ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পশ্চিমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় কী পরিকল্পনা রাশিয়ার?

প্রকাশ: ০৯:৩১ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail পশ্চিমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় কী পরিকল্পনা রাশিয়ার?

রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনে দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করে সেখান সৈন্য প্রেরণের পর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে দেশটির উপর। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব সেই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার তালিকায় আছে যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মানি, কানাডা…। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন ২০১৪ সালে যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবারের নিষেধাজ্ঞাগুলো হবে তার চেয়েও বড় এবং কঠোর। তিনি বলেছেন, রাশিয়া যদি আরও অগ্রসর হয় তাহলে তারাও আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত। এধরনের নিষেধাজ্ঞার কোনও প্রভাব কি আসলেই পড়ে রাশিয়ার ওপর? 

এই মুহূর্তটির জন্য কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে রাশিয়া। এর আগে ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের একটি অংশ ক্রিমিয়া দখল করার জন্য সেখানে সৈন্য পাঠানোর পর তাদের ওপর প্রথম দফায় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং ওই ঘটনা থেকে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা গ্রহণ করেছে।

এরপর থেকেই রাশিয়া আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলার জন্য কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে এমন এক রুশ অর্থনীতি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে যার ওপর নিষেধাজ্ঞার তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।

প্রেসিডেন্ট পুতিন হয়তো বাজি ধরতে পারেন যে পশ্চিমা দেশগুলো যতটা অনুমান করেছিল, তার দেশ তার চেয়েও বেশি সময় ধরে এসব নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে টিকে থাকতে পারবে।

আন্তর্জাতিক রিজার্ভ

এ বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যে রুশ সরকারের আন্তর্জাতিক রিজার্ভের পরিমাণ রেকর্ড পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। বৈদেশিক মুদ্রা এবং স্বর্ণের এই রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৩ হাজার কোটি ডলার।

বিশ্বের সব দেশের তুলনায় রাশিয়ার এই রিজার্ভ চতুর্থ বৃহত্তম যা রুশ মুদ্রা রুবলের পতন ঠেকিয়ে একে চাঙ্গা রাখতে একটা উল্লেখযোগ্য সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার মাত্র ১৬% ডলারে রাখা। পাঁচ বছর আগেও এর পরিমাণ ছিল ৪০%। অন্যদিকে রাশিয়ার বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ১৩% রাখা চীনা মুদ্রা রেনমিনবিতে। এসবই পরিকল্পিতভাবে করা এবং এটা করে হয়েছে আমেরিকার নেতৃত্বে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে, তা থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য।

‘রাশিয়া যখন দুর্গ’

এছাড়া রাশিয়ার অর্থনৈতিক কাঠামোতেও বড় ধরনের কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে দেশটি বৈদেশিক ঋণ ও বিনিয়োগের ওপর তাদের নির্ভরতা কমিয়েছে।

একই সাথে তারা পশ্চিম বাজারের বাইরে নতুন নতুন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের সুযোগ সম্ভাবনাও যাচাই করে দেখেছে। তাদের নতুন এই কৌশলের একটি বড় অংশ হচ্ছে চীন।

আন্তর্জাতিকভাবে অর্থ লেনদেনের ব্যাপারেও রাশিয়া তাদের নিজস্ব একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ইতোমধ্যে প্রাথমিক কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে অর্থ লেনদেনের জন্য বর্তমানে সুইফট নামের যে আর্থিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রয়েছে, তা থেকে রাশিয়াকে বের করে দেওয়া হলে দেশটি যাতে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে, সেজন্য তারা আগে থেকেই এসব পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকসমূহ এই সুইফট তদারকি করে থাকে। এছাড়া রাশিয়া তার বাজেটেও কাটছাঁট করে এনেছে- প্রবৃদ্ধির বদলে এখন তারা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেই বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

এর ফলে রাশিয়ার অর্থনীতি গত এক দশকে প্রতি বছর গড়ে এক শতাংশেরও কম হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় দেশটি আগের তুলনায় আরো বেশি আত্ম-নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।

“রাশিয়া যা করছে এর মধ্য দিয়ে কার্যত তারা বিকল্প এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলছে যাতে তারা পশ্চিমা বিশ্বের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার আঘাত সামাল দিতে পারে,” বলেন করিওলিস টেকনোলজিসের প্রধান নির্বাহী ড. রেবেকা হার্ডিং।

কৌশলগত স্বার্থ

রাশিয়ার জন্য এটা এক বিপদজনক খেলাও হয়ে উঠতে পারে। দেশটির প্রধান প্রধান ব্যাংক, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে রাশিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন হয়তো আরও একটা হিসেব কষে দেখেছেন এবং তা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৌশলগত ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থ।

উল্লেখ করা যেতে পারে যে কিছু কিছু দেশের জন্য রাশিয়ার তেল ও গ্যাস শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অন্য কিছু দেশের তুলনায় সহজ।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তার প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০% পেয়ে থাকে রাশিয়ার কাছ থেকে। আর ব্রিটেন ৩% গ্যাসের জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল।

ইউক্রেনের দুটো অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার স্বীকৃতির পর জার্মানি নর্ড স্ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইনের অনুমোদন স্থগিত করেছে। এটা রাশিয়ার জন্য ক্ষতিকর, তবে এর ফলে পশ্চিম ইউরোপে জ্বালানির মূল্যের উপরেও জার্মানির এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে।

ধনী শাসকশ্রেণির ওপর নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়ার সমগ্র অর্থনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে কতিপয় প্রভাবশালী ধনী ব্যক্তিকে টার্গেট করে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে কি তার প্রভাব বেশি হবে?

প্রেসিডেন্ট পুতিন যৌক্তিক কারণেই তার নামে বিদেশে অর্থ কিংবা সম্পদ রাখবেন না। কিন্তু তার ঘনিষ্ঠ অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিদের একটি নেটওয়ার্ক তার হয়ে সেই কাজটা করতে পারেন।

“২০১৪ সালের পর থেকেই এধরনের অলিগার্ক বা ধনী শাসক শ্রেণির কয়েকজন ব্যক্তির ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। কিন্তু সেসব যে খুব একটা কার্যকরী হয়েছে তা বলা যাবে না। কিন্তু এসব নিষেধাজ্ঞা যদি তাদের বিরুদ্ধে আরও বেশি সুনির্দিষ্ট করে আরোপিত হয়, শুধুমাত্র তখনই কিছু পরিবর্তন ঘটবে,” বলেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক তমিলা লানকিনা।

এক্ষেত্রে লন্ডন একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এখানকার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির সম্পর্ক রয়েছে। বাড়িঘর বা প্রপার্টি ব্যবসাতেও রয়েছে বিনিয়োগ। এছাড়াও এর কিছু রাজনৈতিক প্রভাবও আছে।

ব্রিটিশ সরকার এর মধ্যেই রাশিয়ার পাঁচটি ব্যাংক এবং বিশেষ তিনজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে দুর্নীতি-বিরোধী গ্রুপ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, “শুধুমাত্র লন্ডনের প্রপার্টি ব্যবসাতেই রাশিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ ১৫০ কোটি পাউন্ড। এর বেশিরভাগই এসেছে তৃতীয় একটি দেশে (অফশোর) রাখা অর্থ থেকে।

“পশ্চিমা দেশের সরকারগুলো এর মাধ্যমে শুধু রাশিয়ার লোকজনেরই ক্ষতি করছে না, তারা তাদের নিজেদের জনগণেরও ক্ষতি করছে,”বলেন অধ্যাপক লানকিনা।

নিষেধাজ্ঞা কতটা কার্যকর হবে?

পশ্চিমা নেতারা এটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে গত কয়েকদিনে যেসব নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলোর প্রথম কয়েকটি ধাপ। কিন্তু রাশিয়ার ওপর এই চাপ আরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ানো হতে পারে। কিন্তু রাশিয়াকে তাদের পথ পরিবর্তনের জন্য বাধ্য করতে এসব নিষেধাজ্ঞা কি যথেষ্ট হবে?

নিষেধাজ্ঞার যে কিছু প্রভাব আছে তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তবে রাশিয়ার মতো বৃহৎ অর্থনীতির ওপর এধরনের নিষেধাজ্ঞা এর আগে কখনও প্রয়োগ করা হয়নি। সেকারণে রাশিয়ার ওপর আরোপিত এসব নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী করতে হলে পশ্চিমা দেশগুলোকে দীর্ঘ সময়ধরে কঠোরভাবে লেগে থাকতে হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

রাশিয়া   ইউক্রেন   যুদ্ধ   যুক্তরাষ্ট্র   ন্যাটো   ইউরোপ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

খারকিভে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া

প্রকাশ: ০৮:৫৫ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

নতুন করে অগ্রসর হতে শুরু করেছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। রুশ সেনারা ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে সাঁজোয়া বহর নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার আকস্মিক এই অভিযান শুরু করে মস্কো। এর আগেও ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে একবার খারকিভের দখল নিয়েছিল রুশ সৈন্যরা। তবে ইউক্রেনের প্রবল প্রতিরোধের মুখে সেসময় শিহরটি ছেড়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় মস্কো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এত দিন রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের অঞ্চলগুলোতে অভিযান চালালেও পুতিন এবার নতুন ফ্রন্ট খুলতে চাচ্ছেন।

এরই মধ্যে রুশ বাহিনী খারকিভ শহরের দিকে বেশ খানিকটা এগিয়েও গেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ প্রথমবারের মতো বলেছেন, রাশিয়া সুমি ও চেরনিহিভের কাছাকাছি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের কাছে খারকিভ শহরের উত্তরে সেনা সমাবেশ করেছিল। রুশ সেনারা ভোর ৫টার দিকে সাঁজোয়া বহর নিয়ে হামলা শুরু করে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা খারকিভে রুশ বাহিনীকে মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছে, রুশ বাহিনী খারকিভের সীমান্তবর্তী শহর ভভচানস্কে ব্যাপক গোলা ও বোমা হামলা চালিয়েছে। অবশ্য ইউক্রেন মাসখানেক আগেই এই অঞ্চলে রাশিয়া সেনা সমাবেশ করছে বলে জানিয়েছিল।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রাশিয়া পাল্টা আক্রমণের একটি নতুন ঢেউ শুরু করেছে। বর্তমানে সেখানে ভয়ংকর যুদ্ধ চলছে। জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ১৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রণক্ষেত্রে তীব্র লড়াই চলছে বলে তাকে রিপোর্ট করেছেন শীর্ষ কমান্ডার ওলেকজান্দর সিরস্কি। খারকিভের গভর্নর ওলেহ সাইনোহুবো জানিয়েছেন, খারকিভের আশপাশে রুশ সেনারা ব্যাপক গোলাবর্ষণ শুরু করে। তিনি জানান, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে যুদ্ধ শুরুর পর খারকিভের শহরতলী ভভচানস্কের জনসংখ্যা ১৭ হাজার থেকে কমে মাত্র কয়েক হাজারে নেমে এসেছে।

রাশিয়া আক্রমণ শুরুর পর সেই কয়েক হাজারের মধ্য থেকে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর খারকিভে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়। পরে গত বছর ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের মুখে রুশরা পিছু হটতে থাকে। অবশেষে রুশ বাহিনী আবারও আক্রমণাত্মকভাবে খারকিভের দিকে অগ্রসর হওয়া শুরু করল।


খারকিভ   রাশিয়া   ইউক্রেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পৃথিবীতে শক্তিশালী সৌরঝড়ের আঘাত

প্রকাশ: ০৮:৪৫ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

পৃথিবীতে দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড়ের আলোর ঝলকানি দেখল বিশ্ব। উত্তর ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার মানুষ শুক্রবার রাতে এই সৌরঝড়ের ফলে সৃষ্ট মেরুজ্যোতি দেখতে পেয়েছেন। অনেকে সামাজিক মাধ্যমে এই আলোক ঝলকানির ছবি শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা গেছে, সমগ্র আকাশ বিভিন্ন রঙে ছেয়ে গেছে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এর কারণে স্যাটেলাইট ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জার্মানভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশ ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার জানিয়েছে, সূর্য যখন প্রচুর পরিমাণ শক্তি উগরে দেয় বা নির্গত করে ঠিক সেই সময় এই রকম ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী রাত ১০টার দিকে কোরোনাল মাস ইনজেকশন পৃথিবীতে আঘাত হানে। সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডল থেকে চুম্বকীয় প্লাজমার বড় অগ্ন্যুৎপাত এটি। পরে এটি জিওম্যাগনেটিক স্টর্মে পরিণত হয়।

এদিকে এই সৌরঝড়ের কারণে উত্তর ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়াতে অরোরা আলোর ঝলকানি বা মেরুজ্যোতি দেখা গেছে।

এই সৌরঝড়ের দেখার পর স্যাটেলাইট অপারেটর, এয়ারলাইনস এবং পাওয়ার গ্রিডকে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সম্ভাব্য ব্যাঘাতের জন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রিপোর্ট অনুযায়ী, সূর্য তার ১১ বছরের দীর্ঘ সৌরচক্র অতিক্রম করছে। এই কারণে, করোনাল ম্যাস ইনজেকশন এবং সূর্যের মধ্যে সোলার ফ্লেয়ার ঘটছে, যা ২০২৫ সাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। সেপ্টেম্বর ২০১৭-এর পর এখন পর্যন্ত সূর্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় সৌরশিখা দেখা গেছে।

সৌরঝড়ের কারণে স্যাটেলাইটে শর্ট সার্কিট হয়। পাওয়ার গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব কারণে মহাকাশচারীদের জীবনও হুমকির মুখে পড়তে পারে। এতে পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে বিঘ্ন ঘটাতে পারে বিদ্যুৎ পরিষেবাসহ কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও।

ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সঙ্গে যুক্ত চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ওঠানামা করে দীর্ঘ তারে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে, যার ফলে ব্ল্যাকআউট হতে পারে। দীর্ঘ পাইপলাইনগুলো বিদ্যুতায়িত হতে পারে, যা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। মহাকাশযানও উচ্চমাত্রার বিকিরণের ঝুঁকিতে রয়েছে, যদিও বায়ুমণ্ডল সৌরঝড়কে পৃথিবীতে পৌঁছতে বাধা দেয়।

নাসার কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, তারা মহাকাশচারীর নিরাপত্তার দিকে নজর রাখছেন এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা মহাকাশচারীদের স্টেশনের মধ্যে সব থেকে বেশি সুরক্ষিত জায়গায় অবস্থান করতে বলা হয়েছে।


পৃথিবী   সৌরঝড়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু : জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৫:২৯ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় একদিনে দুইশরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।  মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বন্যার ফলে বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। তালেবান কর্তৃপক্ষ এ পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, শুধুমাত্র বাঘলানেই ২০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মোহাম্মদ ফাহিম সাফি, আইওএম-এর জরুরি প্রতিক্রিয়ার নেতৃত্বদানকারী জাতীয় প্রোগ্রাম অফিসার, সরকারি পরিসংখ্যান উল্লেখ করে শনিবার বলেন, 'বাঘলানি জাদিদ জেলায় দেড় হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়েছে এবং ১০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছেন।'

শনিবার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আফগানিস্তানের উত্তরে অবস্থিত বাঘলান প্রদেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে তৈরি হওয়া ফ্লাশ ফাডে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। এক তালেবান কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, এর ফলে একাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বন্যা কবলিত এলাকার রাস্তায় ঘোলা পানির বিশাল স্রোত বইছে। কালো এবং সাদা কাপড়ে ঢাকা মৃতদেহের ছবিও দেখা গেছে।

এর আগে, বন্যার কারণে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে আফগানিস্তানে একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষের মতে, প্রায় কোনো অঞ্চলই বন্যার হাত থেকে সম্পূর্ণভাবে রেহাই পায়নি। বন্যার কারণে হাজার হাজার আফগান নাগরিকের এখনো মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। 


আফগানিস্তান   বন্যা   মৃত্যু   জাতিসংঘ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন কেজরিওয়াল

প্রকাশ: ০৫:০৮ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দুর্নীতির মামলায় ৫০ দিন পর  শুক্রবার (১০ মে) জেল থেকে মুক্তি পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। জেল থেকে মুক্তির পরপরই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। শনিবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। 

কেজরিওয়ারের জেলমুক্তির পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সমর্থকরা। রাজপথে তাকে ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়ালসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও।

এসময় সমর্থকদের উদ্দেশে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আমাকে আশীর্বাদ দিয়েছেন। আমি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ধন্যবাদ জানাই। তাদের জন্যই আমি আপনাদের সামনে। আমাদের দেশকে একনায়কতন্ত্র থেকে বাঁচাতে হবে।

এএপি নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ দাবি করেছেন, জেল থেকে কেজরিওয়ালের মুক্তি ইন্ডিয়া জোটের জন্য 'গেমচেঞ্জার' হয়ে উঠবে। ফলে ভোটের মাঠে বাড়তি সুবিধা পাবে বিরোধী দলগুলো।

আগামী ১ জুন পর্যন্ত জামিনে থাকবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এর পরদিনই তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। এর মধ্যে নতুন করে জামিন না পেলে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনার দিন (৪ জুন) জেলেই কাটাতে হবে কেজরিওয়ালকে।


স্বৈরাচার   দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী   অরবিন্দ কেজরিওয়াল   দুর্নীতি মামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলি ঘাঁটিতে আঘাত হানল হিজবুল্লাহ

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরায়েলের রামিয়া সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে শনিবার (১১ মে) রকেট ও কামান হামলা চালিয়েছে তারা। এসব রকেট ও কামানের গোলা এই ঘাঁটিতে সরাসরি আঘাত হেনেছে বলে দাবি হিজবুল্লাহর। তবে হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

গতকাল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এরপরের দিনই ইসরায়েলি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা। ইসরায়েলি বিমান হামলা গতকাল আঘাত হানে একটি মোবাইল ফোন ট্রান্সমিশন সাইটে। যেটি লেবাননের তায়ার হারফাতে অবস্থিত। ওই হামলায় একজন প্যারামেডিক এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী প্রাণ হারান।

ওই হামলার পরই প্রতিশোধ নিতে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও হিজবুল্লাহ এখনো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা দেয়নি তবে যে কোনো সময় লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে বড় যুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।


ইসরায়েলি   হিজবুল্লাহ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন