ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মোদি সরকারের কাশ্মীর নীতি কি ব্যর্থ হয়েছে?

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২০ জুন, ২০২২


Thumbnail মোদি সরকারের কাশ্মীর নীতি কি ব্যর্থ হয়েছে?

২০১৪ সালে ভারতের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। নির্বাচনে জেতার পর দলটি বলেছিল, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা উচিত। এই ধারায় ভারতশাসিত কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল। তবে কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি এ আইনের বিরোধিতা করে আসছিল দশকের পর দশক। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে পার্লামেন্টে বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয় বিজেপি। এরপরই ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার দেশটির সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে। এই ধারাটি বাতিল করা হয়েছিল এই অজুহাতে যে, জম্মু-কাশ্মীরে দশকের পর দশক ধরে চলতে থাকা ‘সশস্ত্র বিদ্রোহ’ সমূল উৎপাটিত হবে। কিন্তু আদতে তা হয় নি। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। তাদের প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার ২০১৯ সালে একতরফাভাবে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা ও সীমিত স্বায়ত্তশাসন রদ করে। দুই টুকরা হয় জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য। লাদাখকে আলাদা করে বানানো হয় নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ওই সময় মোদি সরকার দাবি করেছিল, এই পদক্ষেপে জম্মু-কাশ্মীরে দশকের পর দশক ধরে চলতে থাকা ‘সশস্ত্র বিদ্রোহ’ সমূল উৎপাটিত হবে। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধির দুয়ার খুলবে।

কিন্তু প্রায় তিন বছর পর, বিরোধপূর্ণ এ হিমালয় উপত্যকায় কথিত ওই শান্তির দেখা পাওয়া যায়নি। বন্দুকের লড়াই আর নিশানা করে চালানো হামলায় প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে কাশ্মীরি স্বাধীনতাকামী, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক লোকজন।

শুধু চলতি বছর এখন পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা ও পুলিশের হামলায় নিহত হয়েছেন শতাধিক সন্দেহভাজন স্বাধীনতাকামী; যাঁদের বেশির ভাগ তরুণ। তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ২৬ বছর। এ তথ্য এখানকার পুলিশ প্রধান বিজয় কুমারের। বিপরীতে এ বছর অন্তত ১৬ জনকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে। নিহত এই ব্যক্তিদের সাতজন সংখ্যালঘু কাশ্মীরি হিন্দু সম্প্রদায়ের।



আগেই বলা হয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয় ২০১৯ সালের আগস্টে। এরপর উপত্যকাজুড়ে গ্রাস করা সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১৯৭ সদস্য। নিহত হয়েছেন সন্দেহভাজন ৬৭৫ জন স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরি। পাশাপাশি ১৩১ জন সাধারণ মানুষও।

এই ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত এমন ২৩ জন আছেন, যাঁরা সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। এমনকি কাশ্মীরের অনাবাসিক মুসলিম অভিবাসী কর্মী, যাঁরা ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে এসেছেন, তাঁরাও ছাড় পাননি।

সহিংসতার সর্পিল ঢেউ সমালোচকদের মধ্যে এই বিস্ময় ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে যে ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটিতে মোদি সরকারের ‘পেশিশক্তির নীতি’ কি ব্যর্থ হলো?

বিচ্ছিন্নতা-বিভেদ হয়েছে আরও গভীর

২০১৪ সালে ভারতের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি। নির্বাচনে জেতার পর দলটি বলেছিল, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা উচিত। এটি এমন একটি বিশেষ নাগরিকত্ব আইন, যেখানে কর্মসংস্থান ও ভূমির ওপর ভারতশাসিত কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দাদের অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল। তবে কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি এ আইনের বিরোধিতা করে আসছিল দশকের পর দশক।

২০১৯ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আবার ক্ষমতায় এলে ওই আইন বাতিল করার বিষয়টি ছিল বিজেপির অন্যতম প্রতিশ্রুতি। ঠিকই দেখা গেল, এ নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে পার্লামেন্টে বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হলো বিজেপি।

প্রধানমন্ত্রী পদে মোদি পুনরায় জেতার কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতশাসিত কাশ্মীরের আংশিক স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়া হয়। কেন্দ্রশাসিত দুটি অঞ্চলে ভাগ করে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে আনা হয় নয়াদিল্লির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে।



‘ঐতিহাসিক’ এ পদক্ষেপে বিজেপির শীর্ষ নেতারা নিজেরা নিজেরাই অভিনন্দনে ভাসছিলেন। মনে করছিলেন, দীর্ঘদিনের কাশ্মীর সংকটের সুরাহা করে ফেলেছেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাঁদের দাবি।

জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের সীমিত স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর সেখানে নজিরবিহীন সেনা সমাবেশ ঘটানো হয়। যদিও (পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধকে ঘিরে) এটি আগে থেকেই ছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ সামরিকীকরণকৃত অঞ্চলগুলোর একটি।

জম্মু-কাশ্মীরে মোদি সরকার ‘পেশিশক্তি’ খাটানোর যে নীতি গ্রহণ করেছে, তারই অংশ হিসেবে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, অধিকারকর্মী, আইনজীবী ও শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাসের পর মাস চলছে নিরাপত্তার কড়াকড়ি।

৩৭০ ধারা বাতিলের পর জম্মু-কাশ্মীরে নতুন আবাসন আইন সামনে আনে ভারত সরকার। এ আইন অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীরে বাইরের লোকজনও স্থায়ীভাবে বসতি গড়তে পারবেন। আইনটির জেরে এই অঞ্চলে জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বসতি গড়ার মধ্য দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে ‘ঔপনিবেশিক প্রকল্প’ হাতে নেওয়া হয়েছে—এমন অভিযোগও উঠেছে।

এরই মধ্যে গত মাসে জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচনী এলাকাগুলো নতুনভাবে বিন্যাস করে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে মোদি সরকার। সেখানে হিন্দু–অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর নিন্দা জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো। তাদের অভিযোগ, এ অঞ্চলে মুসলিমদের ক্ষমতা কমাতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি।



২০১১ সালে ভারতে চালানো আদমশুমারি অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরের মোট জনসংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ। এর মধ্যে মুসলমান ৬৮ দশমিক ৩১ শতাংশ ও হিন্দু ২৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর পুরো কাশ্মীর উপত্যকার ৯৬ শতাংশ মুসলমান।

হিন্দু জাতীয়তাবাদী মোদি সরকারের নানা পদক্ষেপ জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাবের বীজ বুনেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক আইনপ্রণেতা মুহাম্মদ ইউসুফ তারিগামি আল-জাজিরাকে বলেন, ‘মানুষ হতাশ হয়ে পড়ছে, আশা হারাচ্ছে। এটা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

জম্মু-কাশ্মীরে দিন দিন বেড়ে চলা সহিংসতার দিকে ইঙ্গিত করে এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘আপনি যখন মানুষকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেবেন, তখন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি দেখা দেবে। দুর্ভাগ্যবশত, কিছুসংখ্যক মানুষ নিজেদের রক্ষায় সহিংসতাকে বিকল্প হিসেবে বেছে নেবেন। আর এটাই এখন ঘটছে।’

মুহাম্মদ ইউসুফ পিপলস অ্যালায়েন্স অব গুপখার ডিক্লারেশনের (পিএজিডি) একজন সদস্য। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে লড়াই করছে ভারতপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর এ জোট। পিএজিডির সদস্য জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। তিনিও অভিযোগ করেন, মোদি সরকারের নানা পদক্ষেপ তরুণদের সশস্ত্র প্রতিরোধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

গত মাসে সাংবাদিকদের মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘দিন যত যাচ্ছে, আরও বেশি তরুণ বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন আর সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিচ্ছেন। সংগ্রামে যোগ দেওয়ার দু-তিন দিনের মধ্যে তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অনেকে কখনো হাতে অস্ত্র ধরেননি। সব জায়গায় কাশ্মীরিদের রক্ত ঝরানো হচ্ছে।’

কাশ্মীরে রক্ত ঝরানোর নীতি অবলম্বন করে বিজেপি ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে নিজেদের পক্ষে ভোট কাড়ছে। এ নীতি ফলিয়ে তারা এটাই প্রচার করছে যে কাশ্মীরবাসীকে কতটা দমন করে রাখছে তারা—বলছিলেন মেহবুবা মুফতি। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ নীতি কাশ্মীরে কাজ করবে না। শেষ পর্যন্ত এ নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।’

মুসলমানদের প্রতি ‘বিদ্বেষ’ থেকেই কাশ্মীর নীতি

বিজেপি সরকারের কাশ্মীর নীতি নাগরিকত্ব ও সম–অধিকারের ভিত্তিতে নয়; বরং মুসলমানদের প্রতি দলটির বিদ্বেষ থেকে নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস কলেজ অব লিবারেল আর্টসের শিক্ষাবিদ মোহাম্মদ জুনাইদ।

মোহাম্মদ জুনাইদ বলেন, ‘এটি এমন একটি নীতি, যার মাধ্যমে কাশ্মীরিদের ও তাঁদের কণ্ঠস্বর জনগণের কাছ থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি এটাও দেখানো হচ্ছে যে কাশ্মীরে মুসলমানদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে পরিণত করতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) বাসনা পূরণ করা হচ্ছে।’

এদিকে মোদির কাশ্মীর নীতির পেছনে থাকা মুসলমান বিদ্বেষ শুধু মুসলমানদেরই নয়, এ অঞ্চলে থাকা সংখ্যালঘু হিন্দুদেরও হুমকির মুখে ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সংখ্যালঘু হিন্দুরা পণ্ডিত নামে পরিচিত।

নয়াদিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ ও গত শতকের আশির দশকের শেষ ভাগে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিশানা করে শুরু হওয়া হত্যাকাণ্ডের জের ধরে এ উপত্যকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন প্রায় দুই লাখ পণ্ডিত। খাতা-কলমের হিসাব বলছে, উপত্যকা ছাড়ার সময় ২১৯ পণ্ডিতকে হত্যা করেছেন বিদ্রোহীরা।

তবে ডানপন্থী হিন্দু দল ও সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া বলিউডের একটি সিনেমায় নিহত পণ্ডিতদের সংখ্যা হাজারের ঘরে বলে দাবি করা হয়েছে। এমনকি কেউ কেউ একে গণহত্যা বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। এর পর থেকেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভারতশাসিত কাশ্মীরে পণ্ডিতদের পুনর্বাসন করার জোর পদক্ষেপ নিয়েছে দলটি। ২০১০ সালে তাঁদের জন্য একটি পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। প্যাকেজের আওতায় তাঁদের চাকরি ও ঘরবাড়ি দেওয়া হয়। এভাবে যেসব পণ্ডিত কাশ্মীরে ফিরেছেন, গত বছর থেকে তাঁরা সন্দেহভাজন স্বাধীনতাকামীদের হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন।

পণ্ডিতদের ভাষ্যমতে, চলমান সহিংসতার মধ্যে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এক মাসের বেশি সময় ধরে কাজে যাচ্ছেন না হিন্দু সরকারি কর্মচারীরা। তাঁরা আবার তাঁদের জম্মু-কাশ্মীরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি তুলেছেন।

২০১০ সালে কাশ্মীরে ফিরে আসেন আশ্বিনী কুমার (৪০) নামের এক পণ্ডিত। কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আল-জাজিরাকে সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘এখন নিজেদের যতটা নিরাপত্তাহীন মনে হয়, আগে কখনো তেমনটা মনে হয়নি। তিন দশক ধরে কিছুই পরিবর্তিত হয়নি।’



জম্মু-কাশ্মীরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ও ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে আসা লোকজনের ওপর হামলার অধিকাংশ ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার করেছে স্থানীয় স্বল্প পরিচিত সশস্ত্র সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। ২০১৯ সালে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ করেছে। সংগঠনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টে বলেছে, তারা কাশ্মীরে ‘অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসরদের’ এবং ‘বসতি স্থাপনকারী ঔপনিবেশিক প্রকল্পের’ যাঁরা অংশ, তাঁদের নিশানা করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অঞ্চলে ক্রমেই আরও বেশি স্থানীয়ভাবে সশস্ত্র বিদ্রোহের উৎপত্তি হচ্ছে। এটিকে ‘উদ্বেগজনক প্রবণতা’ আখ্যায়িত করে তাঁরা সরকারের প্রতি কাশ্মীরিদের সঙ্গে ‘অধিকতর রাজনৈতিক যোগাযোগ’ স্থাপনের অনুরোধ জানাচ্ছেন।

অজয় শাহনি নয়াদিল্লির ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক। কাশ্মীর বিষয়ে মোদি সরকারের নীতির সফলতা-ব্যর্থতা প্রসঙ্গে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আল-জাজিরার কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বলেন, ‘৩৭০ ধারা প্রত্যাহার হলে কাশ্মীরে সন্ত্রাস নির্মূল হবে, উন্নয়ন ঘটবে ও সেখানে ব্যাপক বিনিয়োগ আসবে—এগুলো যে হয়নি, তারই যৌক্তিকতা তুলে ধরে এসব দাবি। আমি মনে করি না, শুধু নিরাপত্তার মধ্যেই কাশ্মীর সংকটের সমাধান নিহিত রয়েছে।’

এই বিশ্লেষকের কথায়, ‘মোদি সরকার কাশ্মীর উপত্যকায় “বেশি থেকে আরও বেশি মেরুকরণ ও বিচ্ছিন্নকরণের” পথ তৈরি করছে। তাই যত দিন তা চলতে থাকবে, তত দিন আমি সংকট সমাধানের কোনো সম্ভাবনা দেখি না।”

সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি দাবি করছে, সরকার কাশ্মীর অঞ্চলে ‘স্বাভাবিক অবস্থা’ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। দলটির মুখপাত্র অশোক কাউল আল-জাজিরাকে বলেন, ‘স্বার্থান্বেষী কিছু গোষ্ঠী শান্তি বিঘ্নিত করতে চায় এবং তাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের দমনাভিযান শুরু করেছে সরকার। এ নিয়ে শুধু বিরোধী পক্ষগুলো হইচই করছে। কাশ্মীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।’

তবে বিজেপি যত অভিযোগই উড়িয়ে দিক, যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাবিদ মোহাম্মদ জুনাইদ বলছেন, ‘মোদি সরকার চায়, কাশ্মীরে রাজনৈতিক যোগাযোগ বলে কিছু থাকবে না, থাকবে শুধু অব্যাহত দমন–পীড়ন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর কাশ্মীরবাসীও নিশ্চিতভাবে এটি মেনে নেবেন না। তাঁদের জন্য এই নীতি ভারতের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দমন–পীড়ন নীতিরই সম্প্রসারণমাত্র।’

সূত্র: আল-জাজিরা

কাশ্মীর   মোদি সরকার   মোদি   জম্মু-কাশ্মীর  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশ: ০৩:৫১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সন্ধান মিলল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই।

সোমবার (২০ মে) এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের ছবি-ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

ইরানের রাষ্ট্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি একাধিক ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে।

এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে 'কোনও জীবিত ব্যক্তি' পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত রোববার (১৯ মে) একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ইরানি প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজানের তারবিজে যাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এই সময় তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারবিজে ফেরার পথেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।


ইব্রাহিম রাইসি   হেলিকপ্টার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:৪১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ানের নিহতের ঘটনায় পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ইরান। সোমবার (২০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে এমন পরিস্থিতিতে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন।

ইরানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ গার্ডিয়ান কাউন্সিল সোমবার (২০ এপ্রিল) জানিয়েছে, মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করার ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি জানিয়েছেন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পাঁচ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেন তিনি।

আলি খামেনির বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম ইরনা জানায়, মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন।

উল্লেখ, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ ৯ জন নিহত হয়।


ইব্রাহিম রাইসি   ইরান   হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা   রাষ্ট্রীয় শোক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানকে সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় সব করতে প্রস্তুত রাশিয়া

প্রকাশ: ০৩:২৭ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ার পর রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান শোক প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে ইরানের এমন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা করার জন্যও হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্র।

ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানকে সহযোগিতা করার জন্য এই মুহূর্তে যা যা প্রয়োজন সব করতে প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া। রোববার (১৯ মে) ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোয় ইরানি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালির সঙ্গে দেখা করে এ কথা বলেন।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তার কার্যালয়ে জরুরি আমন্ত্রণ জানান। এ সময় তিনি দুর্ঘটনার বিস্তারিত খোঁজখবর নেন এবং ইরানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানান।

যদিও রোববার রাশিয়ায় সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন ছিল তবুও প্রেসিডেন্ট পুতিন জরুরিভিত্তিতে তার অফিসে আসেন এবং ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সেখানে শীর্ষপর্যায়ের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, এই দুর্ঘটনায় তারা অত্যন্ত দুঃখিত এবং মর্মাহত। রাশিয়ার পক্ষ থেকে শোকবার্তা ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালীকে অনুরোধ জানান।

প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য তারা দুটি বিমান প্রস্তুত রেখেছেন, সঙ্গে রয়েছে ৫০ সদস্যের একটি শক্তিশালী ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল।

এর আগে রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। হেলিকপ্টারে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন।

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। এ দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই। সোমবার (২০ মে) বিবিসি, রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক। রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।


পুতিন   রাশিয়া   রাইসি   ইরান   ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:১০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান মারা গেছেন। এর ফলে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন।

ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

নতুন প্রেসিডেন্ট যিনিই হন না কেন, তাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদন নিতে হবে। ইরানে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি। ক্ষমতাকাঠামোয় এরপরই রয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাকে সরকারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

রাইসি নিহত হওয়ায় খামেনির অনুমোদন সাপেক্ষে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের ইরানের পরবর্তী কাণ্ডারি হওয়ার পথ খুলে গেছে বলা যায়।

আগে ইরানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছিল। ১৯৮৯ সালে তা বিলুপ্ত করা হয়। সরকারে প্রেসিডেন্টের পরবর্তী পদে বসানো হয় একজন ভাইস প্রেসিডেন্টকে। তবে প্রেসিডেন্টের মতো এই পদ নির্বাচিত নয়। ভাইস প্রেসিডেন্টকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০২১ সালের আগস্টে ইরানের প্রেসিডেন্ট হন ইব্রাহিম রাইসি। এর পরপরই খামেনির অনুমতি সাপেক্ষে মোহাম্মদ মোখবারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সংবিধান সংশোধনের পরবর্তী সময়ে ইরানের সপ্তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ মোখবার।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে মোহাম্মদ মোখবার ইরানের সিতাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ইরানের অন্যতম শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক কনগ্লোমারেট (একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অধীন থাকা বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী)। মূলত দাতব্যকাজের জন্য এ প্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে পরিচিত। সর্বোচ্চ নেতার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটা পরিচালিত হয়। একসময় ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর ছিলেন মোহাম্মদ মোখবার।

ইরানের প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে বিশ্ব নেতাদের শোক

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্র  ও সরকার প্রধান শোক প্রকাশ করেছেন। তবে পশ্চিমারা চুপচাপ ভূমিকায় আছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ার পর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানকে সহযোগিতা করার জন্য এই মুহূর্তে যা যা প্রয়োজন সব করতে প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া।

রোববার (১৯ মে) ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোয় ইরানি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালির সঙ্গে দেখা করে এ কথা বলেন।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তার কার্যালয়ে জরুরি আমন্ত্রণ জানান এ সময় তিনি দুর্ঘটনার বিস্তারিত খোঁজখবর নেন এবং ইরানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানান যদিও রোববার রাশিয়ায় সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন ছিল তবুও প্রেসিডেন্ট পুতিন জরুরিভিত্তিতে তার অফিসে আসেন এবং ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন এ সময় সেখানে শীর্ষপর্যায়ের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইরানের প্রেডিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার (২০ মে) সকালে এক এক্স (সাবেক টুইট) হ্যান্ডেলে এ শোক বার্তা জানান তিনি। ওই বার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. সাইয়েদ ইব্রাহিম রাইসির মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। ভারত-ইরান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে তার অবদান সর্বদা স্মরণ করা হবে। তার পরিবার ও ইরানের জনগণের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। এই দুঃসময়ে ইরানের পাশে আছে  ভারত হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৯ আরোহী নিহতের ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান।

সোমবার (২০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে এ শোক পালনের ঘোষণা দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। ওই পোস্টে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেন, ইরানের সঙ্গে ভ্রাতৃসুলভ একাত্মতা প্রকাশ, প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সহযাত্রীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশে পাকিস্তানে এক দিনের শোক দিবস পালন করা হবে এবং জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

তিনি বলেন, এক মাসেরও কম সময় আগে পাকিস্তানে এক ঐতিহাসিক সফরে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদোল্লাহিয়ান তারা পাকিস্তানের ভালো বন্ধু ছিলেন।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সোমবার (২০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়াএক পোস্টে তিনি শোক প্রকাশ করেন। জানিয়েছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আলজাজিরা।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ইরান ও তাদের দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, রাইসি ভেনিজুয়েলার একজননিঃশর্ত বন্ধু’ ছিলেন।

ইব্রাহিম রাইসি   বিশ্ব   শোক প্রকাশ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন