ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইমরান খানের ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চের ডাক

প্রকাশ: ০২:৫৬ পিএম, ২৩ মে, ২০২২


Thumbnail ইমরান খানের ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চের ডাক

ইসলামাবাদ অভিমুখে আগামী ২৫ মে লংমার্চের ডাক দিয়ে “একে রাজনীতি নয় জিহাদ” বলে উল্লেখ করেছেন  পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। 

রোববার (২২ মে) পিটিআইয়ের প্রধান কমিটির বৈঠক শেষে পেশোয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান এই লংমার্চের ঘোষণা দেন। 

 সেদিন বিকাল ৩টায় শ্রীনগর হাইওয়েতে তিনি তার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে লংমার্চে অংশ নেবেন। ইমরান খান পেশোয়ার থেকে লংমার্চের নেতৃত্ব দেবেন জানিয়ে এক টুইট বার্তায় পাকিস্তানিদের লংমার্চে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। 

ইমরান খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি সরকার লংমার্চ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তাহলে সেটা হবে বেআইনি এবং আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’

ইমরানের এই ঘোষণার পরই পাকিস্তানের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। পিটিআইয়ের এই লংমার্চের পরিকল্পনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ রোববার বলেন, ‘ইমরান খান দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু করতে চান। কিন্তু তিনি ভুল করছেন। এই ভুলের জন্য জাতি কখনোই তাকে ক্ষমা করবে না।“ 

অন্যদিকে রোববার (২২ মে) একই বিষয়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের লংমার্চকে ইসলামাবাদে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে কি না তা সরকার ও তার সহযোগীরা সিদ্ধান্ত নেবে। যদি জোট ব্যবস্থা নিতে যায়, আমরা বিক্ষোভকারীদের তাদের ঘর থেকে বের হতে দেবো না।’

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মূলত ২০২৩ সালের আগস্টে। কিন্তু তার আগেই অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী বিদায় নিয়েছেন ক্ষমতা থেকে। অতীতের ধারা অনুসরণ করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পতনও হয়েছে মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার শুনানি হতে পারে। রাজনীতির লড়াইয়ে গ্রেফতারও হতে পারেন পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপজয়ী এই সাবেক ক্যাপ্টেন।


পাকিস্তান   ইমরান খান   পিটিআই   লংমার্চ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে না: বাইডেন

প্রকাশ: ১১:৫৪ এএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোরালোভাবে ইসরায়েলের পক্ষে তার অবস্থান পূনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা করছে না এবং গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়।

সোমবার (২১ মে) হোয়াইট হাউসে ইহুদিদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।রয়টার্সের খবর 

হোয়াইট হাউসে ইহুদি আমেরিকান হেরিটেজ মান্থ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, 'আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিপরীতে আমি বলতে চাই, গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করি।'  

এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ আরও দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার সিদ্ধান্তও প্রত্যাখ্যান করেন।

এদিকে গাজায় চলমান যুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কৌঁসুলি করিম খান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। 


গাজা   ইসরায়েল   গণহত্যা   জো বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তাবরিজ শহরে রাইসির মরদেহ, দাফন হবে মাশাহাদে

প্রকাশ: ১১:১৫ এএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তার নিজের শহর মাশহাদের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি এই মাশহাদ ছেড়ে গিয়েছিলেন। তার আগে বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় আয়োজনে তাকে চিরবিদায় জানাবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান। 

নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ এখনো দেশটির রাজধানী তেহরানে নেওয়া হয়নি। রাইসিসহ নিহত সবার মরদেহ সোমবার থেকে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরেই রাখা হয়েছে। তাবরিজ শহরেই প্রথম জানাজা হবে। এরপর রাইসির মরদেহ নেওয়া হবে তেহরান শহরে।  

ইরানের ইসলামিক প্রোপাগেশন অর্গানাইজেশনের তাবরিজ দপ্তরের পরিচালক হোজ্জাতোলেসলাম মাহমুদ হোসেইনি এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাবরিজের কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ বাকিদের মরদেহ রাখা হবে। মঙ্গলবার সেখানে জানাজা হবে। এরপর তাবরিজের মানুষ প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে শেষবিদায় জানাবেন। তার মরদেহ তেহরানের উদ্দেশে স্থানীয় বিমানবন্দরে নেওয়া হবে।

এই কর্মকর্তা আরও জানান, বুধবার তেহরানে রাইসির জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি তাতে অংশ নেবেন। এর একদিন পর জন্মশহর মাশাহাদে রাইসিকে দাফন করা হতে পারে। 

এদিকে তেহরানের শহরতলিতে রাইসির স্মরণে একটি আয়োজন চলছে। সেখানে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে প্রয়াত প্রেসিডেন্টকে স্মরণ করছেন, শোক জানাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গত দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির জনগণের জন্য তার দায়িত্ব পালন করার সময় একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি শহীদ হয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানসহ বাকিরাও নিহত হয়েছেন।


তাবরিজ   ইব্রাহিম রাইসি   মরদেহ   দাফন   মাশাহাদ   নিহত   ইরান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৯:২৭ এএম, ২১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটিতে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৮ জুন।

সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ইরনা।

দেশটির সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের পদ শুন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ফলে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রধান ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা আগামী ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত প্রার্থীদের নিবন্ধন করা হবে; আর প্রচার-প্রচারণা চলবে ১২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত।

রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানে একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার টানা অভিযান শেষে সোমবার তাদের হেলিকপ্টারটির খোঁজ পায় উদ্ধার দল। তবে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন।

ইরানের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান মোহাম্মদ নামি বলেছেন, নিহত আরোহীদের শনাক্ত করার জন্য কোনো ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ফ্লাইট ক্রুসহ মোট ৯ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এসব দেশের তালিকায় ইরান যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে পাকিস্তানের মতো দেশ। এ ছাড়া রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা শোক প্রকাশ করেছেন। ইরানের এই বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে পাঁচদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। এ ছাড়া ইরানের প্রিয় জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। রাইসির মৃত্যুতে ইরাক, লেবানন, সিরিয়া, পাকিস্তানও রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। 


ইরান   প্রেসিডেন্ট নির্বাচন   ইব্রাহিম রাইসি   পররাষ্ট্রমন্ত্রী   হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ কি সমাপ্তির পথে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

১৯৭৯ সালে ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ সংঘটিত হয়েছিল। রেজা শাহ পাহলভির রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে যে ‘ইসলামি বিপ্লব’ ঘটানো হয়েছিল, সেটিকে বলা হয় ফরাসি এবং বলশেভিক বিপ্লবের পর ইতিহাসের তৃতীয় মহা জাগরণ, যেখানে জনগণ এককাট্টা হয়ে রেজা শাহ পাহলভির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল। এই সময় নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন আয়াতুল্লাহ খোমেনি এবং খোমেনির নেতৃত্বে ইরান ইসলামি প্রজাতন্ত্রে রূপ গ্রহণ করে। কঠোর শরিয়া আইন অনুসারে ইরান পরিচালিত হতে থাকে।

ইরানি বিপ্লবের পঁয়তাল্লিশ বছর পেরিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে নানারকম ঘটনা ইরানে ঘটেছে। এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানকে ধর্মান্ধ মৌলবাদী কট্টর অবস্থান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য ঘরের ভেতরে বাইরে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু ইরান কট্টর মৌলবাদী অবস্থান থেকে ফিরে আসেনি। 

ইসলামী বিপ্লবের পর কেবল সেখানে শরিয়া আইন কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়নি, পর্দাপ্রথা সহ নারী স্বাধীনতা খর্ব করা, নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করে ইসলামকে কঠোরভাবে প্রতিপালনের কিছু রেওয়াজ চালু হয়েছিল এই দেশটিতে। কিন্তু গত কয়েক বছরে ইরানের ভেতর ভিন্নমতালম্বীদের সংখ্যা বাড়ছিল। বিশেষ করে ইরানের বুদ্ধিজীবী এবং তরুণ সম্প্রদায় কট্টর ইসলামপন্থি অবস্থা থেকে বেরিয়ে উদার এবং একটি গণতান্ত্রিক আবহ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে চলছিল। ইরানের ভেতর হিজাব বাধ্যতামূলক করা নিয়ে যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে সে দেশের নারীরা সোচ্চার হয়েছিল। ইরানে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারী ব্যক্তিরা শিক্ষিত স্বজন এবং তরুণরা বদ্ধ দুয়ার খুলে দেওয়ার দাবি করছিল। আর এ ক্ষেত্রে ইরানে ‘ইসলামি বিপ্লবী’ সরকার একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। আর গতকাল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লব’ কতটুকু স্থায়ী হবে এবং আদৌ শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

১৯৭৯ সালে ইরানের জনগণের মধ্যে রেজা শাহ পাহলভির বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ বিক্ষোভ ছিল এবং আয়াতুল্লাহ খোমেনির যে জনপ্রিয়তা ছিল এখন সেটা অনেকটাই কেটে গেছে। অনেকে বলে ‘মোহমুক্তি ঘটেছে।’ বিশেষ করে তরুণ সমাজ পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক করতে চায়। তারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়। কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সভ্যতায় ইরান নানাভাবে এগিয়ে। কিন্তু ইসলামি অনুশাসনের কারণে সেখানে মুক্তবুদ্ধির চর্চা যেমন বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে ঠিক তেমনি যারা মুক্তবুদ্ধির চিন্তা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাজা এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নজীর সেদেশের তরুণ প্রজন্মকে অনেকটাই বিপ্লবী সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এরকম একটি বাস্তবতায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যু নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তাহলে কি ইরানে ইসলামি বিপ্লবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনা কি নতুন বাক তৈরি করবে, যেখান থেকে ইরান আবার একটি গণতান্ত্রিক পন্থায় ফিরে আসবে?

অনেকেই বলতে পারেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ভেতর কাজ করছে এবং যে সমস্ত বিক্ষোভের ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে সেগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পিত। কিন্তু এটা অস্বীকার করার উপায় নাই যে, ইরানের তরুণ সমাজ এখন মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে চায়, দুয়ার খুলে দিতে চায়। তাই রাইসির মৃত্যু ইরানের কট্টরপন্থিদের বিদায় ঘণ্টা বাজাল কি না সেটি নিয়েও জল্পনা কল্পনা চলছে।

ইরান   ইসলামি বিপ্লব   ইব্রাহিম রাইসি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যু কি মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অশান্ত করবে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়ে পড়বে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে আজ বলা হয়েছে যে, ইরানের এই ঘটনাটিকে ইরানবাসী কোনভাবেই স্বাভাবিক দুর্ঘটনা বলে মনে করছে না। তারা মনে করছেন, এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো ঘটছে। এটির পেছনে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জড়িত বলেও তারা ধারণা করছে। আর এই ধারণাকে পুঁজি করে রাইসির মৃত্যুর পরে যে আবেগ এবং ক্ষোভ সেটাকে কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উস্কানি এবং উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে বলে আল জাজিরায় কয়েকজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করছেন যে, ইরান যদি মনে করে এই ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এই ঘটনা ঘটিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল, তাহলে তারা অবশ্যই পাল্টা প্রতিশোধ নেবে। 

গত কিছুদিন ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চলছে। বিশেষ করে ইরানের দূতাবাসে হামলার ঘটনার পর ইরান যে ভাবে ইসরায়েলে ড্রোন আক্রমণ করেছে, তারপর থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল যে ইসরায়ল এর পাল্টা প্রতিশোধ নেবে। সে সময় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ইসরায়েলকে এ প্রতিশোধের ব্যাপারে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল এবং মধ্যপ্রাচ্যের সম্ভাব্য যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছিল। সেই সময় ইসরায়েল কিছু করেনি বটে, তবে ইরানের গতকালকের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পেছনে যে ইসরায়েলের হাত আছে এটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সবাই বিশ্বাস করে। যদিও এর পক্ষে তথ্য প্রমাণ এখন পর্যন্ত কেউই হাজির করতে পারেনি। তবে ইরান এ বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করছে। এটির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আরও নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে। 

প্রথমত, এই ঘটনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের যে সমস্ত সশস্ত্র গ্রুপ গুলো আছে তারা জঙ্গি হতে পারে। কারণ এই সমস্ত সশস্ত্র গ্রুপগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং ইরানের পৃষ্ঠপোষকতা চলছে। ফলে ইসরায়েল সহ বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাস সহিংসতার ঘটনা বাড়তে পারে বলে অনেকে ধারণা করছে। 

দ্বিতীয়ত, এই ঘটনার পর সারা বিশ্বে ইরান নিয়ন্ত্রিত বা ইরানের পৃষ্ঠপোষক থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলো অন্যান্য দেশেও বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এবং আক্রমণ করতে পারে বলে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

তৃতীয়ত, এই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে ইরান সামনের দিনগুলোতে ইসরায়েলের ওপর বড় ধরনের আক্রমণ করতে পারে। এমনকি ঘোষণা দিয়েও প্রতিশোধ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করতে পারে। এই সবগুলো ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যকে অশান্ত করবে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে। 

তবে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের রাইসির মৃত্যু একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ইরান জুড়ে একটা শোকের ছায়া। এই শোক কাটিয়ে উঠতে তাদের সময় লাগবে। ইরানের সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তারপর হয়ত তারা এই বিষয়টি নিয়ে ভাববে। আবার অনেকে মনে করছেন ইরান হয়ত আপাতত আত্ম অনুসন্ধান করবে। ভেতরের শত্রুদেরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে এবং ভেতর থেকে ইরানকে যারা দুর্বল করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আগে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করবে। তারপর তারা ইসরায়েল বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করবে। তবে স্বল্প মেয়াদী হোক, দীর্ঘ মেয়াদী হোক ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যু মধ্যপ্রাচ্যকে অশান্ত করে তুলবেই।


ইব্রাহিম রাইসি   ইরানের প্রেসিডেন্ট  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন