ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কানাডায় ট্রাক চালকদের আন্দোলনে কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত ট্রুডোর

প্রকাশ: ০১:০৪ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail কানাডায় ট্রাক চালকদের আন্দোলনে কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত ট্রুডোর

কানাডার রাজনীতিতে সরকারি টিকাকরণ নীতি নিয়ে এক নতুন রূপ দেখা যাচ্ছে। ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। বাধ্যতামূলক টিকা নেওয়ার বিপক্ষে রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ করছেন ট্রাক চালকরা। কানাডার রাজধানী অটোয়ার পাশাপাশি এখন সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলন। এই অবস্থায় কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। 

তিনি জানিয়েছেন, যতদ্রুত সম্ভব এই বিক্ষোভ আন্দোলন থামাতে হবে, কারণ এর কারণে দেশের অর্থনীতি প্রভাবিত হচ্ছে। রাজধানী অটোয়াতে সরকারি ভ্যাকসিন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ট্রাক চালকদের মৃদু হুঁশিয়ারি সুরে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আন্দোলন শেষের সময় হয়ে গিয়েছে। 

কানাডার প্রধানমন্ত্রী দেশটির সংসদে বক্তব্য রাখার সময় জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ আমাদের অর্থনীতি বৃদ্ধির পথে বাধার সৃষ্টি করছে। পাশাপাশি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের জীবনেও সমস্যা তৈরির চেষ্টা চলছে। এই জিনিস বন্ধ হতেই হবে। ট্রুডো বলেন, অটোয়ার মানুষদের নিজেদের শহরে হেনস্থার মুখে পড়া কখনই কাম্য নয়। স্বস্তিক চিহ্নের পতাকা তুলে হিংসার মুখোমুখি হওয়া তাদের প্রাপ্য নয়। আন্দোলন শুরু হওয়ার সময়ে বেশ কিছু বিক্ষোভকারী জার্মানির সাবেক  শাসক হিটলারের নাৎজি বাহিনীর পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলে, তাদেরকেই কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের দেশের নাগরিকরা একত্রে করোনা মহামারির মোকাবিলা করেছে। কিন্তু হাতে গোনা কিছু ব্যক্তি চিৎকার করে ও স্বস্তিক পতাকা নেড়ে নিজেদের কানাডিয়ান হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন।” বলেন জাস্টিন ট্রুডো।

জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কানাডার রাজধানী অটোয়াতে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। সীমান্তে দিয়ে চলাচল করা ট্রাক চালকদের ওপর কানাডা সরকারের ভ্যাকসিন নীতি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন তারা। বিক্ষোভে অনেক কানাডাবাসীকেও অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। মূলত করোনা টিকা এবং সরকারের জারি করা করোনা বিধির বিরোধিতা করেছিল বিক্ষোভকারীরা। এখনও পর্যন্ত পুলিশ বিক্ষোভ দমন করতে পারেনি। সোমবার অন্টারিওর বিচারকের আদেশের পর অবিরাম হর্নিং বন্ধ করা হয়েছে। এদিকে, অটোয়াতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

কানাডা   বিক্ষোভ   করোনা   টিকা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মিশর

প্রকাশ: ০৮:৫০ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজায় গণহত্যার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ মামলায় এবার যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিশর।

রবিবার (১২ মে) মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যামূলক আগ্রাসন বাড়িয়ে চলায় এই পদক্ষে নেয়া হয়েছে। মিশরের এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের জন্য কঠোর কূটনৈতিক বার্তা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মিশরের এই ঘোষণার পর ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক পরিচালক অ্যালন লিয়েল এক প্রতিক্রিয়ায় আল জাজিরাকে বলেন, এই পদক্ষেপটি ইসরায়েলের জন্য একটি ‘অবিশ্বাস্য কূটনৈতিক আঘাত’।


ইসরায়েল   আন্তর্জাতিক   আদালত   মিশর  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: চতুর্থ দফার ভোটগ্ৰহণ শুরু

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে চলছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৭ দফায়। নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। 

সোমবার (১৩ মে) চতুর্থ পর্বে দেশটির ১০ রাজ্যের ৯৬টি আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। প্রথম দফায় শতাধিক আসনে ভোটগ্রহণের পর দ্বিতীয় দফায় ভোট হয়েছিল ৮৮টি আসনে এবং  তৃতীয় দফায় ভোট হয়েছিল ৯৩টি আসনে। 

সাত দফার মধ্যে এ দফায় অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫, তেলেঙ্গানার ১৭, উত্তরপ্রদেশের ১৩, মহারাষ্ট্রের ১১ এবং মধ্যপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ৮ টি করে আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া বিহারের ৫টি আসনে, উড়িষ্যা ও ঝাড়খন্ডে চারটি করে এবং জম্মু ও কাশ্মীরের একটি আসনে ভোট হচ্ছে।

লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা অধীর চৌধুরী, সমাজবাদি পার্টির শীর্ষ নেতা অখিলেস যাদবসহ ১ হাজার ৭১৭ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। 

পশ্চিমবঙ্গের যে ৮ আসনে ভোট হচ্ছে সেগুলো হলো- বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বর্ধমান পূর্ব, বর্ধমান-দুর্গাপুর, আসানসোল, বীরভূম ও বোলপুর।

এসব আসনে তারকা প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান, কীর্তি আজাদ, শত্রুঘ্ন সিনহা, কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী, মহুয়া মৈত্র, রাজমাতা অমৃতা রায়, অভিনেত্রী শতাব্দী রায় ও বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।

লোকসভা নির্বাচনের তিন দফার ভোটে মোট ২৮৩টি  আসনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোট হবে আগামী ২০ মে। ষষ্ঠ ও সপ্তম দফার ভোট হবে যথাক্রমে ২৫ মে ও ১ জুন। একযোগে ফলাফল প্রকাশ হবে আগামী ৪ জুন।


লোকসভা নির্বাচন   ভারত   ভোটগ্ৰহণ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ভোট: আর্জেন্টিনাকে ধন্যবাদ জানাল ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৭:৪১ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় আর্জেন্টিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ রোববার (১২ মে) আর্জেন্টিনা ছাড়াও হাঙ্গেরি ও চেক রিপাবলিকের প্রধানমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করে তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, “হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চেক রিপাবলিকের প্রধানমন্ত্রী পিটার ফিয়ালাকে ধন্যবাদ ইতিহাসের সঠিক পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিপক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য।”

গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন এবং তাদের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। কিন্তু শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি।

শুক্রবার (১০ মে) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। এতে বলা হয়, ‘স্বাধীন ফিলিস্তিনি গঠনের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে আবারও ভোটাভুটি হোক। এতে আপনাদের সমর্থন আছে কিনা।’ 

এই প্রস্তাবে ভোট দেয় ১৪৩টি দেশ। বিপক্ষে ভোট দেয় ৯টি দেশ। আর ভোট দানে বিরত ছিল ২৫টি দেশ। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া ১৪৩টি দেশ মূলত স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে।  এরমধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। 


ফিলিস্তিন   আর্জেন্টিনা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মেক্সিকো

প্রকাশ: ০৭:২২ এএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে মেক্সিকো। রোববার (১২ মে) গুয়েতেমালা মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী এলাকায় এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রোববার সকালে চিয়াপাস উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় ভূমিকম্প হয়েছে। এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক চার।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭৫ কিলোমিটার গভীরে।

এদিকে গুয়েতেমালার দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে একাধিক স্থানে অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী কোয়েটজালতেনাঙ্গো এবং সান মার্কোসে অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সড়কসহ ভূমিধসেরও খবর পাওয়া গেছে।

১৯৭৬ সালে গুয়েতেমালায় সাড়ে সাত মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে দেশটিতে প্রায় ২৩ হাজার লোকের মৃত্যু হয়। স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্প ছিল এটি।


ভূমিকম্প   মেক্সিকো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চার দশকের মধ্যে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কে ফাটল

প্রকাশ: ১০:১৩ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি সপ্তাহে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা কৌশলগত সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে এক সাক্ষাৎকারে বাইডেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইসরায়েল যদি তার পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফাহ আক্রমণ করে, তাহলে কী হবে? জবাবে বাইডেন বলেন, ‘আমি তাদেরকে আর অস্ত্র সরবরাহ করব না।’ 

আমেরিকা ইসরায়েল মৈত্রীর ভিত্তিই হলো অস্ত্রের চালান। গত চার দশকে এই প্রথম এতে ফাটল দেখা যাচ্ছে।  

গাজায় বেসামরিক প্রাণহানি ও মানবিক বিপর্যয় রুখতে নিজ দেশে ও দেশের বাহিরে ব্যাপক চাপে আছেন বাইডেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তটিই জানালেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল আমেরিকার সবচেয়ে কাছের কৌশলগত মিত্র। ১৯৮০ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের পর এ ধরনের পদক্ষেপ আর দেখা যায়নি। 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক বিশেষজ্ঞ এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী অ্যারন ডেভিড মিলারের মতে, এই সংঘাতের শুরু থেকেই বাইডেনকে দ্বিধায় দেখা গেছে। তাঁর একদিকে ইসরায়েলপন্থী রিপাবলিকান পার্টি, অন্যদিকে নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যেও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এখন পর্যন্ত বাইডেন যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে এমন কিছু দেখা যায়নি যাতে আমেরিকা–ইসরায়েল সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  

কিন্তু ইসরায়েল রাফাহতে স্থল অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন দেখা যায়। 

গত সোমবার ইসরায়েল জানায়, তারা শহরটির পূর্বে হামাসকে লক্ষ্য করে কার্যক্রম চালাচ্ছে। স্থানীয়রা বিরামহীন বিষ্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রায় অকার্যকর হাসপাতালগুলোতেও আহতদের সংখ্যা মাত্রা ছাড়িয়েছে। 

জাতিসংঘ বলছে, প্রায় এক লাখ মানুষ ওই এলাকা থেকে পালিয়েছে এবং তারা খাবার, আশ্রয়, পানি ও স্যানিটেশনের ভয়াবহ সংকটে আছে। 

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার শহরটিতে পূর্ণমাত্রায় স্থল অভিযান চালানোর কথা বলছেন, যেখানে প্রায় ১০ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আছেন। তিনি বলছেন, এখানে লুকিয়ে থাকা হামাসের অবশিষ্ট চার ব্যাটালিয়ন যোদ্ধাকে নিশ্চিহ্ন করতে এই অভিযান জরুরী। যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব সফল হলেও অভিযান চালানো হবে বলে মত তাঁর। 

ওয়াশিংটন নেতানিয়াহুকে রাফাহতে কোনো ধরনের সামরিক অভিযান পরিচালনা না করতে বারবার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। অ্যারন ডেভিড মিলার বলছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন আশঙ্কা করছেন, রাফাহতে অভিযান হলে যুদ্ধ বন্ধ বা জিম্মিদের উদ্ধারের আর কোনো উপায় থাকবে না। 

বাইডেন প্রশাসনে কাজ করা একজন সাবেক কর্মকর্তা জানান, বাইডেন মিশরের সঙ্গে কোনো সংকট এড়িয়ে চলতে চান। একই সঙ্গে এই অভিযানের ফলে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে ক্ষোভ ও বিভাজন আরও বাড়তে পারে। 
 
গত বুধবার বাইডেনের সাক্ষাৎকার প্রচারের পরপর আমেরিকা ইসরায়েলের জন্য বরাদ্দ ২ হাজার ও ৫০০ পাউন্ডের বোমার দুটি চালান স্থগিত করেছে। 
 
মার্কিন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কমকর্তা বলেন, এই বোমাগুলো ঘনবসতিপূরর্ণ একটি এলাকায় ব্যবহার করলে যে প্রভাব পড়বে তাতে আমেরিকা উদ্বিগ্ন, যা আমরা গাজার অন্য এলাকাগুলোতে দেখেছি। 

ইসরায়েলের অস্ত্রাগারে থাকা নানা অস্ত্রের মধ্যে ২ হাজার পাউন্ডের বোমা সবচেয়ে বিধ্বংসী। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, হামাসকে নির্মূল করকে এই ধরনের অস্ত্র জরুরী। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এ ছাড়া জয়েন্ট ডিরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন (জেডিএএম) কিটের একটি চালানও বিবেচনায় রয়েছে। এই কিট আনগাইডেড বোমাকে গাইডেডে পরিণত করতে পারে। 
 
গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে আমেরিকার সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করে থাকতে পারে। কিন্তু এতে আরও বলা হয়, এ সংক্রান্ত পূর্ণ তথ্য আমেরিকার কাছে নেই। যার অর্থ সামরিক সহায়তা চালু থাকতে পারে। 
 
মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক গোলন্দাজ কর্নেল জো বুকিনো, যিনি পরে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনা কমান্ড সেন্টকমের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েল কাছে এখনো যে পরিমাণ গোলাবারুদ মজুত আছে, তা দিয়ে রাফাহকে ‘মাটিতে মিশিয়ে’ ফেলা সম্ভব।  

ইসরায়েলকে বছরে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি কংগ্রেস অস্ত্র ও প্রতিরোধ সরঞ্জামের জন্য আরও ১৭ বিলিয়ন ডলার এর সঙ্গে যুক্ত করেছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মার্কিন প্রাণঘাতী অস্ত্র সহায়তা পাওয়া দেশ হলো ইসরায়েল। 

কর্নেল জো বুকিনোর মতে, রাফাহতে আক্রমণ ঠেকাতে অস্ত্রের যে চালান স্থগিত করা হয়েছে তা নিতান্তই নগণ্য। তিনি বলেন, ‘এটা মার্কিন জনগনকে একটা বোঝ দিতে একটি ছোটখাট রাজনৈতিক খেলা, যারা পরিস্থিতির জন্য উদ্বিগ্ন।’  

কারণ যাই হোক, এতে বাইডেন যে রাজনৈতিকভাবে চাপে পড়েছেন তাতে সন্দেহ নেই। মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকানরা বাইডেনকে তুলোধুনো করছেন। 
 
মার্কিন সিনেটর পেট রিকেটস বলেন, ‘আমি মনে করি, এই স্থগিতাদেশ ক্ষোভ তৈরি হওয়ার মতো পরিস্থিতি ডেকে এনেছে। প্রেসিডেন্টের এমন কাজ করার এখতিয়ার নেই।’ 

ইসরায়েল তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফাহতে আক্রমন পরিচালনা করতে চায়, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মিত্র ইসরায়েলকে আমাদের সমর্থন করতে হবে।’ 

আরেক রিপাবলিকান সিনেটর জন বারাসো বলেন, ‘নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসরায়েলের যা খুশি তা করার অধিকার আছে।’ 

বারাসোর মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। তবে বাইডেনের নিজের দলে কিন্তু এ সিদ্ধান্তকে বেশ ভালোভাবেই স্বাগত জানানো হয়েছে। 

ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিশ কুনস দুইমাস আগে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি নাগরিকদের রক্ষা না করে ইসরায়েল যদি রাফাহতে অভিযান চালায় তাহলে যেন তাদের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি সে সময় বলেছিলেন, ‘গাজা সংঘাত আমাদের যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে তা অত্যন্ত বেদনার। আমরা যারা ইসরায়েলের তীব্র সমর্থক তারাও মানুষের কষ্ট এবং মানবিক বিপর্যয়ে উদ্বিগ্ন।’  

ক্রিশ কুনস মনে করেন, নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্রমাগত চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যেহেতু ইসরায়েলি সরকার টিকে আছে কিছু অতিজাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক শক্তির ওপরে এবং তারা গাজায় মানবিক সহযোগিতা ঢুকতে দিতে চায় না। পাশাপাশি পশ্চিম তীর থেকেও ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করতে চায়। 

কায়রোতে হামাসের সঙ্গে জিম্মি মুক্তির যে আলোচনা চলছিল তা গত সপ্তাহে ভেস্তে যায়। কয়েকজন ইসরায়েলি বিশ্লেষক বাইডেনকে সতর্ক করে বলেছেন যে, তার এ সিদ্ধান্ত জিম্মি মুক্তির মধ্যস্থতায় বাধা তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি রাফাহ আক্রমণ না করতে যে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এতে হামাস লাভবান হবে। 

গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর বাইডেন তেল আবিব সফর করেন এবং নেতানিয়াহুর পাশে নিজের অবস্থানের জানান দেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘৯/১১ এর পর আমরা যে ভুল করেছি তোমরা সেটি থেকে বিরত থাক।’ 

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষরাও অনেক কষ্ট করছে এবং পুরো পৃথিবীর মতো আমরাও নিস্পাপ ফিলিস্তিনি প্রাণহানির জন্য শোক জানাই।’ 

বাইডেন অস্ত্র সরবরাহ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি একলা লড়তে হয়, আমরা তাই করব। আমি আগেই বলেছি, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা আমাদের নখ দিয়েও যুদ্ধ করব।’ 

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিশ কুনস বলেন, ‘তাদের নখ দিয়ে যুদ্ধ করার প্রয়োজন নেই। তাদের আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র দিয়েও যুদ্ধ করা উচিত, অনেকক্ষেত্রেই যেগুলো মার্কিনিদের সঙ্গে যৌথভাবে বানানো। এর অনেকগুলোই তাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের এমনভাবে যুদ্ধ করতে হবে যাতে বেসামরিক প্রাণহানি বেশি না হয়।’ 

যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন