ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

শ্রীলংকায় হঠাৎ করে কেন ভেঙে পড়লো অর্থনীতি, রাজনীতি ও সরকার ব্যবস্থা

প্রকাশ: ০৩:৫৩ পিএম, ১৪ মে, ২০২২


Thumbnail শ্রীলংকায় হঠাৎ করে কেন ভেঙে পড়লো অর্থনীতি, রাজনীতি ও সরকার ব্যবস্থা

দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা এখন নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন সর্বগ্রাস দুর্নীতি আর ধারাবাহিক অর্থণৈতিক অব্যবস্থাপনায় দেশটিকে তিলে তিলে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে এসেছিলো।

যদিও তিন বছর আগেও সবার ধারণা ছিলো যে শতভাগ শিক্ষিত মানুষের এ দেশটির অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং এর মূল ভিত্তি ছিলো পর্যটন থেকে আসা আয় যা ক্রমশ বাড়ছিলো আর রেমিটেন্স।

পেশাগত কাজে গত দু দশকে অন্তত তিনবার শ্রীলংকা ভ্রমণ করেছেন ঢাকার সাংবাদিক তারেক মাহমুদ। গৃহযুদ্ধ শেষ হবার আগে ও পরে এসব সফরে গিয়ে দেশটি খুব দ্রুতই ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করবে বলেই ধারণা করেছিলেন তিনি।

"মানুষজনের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি দেখে মনে হচ্ছিলো যে দক্ষিণ এশিয়া অনেকটা ইউরোপের মতো কলম্বো। একটা নাইট লাইফ আছে। ধর্মীয় বৈচিত্র্য আছে। মানুষ জীবনকে উপভোগ করতে জানে। একটা স্মুথ লাইফ। সবকিছু মিলিয়ে এমনটাই মনে হতো"।

বাস্তবতা হলো সেই শ্রীলংকা এখন ধুঁকছে অর্থনৈতিক সংকট আর রাজনৈতিক সহিংসতায় এবং টিকে থাকার জন্য আপ্রাণ লড়ছে দেশটির অর্থনীতি।

যার জন্য দায়ী করা হচ্ছে রাজাপাকশা সরকারের একের পর এক ভুল নীতি, দুর্নীতি আর আর্থিক অব্যবস্থাপনাকে।

সংকটের সূত্রপাত কয়েক দশক আগে থেকেই

দাতা দেশ ও সংস্থা গুলোর ঋণ পরিশোধে নিজের অক্ষমতা প্রকাশের পাশাপাশি শ্রীলংকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শূন্যের কোঠায়। খাদ্যপণ্য, জ্বালানি ও ঔষধ সংকট ছাড়াও বিদ্যুৎহীনতার মধ্যেই কাটছে দিনের বেশিরভাগ সময়।

পরিস্থিতি এমন যে, বলা হচ্ছে ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এমন সংকটে দেশটি আর কখনো পড়েনি।

অথচ ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসানের পর প্রাণ ফিরে এসেছিলো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে, জমজমাট হয়ে উঠছিলো পর্যটনসহ সেবা খাত। তাহলে মাত্র দু বছরের কোভিড মহামারির পর এভাবে ভেঙে পড়লো কেন দেশটি?

কলম্বোয় সিলন চেম্বার অফ কমার্স বৃহস্পতিবার এ নিয়ে একটি ওয়েবিনারের আয়োজনে করেছিলো।
সেখানে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ইন্দ্রজিত কুমারস্বামী বলেছেন, শ্রীলংকার এ সংকট হুট করে জন্ম হয়নি বরং এ সংকটের উৎসের দিকে তাকাতে হলে অনেক আগে ফিরে যেতে হবে সেই পঞ্চাশের দশকে।

তার মতে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার কারণে দেশটির অর্থনীতি কখনোই নিরাপদ থাকার মতো স্থিতিশীলতা পায়নি। গত কয়েক বছরে এর সাথে যোগ হয়েছে সরকারের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত।

"আমাদের কখনোই শৃঙ্খলাপূর্ণ আর্থিক ব্যবস্থাপনা ছিলো না। এটাই অস্থিতিশীলতার ধারাবাহিক একটা উৎস ছিলো। এটা ছিলো জনতুষ্টিবাদী সস্তা রাজনীতি আর ভাগ বাটোয়ারা সংস্কৃতির একটা দূষিত সমন্বয়, যা আমাদের পেছনে ঠেলেছে। তবে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পর কিছুটা পরিবর্তন আসতে শুরু করেছিলো। যদি একইসাথে তখন আমাদের বাজারের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে"।

তিনি বলেন এর সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য ডিসিপ্লিনড হওয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু যা হয়েছে তা হলো নিয়মিত বার্ষিক বাজেট ঘাটতির কারণে রাজস্ব কমেছে নাটকীয়ভাবে। কমেছে রপ্তানি আর বেড়েছে ঘাটতি। তবে সমস্যাটা ব্যাপক বেড়েছে গত ১০-২০ বছরে"।

মিস্টার কুমারাস্বামী বলছেন আগেও বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফের কাছে যেতে হয়েছে বারবার। আর এখন চীনের ঋণ পরিশোধ বড় সংকটে পরিণত হয়েছে। অন্য ঋণদাতারাও দেখছেন যে চীন এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিচ্ছে।

চীন, ঋন আর দূর্নীতি

শ্রীলংকায় চীনের কিছু প্রকল্পই দেশটির সরকারকে ঋণ ভারে জর্জরিত করেছে এমন অভিযোগ আছে।

বিশেষ করে হাম্বানটোটায় গভীর সমুদ্র বন্দর, বিলিয়ন ডলারের বিমানবন্দর বা পোর্ট সিটির মতো প্রকল্পগুলো নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিলো।

এর সাথে যোগ হয়েছিলো গোটাভায়া রাজাপাকশার সস্তা জনপ্রিয়তার স্মারক - হুট করে কর কমানোর নীতি- যার ভার পরবর্তীতে করোনার সময়ে আর সইতে পারেনি ৮১ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশ শ্রীলংকা। পরে ইউক্রেন যুদ্ধ সেই সংকটকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

যার সাথে যোগ হয়েছে করোনাকালীন বাস্তবতা। যেমন প্রতি বছর কেবলমাত্র পর্যটন থেকেই শ্রীলঙ্কার পাঁচ থেকে সাত বিলিয়ন ডলার আয় ছিলো।

দুই বছরের কোভিডকালে সেটি কার্যত শূন্যতে গিয়ে ঠেকেছে।

দুই হাজার উনিশ সালে কলম্বোয় যে হামলা হয়েছিলো সেটি এবং তার জেরে পরে ব্যাপক মুসলিম নিগ্রহের ঘটনাও পর্যটন ধ্বসে ভূমিকা রেখেছে।

আবার করোনার দু বছরে রেমিটেন্স থেকে আয়ও কমে গেছে ব্যাপকভাবে।

তবে এসব কিছুকে ছাপিয়ে সর্বগ্রাসী দুর্নীতিকেই শ্রীলংকার বর্তমান পরিণতির মুল কারণ হিসেবে বলছেন সিলভারাইন ডি সিলভা, যিনি এক সময় ঢাকাতেও সংবাদপত্রে কাজ করেছেন। তিনি বলছেন যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা এই দুর্নীতিকে রাজাপাকশা পরিবার চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কারণেই দেশটির এই দশা।

"আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যা কিছু হয়েছে সবই ভুল। কলম্বো পোর্ট থেকে আরম্ভ করে হাম্বানটোটা বন্দর, এয়ারপোর্ট- এগুলো সবই ছিলো অর্থের অপচয়। বেশিরভাগ ঋণ এসেছে চীন থেকে। তারাই নির্মাণ করছে। এবং এখন তারা এগুলো করে যাচ্ছে।"

অথচ ২০০৯ সালে তামিল বিদ্রোহ দমনের সাফল্যে মহানায়ক হয়ে উঠছিলো তখনকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকশা। তখন প্রতিরক্ষা সচিব ছিলেন তার ভাই গোটাভায়া রাজাপাকশা।

দুই হাজার উনিশ সালের নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর তারা দুই ভাই রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। পরিবার থেকেই আরও মন্ত্রী ও এমপিও রয়েছে।

সিলভারাইন ডি সিলভা বলছেন, রাজাপাকশা পরিবার প্রবল ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন শুধু যুদ্ধের কারণেই নয়, বরং সত্যিকার অর্থেই তাদের ওপর ভরসা করেছিলো জনগণ।

তবে এ ভরসায় আস্থা না রেখে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করে কর্তৃত্বপরায়নতার দিকেই যাচ্ছিলেন মাহিন্দা রাজাপাকশা।

রাজাপাকশাদের হটাতে নির্বাচনের বদলে আন্দোলন কেন

শাসনব্যবস্থাকে সংসদীয় ধরণ থেকে পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি ধাঁচের করে নিয়েছিলেন। সাথে দেখা দেয় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন আর ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রবণতা।

কিন্তু তারপরেও যে দেশে ভোটের মাধ্যমেই বারবার ক্ষমতা পরিবর্তন হয়েছে সেখানে রাজাপাকশা পরিবারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে গণঅভ্যুত্থানের বা আন্দোলনের দরকার হলো কেন?

এ প্রশ্নের জবাবে কলম্বো থেকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জেহান গুনাতিলক বলছেন, ভয়াবহ অসন্তোষ তৈরি হবার কারণেই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের ধৈর্য বা বাস্তবতা নেই।



তিনি বলেন, "এটা ঠিক যে আমাদের নির্বাচন নিয়মিত হচ্ছিলো এবং যথাযথ শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াও ছিলো। কিন্তু আমাদের পরিবারতন্ত্র আছে। এক দশক ধরে ক্ষমতা এক পরিবারের মধ্যেই ঘুরছে। আমি মনে করি দুর্নীতি দীর্ঘকাল ধরেই বড় সমস্যা। যে কারণে কোন প্রতিষ্ঠান আসলে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি, যার মাধ্যমে দুর্নীতি দূর হতে পারে। এর একটি পরিণতিই পেলো এবারে। আর এ জন্য মানুষ রাজপাকশা ভাইদের বিদায় এভাবেই চাইছে। মনে হয় এটাই আসল কারণ"।

তবে এখনি নির্বাচন আয়োজনে শাসনতান্ত্রিক বাধাও আছে। দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে ২০১৯ সালে আর পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছে ২০২০ সালে।

দেশটির নিয়ম অনুযায়ী ২০২৪ ও ২৫ সালের আগে এসব নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ আড়াই বছর গেলে রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাঙ্গতে পারেন সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে। এছাড়া সংসদ নিজে প্রস্তাব পাশ করে রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভাঙ্গার অনুরোধ করতে পারে।

আর রাষ্ট্রপতিকে সরাতে সংসদ অভিশংসন করাতে পারে বা তিনি নিজ ইচ্ছায় সরে যেতে পারেন। কিন্তু এর কোন কিছুই সম্ভব হবে না কারণ এখনকার পার্লামেন্টে মাহিন্দা রাজাপাকশার দলই ব্যাপক সংখ্যাগিরষ্ঠতায় আছে।

বিরোধী দলগুলোর প্রকৃত অবস্থা কী

ড. জেহান গুনাতিলক বলছেন যে, পার্লামেন্টে বিরোধী দল এখনো ছোট। তারা এবার সংকটের শুরু থেকেই অনেক সোচ্চার পার্লামেন্টে কিন্তু মানুষ আশা করেছিলো তারা আরও সোচ্চার হবে। তারা আশা করেছিলো যে বিরোধী দল আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলবে এখন যারা ক্ষমতায় আছে তাদের বিকল্প কি হতে পারে।

"তবে মনে রাখতে হবে যে তারা সংখ্যায় খুবই কম যে কোন নির্বাচন ছাড়া তাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। প্রকৃত পরিবর্তন বা নতুন কাউকে আনতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমেই আনতে হবে। না হলে বিষয়গুলো এর মধ্যে এভাবেই ঘুরপাক খাবে"।

মিস্টার গুনাতিলক বলছেন, শুধু পরিবারতন্ত্র নয়, প্রভাবশালী দেশগুলোর শক্তি নিয়েও অনেক রাজনীতিক দেশ পরিচালনায় থাকেন যে কারণেই তাদের অনেক সিদ্ধান্ত দেশের স্বার্থ নষ্ট করে।

আবার যেই পরিবারতন্ত্রের জন্য রাজাপাকশা পরিবারের সমালোচনা হচ্ছে সেই পরিবারতন্ত্রেরই ফসল বিরোধী প্রধান নেতা নিজেও, যার বাবা ছিলেন রাষ্ট্রপতি।

আবার দেশটিতে প্রায় সত্তরটির মতো দল থাকলেও সংসদে আছেন দশ বা এগারটি। অন্যদিকে সরকারের কর্তৃত্বপরায়নতার কারণে দেশটিতে সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যম খুব একটা বিকশিত হতে পারেনি।

বিজয় থেকে সিংহলি জাতীয়তাবাদ

দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর তামিলদের বিরুদ্ধে শ্রীলংকা সরকারের বিজয়কে দেশে সিংহলিরা শান্তি হিসেবে বিবেচনা করলেও অনেকে মনে করেন এর মাধ্যমে আসলে দেশটিতে উগ্র সিংহলি জাতীয়তাবাদ তৈরি হয়েছিলো, যার ফলে হিন্দু, মুসলিমসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ক্রমশ আক্রমণের টার্গেট হয়েছে।

আবার সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সিংহলিরা এখন ক্ষুব্ধ হলেও তাদের একটি অংশের সমর্থনও আছে রাজাপাকশাদের দিকেই।

আরেকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার আইনজীবী অম্বিকা সাতকুনানাথান বলছেন, রাজনৈতিক বিরোধীরা যেমন ততটা শক্তিশালী না তেমনি সরকারের বিরুদ্ধে সিভিল সোসাইটিকে রাজাপাকশা সরকারের বিরুদ্ধে কখনোই তেমন কোন ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তবে এখন কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে।

"সিভিল সোসাইটিকে আগে রাজপাকশা সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে খুব একটা কথা বলতে শোনা যায়নি। তবে এখন নির্দলীয় অনেকে কথা বলছেন। আর মিডিয়াগুলোও দু একটা ব্যতিক্রম ছাড়া এখন অবশ্য মাঠে কি হচ্ছে তা জানানোর চেষ্টা করছে"।

তিনি বলছেন সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যম কখনোই বিকশিত হতে পারেনি এবং সে কারণে এখনো অনেক যেমন চুপ থাকছেন আবার কিছু মিডিয়ার ক্ষেত্রেও রাজাপাকশা পরিবারের মালিকানাও রয়েছে।

তবে এখন বিশ্লেষকরা আশা করছেন দেশটির সরকারে পরিবর্তন আসা শুরু হয়েছে এবং সরকার স্থিতিশীল হলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও সহায়তার হাত বাড়াবে এবং অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির মাধ্যমে ধীরে ধীরে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।

যদিও এটি কবে কখন হবে সেটি দেখতে কতদিন অপেক্ষা করতে হবে এ মুহূর্তে তা কারও জানা নেই। সূত্র: বিবিসিবাংলা 

শ্রীলঙ্কা   দুর্নীতি   রাজাপাকসে  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু: জাতিসংঘ

প্রকাশ: ১০:৩৯ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনে নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এবার জাতিসংঘও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। 

সংস্থাটি বলছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনিদের অন্তত ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু। বুধবার (১৫ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

জাতিসংঘ বলছে, গাজা যুদ্ধে নিহত হাজার হাজার মানুষের মধ্যে অন্তত ৫৬ শতাংশ নারী ও শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলের নিরলস আগ্রাসনে অন্তত ৩৫ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন।

মূলত গাজা কর্তৃপক্ষ ক্রমাগত বলেছে, উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পুরুষ, ২০ শতাংশ নারী এবং ৩২ শতাংশ শিশু এবং ৮ শতাংশ বয়স্ক মানুষ রয়েছেন।

মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার বলেছেন, নতুন এই পরিসংখ্যাটি এখন পর্যন্ত সরবরাহ করা তথ্যগুলোর মধ্যে ‘সবচেয়ে ব্যাপক’। 

তিনি জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, অজ্ঞাত পরিচয়ের ক্ষেত্রে একই অনুপাত প্রয়োগ করলে এবং নিহত বয়স্ক নাগরিকদের অর্ধেক নারী হলে এটা আশা করা যেতেই পারে যে, নিহত ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষের মধ্যে অন্তত ‘৫৬ শতাংশ নারী ও শিশু’ রয়েছে।


জাতিসংঘ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সুইজারল্যান্ডে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও পুলিশ

প্রকাশ: ১০:২৬ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ মে) স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশের অভিযানে সপ্তাহব্যাপী চলা বিক্ষোভের আপাতত ইতি ঘটল। সুইস দৈনিক লে টেম্পসের বরাতে আনাদোলু এজেন্সি এ খবর জানিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, অন্তত ২৫ জন পুলিশ সদস্য অতর্কিতভাবে বিক্ষোভস্থলে প্রবেশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছিলেন।

পুলিশের অভিযানের সময় অনেক শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে ছিলেন। তারা আন্দোলনকারীদের স্থাপন করা ক্যাম্প ভেঙে দেয়। শিক্ষার্থীদের অপরাধীর মতো চেপে ধরে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়।

এরপর তাদের জড়ো করার পর ভূগর্ভস্থ পার্কিংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের গাড়িতে তোলার আগ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনপন্থি স্লোগান দিতে থাকেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। শক্ত অবস্থানে আছে পুলিশ।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। তারা যুদ্ধ বন্ধ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক ছিন্নের দাবি জানান।


সুইজারল্যান্ড   ফিলিস্তিন   পুলিশ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলকে আরও অস্ত্র দিতে বাইডেনের মরিয়া চেষ্টা

প্রকাশ: ০৯:১১ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বোমা সরবরাহ স্থগিত রাখলেও ইসরায়েলকে আরও ১০০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র দিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে তিনি কংগ্রেসের অনুমোদন চেয়েছেন।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সহায়তার আওতায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র দিতে চাচ্ছে তার মধ্যে ট্যাংক খাতে রয়েছে ৭০০ মিলিয়ন ডলার, আরও ৫০০ মিলিয়ন ডলার রয়েছে কৌশলগত যানবাহনে এবং ৬০ মিলিয়ন ডলার রয়েছে মর্টার শেলে। 

গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে শেষ হয়ে আসা ইসরায়েলি অস্ত্রভাণ্ডার পূর্ণ করতে এসব অস্ত্র দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য, সবকিছু ইসরায়েলে পৌঁছাতে কয়েক বছর লেগে যাবে।

সম্প্রতি ইসরায়েলে বড় আকারের বোমা সরবরাহ স্থগিত রেখেছে বাইডেন প্রশাসন। গাজার রাফায় এসব বোমা ব্যবহৃত হতে পারে এমন আশঙ্কায় ওইসব তা সরবরাহ স্থগিত রেখেছে আমেরিকা।


ইসরায়েল   বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মারা গেছেন সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী এলিস মুনরো

প্রকাশ: ০৮:৫৭ এএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী কানাডার লেখক এলিস মুনরো আর নেই। সোমবার (১৩ মে) কানাডার অন্টারিওর পোর্ট হোপে একটি সেবা কেন্দ্রে তার মৃত্যু হয়। এই নোবেল বিজয়ী লেখকের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

এলিস মুনরো ৬০ বছরের বেশি সময় ধরে ছোট গল্প লিখেছেন। কানাডার গ্রামীণ জীবনকে উপজীব্য করেই তার বেশির ভাগ লেখা। এলিস মুনরোর গল্পে যে অন্তর্দৃষ্টি ও সমবেদনা ফুটে উঠত, সেজন্য তাকে প্রায়ই রাশিয়ার লেখক আন্তন চেখভের সঙ্গে তুলনা করা হত।

২০১৩ সালে এলিস মুনরো সাহিত্যে নোবেল পান। সে সময় পুরস্কারের ঘোষণায় মুনরোকে ‘সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার’ অভিহিত করে নোবেল কমিটি বলেছিল, ‘তিনি খুব সুন্দর করে গুছিয়ে গল্প বলতে পারেন। তার গল্পের বিষয়বস্তু সুস্পষ্ট ও বাস্তববাদী।’

মুনরোর জন্ম ১৯৩১ সালের ১০ জুলাই, কানাডার অন্টারিও প্রদেশের উইংহ্যাম এলাকায়। সেখানকার গ্রাম্য ও শান্ত পরিবেশেই তাঁর বেড়ে ওঠা। বাবা ছিলেন খামার মালিক, মা স্কুলশিক্ষক।

মাত্র ১১ বছর বয়সেই মুনরো ঠিক করে ফেলেন, বড় হয়ে একজন লেখকই হবেন। সে মতোই এগিয়েছে সবকিছু। নিজের পেশা নিয়ে পরবর্তী সময়ে আর কখনো তিনি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেননি।

মুনরোর প্রথম গল্প দ্য ডাইমেনশন অব আ শ্যাডো। প্রকাশিত হয় ১৯৫০ সালে। তখন তিনি ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সেখানেই পরিচয় হয় স্বামী জেমস মুনরোর সঙ্গে। তাঁরা বিয়ে করেন ১৯৫১ সালে।

রপর সংসার করার পাশাপাশি লেখালেখি চালিয়ে গেছেন এলিস মুনরো। জেমসের সঙ্গে তাঁর দুই দশকের সংসার ভেঙে যায় ১৯৭২ সালে। এর আগে তিন কন্যাসন্তানের মা হন তিনি। চার বছর পর আবার বিয়ে করেন জেরাল্ড ফ্রেমলিনকে।

তখন থেকে গড়ে প্রায় চার বছরে তাঁর একটি করে বই বেরিয়েছে। তার বেশির ভাগ গল্পে উঠে এসেছে কানাডার গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ। অন্য বড় লেখকদের মতো তিনি বিশ্বভ্রমণে বের হননি। স্বাভাবিকভাবেই নিজের চারপাশের গণ্ডির বাইরের বিষয় নিয়ে তাঁর লেখালেখিও কম।

মুনরো গভর্নর জেনালের অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিনবার। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস, ১৯৭৮ সালে হু ডু ইউ থিংক ইউ আর এবং ১৯৮৬ সালে দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ বইয়ের জন্য। তিনি কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন। আর সাহিত্যে নোবেলের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ম্যান বুকার পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৯ সালে। দ্য বেয়ার কাম ওভার দ্য মাউন্টেন বইয়ের জন্য তিনি ওই পুরস্কার পান। তাঁর এই বই অবলম্বনে পরিচালক সারাহ পলি তৈরি করেন সিনেমা অ্যাওয়ে ফ্রম হার।

মুনরোর প্রকাশিত অন্যান্য ছোটগল্পের সংকলনের মধ্যে আছে লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইম্যান-১৯৭১, সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ-১৯৭৪, দ্য মুনস অব জুপিটার-১৯৮২, ফ্রেন্ড অব মাই ইয়োথ-১৯৯০, ওপেন সিক্রেটস-১৯৯৪, দ্য লাভ অব আ গুড উইম্যান-১৯৯৮, হেটশিপ ফ্রেন্সশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারিজ-২০০১, রানঅ্যাওয়ে-২০০৪, টু মাচ হ্যাপিনেস-২০০৯ এবং ডিয়ার লাইফ-২০১২।


সাহিত্য   নোবেল বিজয়ী   এলিস মুনরো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিজের কোনো বাড়ি-গাড়ি নেই মোদির

প্রকাশ: ১০:০৭ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজের কোনো বাড়ি-গাড়ি নেই। তবে তাঁর তিন কোটি রুপির বেশি সম্পত্তি রয়েছে। আজ মঙ্গলবার বারানসির বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোয়নপত্র জমা দেন মোদি। সেখানে দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

হলফনামার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, নরেন্দ্র মোদির গাড়ি, বাড়ি কিছুই নেই। তবে বিজেপির অধিকাংশ প্রার্থীর মতো তিনিও কোটিপতি। মোদির মোট সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ২ লাখ রুপি।  মোদির হাতে নগদ অর্থ আছে ৫২ হাজার ৯২০ রুপি। গান্ধীনগর ও বারানসির দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তাঁর জমা রয়েছে ৮০ হাজার ৩০৪ রুপি। এর পাশাপাশি ২ কোটি ৮৬ লাখ রুপি ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে জমা রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কে। এছাড়া অস্থাবর সম্পত্তির তালিকায় ৯ লাখ ১২ হাজার রুপি একটি বিনিয়োগ রয়েছে তাঁর। এর পাশাপাশি ৪ টি সোনার আংটি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। যার বাজার মূল্য ২ লাখ ৬৮ হাজার রুপি।

উল্লেখ্য, আগামী ১ জুন বারাণসিতে লোকসভার ভোটগ্রহণ হবে। ধারণা করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদি   লোকসভা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন