ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ন্যাটো জোটকেই আরো শক্তিশালী করলেন পুতিন

প্রকাশ: ০২:১৫ পিএম, ২৩ মে, ২০২২


Thumbnail ন্যাটো জোটকেই আরো শক্তিশালী করলেন পুতিন

শীতল যুদ্ধের পর থেকে ন্যাটো কখনো এত বেশি রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ও সামরিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল না যতটা না ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর থেকে দেখা যাচ্ছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান অভিযানের বিরুদ্ধে ন্যাটো রাজনৈতিক কিংবা সামরিকভাবে এক ও অভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। যা জোটটিকে আরো বেশি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে। আর এ থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুতিন কি পক্ষান্তরে ন্যাটো জোটকেই আরো বেশি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেলেন? 

গেল বছর তালেবান যখন কাবুলের ক্ষমতা দখল করে তখন তখন ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকা সম্পাদকীয় লিখল; শিরোনাম ছিল—‘কীভাবে ন্যাটো ভাঙলেন বাইডেন’। কারণ সে সময় জোটসঙ্গীদের সঙ্গে নামমাত্র আলাপ–আলোচনার পর আফগানিস্তান (ন্যাটোর মিশন) থেকে যখন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেন। তখন এই জোট নিয়ে অনেকটাই হায় হায় রব উঠে। 

ন্যাটো জোটসঙ্গী নিয়ে এই ঝামেলার শুরু কিন্তু এখন থেকে নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই জোটের মাঝে দ্বিধা বিভক্তির রূপ স্পষ্টভাবে চোখে পড়ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় যা আরো তীব্রতর হয়। তিনি তখন পশ্চিমাদের এই সামরিক জোটভুক্ত মিত্রদের এই বলে হুমকি দিচ্ছিলেন, যারা ন্যাটোর জন্য পর্যাপ্ত করেননি, তাঁদের সুরক্ষায়ও কিছু করা হবে না। 

ট্রাম্পের সাথে ন্যাটোর এই ঝামেলায় সে সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ আক্ষেপ করে বলেন, ‘ন্যাটোর মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটছে’।

তবে এখন দেখা যাচ্ছে, ন্যাটোর মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটেনি কিংবা জোট ভেঙেও পড়েনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান সামরিক জোটটিকে নতুন করে জীবন ইজারা দিয়েছে; শীতল যুদ্ধের পর থেকে ন্যাটো কখনো এত বেশি রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ও সামরিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল না।

ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান অভিযানের বিরুদ্ধে ন্যাটো অভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। এমনকি জার্মানি রক্তপাতহীন প্রতিরক্ষার ওপর জোর দিয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু করলেও অবশেষে তারাও ইউক্রেনে ভারী অস্ত্রশস্ত্র পাঠাচ্ছে। ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশ আরও অনেক কিছু করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, পোল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাজ্য রয়েছে নেতৃত্বের অবস্থানে। অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে তারা।

ইউরোপের পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গনের অগ্রভাগে থাকা দেশগুলোতে ন্যাটো তাদের বাহিনীর উপস্থিতি দ্বিগুণ করেছে, যোদ্ধা গ্রুপের সংখ্যা চার থেকে বাড়িয়ে করেছে আট। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপে তাদের শক্তিমত্তা বাড়াচ্ছে। এরই মধ্যে তারা সেনাসংখ্যা ৮০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখে উন্নীত করেছে।

এমনকি যেসব দেশ দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে, সেই সুইডেন ও ফিনল্যান্ড এখন ন্যাটোভুক্ত হওয়ার ইচ্ছার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছে। তুরস্কের এ বিষয়ে উচ্চারিত ও অনুচ্চারিত আপত্তি এবং ‘ছদ্ম–বাস্তববাদীদের’ তথাকথিত অতিরঞ্জিত উদ্বেগ সত্ত্বেও দেশ দুটি প্রায় নিশ্চিতভাবে রুশ ‘ভালুককে’ উসকে দেওয়ার বিষয়ে তাদের অবস্থানের কথা প্রকাশ করেছে।

সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে ন্যাটো তাদের কৌশলগত বাজিমাত ঘটাবে। ন্যাটোয় দেশ দুটির অন্তর্ভুক্তি কিন্তু কোনো দাতব্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা নয়। নিজেদের অধিকার রক্ষার প্রশ্নে তারা সমীহ–জাগানো সামরিক শক্তি; যা সামনের দিনগুলোতে রাশিয়ার যেকোনো ‘আগ্রাসন’ রুখে দিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

ফিনল্যান্ডের গোলন্দাজ বাহিনীর সক্ষমতা অনেক। তাদের দখলে রয়েছে দেড় হাজার কামান; আছে পর্যাপ্ত এফ–১৮ যুদ্ধবিমান। রকেট হামলা চালানোর মতো একাধিক ব্যবস্থা, দূরের লক্ষ্যবস্তু আঘাত করতে সক্ষম হাউইটজারসহ (বিশেষ ধরনের কামান) নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার মতো অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র ও উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর বেশকিছু ব্যবস্থা রয়েছে তাদের হাতে। হেলসিংকি তাদের প্রতিরক্ষার পেছনে ব্যয় বাড়াচ্ছে। সম্প্রতি তারা ৬৪টি এফ–৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। তাদের সেনাসদস্যের সংখ্যা অবশ্য বেশ কম, মাত্র ২২ হাজার। তবে দেশটিতে সেনা প্রশিক্ষণ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার সেনাসদস্যের সমাগম ঘটাতে সক্ষম তারা; যা ইউক্রেনে রাশিয়ার পাঠানো সামরিক বাহিনীর চেয়ে বড়।

ন্যাটোতে যুক্ত হওয়া থেকে ফিনল্যান্ডকে বিরত রাখতে ক্রেমলিন সম্ভাব্য সব ধরনের হুমকি–ধমকি দিয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য থেকে তাদের দূরে রাখা যায়নি। ১৯৩৯–৪০ সালের যুদ্ধে (উইন্টার ওয়ার বা প্রথম সোভিয়েত–ফিনল্যান্ড যুদ্ধ) রুশ আগ্রাসনে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির কথা তারা ভোলেনি। অন্যদিকে, ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অবস্থা বেশ নাজুক। ফলে হুমকি–ধমকি কোনোভাবে ফিনল্যান্ডবাসীর মনে রেখাপাত করতে পারেনি। রাশিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে কী করা হবে, সে ব্যাপারে প্রস্তুতি পর্যন্ত নিয়ে রেখেছিল ফিনল্যান্ড। এরই মধ্যে রাশিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যখন দেখাই যাচ্ছে ‘তর্জন–গর্জনে’ কাজ হচ্ছে না, তখন রাশিয়ার শাসক ভ্লাদিমির পুতিন নিজের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন আনতে শুরু করেছেন।

সুইডেনের জনসংখ্যা ফিনল্যান্ডের প্রায় দ্বিগুণ। দেশটির (সুইডেন) প্রতিরক্ষা বাজেট বেশ বড়, তবে সামরিক বাহিনীর তুলনামূলক আকার অনেকটা ছোট। বাহিনীতে সক্রিয় মাত্র ২৪ হাজার সেনাসদস্য ও রিজার্ভ সেনার সংখ্যাও খুব কম, মাত্র ৩১ হাজার ৮০০। তবে স্টকহোমও তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছে ও সামরিক বাহিনীর আকার বাড়াচ্ছে। সুইডেনের বিমানবাহিনী দেশে তৈরি ২০৪টি সাব জেএএস ৩৯ গ্রিপেন যুদ্ধবিমানের ফরমায়েশ দিয়েছে। সুইডেন ডিজেলচালিত সাবমেরিন তৈরি করে। তাদের নৌবাহিনী সাবমেরিনের বহর চারটি থেকে বাড়িয়ে পাঁচটি করার পরিকল্পনা করেছে। নতুন রণতরী কিনতেও উদ্যোগী হয়েছে তারা।

সুইডেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ সম্ভবত তাদের গোটল্যান্ড দ্বীপ। বাল্টিক সাগরের মাঝে অবস্থিত এই দ্বীপ হতে পারে বিমান ওঠা–নামার প্রধান জায়গা, যেটি চাইলেও ডুবিয়ে দেওয়া যাবে না। এখানে ন্যাটোর ঘাঁটি গড়া মানে বাল্টিক সাগর ‘ন্যাটো লেক’ বা ন্যাটোর হৃদে পরিণত হওয়া, যেমনটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন মাল্টার ওপর ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণ ভূমধ্যসাগরকে মিত্রদের হ্রদে পরিণত করেছিল।

ন্যাটোর পরিকল্পনাকারীদের মনে দীর্ঘদিন ধরে এক ভয় কাজ করে। তা হলো, কখনো কোনো কারণে যুদ্ধ বাঁধলে তখন এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়ায় যুদ্ধসরঞ্জামের পুনঃসরবরাহ কঠিন হয়ে পড়বে। কেননা, মস্কো তাদের সব অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো করে রেখেছে কালিনিনগ্রাদে। রাশিয়ার এ ছিটমহলটির অবস্থান পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মাঝে। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে জোটে পাওয়ার পর পরিস্থিতির বদল ঘটবে, উত্তরাঞ্চলীয় যুদ্ধক্ষেত্র ন্যাটোর অনুকূলে ঝুঁকবে।

ন্যাটোর উচিত হবে, রণক্ষেত্রের অগ্রভাগে থাকা দেশগুলোতে ঘুরেফিরে সেনা মোতায়েনের অবস্থান থেকে সরে আসা। এর পরিবর্তে উচিত এসব দেশে স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করা। নির্দিষ্ট করে বললে বাল্টিক প্রজাতন্ত্রগুলো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। কেননা তাদের ভৌগলিক অবস্থান রাশিয়ার লাগোয়া। পাশাপাশি এসব দেশে রুশভাষী মানুষ রয়েছে; যা ‘আগ্রাসন’ চালানোর প্রশ্নে ভ্লাদিমির পুতিনের অজুহাত হয়ে উঠবে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকায় ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের মাইকেল ও’হ্যানলন তাঁর লেখায় বাল্টিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতা ও উপস্থিতি বাড়ানোর পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেছেন। তাঁর ভাষ্য, বাল্টিক অঞ্চলে ১০ হাজারের মতো মার্কিন সেনা থাকা দরকার, যাতে থাকবে চার হাজার যুদ্ধ–সেনা (ও সহায়ক সেনা), বিমানের একটি ব্রিগেড থাকবে এবং দুই থেকে তিনটি যুদ্ধিবিমানের স্কোয়াড্রন থাকতে হবে। এমনটা করা হলে তা যথেষ্ট বলেই মত দিয়েছেন মাইকেল ও’হ্যানলন। এমন পদক্ষেপও চীনের অবশ্যম্ভাবী ‘খবরদারি’ ঠেকানোর পক্ষে যথেষ্ট প্রতিরোধী ঢাল হয়ে উঠবে না ঠিকই, তবে ওইসব ছোট গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় শক্তিশালী করে তুলবে।

সবচেয়ে বড় পরিহাস হলো, রাশিয়া তার সীমানায় আর একটিও ন্যাটোভুক্ত দেশ দেখতে চায় না, এ কথা বলে ইউক্রেনে হামলা চালানোকে ন্যায্যতা দিতে সচেষ্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর এখন রাশিয়ার সীমান্তে ন্যাটোর উপস্থিতি তিন গুণ বাড়বে—৩১৬ মাইল থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৯৫২ মাইলে। এ জন্য পুতিন নিজেকে ছাড়া আর কাউকে দোষারোপ করার মতো পাবেন না।

ভালো করছেন, ভ্ল্যাদ। ন্যাটো শক্তিশালী করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এ জন্য যতটা যা মূল্য দিতে হলো, তা ইউক্রেনীয়দের দুঃখ ও দুর্দশা। তবে তা (ন্যাটোর শক্তিশালী হওয়ার তুলনায়) খুব বেশি নয়। সূত্র: ওয়াশিংটন পোষ্ট

পুতিন   রাশিয়া   ইউক্রেন   যুদ্ধ   ন্যাটো   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন বোমায় মারা গেছেন ফিলিস্তিনিরা: বাইডেন

প্রকাশ: ০৫:৫১ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিএনএনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, 'বোমার আঘাতে এবং অন্যভাবে গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন।' 

ইসরায়েলকে বোমা দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই বোমা গাজায় ব্যবহার করেছে ইহুদিবাদী দেশটি। এতে অনুতপ্ত বাইডেন।

বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়বদ্ধ। তাই তারা আয়রন ডোম রকেট ইন্টারসেপটার দেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র একটা বিভাজনরেখাও তৈরি করেছে। বলেছেন, 'ইসরায়েল যদি রাফায় আক্রমণ করে, তাহলে আমেরিকা তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দেবে না।'

যুক্তরাষ্ট্র এর আগে বারবার ইসরায়েলকে বলেছে, তারা যেন দক্ষিণ গাজার শহর রাফায় আক্রমণ না করে।

চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা রাফায় সামরিক অভিযানের অনুমতি দিয়েছে, যা এখন ১২ লাখ ফিলিস্তিনির আশ্রয়স্থল।

ইসরায়েলি সেনারা রাফার পূর্ব দিকে হামাসের টার্গেটে আঘাত করতে চায়। সেজন্য তারা হাজার হাজার মানুষকে জায়গা খালি করে চলে যেতে বলেছে।

এদিকে, রাফায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে লড়াইয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন বলে স্থানীয় কুয়েত হাসপাতাল জানিয়েছে। মৃতদের মধ্যে শিশুও আছে। ইসরায়েলের বিমান হামলায় তাদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও তারা মারা যায় বলে কুয়েত হাসপাতাল জানিয়েছে।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, লড়াই শুরুর পর থেকে ৩৪ হাজার ৮৪৪ জন মারা গেছেন। তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য দফতর মৃতের যে সংখ্যা দেয়, তার মধ্যে কতজন বেসামরিক সাধারণ মানুষ ও কতজন সন্ত্রাসী তা আলাদা করা হয় না। এটা বাইরের কোনও সংগঠনের পক্ষে স্বাধীনভাবে যাচাই করাও সম্ভব হয় না। তবে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, মোট মৃতের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ শিশু।

হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইসরায়েল-সহ কয়েকটি দেশ।

বার্তাসংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, রাফায় ইসরায়েলি আক্রমণ চলছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা প্রচুর হামাস সন্ত্রাসীকে মেরেছে।

ইউএনএফপিএ বুধবার জানিয়েছে, রাফার প্রধান মেটারনিটি হাসপাতাল আর নতুন করে কোনও রোগীকে ভর্তি করছে না।

ওয়াশিংটনে পুলিশ ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের তৈরি করা ব্যারিকেড সরিয়ে দিয়েছে।

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ পেপার স্প্রে ব্যবহার করে। ৩৩ জনকে বেআইনিভাবে ঢোকা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের আক্রমণ করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করার পর পুলিশ এই ব্যবস্থা নেয়।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা প্রথমে কাউকে গ্রেফতার না করে পরিস্থিতি সামলাতে চেয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিক্ষোভও তীব্র হয়। তারপর তারা ব্যবস্থা নিয়েছে।

নেদারল্যান্ডসেও আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   বোমা   ফিলিস্তিন   জো বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, প্রতিক্রিয়া জানাল চীন

প্রকাশ: ০৫:৪৩ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রণালীতে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে। তাইওয়ানের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই বুধবার তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তরণ করেছে এ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেইজিং।  

চীন গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের একটি অংশ বলে মনে করে। যে কারণে চীন এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বরাবরই সতর্কতা দেখিয়ে আসছে। অন্যদিকে তাইওয়ান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে একটি আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে বিবেচনা করে। 

মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও মাঝে মাঝে মার্কিন নৌবাহিনীর টহল বিমান প্রতি মাসে অন্তত একবার তাইওয়ান প্রণালী দিয়ে বা সরাসরি তাইওয়ানের ওপর দিয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক কোনও আইন ভাঙা হয়নি দাবি করে মার্কিন নৌবাহিনীর ৭ম নৌবহর জানায়, আর্লে বার্ক শ্রেণির গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস হ্যালসি বুধবার পানির মধ্য দিয়ে একটি রুটিন তাইওয়ান স্ট্রেইট ট্রানজিট পরিচালনা করেছে।

তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর তীব্র সমালোচনা করেছে চীন। চীনা সামরিক বাহিনী এটিকে একটি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে সমুদ্রযাত্রার সময় মার্কিন জাহাজকে পর্যবেক্ষণ ও সতর্ক করার জন্য নৌ ও বিমান বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল বলেও জানায় তারা। 

পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, থিয়েটারে সৈন্যরা সবসময় সতর্ক থাকে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন জাহাজটি প্রণালী দিয়ে দক্ষিণে যাত্রা করেছে এবং তাইওয়ান বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। এসময় অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি।

সেইসঙ্গে তাইওয়ান সরকার বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, শুধুমাত্র দ্বীপের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।

এদিকে বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই বারবার চীনের সাথে কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছেন কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। উদ্বোধনের আগে এবং পরে দ্বীপের চারপাশে যেকোনও  চীনা সামরিক কৌশলের জন্য তাইওয়ান সতর্ক রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত চার বছরে চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানের আশেপাশে তার কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল প্রলালীর মধ্যরেখার ওপর যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন করা। কারণ রাজনৈতিকভাবে চীন এই মধ্যরেখার অস্তিত্ব স্বীকার করে না।


তাইওয়ান   মার্কিন যুদ্ধজাহাজ   চীন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পাকিস্তানে বন্দুক হামলায় নিহত ৭

প্রকাশ: ০৫:১৪ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে বন্দুক হামলায় সাতজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। হতাহতরা সবাই স্থানীয় একটি সেলুনের কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।

বুধবার (৮ মে) দিনগত রাতে বেলুচিস্তানের গোয়াদার জেলার সুরবন্দরে এ ঘটনা ঘটে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বুধবার দিনগত রাত ৩টার দিকে স্থানীয় আবাসিক কোয়ার্টারে প্রবেশ করে হামলা চালান বন্দুকধারীরা। সেসময় হতাহত ব্যক্তিরা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। 

ডন ডটকমের সঙ্গে কথা বলার সময় গোয়াদারের জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার (এসএসপি) জোহাইব মহসিন বলেছেন, নিহতরা গোয়াদার থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে সুরবন্দরে একটি সেলুনে কাজ করতেন। নিহতদের সবাই পাঞ্জাবের খানেওয়াল ও লোধরান জেলার বাসিন্দা। অন্যদিকে, আহত ব্যক্তি খানেওয়ালের মিয়া চান্নু এলাকার বাসিন্দা।

ঘটনার পর পুলিশ হতাহতদের গোয়াদার হাসপাতালে স্থানান্তর করে। এসএসপি মহসিন জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছেন ও তদন্ত চলছে। হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে এরই মধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।

গোয়াদারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) হামুদুর রহমান জানিয়েছেন, চারটি অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আর আহত ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর করাচিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি। তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি ঘটনাটিকে ‘উন্মুক্ত সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। হতাহতদের পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করার ও হামলাকারীদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

এদিকে, হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এই হামলা দেশের শত্রুদের কাপুরুষোচিত কাজ। আমরা সন্ত্রাসবাদকে শিকড় থেকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।


পাকিস্তান   বন্দুক হামলা   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

২১ মে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে পারে ইউরোপের চার দেশ

প্রকাশ: ০৪:২৬ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

আয়ারল্যান্ড, স্পেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য অন্তত চারটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে।  

বৃহস্পতিবার (৯ মে) আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরটিই নিউজের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে, বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে আরটিই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনকে যৌথভাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ডাবলিন ও মাদ্রিদ এবং স্লোভেনিয়া ও মাল্টার মধ্যে যোগাযোগ তীব্র হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপের এসব দেশ আগামী ১০ মে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের বিষয়ে অনুষ্ঠিতব্য ভোটের অপেক্ষায় রয়েছে। ওই দিন সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার যোগ্য হিসাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে অন্তত ১৩৯টিই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।


ফিলিস্তিন   ইউরোপ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেন ইসরায়েলে বোমার চালান স্থগিত করল আমেরিকা?

প্রকাশ: ০৪:০৬ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোমার একটি বড় চালান ইসরায়েলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে দেশটির প্রশাসন। গত সপ্তাহেই বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এর কারণ নিয়ে মুখ খুলছিলেন না।

এমনকি ফিলিস্তিনিদের হত্যায় ইসরায়েলকে ইন্ধন যোগানকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ই  এখন রাফায় অবস্থানকারী ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য মানবিকতার বুলি প্রকাশ করছেন।  

বুধবার (৯ মে) তিনি জনসম্মুখে ঘোষণা করেন, ইসরায়েলি যদি রাফায় অভিযান চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের কোনো অস্ত্র সরবরাহ করবে না। খবর রয়টার্সের  

এদিকে সিবিএস নিউজকে ইসরায়েলের বোমার চালান আটকে দেওয়ার কারণ জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা। 

গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এই প্রথম ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রের চালানটি গত সপ্তাহে ইসরায়েলে পাঠানোর কথা থাকলেও সেটি আপাতত পাঠানো হচ্ছে না বলে ইসরায়েলকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা। ওই চালানে কয়েক হাজার কেজি বোমা ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তার বরাতে সিবিএস নিউজ জানায়, দক্ষিণ গাজার রাফায় স্থল অভিযান চালাতে ইসরায়েলকে নিষেধ করে যুক্তরাষ্ট্র। এ অভিযানে মানবিক বিপর্যয় নিয়ে মার্কিন প্রশাসন উদ্বিগ্ন ছিল। বিষয়টি ইসরায়েলকে জানানোর পরও তারা পাত্তা দেয়নি।

ইসরায়েল সব ধরনের অনুরোধ ও আহ্বান উপেক্ষা করে রাফায় বড় ধরনের হামলা চালাতে প্রস্তুতি নেয়। ইসরায়েলের অগ্রগতি নিশ্চিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র চালানটি স্থগিত করে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, রাফা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা ইসরায়েল পুরোপুরি পূরণ করেনি। ইসরায়েল রাফায় ওই বোমা ব্যবহারের করতে পারে বলে শঙ্কায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। 

তাহলে কি শুধুমাত্র নিজেদের কথা ভেবেই গাজাবাসীর প্রতি মানবিকতা দেখাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট? 

যদিও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখতে পারে এটা অবিশ্বাস্য। আর কতদিন তারা এভাবে গাজাবাসির জন্য মানবিকতা দেখাবে তা নিয়েও এক ধরণের শঙ্কা থেকে যায়।


ইসরায়েল   বোমার চালান   স্থগিত   আমেরিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন