দিনে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই বৈঠকে বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং ভাইস চেয়ারম্যানরা অংশগ্রহণ করেছেন। ৬০ জনের বেশি বিএনপি নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এই বৈঠকে বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ জাফরুল্লাহর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন। জাফরুল্লাহ সম্প্রতি বিএনপি নেতৃবৃন্দকে চাকর-বাকরের চেয়েও নিকৃষ্ট হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিএনপির ওই নেতৃবৃন্দ বলেছেন যে, জাফরুল্লাহ বিএনপির ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলো করছেন। তিনি আসলে কার লোক এটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তিনি যে সমস্ত কর্মকাণ্ড গুলো করছেন সেই সমস্ত কর্মকাণ্ড গুলো সরকারের পক্ষে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে জাফরুল্লাহর সঙ্গে বিএনপি প্রকাশ্য বিরোধ দেখা যায়। এই বিরোধের দুটি ভাগ ছিল। প্রথম দফা বিরোধ তৈরি হয়েছিল যখন জাফরুল্লাহ তারেক জিয়াকে রাজনীতি থেকে আপাতত অবসর যাওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। এই প্রস্তাবের পরপর বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এ ব্যাপারে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং পরবর্তীতে ডা. জাফরুল্লাহ একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিলে ছাত্রদলের নেতারা তাকে অপমানিত করেন। পরবর্তীতে এটি নিয়ে বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় এবং প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে জাফরুল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে জাফরুল্লাহ জাইমাকে নেতৃত্বে আনার কথা বলেছেন। আবার তিনি বলেছেন যে তারেক জিয়ার আপাতত রাজনীতি থেকে অবসরের চাওয়া উচিত। এরপর জাফরুল্লাহর তীব্র সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন যে, তিনি বয়স্ক হয়ে গেছেন, এজন্য তিনি অনেক কথা বলেন যেগুলোর কোন অর্থ নেই। কিন্তু এই বক্তব্যের পর ডা. জাফরুল্লাহ আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ইঙ্গিত করে তিনি চাকর-বাকর বলেন। এটি নিয়ে এখন বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, জাফরুল্লাহ বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের অন্যতম ভূমিকা পালনকারী হিসেবে তিনি পরিচিত। ওই নির্বাচনের সময় তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ছিলেন। বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং সেখানে গিয়ে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন। অনেক জায়গায় তিনি বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে টক শোতে অংশগ্রহণ করেন। এইসব প্রেক্ষাপটেই জাফরুল্লাহ বক্তব্য বিএনপি`র মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে ফলে আজকের বৈঠকে অনেকে অভিযোগ করেছেন। এই প্রেক্ষিতে ওই বৈঠকে বলা হয়েছে জাফরুল্লাহ বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষী কিন্তু বিএনপির সদস্য নন। কাজেই বিএনপির কোন অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। জাফরুল্লাহ যদি তার নিজ উদ্যোগে কোন অনুষ্ঠান করেন সেখানে তিনি তার মতো করে বক্তব্য দিতে পারেন, সেটি বিএনপি গায়ে মাখাবে না। কিন্তু জাফরুল্লাহর সঙ্গে বিএনপির কোন আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক থাকবে না। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জাফরুল্লাহর সঙ্গে বিএনপি সম্পর্কের আপাত ইতি ঘটলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ (শনিবার) সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, বিএনপি দাসত্ব করে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য, জনগণকে মূল বিষয় হিসেবে মনে করে না। বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করলে ক্ষমতায় যাওয়া যায়? এখনো তাদের দুরভিসন্ধি হচ্ছে বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়?
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল মনে করি না। তাদের ইতিহাসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে। গণতান্ত্রিক বিধিবিধান তারা দলের মধ্যেও কোনো দিন
মানেনি। তারা বড় বড় কথা বলে, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে? তারা কোথায় দলীয় কাউন্সিল করেছে? ৭-৮ বছর আগে লা মেরিডিয়ানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জাতীয় নেতা শেরে বাংলা ছিলেন অন্যতম। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম বাংলার কৃষকরা কোনোদিনও ভুলতে পারবে না। তিনি চিরদিন তাদের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রজাসত্ব ও ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে সুদ খোর মহাজনদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন, তিনি সে জন্য এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ আমাদের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা লড়ে যাচ্ছি মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। সেটাই শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের স্বপ্ন এবং সেটা আজ আমাদের অঙ্গীকার।
ওবায়দুল কাদের ক্ষমতায় বিদেশি দাসত্ব বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত প্রত্যাশিত উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যেটি চেয়েছিলেন যে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ উপজেলা নির্বাচন হবে, যে নির্বাচনে যে যার মতো করে অংশগ্রহণ করবেন এবং সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হবেন। সে রকম একটি নির্বাচন এখন দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। আর এই দুরাশায় পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ হল মন্ত্রীদের ক্ষমতার লোভ, এলাকায় তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং কোথাও কোথাও পরিবারতন্ত্র কায়েমের আগ্রাসী মনোভাব।
শেষ পর্যন্ত খোকনের ব্যাপারে পিছু হটল বিএনপি। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। বরং চা-নাস্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত তিন ঘণ্টার বৈঠকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ঠিকঠাক মতো কাজ করে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং তার বিরুদ্ধ পক্ষের নেতা কায়সার কামাল কথা বলেন বলে জানা গেছে।