প্রেস ইনসাইড

স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের মুখোশ উন্মোচন!

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ১০ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের মুখোশ উন্মোচন!

গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল ও চক্রান্তকারীদের শাস্তি চেয়ে মানব-বন্ধন করেছে স্বাধীনতা-সচেতন নাগরিক সমাজ। এদিন প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল এবং স্বাধীনতা বিরোধী চক্রান্তকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধনের পর থেকেই সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। সেই সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারী এবং বাংলাদেশ বিরোধী অপশক্তির দোসর দেশের বহুল প্রচারিত দৈনিকটির নিবন্ধন বাতিল এবং পত্রিকাটি বন্ধের দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়।

তারই পরিপ্রেক্ষিতে ৯ এপ্রিল (রোববার) রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলো এবং স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের অন্যতম দোসর এবং ১/১১ কুশীলব ‘ডেইলি স্টার’র বাংলা বিভাগ ‘প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে ১১৯ নাগরিকের বিবৃতি’- শিরোনামে একটি সংবাদ পরিবেশন করে বলে জানিয়েছে সূত্র। সূত্রটি বলছে, এই বিবৃতিতে যারা অংশগ্রহণ করেছেন বা বিবৃতিতে যে ১১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের অনেকেই প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পালিত দেশের স্বাধীনতা বিরোধী সুশীল সমাজ। এই বিবৃতির মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধী এই চক্রটির মুখোশ উন্মোচন হয়েছে বলেও জানিয়েছে সূত্র।       

ডেইলি স্টারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ১১৯ নাগরিক। আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘প্রথম আলো পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এই মামলায় তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা এখনো বিচারাধীন এবং অপ্রমাণিত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি যে, মামলা দায়েরের পর থেকেই একটি বিশেষ মহল পত্রিকাটির বিরুদ্ধে অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশের মনগড়া অভিযোগ এনে পত্রিকাটির নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তাদের এই কার্যক্রম শুধু প্রথম আলো নয়, দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার ওপর আক্রমণের শামিল। আমরা মনে করি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মুক্তচিন্তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো মহল সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হওয়ার উদ্যোক্তা বা সমর্থক হতে পারেন না।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নাগরিকরা তীব্র ভাষায় গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের যে কোনো চেষ্টার নিন্দা জানাই। পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। সর্বোপরি, দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের পাশাপাশি জনসাধারণকেও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য সোচ্চার হতে আহ্বান ও অনুরোধ জানাই।’


প্রতিবেদনে বিবৃতি প্রদানকারীদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়, ‘প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদানকারী ১১৯ নাগরিক হলেন- ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার সভানেত্রী ফরিদা আখতার, অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সুশাসনের জন্য নাগরিকের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান ও সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকিব, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস এম নছরুল কদির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও লেখক ড. মঞ্জুরে খোদা, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লামিংহাম স্টেট ইউনিভার্সিটির কমিউনিকেশন মিডিয়া অ্যান্ড পারফরম্যান্স বিভাগের শিক্ষক জাহেদ আরমান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুতাসিম বিল্লাহ নাসির, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সাইমুম পারভেজ, শিক্ষক ও অনুবাদক জি এইচ হাবীব, অধ্যাপক খলিকুজ্জামান ইলিয়াস, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহা. নবায়ন পারভেজ, আইনজীবী মোহসীন রশিদ, ব্যারিস্টার জিশান মহসিন, অ্যাড. নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, অ্যাড. তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূইয়া, আইনজীবী ও রাজনীতিক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ,  ব্যারিস্টার অনীক আর হক, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ'র বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, এএফপির বাংলাদেশ ফ্যাক্টচেক এডিটর কদরুদ্দীন শিশির, বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট কল্লোল মোস্তফা, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট পারভেজ আলম, লেখক ফাহাম আবদুস সালাম, রাজনীতিবিদ জলি তালুকদার, কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম, লেখক ও গবেষক জিয়া হাসান, অ্যাক্টিভিস্ট বাকি বিল্লাহ, লেখক ও অনুবাদক লুনা রুশদী, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক আলভী আহমেদ, লেখক ও শিক্ষক উম্মে ফারহানা, নারী অধিকারকর্মী মাহফুজা মালা, লেখক ও সাংবাদিক বীথি সপ্তর্ষি, কথাসাহিত্যিক হামীম কামরুল হক, কবি সালেহীন শিপ্রা, সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল, পরিচালক নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা সাইদা আখতার, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূন রহমান, কবি ও প্রাবন্ধিক আহমেদ স্বপন মাহমুদ, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক ধ্রুব সাদিক, কবি ও গায়ক মুয়ীয মাহফুজ, কথাসাহিত্যিক গাজী তানজিয়া, কথাসাহিত্যক পাপড়ি রহমান, গায়ক অমল আকাশ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, আদর্শ’র প্রকাশক মাহাবুব রাহমান, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, শিল্পী কৃষ্ণকলি ইসলাম, চিত্রশিল্পী এএইচ চঞ্চল, চলচ্চিত্র নির্মাতা নুরুল আলম আতিক, সাংবাদিক ও গবেষক সায়দিয়া গুলরুখ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লেখক সৈয়দ আবদাল আহমদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সংগঠক ও বিতর্কিক জাফর সাদিক, অধিকারকর্মী ও গবেষক রোজীনা বেগম, মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেলিন, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট দিলশানা পারুল, বাংলাদেশ ইন্টেলেকচুয়াল নেটওয়ার্কের সংগঠক আরিফুল ইসলাম আদীব, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক জাফর মাহমুদ, নারী সংগঠক ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংস্কৃতিক কর্মী নুসরাত জাহান, কবি টোকন ঠাকুর, কবি ও কথা সাহিত্যিক চঞ্চল আশরাফ, শিল্পী অরূপ রাহী, রাজনীতিবিদ ফিরোজ আহমেদ, নির্মাতা আশফাক নিপুণ, চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যামল শিশির, কবি আবদুল হাই শিকদার, প্রকৌশলী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক, হালখাতার সম্পাদক ও কবি শওকত হোসেন, প্রাবন্ধিক ও গবেষক আরশাদ সিদ্দিকী, লেখক ও সাহিত্যিক রবিউল করিম মৃদুল, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, লেখক ও বিশ্লেষক সোহেল রানা, কবি ও সাংবাদিক শিমুল সালাহ্উদ্দিন, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট তুহিন খান, লেখক ও নারী অধিকার কর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, কবি ও সাংবাদিক মাহবুব আজিজ, কবি ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলি, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট সহুল আহমদ, চলচ্চিত্র নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকী, লেখক ও গবেষক এ.টি.এম. গোলাম কিবরিয়া, লেখক ও শিক্ষা আন্দোলনকর্মী রাখাল রাহা, লেখক ও সাংবাদিক তন্ময় ইমরান, কথাসাহিত্যিক ওয়াসি আহমেদ, চলচিত্র নির্মাতা খন্দকার সুমন, কবি ও অনুবাদক রাজু আলাউদ্দিন, অভিনেত্রী বন্যা মির্জা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, কবি ও অনুবাদক রনক জামান, কবি ও গদ্যকার বায়েজিদ বোস্তামী, লেখক হেলাল মহিউদ্দিন ও অনুবাদ রওশন জামিল।

এদিকে সূত্রটি বলছে, এই সুশীল সমাজের বিবৃতিকারী যে ১১৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে বিভিন্নভাবে তাদের অনেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সরকার বিরোধী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত। এদের কেউ কেউ ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সাথেও জড়িত। বিশেষ করে প্রথম নামটি- ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বিভিন্ন সময়ে তার বিভিন্ন লেখায়, তিনি বাংলার ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন। সেখানে তিনি কারো অবদানকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও, এই বিবৃতিকারীদের অনেকেই প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের পালিত লেখক, কবি, বুদ্ধিজীবী, চলচ্চিত্র নির্মাতা- তথা সুশীল সমাজ। যে কারণে তারা মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা বিরোধী প্রথম আলোর পক্ষে বিবৃতি দিবেন- এটা খুবই সাধারণ একটি ব্যাপার।     

সূত্রটি জানায়, সিরাজ শিকদারকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল পল্টনের ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অডিটোরিয়ামে। মঞ্চে ছিলেন আহমদ শরীফ ও ফয়েজ আহমেদ। আলোচনার কোনো এক পর্যায়ে আহমদ শরীফ ফয়েজ আহমেদকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ফয়েজ কি একটা আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি না? ফয়েজ আহমেদ মঞ্চ থেকে বললেন, না, না, এটার নাম সম্মিলিতি সাংস্কৃতিক জোট। তখন আহমদ শরীফ আবার বললেন এটার কথাইতো বলছিলাম। এটাই আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোট।- এভাবেই তারা বার বার দেশের স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে কটাক্ষ করেছে। কিন্তু তারা সব সময়ই কোনো না কোনোভাবে বেঁচেই যাচ্ছে। 

সূত্রটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ হাসিনা রচনা সমগ্র- ২, (পৃষ্ঠা ২৮৮)’- বইটির উদ্ধৃতি দিয়ে বলছেন, ‘সব মিথ্যা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠিত হবে সত্য, চিরন্তন সত্য। সত্য যে বড় কঠিন, বড় বাস্তব, বড় দৃঢ়, একদিন সে প্রকাশিত হবেই। এটাই তো তার ধর্ম।’

সত্যিই তাই, সত্য চিরকালই সত্য। সত্য কোনোদিনও গোপন থাকে না। সত্য একদিন প্রস্ফুটিত হবেই। এটিই আজকের দিনের প্রত্যাশা। সত্যের জয় হবে, বাংলাদেশে একদিন এই স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের মুখোশ উন্মোচন হবে, জনতার মঞ্চে তাদের উন্মুক্ত বিচার হবে, এটাই প্রত্যাশা।


স্বাধীনতা বিরোধী   চক্র   মুখোশ   উন্মোচন  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

মহাদেবপুরে সংবাদ লেখার কৌশল শীর্ষক কর্মশালা

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৭ মে, ২০২৩


Thumbnail

নওগাঁর মহাদেবপুরে সংবাদ লেখার কৌশল শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় ডাকবাংলো মিলনায়তনে মহাদেবপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি এর আয়োজন করে।

ইউনিটির সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক কাজী সাঈদ টিটো এতে সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের ২২ জন সাংবাদিক এ কর্মশালায় অংশ নেন। রিসোর্স পারসন হিসেবে সংবাদ লেখার নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধি গৌতম কুমার মহন্ত ও যায়যায়দিন প্রতিনিধি ইউসুফ আলী সুমন।

রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সামছুজ্জোহা মিলনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মহাদেবপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ওয়াসিম আলী, প্রচার সম্পাদক সুজন হোসেন, সদস্য মাহবুবুজ্জামান সেতু, সাইফুর রহমান সনি, মহাদেবপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম জিএম মিঠন, সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার বুলেট, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, অর্থ সম্পাদক এসএম শামীম হাসান, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক অহিদুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাজী আবু হুরাইরা শিলন, দপ্তর সম্পাদক কাজী রওশন জাহান, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক আব্দুর রহমান, কার্য নির্বাহী সদস্য মেহেদী হাসান, সোহেল রানা সোহেল, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।



মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

আমরা আপনাদের পাশে আছি: সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ১৫ মে, ২০২৩


Thumbnail সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক সময় সাংবাদিকতা করেছেন। কাজেই আপনারা জানেন, আপনাদের প্রতি সব সময় আমার আলাদা এক সহানুভূতি আছে। আন্দোলন সংগ্রামে আপনারা পাশে ছিলেন, আমরাও ছিলাম। তবে মালিকদের সঙ্গে কী করণীয় সেটা আপনারা করেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি।

সোমবার (১৫ মে) বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সদ্য সমাপ্ত জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, যারা পত্রিকার মালিক তারা সবাই অর্থশালী ও বিত্তশালী। তাই সাংবাদিকদের ভাল-মন্দ দেখা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সংবাদপত্রের সব মালিকরা বড়লোক। তাদের ব্যবসা আছে। কিন্তু করোনার সময় প্রণোদনার সুযোগটা কিন্তু তারা নিয়েছেন। আপনাদের দাবিটা আপনাদের আদায় করতে হবে। এটা হলো কথা।

তিনি বলেন, আমাদের সংবাদকর্মী ও কলা-কুশলীদের সুযোগ সুবিধার জন্য বেসরকারি খাতে এতগুলা টেলিভিশন দিয়েছি। আগে মাত্র একটি টেলিভিশন ছিল। পত্রিকা যথেষ্ট দেওয়া হয়েছে। পত্রিকা মালিক হচ্ছে সব বেসরকারি ব্যবসায়ী। সেখানে যারা কাজ করেন তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব কিন্তু তাদেরই। সরকারের বেশি কিছু করার সুযোগ আছে কি-না আমি জানি না।

তিনি বলেন, কিছুই বলি না, তারপরও শুনতে হয় কথা বলার স্বাধীনতা নাকি নেই। সারাদিন মাইক লাগিয়ে বক্তৃতা দিয়ে বলে, কথা নাকি বলতে পারে না। আমরা নাকি ভীষণভাবে টর্চার করি। আমরা আপনাদের সংবাদপত্রে কি করব, করলে পরে আবার এই কথা শুনতে হবে। সেখানে আপনাদের কিছু করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সরকার নাকি আবার কথা বলতে দেয় না। সংবাদপত্রের নাকি স্বাধীনতা নেই। আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে লেখেন, টকশো করতে করতে টক কথাও বলেন। তারপরও বলে, তাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না, এটাই হলো বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পত্রিকার মালিক যারা তারা সবাই অর্থশালী, বিত্তশালী। সাংবাদিকদের যারা কাজ দেয় ও ব্যবহার করে তাদের ভালো-মন্দ দেখা পত্রিকার মালিকদের কর্তব্য। আমাদের যতটুক করার আমরা করে যাচ্ছি। করোনার সময় সবাইকে আমরা সহযোগিতা দিয়েছি। নিশ্চয়ই সেটা আপনার স্বীকার করবেন। যে সমস্ত পত্রিকার মালিক আছে এটা তাদের দায়িত্ব। আমরা কি করতে পারি বলেন, আমরা করব।


সংবাদ সম্মেলন   প্রধানমন্ত্রী   শেখ হাসিনা   সাংবাদিক  


মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

বাংলা ইনসাইডার এখন ১ লাখ সাবস্ক্রাইবারের পরিবার

প্রকাশ: ১০:০৫ এএম, ১৪ মে, ২০২৩


Thumbnail

বাংলা ইনসাইডারের ইউটিউব চ্যানেল এখন ১ লাখ সাবস্ক্রাইবারের পরিবার। আজ রোববার (১৪ মে) সকালে সাবস্ক্রিপশনের নতুন এই মাইলফলকে পা রাখে বাংলা ইনসাইডার।

নিউজ জগতে বাংলা ইনসাইডার একটি জনপ্রিয় নাম হয়ে উঠেছে। আমাদের এই সাফল্যের সঙ্গী হওয়ার জন্য সাবস্ক্রাইবার, দর্শক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাংলা ইনসাইডারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

বাংলা ইনসাইডারের সাথে যুক্ত হতে পারেন আপনিও। আপনাদের মজার কিংবা বিশেষ কোনো অভিজ্ঞতা, আশপাশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, ভ্রমণ কাহিনী, তথ্যপ্রযুক্তি, খেলাধুলাসহ যে কোনো বিষয়ে লিখতে পারেন।

লেখা ইমেইল করুন: news.banglainsider@gmail.com

ওয়েবসাইট: https://www.banglainsider.com

বাংলা ইনসাইডারের সব নিউজ দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন: https://www.youtube.com/@BanglaInsidernews



মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ পুলিৎজার পেল এপি, নিউইয়র্ক টাইমস

প্রকাশ: ০৯:৩০ এএম, ০৯ মে, ২০২৩


Thumbnail

সোমবার ঘোষণা করা হয়েছে এ বছর সাংবাদিকতার ‘নোবেল’ খ্যাত পুলিৎজার পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম । 

এবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই পুরস্কার পেয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও নিউইয়র্ক টাইমস। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে খবর প্রকাশের জন্য এই পুরস্কার পেল সংবাদমাধ্যম দুটি।

১৯১৭ সাল থেকে এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতা ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত, নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একটি বোর্ড প্রতিবছর পুরস্কার ঘোষণা করে। 

পুলিৎজারে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে ধরা হয় পাবলিক সার্ভিস (জনসেবা) অ্যাওয়ার্ডকে। এ বছর এই অ্যাওয়ার্ড নিজেদের দখলে রেখেছে এপি। এছাড়া ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফি বিভাগে পুরস্কারও পেয়েছে তারা। অপরদিকে ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং (আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রতিবেদন) বিভাগে সেরা হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পাওয়া এপির সাংবাদিকেরা হলেন- মিসতিসলাভ চেরনভ, ইভজেনি মালোলেতকা, ভাসিলিসা স্তেপানেঙ্কো ও লরি হিনান্ট। গত বসন্তে ইউক্রেনের মারিউপোল শহরে রাশিয়ার হামলার সময় সেখানে অবস্থান করছিলেন তারা। হামলায় শহরটিতে বেসামরিক লোকজনের নিহত হওয়ার তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন এই চার সাংবাদিক।

যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করায় এবার ন্যাশনাল রিপোর্টিং (জাতীয় বিষয়ে প্রতিবেদন) বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ক্যারোলিন কিচেনার। সংবাদমাধ্যমটির হয়ে ফিচার রাইটিং বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন এলি স্যাসলো। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক টাইমসে কাজ করছেন।

লোকাল রিপোর্টিং (স্থানীয় বিষয়ে প্রতিবেদন) ও কমেন্টারি (মতামত)— দুটি বিভাগে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে আলাবামা অঙ্গরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এএল ডটকম। সংবাদমাধ্যম লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসও দুটি পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছে। একটি ব্রেকিং নিউজ বিভাগে, অপরটি ফিচার ফটোগ্রাফি বিভাগে। আর ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং (অনুসন্ধানী প্রতিবেদন) বিভাগে পুরস্কারজয়ী হয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টিং বিভাগ ছাড়াও এবার ইলাস্ট্রেটেড রিপোর্টিং অ্যান্ড কমেন্টারি বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। এ নিয়ে পুলিৎজারের ইতিহাসে মোট ১৩৭টি পুরস্কার পেল সংবাদমাধ্যমটি।



মন্তব্য করুন


প্রেস ইনসাইড

১/১১ নিয়ে বোল পাল্টানোর চেষ্টা মতির!


Thumbnail ১/১১ নিয়ে বোল পাল্টানোর চেষ্টা মতির!

২০০৭ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে ১/১১ প্রতিষ্ঠার অন্যতম কুশীলব প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান সম্প্রতি এর দায় এড়াতে বোল পাল্টানোর চেষ্টা করছেন। তিনি আজ শনিবার (৬ মে) ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে ১/১১-এর সরকারের দায় সশস্ত্র বাহিনীর উপর চাপনোর চেষ্টা করেছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে আবার একটি ১/১১ সৃষ্টির পায়তারা করছেন বলে জানিয়েছে সূত্র। 

সূত্রটি বলছে, ২০০৭ সালের ১১ জুন প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত তার লেখার শিরোনাম ছিল, ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান সব সময়ই ছিলেন গণতন্ত্র বিরোধী। তার এই গণতন্ত্রবিরোধী অবস্থানের চিত্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ১/১১- এর সময়ে তার এই অবস্থান এবং আসল চেহারা সরূপে প্রস্ফুটিত হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে একটি গণতন্ত্রবিরোধী এবং ১/১১-এর সরকারের পক্ষে একটি লেখা লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে। অর্থাৎ ১/১১- এর সময়ে তিনি ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’র সপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিরাজনীতিকরণের অন্যতম একজন উদ্যোক্তা বলেও জানিয়েছে একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র। 

সূত্রমতে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১/১১-এর সরকারকে মূল্যায়নের প্রশ্নে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২০০৭ সালে ১/১১-এর সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সরাসরি সশস্ত্র বাহিনীর হস্তক্ষেপের ফলে এবং যে দু’বছর ওই সরকার চলেছিল, তার প্রধান শক্তি ও ভিত্তিও ছিল সশস্ত্র বাহিনী। ওই সরকারের প্রধান দুটি লক্ষ্য ছিল, একটি হলো সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। আজকে ২০২৩ সালে এটা বলতে পারি যে, ১/১১ এর সরকার একটি সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পেরেছিল, তাতে মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, ১/১১-এর সরকার সফল হয়েছিল, এক্ষেত্রে। 

মতিউর রহমানের এই বক্তব্য থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ১/১১-এর সরকার একটি সফল সরকার। দেশ পরিচালনা, নির্বাচন পরিচালনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই গণতন্ত্র বিরোধী ১/১১-এর সরকার একটি সফল সরকার। এই বক্তব্য থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, ২০০৭ সালে ঠিক যে ধরনের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সংবিধান বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী একটি ১/১১-এর সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মতিউর রহমান গং ব্যক্তিরা। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও ঠিক একই ধরনের আরেকটি ১/১১ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এ ধরনের বক্তব্য রেখেছেন মতি। 

প্রকৃতপক্ষে, ২০০৭ সালে ১/১১ প্রতিষ্ঠার অন্যতম কুশীলব মতিউর রহমান একটি তৃতীয় পক্ষের হাতে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম গণতান্ত্রিক দু’টি দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র প্রধান দুই নেত্রীকে মাইনাস করার সংস্কারেও ছিলেন এই মতিউর রহমান। তিনি তার ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’- শিরোনামে একটি লেখায় সরাসরি দেশের প্রধান দুইটি দলের প্রধান দুই নেত্রীকে সরসরি অক্রমণ করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তার অবস্থান। কিন্তু ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এর দায় এড়াতে চেষ্টা করেছেন।        

২০০৭ সালের ১১ জুন প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’-শিরোনামে তার লেখায় তিনি বলেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আবার নতুন করে আলোচনা হচ্ছে। তারা কি দলের নেতৃত্ব ছেঁড়ে দেবেন, রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন, না স্বেচ্ছায় বিদেশে চলে যাবেন- এসব নিয়ে এখন অনেক আলোচনা ও লেখালেখি হয়েছে, এখনও হচ্ছে নানা মহলে। সর্বশেষ, গত সোমবার বিবিসির সংলাপে দুই দলের জেষ্ঠ্য নেতা বলেছেন, প্রয়োজনে দুই নেত্রীকে বাদ দিয়েই সংস্কার করতে হবে।

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের কাছ থেকে তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অবৈধ অর্থ-চাদা-সম্পত্তি সংগ্রহ এবং বাসে আগুন দেওয়া ও খুনের মামলা চাপা দেওয়াসহ বহু ব্যাপারে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। ক্ষমতায় থেকে বা ক্ষমতার বাইরে গিয়ে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল দুটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের চাঁদা আর দুর্নীতির যে রূপ বের হয়ে আসছে, তা রীতিমতো ভয়ংকর। এসবের অনেক কিছুই আমরা জানতাম, সমাজে আলোচিত ছিল, তারপরও সত্য এত ভয়ংকর যে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরগুলো সবাইকে যুগপৎ গভীরভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। কিন্তু বেগম জিয়া বলেছেন, ‘আমার ও আমার পরিবার সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জীবনে কাউকে এক টাকাও দিতে বলিনি। কারও কাছে চাঁদা চাইনি।’ তবে দুই নেত্রীর এসব কথা কেউ বিশ্বাস করে না। এখন আমরা শুধু এটুকুই বলতে পারি। কিছুদিন আগে আইন ও তথ্য উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছিলেন, দুই দলের নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ীই সরকার দুই নেত্রীর ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ (দুই নেত্রীকে দেশের বাইরে পাঠানো) নিয়েছিল। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে পরামর্শদাতাদের নাম প্রকাশের অনুরোধ করা হয়। জবাবে মইনুল হোসেন পরামর্শদাতাদের নাম প্রকাশ না করে আবারও একই কথা বলেন। তবে তিনি বলেন, দুই নেত্রীকে দেশে রেখে বা দলের শীর্ষে রেখে সংস্কার করা যাবে কি যাবে না- এ ব্যাপারে দলের মধ্যে দুই রকম মত থাকতেই পারে। তিনি নাম প্রকাশ করেন আর না-ই করেন, তাঁর এ বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক ও সুধীমহলে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

তবে এ কথাটি সত্য, বিএনপি ও আওয়ামী লীগে এমন অনেক নেতা, কর্মী রয়েছেন যারা দলের সংস্কার চান, পরিবারতন্ত্রের অবসান চান, দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। তবে দুই নেত্রী দলের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলে এসব কিছু হবে না বলে তারা মনে করেন। মাঠপর্যায়ের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যেও এ রকম মনোভাব রয়েছে। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে দুই দলের ভেতরে ও বাইরে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছে। দুই দলের বড়ো নেতারা এ রকম মতামত ব্যক্ত করেছেন অপ্রকাশ্যে। তাদের কাছ থেকেই আমরা এসব কিছু শুনেছি, জেনেছি। কিন্তু তারা এতদিন প্রকাশ্যে কিছু বলতে বা কোনো অবস্থান নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেনি। তারা এখন কিছু কিছু কথা বলছেন।  

তবে ভয়েজ অব আমেরিকার আজকের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ১/১১- এর সরকারের প্রধান যে দু’টি লক্ষ্য ছিল, একটি সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা, দুটোতেই তারা সফল হয়েছিলেন। তবে দেশ পরিচালনায়, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় অনেক বড় বড় ভুল-ত্রুটি ছিল, অন্যায় কার্যক্রমও হয়েছিল, যেগুলো পরবর্তীতে সমালোচিত হয়েছে। সেসব পদক্ষেপ মানুষ গ্রহণ করতে পারেনি। ওই ভুলগুলো রাজনীতি, অর্থনীতি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতির কারণ হয়েছিল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতিকর ফল বয়ে এনেছিল। আমরা দেখেছি, রাষ্ট্র বা সরকার পরিচালনায় সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ কোনো ভালো ফল বয়ে আনেনি, বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায়ও দেখি রাজনীতি বা সরকার পরিচালনায় সেনাবাহিনীর হস্তুক্ষেপ কোনো দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, বরং নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মতিউর রহমান সেনা বাহিনী পরিচালিত সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও ২০০৭ সালের ১১ জুন মাসে তার পত্রিকায় প্রকাশিত তার ওই লেখায় তিনি ১/১১-এর সরকারের পক্ষে স্তুতি গেয়ে দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেলের জেরার মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক দুই বড়ো দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বড়ো ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য ও বক্তব্য থেকে দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির যেসব তথ্য বের হয়ে এসেছে, তাতে আবার প্রধান দুই নেত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলচনা শুরু হয়েছে। এ কথা বেশ জোরেশোরে আলোচনা হচ্ছে যে, যারা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছেন, যারা দলের জন্য ও নিজের জন্য বহু সম্পদ গড়ে তুলেছেন, যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যা-খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের নেতৃত্বে রেখে দল বা দেশের জন্য কী লাভ হবে? ১৫ বছর ধরে সরকার ও বিরোধী দলে থেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব, বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা দেশকে প্রায় ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছেন। বিএনপির বিগত সরকার যারপরনাই ক্ষতি করেছে দেশের। ২২ জানুয়ারির নির্বাচন হলে দেশে আরও সর্বনাশ হতো। কোনোভাবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের আরও ভয়ংকর রূপ আমরা দেখতাম। আর কোনোভাবে আওয়ামী লীগ জিতে গেলে তারাও আগের রেকর্ড ভঙ্গ করত। তাঁর সব লক্ষণই দেখা যাচ্ছিল।  

প্রকৃতপক্ষে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভয়েজ অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বোল পাল্টানোর চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের বোল পাল্টানো মতিউর রহমানের নতুন কোনো বিষয় নয়। বিভিন্ন সময়ে তিনি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে এবং একটি গোষ্ঠীকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে বহুবার বহু রকমের বোল পাল্টিয়েছেন। তবে এই সাক্ষাৎকারে তিনি নির্বাচনকালীন সময়ে ১/১১-এর সরকারকে সফল বলে মন্তব্য করেছেন। এবার আবার একটি ১/১১-এর সরকার প্রতিষ্ঠা বা অন্য কোন স্বার্থে নতুন করে বোল পাল্টিয়েছেন কি না মতিউর রহমান- সেটিই এখন দেখার বিষয়। 


১/১১   বোল পাল্টানো   মতিউর রহমান   প্রথম আলো  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন