বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকা আমবাগান থেকে প্রথম আলোর সাভারে কর্মরত নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আটক করে সিআইডি। পরে তাকে আদালতে নেয়া হলে আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়ে আদালতে পাঠান। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। পরে শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামান শামসকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
সূত্রটি বলছে, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে বুধবার (২৯ মার্চ) মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। রাজধানীর রমনা থানায় করা এই মামলায় প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদক (সাভারে কর্মরত) শামসুজ্জামানকেও আসামি করা হয়েছে। রমনা থানায় দায়ের করা ওই মামলায় প্রথম আলোর প্রতিনিধি শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই মামলার বাদী আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)। যদিও এর আগে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছিল, তথাপিও এই মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখায়নি পুলিশ।
এদিকে রমনা থানায় দায়ের করা ডিজিটাল আইনের যে মামলায় সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়েছে, সেই মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে সম্পাদক মতিউর রহমানকে। এ মামলায় শামসুজ্জামান শামস ও ‘অজ্ঞাতনামা আলোকচিত্রী’সহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। এর আগে গভীর রাতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আটক পর, এবার কি তবে প্রথম আলোর সম্পাদককে গ্রেপ্তার করতে চলেছে পুলিশ? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পরই- এই প্রশ্ন ছড়িয়েছে দেশে এবং আন্তর্জাাতিক মিডিয়া অঙ্গণে। কেউ কেউ বলছেন, যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। তবে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান-এর গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়ে ‘আতঙ্ক’এখনও বিরাজমান।
জানা গেছে, দৈনিক প্রথম আলোর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ভাইরাল হওয়া খবরের ছবি ছিলো, ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে একটি শিশু। প্রথম আলোর ভাষ্যমতে, শিশুটির নাম জাকির হোসেন। শিশুটির উদ্ধৃতি ছিলো এমন- ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’। কিন্তু পরে জানা গেছে, প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ভুয়া। শিশুটির নাম সবুজ এবং সে প্রথম শ্রেণির একজন ছাত্র। সে মোটেও দিনমজুর নয়। বরং সে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য স্কুল শেষ করে বিকেল বেলায় মায়ের সাথে ফুল বিক্রি করে থাকে।
তার পরেই সাভারের সাংবাদিক শামসকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে আটক করে তুলে আনে সিআইডি। এ সময় তাঁর মোবাইল ফোন, কম্পিউটারও জব্দ করা হয়। এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘এ ঘটনায় অবশ্যই মিথ্যা বলে রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে আঘাত হানা হয়েছে, স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। সাংবাদিক ভুল করলে শাস্তি পাবেন না?’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া ঢাকায় মহিলা যুব লীগের একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বলেন, ‘কোনও কোনও মহল আগামী নির্বাচন, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ভণ্ডুল করে দেশে একটি অনির্বাচিত, অসাংবিধানিক সরকার নিয়ে আসতে চায়। এ চক্রান্ত তারই অঙ্গ।’ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘যে মামলা করা হয়েছে বা হচ্ছে, আমি আপনাদের বলতে চাই যে, যেটা হচ্ছে সেটা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আপনারা নির্ভীক সাংবাদিক আমি এটা স্বীকার করি। আপনারা যদি জনগণকে সত্য তথ্য প্রকাশ করেন তাহলে কোনো মতেই এই সরকার সাংবাদিকদের বাধা দেবে না।’
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে কারাগারে আটক রাখার জন্য আদালতে আবেদন করে রমনা থানা পুলিশ। অন্যদিকে শামসুজ্জামানের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সে আবেদনের শুনানি শুরু হয় বেলা দুইটার দিকে। তখন হাজতখানা থেকে শামসুজ্জামানকে আদালতে আসামির কাঠগড়ায় তোলা হয়। শুনানি শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন।
আবার ‘রিপোর্টার উইদাউট বর্ডার্স’ সংগঠন বলেছে, সাংবাদিকদের ভয় দেখাতেই মতিউর রহমান ও শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সম্পাদক পরিষদও অবিলম্বে মতিউর রহমান ও শামসের উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এসব বিষয়ে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞ মহল বলছে, ‘রিপোর্টার উইদাউট বর্ডার্স’ ছাড়াও দেশি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা ইতিমেধ্যেই প্রথম আলো সম্পাদকের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে, যা প্রথম আলো পত্রিকাজুড়ে দিনভর অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে এই মামলা ছাড়াও আরও একাধিক মামলা রয়েছে, সেসব মামলায় তাকে কখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
গ্রেপ্তার প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান
মন্তব্য করুন
একুশে পদক পাওয়া সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদকে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের
(পিআইবি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এ নিয়ে
টানা চতুর্থবারের মতো এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন
জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আইন
অনুযায়ী বিশিষ্ট সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদকে তার বর্তমান নিয়োগের ধারাবাহিকতায় ও অনুরূপ
শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দুই বছর মেয়াদে পিআইবির মহাপরিচালক পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক
নিয়োগ দেওয়া হলো।
এই পুনঃচুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র
দ্বারা নির্ধারিত হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল পিআইবির মহাপরিচালক পদে যোগদান করেন
তিনি। এরপর আরও দুইবার পিআইবি’র মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পান জাফর ওয়াজেদ। সর্বশেষ মঙ্গলবার
টানা চতুর্থবারের মতো এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন
বুম বাংলাদেশ প্রথম আলো ভুয়া খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিডিনিউজ দুদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী
মন্তব্য করুন
বিটিভি ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও বাংলা ইনসাইডারের স্টাফ রিপোর্টার প্রতিনিধি মোঃ মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর প্রেসক্লাবের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নির্বাচন করা হয়েছে।
এর আগে ক্লাবের বিপুল সংখ্যক সদস্যসহ জেলার প্রায় পৌনে দুইশ সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ইতিপূর্বে সম্পূর্ন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি ক্লাবের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও ব্যর্থতার অভিযোগে ক্লাবের সদস্যদের দাবীর মুখে শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়। এতে ক্লাবের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য সর্বসম্মত সমর্থন প্রদান করেন।
এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে শেরপুরের প্রবীন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযুদ্ধা আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন সংসদ উপ নেতা ও শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেরপুর-১ সদর আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ছানুয়ার হোসেন, শেরপুর-৩ আসনের এমপি এডিএম শহিদুল ইসলাম, শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুন্নাহার কামাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, শেরপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বায়েযীদ হাসানসহ আরো অনেকে।
এসময় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাধীনভাবে খবর প্রচার করে আসছে। আমরা শেরপুরের সাংবাদিকদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আমি নতুন নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই।’
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সদস্যরা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে। পরে সর্বসম্মতিক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের কাছে দায়িত্ব অর্পন করা হয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করার জন্য। উপদেষ্টা পরিষদ সভাপতি হিসেবে বিটিভি ও দৈনিক সমকালের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি দেবাশীষ ভট্রাচার্যকে সভাপতি ও ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্টাফ রিপোর্টার মেরাজ উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে ২০২৩ সালে ছড়ানো ভুয়া খবর পরিসংখ্যানের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বুম বাংলাদেশ। প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবরের মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ৪৪টি ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর চিহ্নিত হয়েছে এবং গণমাধ্যমগুলো তাদের ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে রেটিংয়ের মুখে পড়েছে। আগের তিন বছরের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি।